একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতা - রচনা (৬ - ১২) সম্পর্কে জেনে নিন

আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রায় প্রত্যেক পরীক্ষার্থী রচনা লিখতে হয়। আমি আমাদের এই কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতা - রচনা যথাযথভাবে লিখার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আমার এই কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যদি এই একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতা - রচনা  লিখ তাহলে পরীক্ষাতে বেশ ভালো নম্বর পাবে।

Image

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমরা পরীক্ষাতে যে রচনায় লিখো না কেন রচনার সাথে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি কবিতার চরণ তুলে ধরার চেষ্টা করবে। সেই সাথে অবশ্যই প্যারা করে রচনা লেখার চেষ্টা করবে, কখনো ঢালাওভাবে রচনা লিখবে না। যদি ঢালাওভাবে লিখো তাহলে তোমাদের লিখার মান কমে যাবে, আর এক্ষেত্রে তোমাদের নাম্বার কম আসবে। নিচে তোমাদের জন্য একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতা - রচনা বিস্তারিতভাবে লিখা হলো -

একটি বৃষ্টির দিনের অভিজ্ঞতা - রচনা 

ভূমিকা 

শ্রাবণ মাসের কোন এক সকালে একটানা যেন বৃষ্টি হচ্ছে। ঘরে আর থাকতে ভালো লাগছে না, কিন্তু সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে বাইরে বের হওয়ার কোন উপায় নেই। তাই বসে আছি জানালার পাশে চুপটি করে। আর দেখছি -

বৃষ্টি এলো ঝমঝমিয়ে

টিনের চালে উঠলো সুর।

মন বসে না কোন কাজে

বৃষ্টির ধারা সুমধুর।

জানালার পাশে চুপটি করে বসে আছি আর ভাবছি লোকালয় ছেড়ে নিভৃত কোন গ্রামে বৃষ্টির দিন উপভোগ করার অভিজ্ঞতার কথা। সারাদিন জানালার পাশে বসে বৃষ্টির সেই অনুভূতির কথা অনুভব করার চেষ্টা করলাম আর এভাবেই দিনটি কাটিয়ে দিলাম।

আরো পড়ুনঃ বর্ষাকাল রচনা - বর্ষাকাল সম্পর্কে ১০টি বাক্য জানতে বিস্তারিত পড়ুন

বর্ষার রূপ

বাংলাদেশে সাধারণত ছয়টি ঋতু। গ্রীষ্ম ঋতুর পরে আসে বর্ষা ঋতু এদিক থেকে বর্ষা বাংলাদেশের দ্বিতীয় ঋতু এবং আষাঢ় ও শ্রাবণ এই দুই মাস মিলে হয় বর্ষা ঋতু। বৈশাখ মাসের কাকফাটা দুপুর কে শান্ত করতেই যেন আষাঢ়ের বৃষ্টি এসে হাজির হয়। চারিদিকে বৃষ্টির থৈ থৈ পানি অপার সৌন্দর্য নিয়ে হাজির হয় অপরূপ এই বাংলায়।

বৃষ্টি মুখর দিনের অনুভূতি

বৃষ্টির দিনের কি যে এক আনন্দময় অনুভূতি তা সব সময় প্রকাশ করে বোঝানো যায় না। আষাঢ় - শ্রাবণ মাস আসলেই হঠাৎ করে ঈশান কোণে মেঘ জমে ওঠে আর হঠাৎ করেই শুরু হয় ঝমঝম বৃষ্টি। আবার কখনো মেঘের আনাগোনা আর এ থেকে শুরু হয়ে যায় বৃষ্টি, কখনো বজ্রপাতসহ বৃষ্টি, আবার কখনো একটানা বৃষ্টি। বৃষ্টির সময় এক ঘর থেকে যেন অন্য ঘরের চালা পর্যন্ত দেখা যায় না আর এজন্যই হয়তো কবিরা বৃষ্টির এই দিনকে ঘিরে বিভিন্ন কবিতা রচনা করতে পারেন।

