কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় - ২০২৪

আমাদের দেশের অনেক ভাই - বোনেরা বিদেশে যেতে চান কিন্তু তারা অর্থের অভাবে যেতে পারেন না তাই তারা জানতে চান কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়। আর যে সকল ভাই বোনেরা লোন নিয়ে বিদেশে যেতে চান আমি তাদের আমার এই পোষ্টের মাধ্যমে জানানোর চেষ্টা করেছি কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়।

Image

বাংলাদেশের সকল প্রবাসী ভাইদের যদি জানা থাকে কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় তাহলে আপনারা সঠিকভাবে লোন নিতে পারবেন এবং আপনারা কর্মসংস্থানের জন্য প্রবাসে গমন করতে পারবেন। আমি আপনাদের জন্য বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংকের প্রবাসী লোন নিয়ে আলোচনা করেছি। আর কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয়  এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আমার পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন।

কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় 

আপনারা যারা বিদেশে যেতে চাচ্ছেন কর্ম করার জন্য অথচ টাকার অভাবে যেতে পারছেন না তাদের জন্য বাংলাদেশের কোন কোন ব্যাংক লোন দেয় এবং কিভাবে লোন দেয় তা আপনারা অনেকেই জানতে চান। বিদেশে যাওয়ার জন্য অনেকের টাকার প্রয়োজন হয় আর বৈধ পথে বিদেশে যাওয়ার জন্য লোন দিতে এগিয়ে এসেছে বাংলাদেশের বেশ কিছু ব্যাংক। আপনারা যারা বিদেশ যেতে চান তারা জেনে খুশি হবেন যে, যারা টাকার অভাবে চাকরি নিয়ে বিদেশে যেতে পারছেন না 

তাদেরকে খুব কম সুদে ঋণ দিতে বাংলাদেশের বেশ কিছু ব্যাংক সহযোগিতা করছে। তবে আপনি যদি ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান সে ক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বৈধ পথে চাকরি নিয়ে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোতে নাম নিবন্ধন করতে হবে এবং এর মাধ্যমে বিদেশ যেতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি ব্যাংক থেকে ঋণ পাবেন। ঋণের টাকায় বিদেশ গিয়ে আপনি চাকরি করে কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন।

আরো পড়ুনঃ সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং করে ইনকাম করার উপায় জানুন

এক্ষেত্রে আপনি বিদেশ যাওয়ার জন্য বেশ কয়েকটি সরকারি ব্যাংক সহ বেসরকারি ব্যাংকে ও প্রবাসী কল্যাণ ঋণ পাবেন। এক্ষেত্রে আপনাকে কোন জামানত ছাড়াই খুব সহজ শর্তে এবং কম সুদে ঋণ প্রদান করবে এই ব্যাংকগুলো। তবে বিদেশ যাওয়ার জন্য আপনি যে লোন বা ঋণ নিবেন এগুলো বিভিন্ন নামে পরিচিত। যেমন -

  • প্রবাসী ঋণ
  • ওয়ার্কার্স ঋণ
  • অভিবাসন ঋণ ইত্যাদি।

আর আপনি যদি বিদেশ যাওয়ার জন্য ঋণ গ্রহণ করতে চান তাহলে আপনাকে এই নামগুলোর যেকোনো একটি নামে ঋণ গ্রহণ করতে হবে এবং এখন পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি ব্যাংক ঋণ প্রকল্প চালু করেছে। আর যে সমস্ত ব্যাংকগুলো ঋণ প্রদান করছে এগুলো হলো -

  • প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
  • সোনালী ব্যাংক
  • জনতা ব্যাংক 
  • ইসলামী ব্যাংক
  • পূবালী ব্যাংক
  • অগ্রণী ব্যাংক
  • ডাচ - বাংলা ব্যাংক
  • ব্রাক ব্যাংক
  • প্রাইম ব্যাংক
  • ইস্টার্ন ব্যাংক
  • সিটি ব্যাংক
  • স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংক
  • এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
  • এইচ এস বি সি ব্যাংক বাংলাদেশ

