ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব মার্কেটিং করে কিভাবে সফল হবেন জানুন

বর্তমানে অনেকেই সফল ইউটিউবার হতে চান তাই তাদেরকে অবশ্যই  ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব মার্কেটিং করে কিভাবে সফল হবেন এ বিষয়ে যথাযথভাবে জানতে হবে। আর আপনি যদি  ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব মার্কেটিং করে কিভাবে সফল হবেন না জানেন তাহলে কখনোই নিজেকে একজন সফল মার্কেটের হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন না।

Image

আপনারা যারা ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে ইনকাম করতে চান তাদেরকে অবশ্যই  ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব মার্কেটিং করে কিভাবে সফল হবেন সঠিকভাবে জেনে তারপরে কাজ করতে হবে। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি  ইউটিউব মার্কেটিং কি - ইউটিউব মার্কেটিং করে কিভাবে সফল হবেন। 

ইউটিউব মার্কেটিং কি 

ইউটিউব হল অনলাইন মার্কেটিং এর একটি প্ল্যাটফর্ম যে প্লাটফর্মে কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন আকারের ভিডিও বানিয়ে এর মাধ্যমে পণ্য বা সেবার যে প্রচারণা করে এবং তার মাধ্যমে যে অর্থ ইনকাম করে বা আয় করে তাকে বলা হয় ইউটিউব মার্কেটিং। ইউটিউব মার্কেটিং মূলত মার্কেটিংয়ের এমন একটি পদ্ধতি যেখানে ইন্টারনেটের ভিত্তিতে বিভিন্ন ভিডিও বা কনটেন্ট তৈরির মাধ্যমে প্রোডাক্ট সেল এবং প্রচারণা করা হয়ে থাকে।

সাধারণত যে  পণ্য ইন্টারনেট ভিত্তিক বিক্রি বা প্রচার করা হয় সেগুলোকেই বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং বা ইউটিউব মার্কেটিং। ডিজিটাল মার্কেটিং এরই অন্যতম একটি অংশ হল ইউটিউব মার্কেটিং। এক কথায় বলতে গেলে ইউটিউব মার্কেটিং হল ইউটিউব চ্যানেলের ভিডিও বা বিভিন্ন কনটেন্ট আপলোড করে যে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তার নিজস্ব অথবা অন্য কোন পণ্য বিক্রি অথবা বিক্রির উদ্দেশ্যে প্রচার প্রচারণার কাজ করে যে অর্থ আয় করে তাকে বলা হয় ইউটিউব মার্কেটিং। 

বর্তমান সময়ে ইউটিউব চ্যানেল ব্যবহার করে না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। শিক্ষা, বিনোদন, খেলা, প্রযুক্তি, সাজসজ্জা, বিভিন্ন সংবাদ, রান্না বান্না, ভ্রমণ থেকে শুরু করে এমন কোন ভিডিও নেই যা ইউটিউবে পাওয়া যাবে না। প্রতিনিয়ত যেভাবে শিক্ষা এবং বিনোদনের মাধ্যম হয়ে উঠেছে অন্য কোন প্ল্যাটফর্ম সেই স্থান এখনো দখল করতে পারেনি। আর অনেক ইউটিউব এভাবে ভিডিও বানিয়ে বা বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে যে অর্থ আয় করে তাকে বলা হয় ইউটিউব মার্কেটিং।

আরো পড়ুনঃ  মোবাইলে ফ্রিল্যান্সিং করার উপায় - জেনে নিন

বর্তমানে আমেরিকায় এক গবেষণায় দেখা গেছে গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রায় শতকরা ৭৫ জন আমেরিকাবাসী ইউটিউব প্লাটফর্মে এসে তাদের সময় অতিবাহিত করে যার কারণে বর্তমানে ইউটিউব একটিভ ইউজারের সংখ্যা প্রায় দুই ২বিলিয়নেরও বেশি। বর্তমানে গুগলের পরে যে জনপ্রিয় এন্টারটেইনমেন্ট বা বিজনেস সেক্টর ব্যবহৃত হচ্ছে ইউটিউব হচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম আর এ কারণেই অনেক মানুষ বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং এর অংশ হিসেবে ইউটিউব কে প্রফেশনাল হিসেবে বেছে নিয়েছে।

