বীমা কি ও কেন - জীবন বীমার সুবিধা
একজন ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় এমনকি তার মৃত্যুর পরেও বীমা কোম্পানির দ্বারা উপকৃত হয়ে থাকে যার কারণে বীমা কি ও কেন - জীবন বীমার সুবিধা সম্পর্কে সবাই জানতে চাই। আমি আজকে আমার আর্টিকেল এর মাধ্যমে বীমা কি ও কেন - জীবন বীমার সুবিধা সম্পর্কে আপনাদের বিস্তারিত জানানোর চেষ্টা করব। আপনারা যারা বীমা কি ও কেন - জীবন বীমার সুবিধা সম্পর্কে জানতে চান আমার আজকের পোস্ট তাদের জন্য।
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আজকে আমার এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা জানতে পারবেন বীমা কি ও কেন - জীবন বীমার সুবিধা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য। আর যদি আপনারাও মনে করেন জীবন বীমা করে উপকৃত হবেন তাহলে আমার আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
জীবন বীমা কি ও কেন
জীবন বীমা হল বীমা গ্রহিতা এবং একটি বীমা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি। এই চুক্তির মাধ্যমে সাধারণত অর্থের বিনিময়ে জীবন, বিভিন্ন মালামাল বা সম্পদের ভবিষ্যৎ ক্ষয়ক্ষতির নির্দিষ্ট ঝুঁকি ন্যায়সংগতভাবে স্থানান্তর করা। বীমা আবার ইন্সুরেন্স নামেও পরিচিত। আবার বীমার সংজ্ঞা অন্যভাবে দিতে গেলে বলা যায়, জীবন বীমা হল একটি অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা, যেখানে একজন ব্যক্তি এবং একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কার্যবিধি পরিচালনা করা এবং সেখানে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ অথবা প্রিমিয়াম প্রদান করা হয়।
আর এই জমানো অর্থের বিনিময়ে উক্ত প্রতিষ্ঠান সেই ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ভবিষ্যতে যে কোন ঝুঁকি গ্রহণ করে থাকে। জীবন বীমা এই মর্মে নিশ্চয়তা প্রদান করে যে গ্রহীতার যদি মৃত্যু হয় তাহলে প্রিমিয়াম জমা করার বিনিময়ে বীমা গ্রহীতার উত্তরাধিকার কে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করবে। গ্রহিতা সাধারণত প্রিমিয়াম জমা করে সেটা এককালীন হতে পারে আবার নির্দিষ্ট সময়ের জন্যও হতে পারে।
বীমার জনক কে
ফরেস্ট এফ-ড্রাইডেন কে বীমার জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। ১৮৮১ সাল থেকে জন এফএন তার মৃত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রুডেনশিয়াল এর দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে যখন তার পুত্র ফরেস্ট এফ ড্রাইডেন তার স্থলাভিসক্ত হন তখন তিনি অর্থাৎ ফরেস্ট এফ-ড্রাইডেন কে বীমা শিল্পের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। তিনিই প্রথম মনে করেন একজন ব্যক্তি যদি ধীরে ধীরে টাকা বা প্রিমিয়াম জমা করে তাহলে পরবর্তীতে যে কোন বিপদের সম্মুখীন হলে তিনি তার এই জমানো অর্থের বিনিময়ে উপকৃত হবেন। তাই একজন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যদি বীমা কি এবং কেন প্রয়োজন সে সম্পর্কে ধারণা রাখেন তাহলে বীমা পলিসির মাধ্যমে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান যেকোনো দুর্ঘটনা জনিত সময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণে অর্থ পেয়ে যাবেন।