আপনি আপনার স্বপ্ন পূরণের জন্য বিদেশ যেতে এই সকল ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন এবং আপনি বিদেশ যাওয়ার পর কিস্তিতে এই ঋণ গুলো শোধ করার সুযোগ পাবেন। এই সকল ব্যাংকগুলো আপনার কাছ থেকে শতকরা নয় ৯ থেকে ১৪ শতাংশ সুদে ঋণ দিবে এবং আপনি এই ব্যাংকগুলো থেকে আড়াই ২.৫০ লক্ষ থেকে তিন ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ পাবেন। আপনাকে এক ১ থেকে তিন ৩ বছরের মধ্যে এই ঋণ গুলো পরিশোধ করতে হবে। মনে রাখবেন, ঋণ বিতরণের শর্ত ও অনুমোদন প্রক্রিয়া বাংলাদেশের প্রায় সব ব্যাংকে একই ধরনের হয়ে থাকে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক

আপনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে যে ঋণ পাবেন তার নাম "অভিবাসন ঋণ প্রকল্প"। আপনি এই ঋণ নেওয়ার পরে দুই ২ বছরের মধ্যে আপনাকে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে অনেক সময় বিভিন্ন অংকের টাকা ও ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে তবে আপনি সর্বোচ্চ ৭৫ লক্ষ টাকা ঋণ নিতে পারবেন আর এই ঋণের সুদ হল শতকরা নয় ৯ শতাংশ থেকে ১২ শতাংশ। তবে যদি আপনি সিঙ্গাপুরে যান তাহলে আপনাকে প্রতি মাসে একটি করে কিস্তি দিতে হবে এবং এক বছরে অর্থাৎ ১২ মাসে ১২ কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে।

এছাড়া যদি আপনি অন্যান্য দেশে যেমন - ইতালি, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, বাহারাইন, মরিশাস, ওমান, অস্ট্রেলিয়া ইত্যাদি দেশে যান তাহলে দুই ২ বছরের মধ্যে বা ২২ কিস্তিতে আপনাকে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আর আপনি যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে থাকেন তাহলে আপনি সর্বোচ্চ দুই ২ মাস ঋণ না দিয়ে থাকতে পারবেন অর্থাৎ আপনাকে প্রথম দুই ২ মাসে কোন ঋণের কিস্তি দিতে হবে না তবে দুই ২ মাস পর থেকে আপনাকে কিস্তি প্রদান করতে হবে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক লোন নিয়ম

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নেওয়ার সময় আপনাকে কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে যেগুলো মেনে চললে আপনি খুব সহজেই প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারবেন। এগুলো হলো -

আবেদন ফরম

আপনি যদি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে চান তাহলে আপনাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে গিয়ে প্রথমে একটি আবেদন ফরম সংগ্রহ করতে হবে এবং এই ফর্মে দেওয়া যে তথ্যগুলো রয়েছে তা সঠিকভাবে পূরণ করে আপনাকে লোন সংশ্লিষ্ট অফিসারের কাছে তা প্রদান করতে হবে। তবে ফর্ম পূরণ করার সময় আপনাকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন কোনো তথ্য কোনোভাবেই ভুল না হয় তাহলে আপনার আবেদনটি বাতিল হয়ে যেতে পারে।

ডকুমেন্টস বা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র

আপনাকে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে কিছু ডকুমেন্টস বা কাগজপত্র জমা দিতে হতে পারে এগুলো হলো

  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।
  • পাসপোর্ট এর ফটোকপি।
  • ভিসার ফটোকপি।
  • আপনার সদ্য তোলা ৩ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি।
  • বর্তমানে স্থায়ী ঠিকানা এবং পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদের সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি।
  • বিমান এজেন্সি কর্তৃক আপনার বিদেশ যাওয়ার সম্ভাব্য তারিখ প্রত্যয়ন পত্র বা বিমানের ইলেকট্রনিক টিকেট জমা দিতে হবে এবং ঋণ ফেরতের হলফনামা ও প্রদান করতে হবে।

গ্যারান্টার

ব্যাংক থেকে ঋণ নিতে হলে আপনার একজন গ্যারান্টার এর প্রয়োজন হবে যে আপনার পরিচিত ব্যক্তি এবং এই গ্যারান্টারের ও কিছু কাগজপত্র আপনাকে জমা দিতে হবে। যেমন - গ্যারান্টারের দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি এবং ভোটার এর আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি।

