বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র, ফোন নাম্বার ও ঠিকানা জেনে রাখুন

বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র, ফোন নাম্বার ও ঠিকানা আমাদের অবশ্যই জেনে রাখা দরকার কারণ আমরা প্রত্যেহিক জীবনে চলার পথে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকি। আর যে কোন বাধা বা সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে আইনি সহায়তা প্রয়োজন হয়। আমাদের সামনে যখন কোন সমস্যা আসে তখন আমরা মানবিক বোধগুলো হারিয়ে ফেলি যার কারণে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। 

Image

তাই আমাদের যদি বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র, ফোন নাম্বার ও ঠিকানা জানা থাকে তাহলে অতি সহজে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাগুলোর নিকট থেকে সহায়তা নিতে পারি। আজকে আমি আমার আর্টিকালের মাধ্যমে  বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র, ফোন নাম্বার ও ঠিকানা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করব।

আইন কি

আইন হলো এমন একটি ব্যবস্থা যার মাধ্যমে মানুষকে সুষ্ঠু, স্বাধীন ও সুশৃংখলভাবে জীবন পরিচালনার জন্য নিয়ম-কানুন এবং তার যথাযথ প্রয়োগ ব্যবস্থা। আইন শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হলো ল Law যা উদ্ভব হয়েছে লেগ Leg নামক শব্দ থেকে। লেগ Leg এর আভিধানিক অর্থ হলো অপরিবর্তনীয়, স্থির এবং সবার জন্য প্রযোজ্য। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় আইন কে সর্বভ্রম শক্তি এবং সকলের জন্য অবশ্য পালনীয় হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। আইনের প্রয়োগ বিভিন্নভাবে হতে পারে যেমন এককভাবেও হতে পারে আবার চুক্তিবদ্ধ ভাবেও হতে পারে।

এক কথায় যেকোনো ব্যক্তি যেভাবেই বিপদের সম্মুখীন হোক না কেন সে সর্ব অবস্থায় আইনের আশ্রয় লাভ করতে পারবে। অন্যভাবে আইনের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা যায়, আইন হলো রাষ্ট্র কর্তৃক স্বীকৃত বিশেষ জ্ঞান বা দক্ষতা যা মানুষ সামাজিক রীতিনীতি সুষ্ঠু পরিচালনা জন্য প্রয়োগ করে থাকে। বাংলাদেশের আইন বিধান মতে, কেউ যদি কোন বিপদে সম্মুখীন হয় তাহলে সে বাংলাদেশ আইনে সহায়তা কেন্দ্র, ঠিকানা অনুযায়ী আইন সংস্থার নিকট আবেদন করতে পারে এবং সহায়তা নিতে পারে।

আরো পড়ুনঃ  গাড়ি দুর্ঘটনার আইনজীবী সম্পর্কে জেনে নিন

বাংলাদেশ আইনস সহায়তা কেন্দ্রগুলো আবেদন গ্রহণ করে এবং সেই অনুযায়ী সহায়তা প্রদান করে থাকে। আইনের উদ্দেশ্য হল মানুষকে সুস্থ, সুশৃংখল এবং সুষ্ঠুভাবে জীবন পরিচালনা করার জন্য একটি নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে আবদ্ধ করে রাখা। শুধু মানুষকে নয়, রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য আইন প্রয়োগ প্রয়োজন হয়। আইন প্রতিষ্ঠার প্রধান উদ্দেশ্য হল আইন অমান্যকারীকে শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা। রাষ্ট্র এবং সেই রাষ্ট্রের মানুষ সকলের জন্যই আইন বাধ্যতামূলক।

অনেক সময় আমরা আইন বলতে সামাজিকভাবে স্বীকৃত বিভিন্ন রীতিনীতি কে বোঝায় সেগুলো লিখিত বা অলিখিত হতে পারে। হুগো গ্রোসিয়াস ছিলেন একজন অলন্দাজ প্রজাতন্ত্রের আইন বিশারদ। তিনি ১৫৮৩ সালের ১০ এপ্রিল থেকে ১৬৪৫ সালের ২৮ আগস্ট পর্যন্ত আইন বিশেষজ্ঞ ছিলেন। তিনি আন্তর্জাতিক আইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। ফ্রান্সিসকো দে ভিতোরিয়া আর আলবার্তো জেন্তেলির সাথে মিলে প্রাকৃতিক আইনের প্রবর্তন করেন।