জীবন বীমা কেন প্রয়োজন
বীমা গ্রহিতা বা প্রিমিয়াম জমাকারীর প্রধান সুবিধা হল যে কোন সমস্যার পতিত হলে মানসিক প্রশান্তি লাভ। আর এর প্রধান কারণ হলো যে বীমা করে বা প্রিমিয়াম জমা করেন তিনি তার মৃত্যুর পর তার উত্তরা ধিকার আর্থিক সমস্যার সম্মুখীন হবে না। অনেক সময় বীমা অবসর গ্রহণের পর আর্থিক সুবিধা লাভের জন্য করা হয়ে থাকে। তাই যদি আপনাদের মনে প্রশ্ন আসে বীমা কেন প্রয়োজন তাহলে আশা করি নিজেই এর উত্তর খুঁজে পাবেন।
বীমা কোম্পানিগুলো বীমা কারী বা প্রিমিয়াম জমাকারীর বিভিন্ন দুর্ঘটনা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, চুরির কারণে যদি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে বীমা কোম্পানিগুলো ক্ষতিপূরণ প্রদান করে থাকে। মনে করুন, একজন ব্যক্তি জীবন বীমা পলিসি করেছেন এবং তিনি একটি নির্দিষ্ট মেয়াদে বা এককালীন টাকা জমা করে থাকেন এবং কয়েক মাস পর যদি ওই ব্যক্তি কোন দুর্ঘটনা সম্মুখীন হন তাহলে বীমা কোম্পানিগুলো তাদের শর্ত মোতাবেক বীমা কারীর ওয়ারিশগণকে অর্থ দিতে বাধ্য থাকবে।
আরো পড়ুনঃ মাসে লাখ টাকা আয় করার ১২টি জনপ্রিয় উপায়
আর এইভাবে একজন বীমা গ্রহীতা বা প্রিমিয়াম জমাকারি ব্যক্তি তার জীবদ্দশায় এমনকি তার মৃত্যুর পরেও তার পরিবারের সদস্যদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে থাকে। আর এই জন্যই বাংলাদেশ সরকার বীমা পলিসি উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। আর আমরা বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজের এবং পরিবারের ভবিষ্যতের আর্থিক কথা মাথায় রেখে জীবন বীমা করা উচিত। তবে আপনাকে মাথায় রাখতে হবে জীবন বীমা হল একটি আইনগত চুক্তি এই বীমা সীমাবদ্ধ থাকে তাদের শর্তের মধ্যে।
এখানে তাদের কিছু বিশেষ শর্ত থাকে আর তা হল বীমারকারী ব্যক্তি যদি আত্মহত্যা করে বা কোন যুদ্ধের কারণে মারা যায় তাহলে বীমা কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে বীমা কারি ব্যাক্তি কোন প্রকার অর্থ পাবে না। আর এগুলো বীমা কোম্পানি লিখিত বিশেষ শর্তাবলীর মধ্যে লিখিত থাকে এবং তার দায় বীমা গ্রহীতার ওপর বর্তায়। আর শর্তের বাইরে কোন দুর্ঘটনায় পতিত হলে বীমা কোম্পানি কোন প্রকার অর্থ প্রদান করে না।
বীমা কত প্রকার
জীবন বীমা একটি আর্থিক পরিকল্পনা এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠান। আমাদের দেশের অধিকাংশ ভোক্তা বীমার সাথে পরিচিত। আর আমরা সম্পত্তির বীমা করি, গাড়ির বীমা করি এবং সর্বোপরি আমরা আমাদের স্বাস্থ্যের বীমা করি। বর্তমান সমাজের সামাজিক মূল্যবোধের ওপর বিচার করলে বীমা প্রধানত দুই প্রকার। তবে অবস্থা ভেদে অনেক ধরনের বীমা রয়েছে। একজন ব্যক্তি তার ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে বীমা করে থাকে।