চুক্তিপত্র

ভিসা নিশ্চিত হওয়ার পর আবেদনকারীকে অর্থাৎ আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে সংগৃহীত ভিসার ২ কপি ফটোকপি জমা দিতে হবে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ আপনার তথ্যগুলো সঠিকভাবে যাচাই করে তিন ৩ দিনের মধ্যে ঋণ দেওয়ার বিষয়টি আপনাকে ফোন দিয়ে অথবা এসএমএস দিয়ে জানিয়ে দিবেন।

ঋণ নেওয়ার সময় আপনাকে ঐ ব্যাংকে একটি সঞ্চয়ী হিসাব খুলতে হবে এবং এই সঞ্চয় হিসাবের মাধ্যমে আপনাকে সমুদায় আইবা রেমিটেন্স দেশে পাঠাতে হবে।

সোনালী ব্যাংক

সোনালী ব্যাংক বাংলাদেশের একটি স্বায়ত্তশাসিত ব্যাংক। আর এই ব্যাংক "প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ প্রকল্প" নামে লোন দিয়ে থাকে। সোনালী ব্যাংক আপনাকে সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ দিবে এবং আপনাকে সর্বোচ্চ তিন ৩ বছরের মধ্যে এই ঋণের টাকা পরিশোধ করতে হবে। ঋণ গ্রহণের পর  তিন ৩ মাস পর্যন্ত কোন ঋণের কিস্তি না দিলেও সমস্যা নেই তবে দুই ২ বছর পর অর্থাৎ ২৪ কিস্তি বা তিন ৩ বছর অর্থাৎ ৩৬ কিস্তিতে আপনাকে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। 

আরো পড়ুনঃ গ্রাফিক্স ডিজাইন কি এবং কেন শিখবেন কিভাবে শিখবেন বিস্তারিত

এক্ষেত্রে আপনার কিস্তির পরিমাণ নির্ধারণ হবে আপনি কয় বছর মেয়াদে ঋণ গ্রহণ করবেন তার উপরে। তবে প্রতি মাসে আপনাকে একটি করে কিস্তি দিতে হবে এবং আপনি যে ঋণ গ্রহণ করবেন তার সুদের হার হবে শতকরা ১২ শতাংশ। মনে রাখবেন, বাংলাদেশের সকল ব্যাংকেরই প্রায় ঋণ গ্রহণের প্রক্রিয়া একই রকম অর্থাৎ আপনি প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকে যে প্রক্রিয়ায় ঋণ গ্রহণ করবেন সোনালী ব্যাংকেও আপনাকে একই প্রক্রিয়ায় ঋণ গ্রহণ করতে হবে।

অগ্রণী ব্যাংক

বিদেশ যাওয়ার জন্য আপনি অগ্রণী ব্যাংক থেকেও লোন নিতে পারেন। অগ্রণী ব্যাংক তাদের যে প্রকল্পের মাধ্যমে ঋণ প্রদান করে তার নাম হল "প্রবাসী ঋণ প্রকল্প"। আপনি অগ্রণী ব্যাংক থেকে ও সর্বোচ্চ তিন ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত লোন পাবেন। লোন গ্রহণের পর আপনি সর্বোচ্চ তিন মাস কিস্তি না দিয়ে থাকতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে আপনাকে দেড় বছর বা ১৫ মাস থেকে ১৮ মাসে মাসিক কিস্তিতে আপনাকে সর্বোচ্চ ১ বছর ৩ মাস বা এক ১ বছর ছয় ৬ মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আপনি যে ঋণ গ্রহণ করবেন তার সুদের হার হবে শতকরা ৯ শতাংশ। 

পূবালী ব্যাংক

পূবালী ব্যাংক থেকে আপনি বিদেশ যাওয়ার জন্য যে লোন নিবেন তার নাম "নন রেসিডেন্স ক্রেডিট স্কিম"। এবং এই ব্যাংক থেকে আপনি সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন ঋণ গ্রহণের পর আপনাকে সর্বোচ্চ দুই বছর অর্থাৎ ২৪ মাসের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে এক্ষেত্রে আপনাকে মাসিক কিস্তিতে অর্থাৎ প্রতিটি মাসে কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে ঋণ গ্রহণের পর আপনি দুই মাস কিস্তি না দিয়ে থাকতে পারবেন তবে এ ব্যাংকে আপনাকে সুদের হার শতকরা ১৩ শতাংশ পরিশোধ করতে হবে