আরো পড়ুনঃ বর্ষার উৎসব - বর্ষা মঙ্গলা উৎসব রচনা - সম্পর্কে জেনে নিন

বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর নদে এলো বান,

বুড়ো খুকির বিয়ে হবে তিন কন্যা দান।

গ্রামের মেঠো পথ ধরে লোকজন হেঁটে চলে কিন্তু বৃষ্টির দিনে রাস্তা এতটাই কাদাযুক্ত হয় যে মানুষ আর রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটতে পারে না, ছাতা হাতে নিয়ে আস্তে আস্তে রাস্তার দুপাশ দিয়ে হেঁটে চলে। সমস্ত আকাশ এমন ভাবে মেঘে ছেয়ে যায় যেন এখনই সন্ধ্যা ঘনিয়ে এসেছে। গাছের পাতার দিকে তাকালে মনে হয় কেউ যেন যত্ন করে গাছের পাতাগুলোকে গোসল করিয়ে দিয়েছে আর এগুলো দেখে আমি সত্যিই অবাক হই। 

মনে হয় একেবারে নতুন কিছু দেখছি। এ যেন আমার নতুন অভিজ্ঞতা। শ্রাবণ মাসের দুপুরে যখন অতিশয় গরম পড়ে আর সেই সময় যদি বৃষ্টির ধারা নেমে আসে তখন মনে হয় হইচই করে বৃষ্টিতে ভিজি কারণ এই সময় বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দই যেন আলাদা। বন্ধুদের সাথে যখন বৃষ্টিতে গোসল করি তখন নিজের অজান্তেই গেয়ে ওঠি -

"কোথাও আমার হারিয়ে যেতে নেই মানা"।

আরো পড়ুনঃ  একটি গ্রামে ভ্রমণের অভিজ্ঞতা - রচনা সম্পর্কে জেনে নিন

মাঠ - ঘাট সহ সবকিছু বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায় এবং অতিরিক্ত বৃষ্টির জন্য চারপাশে ঘাস জন্মে। ঘাসের ওপর যখন বৃষ্টির পানি পড়ে তখন মনে হয় যেন শিশির বিন্দু পড়ে আছে আর এগুলো দেখে সত্যিই আমি অবাক হয়ে যাই। আমার মনে হয় নতুন এক দেশ এবং তার প্রকৃতির মাঝে আমার নতুন অনুভূতি আর এজন্যই হয়তো বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন -

দেখা হয় নাই চক্ষু মেলিয়া

ঘর হইতে দুই পা ফেলিয়া।

একটি ধানের শীষের ওপর

একটি শিশির বিন্দু।

বৃষ্টির দিনের এই নতুন অভিজ্ঞতা আমাকে সত্যিই আনন্দে ভরিয়ে তোলে। মনের অজান্তেই যেন চিৎকার করে গেয়ে উঠি 

" হৃদয় আমার নাচেরে আজিকে ময়ূরের মতো নাচে রে"। 

আরো পড়ুনঃ  একটি ঝড়ের রাত - অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

ময়ূর যেমন বৃষ্টি দেখলেই তার রঙ্গীন পাখাগুলো মেলে ধরে ঠিক তেমনি আমাদের মনের আনন্দ গুলোও বৃষ্টির প্রতিটি ফোটার সঙ্গে মিশে যায়, সত্যি এজন্য এক নতুন অভিজ্ঞতা। গ্রামের মেঠো পথগুলো যখন বৃষ্টির পানিতে কাদায় ভরে ওঠে তখন গ্রামের কিশোরী মেয়েরা নীল শাড়ি পরে খালি পায়ে এদিক ওদিকে ছোটাছুটি করে। কৃষ্ণচূড়ার ফুলগুলো যেন প্রকৃতিকে সৌন্দর্যে ভরিয়ে তোলে। এছাড়াও এ সময়ে বিভিন্ন ধরনের ফুল ফুটে যা বাংলার প্রকৃতিকে সাজিয়ে দেয়।

উপসংহার

বর্ষা বাংলাদেশের মানুষের মনে অনেক বড় স্থান দখল করে আছে কারণ এই সময় বাংলার প্রকৃতি অপরূপ সৌন্দর্যে ভরে ওঠে। পুকুর, ঘাট, নদী, নালা সবকিছু বৃষ্টির পানিতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। গাছে গাছে কদম, কেয়া ফুল ফোটে, নদীতে আসে হাজারো রকমের মাছ, বাংলার প্রকৃতি যেন একাকার হয়ে যায় বর্ষার নিবিড়তায়।





এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url