ইউটিউব (Youtube) মার্কেটিং কত প্রকার

Youtube মার্কেটিং বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ার অন্যতম একটি অনলাইন প্লাটফর্ম যেখান থেকে হাজার হাজার মানুষ অর্থ ইনকাম করে। আর ইউটিউবে ইনকাম করতে হলে আপনাকে ইউটিউব মার্কেটিং কত প্রকার সে বিষয়ে অবশ্যই জানতে হবে। ইউটিউব মার্কেটিং হল দুই ২ প্রকার। যথা -

প্রথমতঃ

নিজস্ব কোন পণ্য বা সেবা সম্পর্কে ভিডিও নির্মাণ করে তা নিজস্ব চ্যানেলে আপলোড করে সেখান থেকে বিক্রি বা সেবা অথবা প্রচারের বিষয়টি নিশ্চিত করা হলো youtube মার্কেটিং।

দ্বিতীয়তঃ

যেখানে নিজস্ব কোন প্রোডাক্ট বা সার্ভিসেস থাকবে না, শুধু অন্য কারো প্রোডাক্ট বা সার্ভিসেস রিভিউ করে সেটির মাধ্যমে নিজস্ব চ্যানেলে প্রচার-প্রচারণা করা।

ইউটিউবকেটিং এর প্রথম ভাগটি কে সরাসরি ইউটিউব মার্কেটিং বলা হলেও অদ্বিতীয় বিষয়টিকে সাধারণত এফিলিয়েট মার্কেটিং এর অংশ হিসাবে ধরা হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি যদি একজন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটার হন সেক্ষেত্রে কোন একটি প্রতিষ্ঠান থেকে এফিলিয়েট প্রোগ্রাম গ্রহণ করবেন এরপর প্রাপ্য লিংক যদি আপনি  আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রকাশ করেন তাহলে আপনার সেই লিংক ক্লিক করে যে সকল ভিউয়ার প্রোডাক্ট ক্রয় করবে 

আপনার ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে প্রকাশ করেন তাহলে যে সকল ভিউয়ার্স আপনার লিঙ্কে প্রবেশ করে প্রোডাক্ট বা সার্ভিসেস গ্রহণ করবে সেখান থেকে আপনি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পেয়ে যাবেন বা কমিশন পেয়ে যাবেন। এক্ষেত্রে আপনি নিজস্ব কোন পণ্য দিয়ে যেমন ইউটিউব মার্কেটিং করতে পারবেন ঠিক তেমনি আপনার যদি নিজস্ব কোন পণ্য বা সার্ভিস না থাকে সেক্ষেত্রে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর মাধ্যমেও আপনি ইউটিউবে খুব সহজে মার্কেটিং করে একটি ভালো পরিমাণ অর্থ ইনকাম করতে পারবেন। 

তবে এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ইউটিউব মার্কেটিং করার সময় ভিডিও আপলোড করার বা ইউটিউব এসইও (SEO) সম্পর্কেও বিস্তারিতভাবে জানতে হবে।

ইউটিউব মার্কেটিং করে কিভাবে সফল হবেন 

ডিজিটাল মার্কেটিং এর অনেক সেক্টর রয়েছে ইউটিউব মার্কেটিং হল তার মধ্যে অন্যতম একটি সেক্টর। এখানে কিছু বিষয় আছে যা আপনাকে সঠিকভাবে ফলো করতে হবে তাহলে আপনি খুব সহজেই ইউটিউব মার্কেটিংয়ে সফলতা অর্জন করতে পারবেন। এমন অনেকেই রয়েছেন যারা এড কমপ্লেন করেও সফল ইউটিউব মার্কেটের হয়ে থাকেন। কিন্তু ইউটিউব মার্কেটিং হল এমন একটি সেক্টর সেখানে যদি আপনি অর্গানিক উপায়ে সেল নিয়ে আসতে পারেন তাহলে আপনি সফল হবেন। 