বিদেশ যাওয়ার জন্য পূবালী ব্যাংক থেকে সর্বোচ্চ দ্রুত সময়ে ঋণ দেয়া হয় এবং ঋণ নেয়ার সময় তেমন কোন খরচ হয় না। তবে এই ব্যাংকের নিয়ম কানুন ও প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের নিয়ম কানুন অনুযায়ী করতে হবে এবং ঋণ নেওয়ার জন্য আপনাকে কিছু নিয়ম কানুন সহ ব্যক্তিগত গ্যারান্টি এবং গ্যারান্টার ও ব্যাংকের মধ্যে ত্রিপাক্ষিক চুক্তিনামাতে স্বাক্ষর করতে হবে। তবে কোন জামানতের প্রয়োজন হবে না।

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক

এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য যে ঋন দেওয়া হয় তার প্রকল্প নাম হল "এনআরবি মাইগ্রেশন লোন"। এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক থেকে আপনি সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন এবং সুদের হার শতকরা ১৪ শতাংশ। এই ব্যাংক থেকে আপনি এক ১, দুই ২, তিন ৩ বছর মেয়াদে অর্থাৎ ১২,২৪ ও ৩৬ মাসের কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন এবং ঋণ গ্রহণের পর সর্বোচ্চ তিন ৩ মাস পর্যন্ত আপনি ঋণের কিস্তি না দিয়ে থাকতে পারবেন।

তবে বিদেশ যাওয়ার তিন ৩ মাস পর থেকে আপনাকে মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক যাদের বয়স ১৮ থেকে ৫৫ বছরের মধ্যে তাদেরকে এই ঋণ প্রদান করে থাকে।

ইসলামী ব্যাংক প্রবাসী লোন পদ্ধতি

আপনি যদি লোন নিয়ে বিদেশ যেতে চান তাহলে এক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংক থেকে ও লোন নিতে পারেন। ইসলামী ব্যাংক প্রধানত চার ৪ টি পদ্ধতিতে ঋণ প্রদান করে থাকে এগুলো হল -

মুরাবাহা 

মুবারাকা হলো ইসলামিক ফাইনান্স পদ্ধতি যেখানে ব্যাংক বিভিন্ন পণ্যের মূল্যের ওপর ভিত্তি করে একটি নির্দিষ্ট পরিমল লাভ যুক্ত করে গ্রাহকের নিকট বিক্রি করে। আর এই পদ্ধতিতে প্রবাসীরা তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য বা সম্পদ ক্রয় করতে পারবে।

মুশারাকা

মুশারাকা হলো এমন একটি ইসলামিক ব্যাংক লোন পদ্ধতি যেখানে গ্রাহক যৌথভাবে বিনিয়োগ করতে পারে। প্রবাসীরা এই পদ্ধতি তে ব্যবসায়িক অংশীদারীত্বের মাধ্যমে অর্থায়ন পেতে পারেন।

বায় মুআজ্জাল

বায় মুআজ্জাল হল ইসলামী ব্যাংকের একটি লোন পদ্ধতি।এই পদ্ধতির মাধ্যমে ব্যাংক গ্রাহকের নিকট থেকে পণ্য বিক্রি করে দেয় এবং পরিষদের সময় স্থগিত করতে পারে। প্রবাসী শ্রমিকরা এই পদ্ধতিতে তাদের প্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় করতে পারবেন এবং কিস্তিতে ব্যাংকের নিকট টাকা ও পরিশোধ করতে পারবেন।

ইজারা

ইজারা ইসলামী ব্যাংকের এমন একটি লোন পদ্ধতি যেখানে ব্যাংক একটি নির্দিষ্ট সম্পদ কিনে গ্রাহকের নিকট নির্দিষ্ট মূল্য এবং নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাড়া দিয়ে থাকে। আর প্রবাসীরা এই পদ্ধতিতে অন্যান্য সম্পদ বা গাড়ি ভাড়া নিতে পারবেন।