সামাজিক জীবনে মানুষ যেসব আইন বা রীতিনীতি মেনে চলে তাকে বলা হয় সামাজিক আইন। গ্রিক দার্শনিক অ্যারিস্টটলের মতে, যেকোনো ব্যক্তির শাসনের চেয়ে আইনের শাসন ভালো। আর বাংলাদেশে রয়েছে বিভিন্ন আইন সহায়তা কেন্দ্র যার ফোন নাম্বার এবং ঠিকানা আমাদের জেনে রাখা প্রয়োজন।

বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র এবং ঠিকানা

বাংলাদেশে বসবাসকারী সকল মানুষের জন্য বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র এবং ঠিকানা জানা প্রয়োজন। আর এই ঠিকানা যদি আমাদের জানা না থাকে তাহলে যে কোন বিপদে পড়লে আমাদের মাথা ঠিক থাকে না বারবার আমরা ভাবতে থাকি কোথায় যাবে এবং কি করব। আমাদের সমাজকে প্রতিনিয়ত নানা সমস্যা সৃষ্টি হয় যার কারণে আমরা সবদিক ভুলে যায় তাই আমাদের বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র, ফোন নাম্বার ও ঠিকানা জানা একান্ত প্রয়োজন।

কোন কোন বিষয়ে আইন সহায়তা পাবেন

আমরা বাংলাদেশে নাগরিক হিসেবে যেকোনো সমস্যার সম্মুখীন হলে আইনের সহায়তা পাব। আমাদের সমাজে প্রতিনিয়ত ঘটে যায় নানান ঘটনা। চারিদিকে চোখে পড়ে নানান অপরাধ। আর যে সকল অপরাধ থেকে পরিত্রাণ পেতে আপনি আইনের সহায়তা পাবেন তা হল - হত্যা, গুম, ধর্ষণ, বাল্যবিবাহ, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন, মানব পাচার, যে কোন থানা হেফাজতে হত্যা ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি যেকোনো বিষয়ে আইনি সহায়তা পাবেন আর এই বিষয়ে সহায়তা পেতে আপনাকে অবশ্যই বাংলাদেশ আইন সহায়তা কেন্দ্র, ফোন নাম্বার এবং ঠিকানা জানতে হবে।

বাংলাদেশ আইন সহায়তা মানবাধিকার সংস্থা

বাংলাদেশের মানুষের নিরাপত্তা বিধানের জন্য আইন বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। এর সাথে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা রয়েছে যারা দেশের সর্ব স্তরের মানুষের জন্য সরকারের সাথে তালে তাল মিলিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। সবচেয়ে বেশি এসব সংস্থাগুলো কাজ করে নারীদের ন্যায় বিচার পাইয়ে দিতে। আর এসব সংস্থাগুলো সবচেয়ে বেশি কাজ করে নারী নির্যাতন, ধর্ষণ, খুন, এসিড নিক্ষেপ, যৌতুক মামলা, হত্যা বিভিন্ন মিথ্যা মামলা ইত্যাদি বিষয়ে।

তবে বেসরকারি সংস্থাগুলো সাধারণত কাজ করে তাদের নিজস্ব নিয়মে বিশেষ করে যারা তাদের সংস্থার সদস্য তাদের জন্য নিরলস ভাবে কাজ করে। তাই আমি আমার আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের জন্য তাদের ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার দিতে পারবো না। তবে আপনারা আপনাদের নিকটস্থ অফিসে গিয়ে খোঁজ নিতে পারেন। বর্তমানে আপনি যেসব স্থান থেকে ভালো মানের আইনি সেবা পাবেন আমি তাদের ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার আপনাদের সামনে তুলে ধরব।

জাতীয় মানবাধিকার কমিশন

বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ আর জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এই দেশের জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে যেকোন মানুষের আইনি সহায়তা প্রদান করে থাকে। এছাড়া জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিদেশী নাগরিকদের পর্যন্ত আইনতা প্রদান করে থাকে। এই সংস্থাগুলো নিরলস ভাবে কাজ করে গ্রামের সাধারণ মানুষের জন্য। এছাড়াও কৃষক, শ্রমিক, শিক্ষিত, অশিক্ষিত, সমতলের পাহাড়ি জনগোষ্ঠী সব ধরনের লোকের জন্য জাতীয় মানবাধিকার আইন কাজ করে থাকে।