তাহলে যে ট্রাফিক জেনারেটর হবে সেটি পরবর্তীতে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ আরো বেশি ইম্প্রেশন তৈরি করবে আর এই জন্যই সব সময় একজন ইউটিউব মার্কেটার কে আর্পনি মেথড ফলো করার কথা বলা হয়ে থাকে। তাহলে আসুন এখন জেনে নেওয়া যাক কিভাবে আপনি একজন সফল ইউটিউব মার্কেট আর হবেন। ইউটিউব মার্কেটিং করার সকল উপায় সমূহ -

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি বা ক্রিয়েট

আপনি যদি একজন সফল ইউটিউবার হতে চান তাহলে প্রথমেই আপনাকে একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলতে হবে। এক্ষেত্রে আপনার অবশ্যই একটি জিমেইল অ্যাকাউন্ট থাকতে হবে। মনে রাখবেন, gmail account ছাড়া আপনি কোন কাজ করতে পারবেন না। এরপর জিমেইল একাউন্ট দিয়ে আপনি সরাসরি ইউটিউবে সাইনআপ করে প্রাথমিক পর্যায়ে ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে পারবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই যে বিষয় নিয়ে ইউটিউব চ্যানেল খুলছেন অর্থাৎ আপনি কোন ধরনের ব্যবসা করতে চান সে বিষয় সম্পর্কিত আপনার ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করতে হবে। 

ইউটিউব চ্যানেল সেটআপ

ইউটিউব চ্যানেল তৈরি করা হয়ে গেলে জিমেইল gmail একাউন্ট অর্থাৎ একেই google account ও বলা হয়ে থাকে এই একাউন্ট দিয়ে ইউটিউবে আপনার ব্র্যান্ড অ্যাকাউন্ট তৈরি করতে হবে কেননা ব্র্যান্ড একাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি পরবর্তীতে যদি চান তাহলে চ্যানেলের ইউজার নেম, ব্র্যান্ড নেম সহ সকল কিছু যে কোন মুহূর্তে এডিট মডিফাই করার সুযোগ পাবেন। আপনি যদি চ্যানেল সেটআপ করতে চান এক্ষেত্রে আপনার গুগল একাউন্ট দিয়ে লগইন করতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ মোবাইল দিয়ে ফাইবারে কাজ - ফাইবার একাউন্ট খোলার নিয়ম জেনে নিন

এরপর My Channel অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেল আইডিতে পছন্দমত নাম দেবেন। নাম দেওয়ার পর Create Channel অপশন দেখতে পাবেন এখানে ক্লিক করবেন। এভাবে আপনি আপনার ইউটিউব একাউন্ট তৈরি করার অনুমতি পেয়ে যাবেন। এরপর আপনার পছন্দমত ব্র্যান্ড নেম দিয়ে একাউন্ট তৈরি করার কাজটি সম্পন্ন হয়ে যাবে। 

এরপর ব্র্যান্ড অ্যাকাউন্ট কে আপনার ব্যবসার ধরণ অনুযায়ী সাজাতে হবে। আপনি যদি মনে করেন চ্যানেল আইকন ও চ্যানেল এ্যাক্টের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্র্যান্ডের যাবতীয় বিষয় সম্পর্কে সকলকে জানাতে চান আপনি এখান থেকে জানাতে পারবেন, চিনতে পারবে এবং মনে রাখতে পারবে।

ইউটিউব মার্কেটিং এর জন্য ভিডিও তৈরি

আপনি ইউটিউব চ্যানেল খোলার পর সেটআপ দিয়ে শুধু বসে থাকলে হবে না আপনাকে প্রফেশনাল মানের একটি ভিডিও অবশ্যই তৈরি করতে হবে। আপনি আপনার চ্যানেলের মাধ্যমে যে প্রোডাক্ট বা বিজনেস করতে চান সেই প্রোডাক্টের ওপর ভিত্তি করে ভিডিওগুলো তৈরি করতে হবে আর আপনাকে ভিডিও তৈরি করার সময় অবশ্যই মনে রাখতে হবে ভিডিও গুলো যেন অবশ্যই কোয়ালিটি ফুল হয় এবং আপনার ভিডিও তৈরি করার সময় অবশ্যই উপস্থাপনা প্রাসঙ্গিক এবং স্পষ্ট হতে হবে। 