বাংলাদেশ ইসলামী ব্যাংক যে ঋণ প্রদান করে থাকে তা ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী সুদবিহীন লেনদেন নিশ্চিত করে থাকে এবং প্রবাসীরা হালালভাবে অর্থনৈতিক চাহিদা পূরণ করতে পারে।

ডাচ - বাংলা ব্যাংক প্রবাসী লোন

বর্তমানে ডাচ - বাংলা ব্যাংক একটি প্রসিদ্ধ ব্যাংক। আর ডাচ - বাংলা ব্যাংক থেকে প্রবাসীদের জন্য যে ধরনের লোন সুবিধা রয়েছে তা হলো -

অটোমোবাইল লোন

ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য অটোমোবাইল ব্যাংকের সুবিধা দিয়ে থাকে। আর এই লোনের মাধ্যমে প্রবাসীরা নতুন বা পুরানো গাড়ি কিনতে পারেন এবং ব্যবহার করে মাসিক কিস্তিতে ঋণ পরিশোধ করার সুযোগ পাবেন।

হোম লোন

ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য হোম লোন দিয়ে থাকে। এই লোনটি প্রবাসীরা বাড়ি কেনা, বাড়ি মেরামত বা বাড়ি নির্মাণের জন্য নিতে পারেন। প্রবাসীর আয় এবং অন্যান্য বিষয়ের উপর নির্ভর করবে আপনার লোনের পরিমাণ কত হবে এবং এর শর্তাবলী কি হবে।

শিক্ষা লোন

ডাচ বাংলা ব্যাংক প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য শিক্ষার খরচ জোগাড় করতে এই লোন প্রদান করে থাকে যা প্রবাসী ভাইদের সন্তানদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং পরবর্তীতে কিস্তির মাধ্যমে তারা এই ঋণ পরিশোধ করতে পারে।

ব্যক্তিগত লোন

প্রবাসীরা ডাচ-বাংলা ব্যাংক থেকে ব্যক্তিগত লোন নিতে পারেন কারণ ডাচ-বাংলা ব্যাংক প্রবাসীদের জন্য ব্যক্তিগত লোনের ব্যবস্থা করে থাকে। আর এই লোন প্রধানত শিক্ষা, চিকিৎসা বা বিবাহের খরচের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন।

বুরো বাংলাদেশ প্রবাসী লোন

বুরো বাংলাদেশ নামে একটি সরকারি সংস্থা রয়েছে যা ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর এই সংস্থাটির মূল উদ্দেশ্য হল নিম্ন আয়ের মানুষদের বিভিন্নভাবে আর্থিকভাবে সেবা প্রদান করা এবং বাংলাদেশের দরিদ্র বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করা। বুরো বাংলাদেশ যে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করে তা হল -

  • ক্ষুদ্রঋণ
  • সঞ্চয়
  • বীমা
  • শিক্ষা ও
  • প্রশিক্ষণমূলক প্রোগ্রাম ইত্যাদি

আর বুরো বাংলাদেশ প্রবাসীদের বিশেষ ধরনের ঋণের ব্যবস্থা করে যা মূলত যারা বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী শ্রমিক রয়েছেন তাদের পারিবারিক আর্থিক সহায়তার জন্যই প্রদান করা হয়ে থাকে। আর এই ঋণের মূল লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য হল প্রবাসী শ্রমিকদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা এবং তাদের পরিবারকে অর্থনৈতিকভাবে সহযোগিতা করা। বুরো বাংলাদেশ প্রবাসী লোনের বেশ কয়েকটি সুবিধা রয়েছে এগুলো হলো -

আরো পড়ুনঃ  বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি

বুরো বাংলাদেশ প্রবাসী লোন এর মাধ্যমে প্রবাসী শ্রমিকরা তাদের জীবনযাত্রা এবং পরিবারের সচ্ছলতার জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা, অবসান,খ্যাতে ব্যয় করতে পারেন।