একজন ব্যক্তি তার দৈনন্দিন ব্যবহারিক জিনিসপত্রের ওপরও বীমা করতে পারেন। যে জিনিসপত্রের উপর বীমা করা হয় সে জিনিস যদি দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাহলে বীমা কোম্পানিগুলো তার প্রিমিয়াম এর উপর একটি নির্দিষ্ট শর্ত অনুযায়ী অর্থ প্রদান করে থাকে। তবে বীমা প্রধানত দুই প্রকার হলেও বিভিন্ন বিষয়ের ওপর নির্ভর করে বীমা ৮ প্রকারে রয়েছে। নিচে এগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো -
- জীবন বীমা
- সম্পত্তি বীমা
- দুর্ঘটনা বীমা
- অগ্নি বীমা
- স্বাস্থ্য বীমা
- ভ্রমণ বীমা
- সাধারণ বীমা
- ঘরের ইন্সুরেন্স বা বীমা
সাধারণত বীমা কে বলা হয় জেনারেল ইন্সুরেন্স আবার অনেক সময় লাইফ ইন্সুরেন্স নামেও অভিহিত করা হয়ে থাকে। আমাদের শরীরের বীমা অর্থাৎ আমাদের শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের সাথে জড়িত বা মিল আছে সেগুলো সাধারণ বীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও মেয়াদী বীমার মধ্যে রয়েছে -
- আজীবন বীমা
- দেনমোহর বীমা
- মেরেজ এন্ডাওমেন্ট বীমা
- হজ বীমা
- শিশু নিরাপত্তা বীমা
- এককালীন প্রিমিয়াম বীমা
- নিশ্চিত বোনাস মেয়াদী বীমা
- সর্বজনীন শিক্ষা বীমা
- মেয়াদী বীমা
- প্রগতিশীল মেয়াদী বীমা
- ওভারসিস ইন্সুরেন্স বীমা
- ট্রিপল পোটেকশন বীমা
- দ্বৈত নিরাপত্তা বীমা
তবে যত প্রকার বীমা থাকুক না কেন জীবন বীমা দুই ২ প্রকার। আর সকল প্রকার বীমা এই বীমার অন্তর্ভুক্ত।
জীবন বীমার সুবিধা
মানুষের জীবন ক্ষণস্থায়ী আর আমাদের এই ক্ষণস্থায়ী জীবনে জীবিকার তাগিদে আমরা বিভিন্ন স্থানে ছুটে বেড়ায় যার কারণে আমাদের প্রত্যেকের জীবন অনিশ্চিত। আর যে কোন সময় ঘটে যেতে পারে অপ্রত্যাশিত দুর্ঘটনা। আর তা ভালো হতে পারে আবার খারাপ ও হতে পারে। জীবন বীমা আমাদের পরিবারকে রক্ষা করার জন্য নিরাপত্তার ঢাল স্বরূপ। প্রতিটি মানুষের জীবনে একটি চিন্তা থাকে তা হল তার পরিবারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
প্রতিটি মানুষ চায় তার অবর্তমানে যেন তার পরিবার নিরাপদে থাকে, আর্থিক কষ্ট বা যে কোন সমস্যার সম্মুখীন যেন না হয়। আর জীবন বীমা হল এরকম একটি নিশ্চিত ভবিষ্যৎ যা আপনার পরিবারকে যে কোন বিপদে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করবে। তাই আসুন জীবন বীমা আমাদের কেন করা উচিত তা আমরা আরো বিস্তারিতভাবে জেনে নেই।
আপনার পরিবারের সুরক্ষা
আপনি আপনার পরিবারকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসেন যার কারণে আপনি যা উপার্জন করেন তা আপনার পরিবারের পেছনে ব্যয় করেন। আপনি এখনো উপার্জন করছেন এবং আপনার পরিবারের পেছনে তা ব্যয় করছেন কিন্তু যদি একটি দুর্ঘটনা ঘটে তখন আপনার পরিবারের কি হবে আর এই কথা মাথায় রেখে আপনার পরিবারের সুরক্ষার জন্য আপনাকে জীবন বীমা করতে হবে। আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন যারা যথেষ্ট পরিমাণে ইনকাম করতে পারেন না যার কারণে তাদের মৃত্যুর পর তাদের পরিবারের সদস্যদের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ফ্রিল্যান্সিং এ কোন কাজের চাহিদা বেশি জেনে নিন