যে ব্যক্তি সমস্যার সম্মুখীন সে ব্যক্তি ছাড়াও যদি অন্য ব্যক্তি তার পক্ষ থেকে আইনের সাহায্য চেয়ে থাকে তাহলে ও এই জাতীয় মানবাধিকার কমিশন কাজ করে থাকে। আপনারা যারা জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের ঠিকানা পেতে চান তাদের জন্য ঠিকানা প্রদান করা হলো -

অফিসের ঠিকানা

বিটিএমসি (BTMC) ভবনের নবম ৯ম তলা, 
৭/৯ কাওরান বাজার, ঢাকা ১২১৫।

ফোন নাম্বারঃ

চেয়ারম্যানঃ ৫৫০১৩৭১৩
সচিবঃ ৫৫০১৩৭১৬
পর্যবেক্ষণ সদস্যঃ ৫৫০১৩৭১৫
ফ্যাক্সঃ ৫৫ ০১ ৩৭২৫
পিএ বি এক্সঃ ৫৫০১৩৭২৬ থেকে ২৮ পর্যন্ত

আইন ও সালিশ কেন্দ্র, আসক

বাংলাদেশের যে কোন নাগরিক বাংলাদেশের আইনসহায়তা কেন্দ্রে গিয়ে আইন সহায়তা নিতে পারে। আসক হল একটি বেসরকারি সংস্থা যা বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষের জন্য একান্ত ভাবে কাজ করে যাচ্ছে বিশেষ করে নারী নির্যাতন, বাল্যবিবাহ ও শিশু নির্যাতন নিয়ে কাজ করে থাকে। আইন ও সালিশ কেন্দ্রে সহায়তা পেতে হলে আপনাকে সরাসরি অফিসে গিয়ে যোগাযোগ করতে হবে।

অফিসের ঠিকানা

লালমাটিয়া, ব্লক বি, ২/২৬ ঢাকা।

ফোন নাম্বারঃ ০-২-৮১০০১৯২, ৮১০০১৯৫,৮১০০১৯৭।

মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭১৪০২৫০৬৯।

বাংলাদেশ লিগাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, ব্লাস্ট

ব্লাস্ট বাংলাদেশের বেসরকারি আইনগত সহায়তা প্রদানকারী সর্ববৃহৎ একটি সংস্থা যা দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, নারী, শিশু এবং পুরুষদেরকে আইনি পরামর্শ, মধ্যস্থতা এবং মামলা দায়ের সংক্রান্ত যাবতীয় আইনি সহায়তা প্রদান করে থাকে। অসহায় মানুষকে আইনগত সহায়তা প্রদানের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে এই প্রতিষ্ঠানটি যাত্রা শুরু করে ১৯৯৩ সালে। এই সংগঠনে মোট ৩০০ জন কর্মী এবং ২৫০০ জন স্বেচ্ছাসেবী প্যানেল আইনজীবী সম্পৃক্ত রয়েছেন।

বর্তমানে এই সংস্থাটি প্রধান কার্যালয় ছাড়া ও সারাদেশে মোট ১৯ টি জেলায় কার্যক্রম এবং আইন সহায়তা ক্লিনিক এর মাধ্যমে আইন সহায়তা প্রদান করে আসছে। এটি নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত আইন সহায়তা দিয়ে থাকে। এই সংস্থাটি তৃণমূল পর্যায়ের মানবাধিকার সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনি পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তি মামলা ও মধ্যস্থতা পরিচালনা করে। এছাড়াও ব্লাস্ট সাধারণত পারিবারিক দেওয়ানী, ভূমির মালিকানা এবং সংবিধান বিষয়ক ইসুগুলো নিয়েও আইনি পরামর্শ এবং বিভিন্ন সহায়তা প্রদান করে থাকে।