বুরো বাংলাদেশ লোন প্রবাসী শ্রমিকদের আর্থিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সাহায্য করে থাকে। এখানে শ্রমিকদের আয়ের নির্দিষ্ট একটি অংশ জমা থাকে এবং এই জমাকৃত অর্থগুলো প্রয়োজনের সময় তারা ব্যবহার করতে পারে।

প্রবাসী শ্রমিকেরা দেশে ফিরে এসে যদি ব্যবসা শুরু করতে চান তাহলে বুরো বাংলাদেশ প্রবাসীদের লোন ব্যবস্থা করে থাকেন যার মাধ্যমে প্রবাসীরা লোন নিয়ে ব্যবসা শুরু করতে পারেন।

বুরো বাংলাদেশের ঋণের অসুবিধা

বুরো বাংলাদেশ থেকে যদি আপনি ঋণ গ্রহণ করেন তাহলে কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন এগুলো হল -

প্রবাসীরা অনেক সময় বিদেশে গিয়ে কাজ করতে পারেন না বা অনেক সময় তারা বিভিন্ন কারণে চাকরি হারান তখন তারা ঋন পরিশোধের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

প্রবাসী শ্রমিকদের অনেক সময় বেশ কিছু কাগজপত্র বা ডকুমেন্টস এবং বিভিন্ন জামানত সংগ্রহ করতে সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

প্রবাসী শ্রমিকরা লোন নেওয়ার সময় অবশ্যই প্রবাসী লোন এর সুবিধা ও শর্তাবলী সম্পর্কে সঠিকভাবে জেনে তারপরে লোন গ্রহণ করবেন না হলে কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন।

বুরো বাংলাদেশ প্রবাসী লোন গ্রহণ করার সময় অবশ্যই আপনাকে সচেতন হতে হবে এবং বুরো বাংলাদেশ লোন কর্তৃক যে শর্তাবলী দিবে তা আপনাকে মেনে চলতে হবে। তাহলে আপনি ঋণ গ্রহণ করে আপনার কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সরকারি কি

যারা বিদেশে যেতে চান তারা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে লোন নিতে পারেন। আর এই লোন নেওয়ার পূর্বে আপনাদের মাথায় একটি প্রশ্ন আসে আর তা হল প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক সরকারি কিনা! প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বাংলাদেশের একটি মালিকানাধীন ব্যাংক অর্থাৎ এটি সরকারি ব্যাংক যা প্রবাসীদের জন্য বিশেষভাবে আর্থিক সহায়তা প্রদান করে থাকে।

প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে কত টাকা লোন নেওয়া যায়

আপনারা যারা লোন নিয়ে বিদেশে যেতে চান তারা প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক থেকে বিদেশ যাওয়ার জন্য যে ঋণ পাবেন তার নাম হলো অভিবাসন ঋণ প্রকল্প এবং এই ঋণ নেওয়ার পরে আপনাকে দুই বছরের মধ্যে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এবং এই ঋণের সুদ হল শতকরা নয় ৯ শতাংশ থেকে বার ১২ শতাংশ। তবে এই ব্যাংকের বিভিন্ন অংকের ঋণ দেওয়া হয়ে থাকে তবে আপনি সর্বোচ্চ ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবেন এবং আপনি দুই ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ পাঁচ ৫ বছরের মধ্যে এই লোন বা ঋন পরিশোধ করতে পারবেন।

শেষ কথা 

প্রিয় প্রবাসী ভাই ও বোনেরা, আমি আজকে আমার পোষ্টের মাধ্যমে আপনাদের বিভিন্ন ব্যাংকের লোন সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনারা আমার এই আর্টিকেলটি পড়লে কোন কোন ব্যাংক প্রবাসী লোন দেয় এবং কিভাবে লোন গ্রহণ করবেন বিস্তারিত জানতে পারবেন এবং সঠিকভাবে ঋণ নিতে পারবেন। তবে আপনাকে ঋণ গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে এবং সঠিকভাবে ঋণ গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখবেন, বাংলাদেশের সরকারি আর বেসরকারি বলে কথা নেই সকল ব্যাংকের লোন পদ্ধতি প্রায় একই রকম। আপনাকে সঠিকভাবে জেনে তারপরে লোন গ্রহণ করতে হবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url