আপনি ভিডিও তৈরি করার আগেই পরিকল্পনা করে নিবেন যে আপনি কোন ধরনের স্ক্রিপ্ট তৈরি করতে যাচ্ছেন। ভিডিওগুলো এমন ভাবে তৈরি করবেন যেন শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দর্শক ভিডিও গুলো দেখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আপনি ইউটিউব মার্কেটিং করে কতটা সফলতা অর্জন করবেন এটি নির্ভর করবে অনেকটা ইম্প্রেশনের ওপর। ভিডিও চ্যানেলের ইম্প্রেশন বৃদ্ধি পাবে অর্থাৎ আপনার ভিডিওগুলো অটোমেটিক ভাবে অনেক লোকের হোম পেজে চলে যাবে। 

পাশাপাশি আপনার পণ্যের কোয়ালিটি সম্পর্কেও আপনার দর্শক অবগত হতে পারবে। তবে ভিডিও তৈরি করার সময় অবশ্যই মাথায় রাখবেন ভিডিও অতি দীর্ঘ না করে যেন অল্প সময়ের মধ্যে আপনার ফলোয়ার্সরা আপনার ব্যবসা বা আপনার পণ্য সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে সকল ধারণা অর্জন করতে পারে। মানুষ এখন এই তথ্য প্রযুক্তির যুগে বেশি দীর্ঘ কিছু দেখতে চায় না। তাই অবশ্যই আপনি আপনার ব্যবসা সফল করতে হলে ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতার সাথে ভিডিও তৈরি করবেন।

ইউটিউব ভিডিও এস ই ও (SEO)

Youtube মার্কেটের ক্ষেত্রে আপনি যদি সফল হতে চান তাহলে আপনার ভিডিও গুলো অবশ্যই এস ই ও (SEO) করতে হবে তাহলে আপনার ভিউ অনেক বেশি আসবে এবং ভিউজ যতো বেশি আসবে আপনার সেল বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনাও তত বেড়ে যাবে। এজন্য অবশ্যই আপনি ভিডিওগুলো অপটিমাইজেশন করার চেষ্টা করবেন কেননা এস ই ও (SEO) বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ব্যতীত আপনি ভিডিও যতই আপলোড করেন না কেন আবার আপনি যদি আপনার ভিডিও গুলোকে তালিকার প্রথম দিকে নিয়ে আসতে চান তা হলে অবশ্যই সেগুলো এস ই ও (SEO) করতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ ফেসবুক মনিটাইজেশন আপডেট - জেনে নিন

যেমন আমরা যখন google কোন কিছু দেখার জন্য লিখে সার্চ দেই তাহলে প্রথম পেজে দশটি জিনিস প্রদর্শিত হয় আর আপনি যদি আপনার ভিডিও গুলো এই ১০ টির মধ্যে নিয়ে আসতে পারেন তাহলে মনে রাখবেন আপনার সেল অনেক বেড়ে যাবে। তাই একজন সফল ইউটিউবার হতে হলে আপনাকে এস ই ও (SEO) সম্পর্কে যথার্থ ভাবে জানতে হবে। কারণ ইউটিউব মার্কেটিং কিভাবে পরিচালিত হবে সেটি পুরোপুরি নির্ভর করে কনটেন্টের কোয়ালিটি কেমন এর ওপরে। আর পাশাপাশি অবশ্যই আপনার এই কোয়ালিটি সম্পূর্ণ ভিডিওকে এস ই ও (SEO) করতে হবে।

ইউটিউবে ভিডিও তৈরি এবং প্রমোট

Youtube মার্কেটিং এ সফল হবার জন্য অবশ্যই ভিডিও তৈরি করার পাশাপাশি ইউটিউবে ভিডিওগুলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রমোট করতে হবে। আপনি যে ধরনের ভিডিও তৈরি করবেন সে ধরনের পণ্য উৎপাদন করার জন্য এবং প্রচারণা বাড়ানোর দিকে আপনাকে অবশ্যই মনোনিবেশ করতে হবে। আপনি যদি আপনার ইউটিউব মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনার পণ্য বা সার্ভিস এর বিষয়ে মানুষের কাছে জানাতে চান তাহলে সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সঠিক মানের ভিডিও তৈরি করতে হবে এবং সেগুলো প্রমোট করতে হবে। 