আর আপনি যদি মনে করেন আপনার এই অল্প সঞ্চয়ের মধ্যে দিয়েও অল্প কিছু প্রিমিয়াম বা সঞ্চয় জীবন বীমা করবেন তাহলে আপনার যে কোন দুর্ঘটনা বা মৃত্যুর পরে আপনার পরিবারের সদস্যদের সামনে এই জীবন বিমাই হবে রক্ষাকারী কবজ।
নিরাপত্তা প্রদান
আপনি আপনার জীবনের সঞ্চয়ের অল্প কিছু টাকা জীবন বীমা রেখে দিতে পারেন যা আপনার ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত করতে সহায়তা করবে। আর আপনি যদি দীর্ঘমেয়াদি কোন পরিকল্পনা বেছে নেন এবং আপনার অল্প সঞ্চিত টাকা থেকেই কিছু জমা করেন তাহলে পরবর্তী সময়ে আপনি আর্থিকভাবে নিরাপদ থাকতে পারবেন।
বার্ধক্য জীবন সুরক্ষিত
আমরা কেউ জানিনা আমাদের আগামী দিন কেমন যাবে! তাই আপনি সুস্থ থাকতে যখন ইনকাম করবেন তখনই তার কিছু একটা অংশ জীবন বীমা প্রিমিয়াম হিসাবে জমা করতে পারেন। কারণ কখন কার ভাগ্যে কি হয় বলা মুশকিল। এমনও হতে পারে আজ আপনার টাকা আছে সবাই আপনাকে আদর করছে, কিন্তু যখন আপনি বাধ্যকে উপনীত হবেন, আপনার টাকা পয়সা থাকবে না, তখন আপনাকে কেউ পছন্দ করবে না। তাই আপনার বার্ধক্য জীবন সুরক্ষিত করতে আপনার প্রিমিয়াম জমা করা উচিত তাহলে আপনার বার্ধক্য জীবন হবে সুরক্ষিত।
ঋণ পরিশোধ
আপনি যদি জীবন বীমা করেন তাহলে আপনার যেকোন বিপদে যদি কখনো ঋণগ্রস্ত হয়ে থাকেন তাহলে এই চুক্তি শেষে আপনি যে টাকা পাবেন সেই টাকা দিয়ে আপনি আপনার সংকটময় মুহূর্ত কাটিয়ে উঠতে পারবেন এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারবেন। তাই আজকের একটু উপার্জন আগামী দিনের কথা চিন্তা করে সঞ্চয় করুন।
সাশ্রয়ী হন
জীবন বীমা হল এমন একটি পলিসি এখানে আপনি যদি টাকা জমা করেন তাহলে আপনি অনেক বেশি সাশ্রয়ী হতে পারবেন। আর এর প্রধান কারণ হলো আপনার মাথায় চিন্তা থাকবে আমাকে সংসার চালানোর পরে একটু টাকা জমা করতে হবে। আর এই জমা করার অর্থ জোগাড় করতে আপনাকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস কেনা বাদ দিতে হবে এক্ষেত্রে আপনি অনেক বেশি সাশ্রয়ী হতে পারবেন।
আপনার সম্পত্তি সুরক্ষিত থাকবে
আপনি যদি জীবন বীমা করেন তাহলে আপনি যে টাকা জমা করবেন আপনার মৃত্যুর পরে আপনার পরিবারের সদস্যগণ সেই পরিমাণ অর্থ পেয়ে যাবেন। তাই জীবদ্দশায় আপনি যদি আপনার সম্পত্তি কারো কাছে বন্ধক রাখেন তাহলে আপনার মৃত্যুর পরে আপনার পরিবার মোটা অংকের টাকা দিয়ে আপনার সম্পত্তি রক্ষা করতে পারবে।
সন্তানদের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত
প্রতিটি বাবা-মা চায় তার সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত থাক। আর আপনি নিশ্চয়ই এমনই একজন লোক যে আপনি আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ সুনিশ্চিত দেখতে চান! আর যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে আপনি এখনই একটি জীবন বিমার পলিসি কিনে রাখুন আর এই জীবন বীমার পলিসি হবে আপনার সন্তানের স্বপ্ন পূরণ এর বড় হাতিয়ার। আর আপনি যদি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান তবুও আপনার এই টাকা দিয়ে আপনার সন্তান উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হতে পারবে।