ভিডিও প্রমোট করার জন্য ইন্টারনেট কেন্দ্রিক অনেকগুলো প্ল্যাটফর্ম রয়েছে সেগুলোর মাধ্যমে আপনি ভিডিও প্রমোট করতে পারেন। আর অনলাইনে প্ল্যাটফর্ম গুলো হল - ফেসবুক, টুইটার, ব্লগ, ওয়েবসাইট, ইন্সটাগ্রাম ইত্যাদি। আপনি আপনার ভিডিওগুলো এই মাধ্যমগুলোর সাহায্যে খুব সহজেই ইন্টারনেটে প্রমোট করতে পারবেন।

আর ইউটিউবে সফল হতে হলে আপনাকে উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে সঠিকভাবে ভিডিও তৈরি করতে হবে এবং ইউটিউব মার্কেটিং করে সফল কিভাবে হতে পারবেন তা পরিষ্কারভাবে আপনাকে জানতে হবে।

কিভাবে একজন সফল ইউটিউবার হবেন

আপনার শুধু একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলে ভিডিও তৈরি করে আপলোড করলেই হবে না আপনার টার্গেট থাকতে হবে ইউটিউব এ একজন সফল ইউটিউবার হওয়ার। তাই নিচে কিছু বিষয়ে আমি আলোচনা করলাম যা আপনাদের অনেক কাজে আসবে।

সঠিক কনটেন্ট নির্বাচন করুন

আপনি যদি একজন সফল ইউটিউবার হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই সঠিক ধরনের কনটেন্ট নির্বাচন করতে হবে অর্থাৎ কি ধরনের ভিডিও থাকবে আপনার সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। যেমন আপনি শিক্ষামূলক ভিডিও, স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র বা যে কোন কিছু পর্যালোচনার রিভিউ ভিডিও দিতে পারেন। সফল ইউটিউবার হতে হলে বিভিন্ন ধরনের ঘটনা নিয়ে কাজ করতে হবে এবং অনেক ইউটিউবার রয়েছে যারা একটিমাত্র নিশ নিয়ে ভিডিও আপলোড করে থাকে। 

তবে অনেক ইউটিউব চ্যানেল রয়েছে যারা বিভিন্ন টিভির খবর, সিনেমার খবর অথবা অন্যান্য খেলার খবর নিয়ে কাজ করে। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বেছে নিতে হবে কোন ধরনের ভিডিওগুলো করলে আপনার বেশি ফলোয়ার আসবে আর সেই অনুপাতে আপনাকে ভিডিও আপলোড করতে হবে।

পরিপূর্ণ তথ্য প্রদান

ইউটিউবে ভিডিও বানানোর সময় আপনাকে অবশ্যই মাথায় রাখতে হবে আপনি যে ভিডিওটা তৈরি করছেন তা যেন পরিপূর্ণ ভিডিও হয় অর্থাৎ আপনার ভিউয়ার্স যেন আপনার ভিডিও দেখে পরিপূর্ণ তথ্য পেয়ে থাকে। আপনি যে বিষয়ে ভিডিও বানাবেন সেই বিষয়ে পরিপূর্ণ জ্ঞান নিয়ে তারপরে আপনি সেই ভিডিও তৈরি করবেন তাহলে আপনার ফলোয়ার্সরা আর অন্য কোন চ্যানেলে যাবে না।

ভাইরাল টপিক এর উপর ভিডিও তৈরি করুন

আপনি যখন ভিডিও তৈরি করবেন তখন আপনাকে অবশ্যই একটি বিষয়ে মাথায় রাখতে হবে কোন বিষয়টা সবচেয়ে বেশি ভাইরাল! মনে রাখবেন, হুজুকে বাঙালি। তাই আপনি যখনই ভিডিও তৈরি করবেন তখন অবশ্যই দেখবেন বর্তমান সময়ে কোন বিষয়টি সবচেয়ে বেশি ভাইরাল এবং সেই টপিকটি নির্বাচন করে আপনি সময়ের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ভিডিও তৈরি করবেন।

সরাসরি সম্প্রচার করুন

আপনি যখন কোন কনটেন্ট বা গেম বা সাক্ষাৎকার ইত্যাদি ভিডিও তৈরি করবেন তা সরাসরি সম্প্রচার করার চেষ্টা করতে পারেন। এক্ষেত্রে অনেক দর্শক রয়েছে যারা এই খেলাগুলোর সাথে তার ক্রিয়েটার কেউ দেখতে পছন্দ করেন তাই আপনি লাইভে এসে এগুলো প্রচার করতে পারেন।

ভিডিও এডিটর নির্বাচন

আপনি যদি আপনার ভিডিও সঠিকভাবে এডিটিং করতে পারেন তাহলে আপনার ভিডিও বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করতে পারবে। ভিডিও এডিটিং এর সময় আপনি অবশ্যই সঠিকভাবে ব্যাকগ্রাউন্ড, মিউজিক যোগ করবেন এবং যে অংশটি প্রয়োজন নাই তা কেটে ফেলবেন এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ অংশ যোগ করার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনার ভিডিও হয়ে উঠবে প্রাণভ্রান্ত এবং আপনার দর্শক ও বেড়ে যাবে।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয় থাকুন

আপনি যখন আপনার ইউটিউবে ভিডিওগুলো আপলোড করবেন তখন আপনি অবশ্যই সেইসাথে facebook, twitter এবং instagram এর মত সোশ্যাল মিডিয়াতে সক্রিয় থাকার চেষ্টা করবেন। কেননা আপনি youtube চ্যানেলের সাথে এই ধরনের সোশ্যাল মিডিয়াতে ভিউয়ার্স বা সাবস্ক্রাইবার বেশি পাবেন। তাই এই ধরনের সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে আপনার চ্যানেলের বা আপনার নিজের ব্র্যান্ড আইডি তৈরি করতে পারবেন তাই আপনি অবশ্যই আপনার পেজে বা গ্রুপে একটিভ থাকার চেষ্টা করবেন। 

ভিডিও তৈরীর আগে পূর্ব প্রস্তুতি নিন

আপনাকে ভিডিও তৈরির আগে অবশ্যই পূর্ব প্রস্তুতি নিতে হবে কারণ দেখতে হবে কোন ধরনের ভিডিও দর্শক বেশি গ্রহণ করে। আর ভিডিও তৈরি করার ক্ষেত্রে আপনি সেই ভিডিওটা কতটা লম্বা করবেন সেটাও নির্ধারণ করতে হবে। তবে সবচেয়ে বেশি পাঁচ থেকে দশ মিনিটের মধ্যে ভিডিও তৈরী করতে পারলে ভালো হয় বেশি লম্বা ভিডিও মানুষ দেখতে চায় না তাই অবশ্যই ভিডিও তৈরি করার সময় এদিকে নজর দেবেন।

                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                                   

আপনি আপনার ইউটিউব চ্যানেলের জন্য যে ভিডিও তৈরি করেন না কেন তা অবশ্যই কপিরাইট মুক্ত রাখবেন। আপনি যদি কপিরাইট করেন তাহলে অবশ্যই আপনার আয় বন্ধ হয়ে যেতে পারে এমনকি আপনার চ্যানেল ও বন্ধ হয়ে যেতে পারে। মনে রাখবেন, আপনার ভিডিও তৈরি করার পর যদি কপিরাইট ও কমিউনিটি গাইডলাইনের তিনটি স্ট্রাইক থাকে তাহলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনার এই স্ট্রাইকের জন্য ভিডিও মুছে যাবে এবং আপনার চ্যানেল বন্ধ হয়ে যাবে। আর এক্ষেত্রে আপনি কোন প্রকার ভিডিও আপলোড করতে পারবেন না। তাই অবশ্যই আপনার ভিডিওতে যেন কপিরাইট না থাকে সেদিকে খেয়াল করবেন।