জীবন বীমা কি এবং কিভাবে কাজ করে
জীবন বীমা হল একটি কোম্পানি যা একজন গ্রহীতার নিকট থেকে বা একটি কোম্পানির সাথে আইনগত চুক্তি। আর এই চুক্তির মাধ্যমে বীমা কোম্পানিগুলো গ্রহীতার নিকট থেকে অর্থ বা প্রিমিয়াম জমা করে এবং সেই মোতাবেক পরবর্তী সময়ে অর্থ প্রদান করে থাকে অর্থাৎ বীমা কারি একজন বীমাকৃত ব্যক্তির মৃত্যুর পরে তাদের নির্দিষ্ট শর্ত অনুযায়ী এবং নির্দিষ্ট সময়ের পরে জমানো প্রিমিয়ামের বিনিময়ে কিছু অর্থ প্রদান করে থাকে।
বীমা কোম্পানি গ্রাহকের নিকট থেকে কিছু অর্থ নিয়ে থাকে যা এককালীন হতে পারে বা মাসিক ভিত্তিতেও হতে পারে এবং নির্দিষ্ট একটি মেয়াদ পর্যন্ত এই টাকাগুলো জমা রাখে। এরপরে বীমা কোম্পানিগুলো তাদের শর্ত মোতাবেক গ্রাহককে তাদের প্রাপ্য দিয়ে থাকে আর এভাবেই বীমা কোম্পানিগুলো কাজ করে থাকে।
জীবন বীমা ম্যাচুরিটি কি
আপনারা যারা বীমা কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত বা বীমা করে থাকেন তাদের মাথায় একটি প্রশ্ন আসে জীবন বীমা ম্যাচুরিটি কি! আর আপনারা যারা এ সম্পর্কে জানতে চান আমি তাদের জন্য বলছি, জীবন বীমার ম্যাচুরিটি বলতে বোঝানো হয় আপনি যে তারিখে বীমা কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়েছেন অর্থাৎ বিমা গ্রহীতা হয়েছেন এবং যে কয় বছরের জন্য বীমা কোম্পানির সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন সেই কয় বছর পূর্তির মেয়াদ শেষ হলে আপনি অর্থ পাবেন বা আপনি যে প্রিমিয়াম জমা করেছেন তা রিটার্ন পাবেন।
আরো পড়ুনঃ বর্তমানে ফ্রিল্যান্সিং এর সব থেকে ডিমান্ডেবল সেক্টর কোনটি
আর আপনি যে তারিখে রিটার্ন পাবেন সেই তারিখটি হল জীবন বীমার ম্যাচুরিটি অর্থাৎ এই তারিখ পরে আপনি আপনার নির্দিষ্ট অর্থ পেয়ে যাবেন। মনে করুন, আপনি একটি বীমা কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন ১০ বছরের জন্য তাহলে আপনি যদি সেই বিমার সাথে যুক্ত হন ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসের এক ১ তারিখে তাহলে আপনি ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে আপনার বীমার টাকা পরিপূর্ণভাবে পেয়ে যাবেন। আর ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসের ১ তারিখে আপনার বীমা ম্যাচুরিটি হবে। তাহলে এবার নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন জীবন বীমা ম্যাচুরিটি কি।
জীবন বীমা কিভাবে কাজ করে
জীবন বীমা নির্দিষ্ট শর্ত মোতাবে ক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রিমিয়াম জমা রাখে এবং এই জমাকৃত প্রিমিয়াম বা অর্থের বিনিময়ে জীবন বীমা তার গ্রাহককে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ প্রদান করে থাকে। যেমন বিমাকারী ব্যক্তির এককালীন অথবা মাসিক ভিত্তিতে কিছু টাকা বা প্রিমিয়াম জমা করতে পারেন এবং তিনি তার জীবদ্দশায় অথবা মৃত্যু পরবর্তী কালীন এই টাকা পেয়ে যাবেন। তবে জীবন বীমার পে আউট সাধারণত বিতরণ করা হয়ে থাকে তিনটি উপায়ে যেমন -
- এক মুঠো আকারে
- বার্ষিক আকারে