প্রতিযোগীদের বিশ্লেষণ করুন

বর্তমানে অনলাইন মার্কেটপ্লেস এর মধ্যে ইউটিউব একাউন্ট একটি বড় মার্কেট প্ল্যাটফর্ম তাই আপনার প্রতিযোগীও এক্ষেত্রে অনেক বেশি। আর আপনি যদি একজন সফল ইউটিউবার হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনার প্রতিযোগীদের বিশ্লেষণ করতে হবে। প্রথমত আপনাকে অবশ্যই কমপক্ষে আপনার পাঁচটি কম্পিটিটার চিহ্নিত করতে হবে এরা কোন ধরনের ব্যবসার সাথে সম্পর্কিত এবং কোন কিওয়ার্ডের ওপর এরা কাজ করছে এবং তাদের র‍্যাংকিং কোন পর্যায়ে রয়েছে এবং তাদের সাথে প্রতিযোগিতা করে আপনার সকল ভিডিও আপলোড করতে হবে।

সময়মত কনটেন্ট আপলোড করুন

আপনি আপনার চ্যানেলে অবশ্যই সময় মত কন্টেন্ট আপলোড করবেন। মনে রাখবেন, আপনার চ্যানেলে আপনি যেভাবে কনটেন্ট আপলোড করবেন আপনার দর্শকের সংখ্যা ও সেভাবেই বৃদ্ধি পাবে বা কবে যাবে। তাই আপনি অবশ্যই আপনার কনটেন্টগুলো যেন সঠিকভাবে আপনার ভিউয়ারদের কাছে পৌঁছে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করবেন।

ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন

আপনি ইউটিউবে ভিডিও ছাড়ার পর যদি মনিটাইজেশন না করেন তাহলে আপনার অর্থ উপার্জন করতে পারবেন না তাই আপনি অবশ্যই ভিডিও মনিটাইজেশন করবেন। youtube থেকে অর্থ উপার্জন করতে হলে ইউটিউব চ্যানেল মনিটাইজেশন অবশ্যই করতে হবে এছাড়া নতুন অপশন পাওয়া সম্ভব হবে না। youtube ভিডিও আপলোড করার পর ভিডিও গুগল বিজ্ঞাপনের জন্য এনাবল করতে পারবেন এজন্য অবশ্যই এডসেন্স একাউন্টের সাথে কানেক্ট করতে হবে। তবে আপনি ইউটিউব চ্যানেলে ভিডিও মনিটাইজেশন করতে হলে আপনাকে চারটি শর্ত মানতে হবে এগুলো হলো -

  • চ্যানেলে কমপক্ষে ১০ হাজার ভিউ হতে হবে।
  • আপনার চ্যানেলে অবশ্যই চার ৪ হাজার ঘন্টা ওয়াচ টাইম থাকতে হবে।
  • আপনার চ্যানেলে সাবস্ক্রাইবার থাকতে হবে কমপক্ষে ১ হাজার।
  • আপনাকে অবশ্যই আপনার চ্যানেল খোলার এক বছরের মধ্যেই উপরোক্ত শর্তগুলো সম্পূর্ণ করতে হবে।

বর্তমানে ইউটিউব চ্যানেলের ব্যবসা হল সব চেয়ে ডিমান্ডেবল একটি ব্যবসা তাই আপনি অবশ্যই ইউটিউব চ্যানেলের সফল হতে হলে উপরোক্ত বিষয়গুলো মাথায় রেখে ভিডিও তৈরি করবেন এবং একজন সফল ইউটিউবার হিসেবে নিজেকে তৈরি করবেন।

ইউটিউব মার্কেটিং কোর্স

আপনি যদি একজন সফল ইউটিউব মার্কেটার হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই একটি ভাল কোন আইটি সেন্টার থেকে ইউটিউব মার্কেটিং এর ওপর কোর্স করতে হবে। আপনি যে শহরে বসবাস করেন না কেন দেখবেন সেই শহরেই একটি আইটি সেন্টার অবশ্যই রয়েছে সেখানে আপনি একটি ভাল মানের আইটি সেন্টার দেখে ভর্তি হবেন এবং সঠিক গাইড লাইনের মাধ্যমে আপনি আপনার কাজ শুরু করবেন। 

অনেক সময় আপনি ইউটিউবে অনেক ভিডিও রয়েছে যেগুলো দেখেও অভিজ্ঞতা নিতে পারেন তবে আপনি যে আইটি সেন্টারে শিখেন না কেন শুধু ভিডিও তৈরি করে আপলোড করলেই হবে না আপনাকে সঠিকভাবে ভিডিও এসইও করতে জানতে হবে। এবং যেখানেই কাজ শিখেন আপনি এ টু জেড সমস্ত কাজ শিখে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।