- একটি সংরক্ষিত সম্পদের একাউন্টের মাধ্যমে।
তবে মনে রাখবেন, আপনি বীমা কোম্পানির সাথে যেভাবে চুক্তিবদ্ধ হবেন বীমা কোম্পানিগুলো আপনাকে সেভাবেই আপনার প্রিমিয়াম প্রদান করবে। তবে আপনি আপনার ভবিষ্যৎ জীবনকে সুন্দর করতে অবশ্যই বীমা কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হবেন।
জীবন বীমা দুই প্রকার কি কি
আপনারা অনেকেই জেনে থাকবেন যে জীবন বীমা আসলে প্রধানত দুই প্রকার। তবে মেয়াদের ভিত্তিতে জীবন বীমা বিভিন্ন প্রকারের হয়ে থাকলেও প্রধানত দুই প্রকার ধরা হয়ে থাকে এবং আর যত ধরনের বীমা রয়েছে সব এই বীমান অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে। জীবন বীমার এই দুই প্রকার হলো -
- মেয়াদী জীবন বীমা
- স্থায়ী পরিকল্পনা বা বীমা
১৯৮০ সাল থেকে জীবন বীমা বেশি প্রচলিত হয়ে উঠেছে কারণ এই জীবন বীমা বিভিন্ন ধরনের মেয়াদী পরিকল্পনা এবং ঐতিহ্যগত জীবন-নীতির পাশাপাশি সুদ সংবেদনশীল পণ্য অফার করে থাকে। তাই আপনি যদি বীমা করতে চান তাহলে এই দুই প্রকারের যেকোনো একটি বীমা করতে পারেন। মনে রাখবেন, আজকের অল্প সঞ্চয় আপনার ভবিষ্যতের সম্বল।
সবচেয়ে কম দামি জীবন বীমা কোনটি
আপনারা যারা বীমা কোম্পানি সঙ্গে যুক্ত হবেন তাদের অবশ্যই যুক্ত হওয়ার আগেই জানতে হবে কোন ধরনের বীমা করলে আপনি বেশি লাভবান হবেন এবং কোন ধরনের জীবন বীমা ভালো বা সবচেয়ে কম দামি জীবন বীমা কোনটি। কারণ আপনি আপনার কষ্ট অর্জিত অর্থ জমা করবেন। তাহলে অবশ্যই আপনাকে বীমা কোম্পানির সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য ভালোভাবে জেনে তারপরে সেই কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হতে হবে। তো পাঠক বৃন্দ মনে রাখবেন, যত প্রকারের বীমা রয়েছে তার মধ্যে মেয়াদী জীবন বীমা হল সবচেয়ে সস্তা ধরনের জীবন বীমা পলিসি।
কোন ধরনের জীবন বীমা ভালো
আপনারা যারা বীমা কোম্পানির সঙ্গে যুক্ত হতে চান এবং আপনার ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে চান আমি তাদের উদ্দেশ্যে বলছি, বীমা প্রধানত দুই প্রকার যথা মেয়াদী জীবন বীমা এবং পুরো জীবন বীমা। মনে রাখবেন, আপনি যখন আপনার কষ্ট অর্জিত অর্থ জমা করবেন বা প্রিমিয়াম জমা করবেন তবে একটি ভালো বীমা করবেন। এক্ষেত্রে আপনার পুরো জীবন বীমা হল একটি ভালো বীমা পলিসি। মনে রাখবেন, এই জীবন বীমা আপনার জীবদ্দশায় অথবা আপনার মৃত্যু পরবর্তী কালীন সময়ে আপনার পরিবারকে ঝুঁকির হাত থেকে রক্ষা করবে
শেষ কথা
প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমি আমার আর্টিকালের মাধ্যমে আপনাদের সামনে বীমা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আপনি আপনার ভবিষ্যত নিরাপদ করতে এবং আপনার সন্তানের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে অবশ্যই জীবন বীমা করতে পারেন। মনে রাখবেন, আপনার আজকের একটু সঞ্চয় আগামী দিনের সম্বল। কোন দুর্ঘটনা বসত যদি আপনার তেমন কোন ক্ষতি হয়ে যায় তাহলে আপনার পরিবারের ক্ষতি হবে না, আপনার পরিবার থাকবে নিশ্চিন্ত।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url