মনে রাখবেন, আপনি অনলাইনে কোর্স করার চাইতে অফলাইনে কোর্স করার চেষ্টা একটু বেশি করবেন কারণ অনলাইনে কাজ শেখানোর পরে আপনি আর তাদের খুঁজে পাবেন না। আর আপনি যদি অফলাইনে কোর্স করেন তাহলে আপনার যেকোনো সমস্যায় আপনি সেখানে গিয়ে তাদের সাথে যোগাযোগ করতে পারবেন।

Youtube মার্কেটিং কেন এত বেশি এফেক্টিভ

বর্তমানে গুগলের পরে সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে youtube হল সর্বোচ্চ জনপ্রিয় একটি সোশ্যাল মিডিয়া। ২০২২ এর ফেব্রুয়ারি মাসের রিপোর্ট অনুযায়ী শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য প্রতিমাসে ২২.৮ বিলিয়ন মানুষ youtube ভিজিট করে। ইউটিউব চ্যানেল যে কোন ভৌগোলিক স্থান, প্রোডাক্ট, কোম্পানি এবং মার্কেটিং করতে একটি বড় কাস্টমার বেজ তৈরি করতে সহায়তা করে থাকে যার কারণে ইউটিউব হল একটি বড় লার্নিং প্লাটফর্ম।

বিভিন্ন ধরনের টিউটোরিয়াল, লেকচার, গাইডলাইন, নোট বিভিন্ন বিষয়ে তৈরির মাধ্যমে ইউটিউব বেশ শক্ত অবস্থানে রয়েছে। তাছাড়া এটি অন্যান্য মার্কেটিং এর মত এডভাটিজিং এর ক্ষেত্রেও অনেক বেশি পরিচিত এবং এর ব্যয় অনেক কম। তাই ইউটিউব মার্কেটিং এত বেশি জনপ্রিয় এবং এফেক্টিভ।

ইউটিউব মার্কেটিং কেন করবেন

বর্তমানে মানুষ অনলাইন ব্যবসার দিকে বেশি আগ্রহী আর অনলাইনে সবচেয়ে বেশি কাস্টমার পাওয়া সম্ভব। মানুষ এখন ঘরে বসেই সব কিছু দেখতে চায় এবং কিনতে চায়। আর ইউটিউব মার্কেটিং হল এমন একটি প্ল্যাটফর্ম মানুষ যার মাধ্যমে ঘরে বসে সব কিছু অনায়াসে জানতে পারে এবং দেখতে পারে। অনলাইনের মাধ্যমে ব্যবসা প্রচার করাকে বলা হয় ডিজিটাল মার্কেটিং। আর ডিজিটাল মার্কেটিং এর একটি অন্যতম শাখা হলো ইউটিউব মার্কেটিং। 

আরো পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে ইনকাম করার উপায় জানুন

ইউটিউব মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে আপনি আপনার ব্যবসার যেকোন প্রোডাক্ট বা পণ্য মানুষের সামনে সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারবেন। আর বর্তমান সময়ে মানুষ সবচেয়ে বেশি সময় কাটায় ইউটিউবে। তাই আপনি আপনার ব্যবসার কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে ইউটিউব কে বেছে নিতে পারেন আর বর্তমান সময়ে এটি হলো সবচেয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত। তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন ইউটিউব মার্কেটিং কেন করবেন!

শেষ কথা

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমি আপনাদের সামনে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় মার্কেটিং place youtube সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আপনারা যদি আপনার এই টিপস গুলো ফলো করে ইউটিউবে একটি চ্যানেল খুলেন তাহলে অবশ্যই সফল হতে পারবেন। তবে আপনি অবশ্যই ইউটিউব মার্কেটিং করার পূর্বে যথাযথ ধারণা নিবেন এবং ভালো মানের কনটেন্ট তৈরি করে একজন সফল ইউটিউবার হবেন। আমার কনটেন্টি এতক্ষণ ধরে ধৈর্য সহকারে পড়ার জন্য আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url