এর পাশাপাশি আইন ও নীতি সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের অধিকারের কার্যকর সুরক্ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ব্লাস্ট গবেষণা এবং এডভোকেন্সি করে থাকে। এ সংস্থাটি লিঙ্গ,ধর্ম এবং প্রতিবন্ধীতা বিষয়ক বৈষম্য রোধ করতে বিভিন্ন মামলা পরিচালনা করছে। এছাড়াও ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, প্রতিবন্ধীতা, যৌনতা ও পেশার ভিত্তিতে বিদ্যমান বৈষমামুলক চর্চা রোধে আইন সংস্কারের উদ্দেশ্যে নিয়মিত এডভোকেন্সি পরিচালনা করে থাকে।

মোটকথা এই বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, ব্লাস্ট নামক এই সংস্থাটি প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের অধিকার, আন্তর্জাতিক সনদ বা ইউএন সিআরপিডি এর আলোকে কাজ করে থাকে। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১১ শতাংশ সংখ্যালঘু যারা ধর্মীয়, জাতিগত এবং লিঙ্গ ভিত্তিক পরিচয় এবং ভৌগোলিক অবস্থার কারণে মূলধারা থেকে অনেকটা পিছিয়ে তাদের জন্যও এই সংস্থা কাজ করে থাকে।

অফিসের ঠিকানা

ওয়াইএমসিএ (YMCA), 

ডেভেলপমেন্ট সেন্টার, 

চতুর্থ ও ষষ্ঠ তলা, 

১/১ পাইওনিয়ার রোড, 

কাকরাইল, ঢাকা ১০০০।

ইমেইল ঠিকানা - mail@blast.org.bd

ফোন নাম্বার - ০২৮৩৯১৯৭০ - ২

ফ্যাক্স - ০০৮৮-০২-৮৩৯১৯৭৩

ওয়েবসাইট ঠিকানা

www. blast.org.bd

লিগ্যাল এইড (ব্লাস্ট) এর কাজ

লিগ্যাল এইড অর্থাৎ বাংলাদেশ লিগাল এড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, ব্লাস্ট একটি সর্ববৃহৎ বেসরকারি আইন সহায়তা প্রদানকারী সংস্থা তাই কোনো ব্যাক্তি যদি আর্থিকভাবে অসমর্থবান হয় এবং ন্যায় বিচার না পায় তাহলে সে এই সংস্থার নিকট গিয়ে যথাযথ আইনি সহায়তা পেতে পারে।বাংলাদেশ লিগাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, ব্লাস্ট যে সমস্ত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে তা নিচে পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো -

  • বর্তমানে এর প্রধান কার্যালয় ছাড়াও সারাদেশে ১৯টি জেলায় জেলা কার্যালয় আইনি সহায়তা ক্লিনিক এর মাধ্যমে আইন সহায়তা প্রার্থীদের নিম্ন আদালত থেকে শুরু করে সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত আইন সহায়তা দিয়ে থাকে।
  • মামলা সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ বাংলাদেশ লিগাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট, ব্লাস্ট বহন করে থাকে।
  • গ্রাহকের কোন প্রকার খরচ ছাড়াই ওকালতনামা প্রদান করে থাকে।
  • এই সংস্থা তৃণমূল পর্যায়ে মানবাধিকার সচেতনতা বৃদ্ধি, আইনি পরামর্শ সহায়তা প্রদান, বিকল্প বিরোধ নিস্পতি, মামলা ও মধ্যস্থতা পরিচালনা করে।
  • দরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য মামলা দায়ের করতে সরকারি খরচে পরিচালনা করে থাকে।
  • গ্রাহককে আইন জীবীর কোন ফৌজদারি মামলা থাকে তাহলে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ও এই সংস্থা নিজ দায়িত্বে দিয়ে থাকে।
  • এই সংস্থা সাধারণত পারিবারিক, দেওয়ানি, ভূমির মালিকানা এবং সংবিধান বিষয়ক ইসুগুলো নিয়ে আইনি পরামর্শ ও সহায়তা দিয়ে থাকে।
  • নারী এবং শিশুদের ক্ষেত্রে যদি কোন ডিএনএ টেস্টের প্রয়োজন হয় সেটিও এই সংস্থা করে থাকে।
  • মামলার ক্ষেত্রেও কোন প্রকার ফি নেওয়া হয় না, সমস্ত খরচে এই সংস্থা বহন করে থাকে।
  • আইন পরিচালনার পাশাপাশি আইন ও নীতি সংস্কারের মাধ্যমে মানুষের অধিকারের কার্যকর সুরক্ষা নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে ব্লাস্ট গবেষণা এবং অ্যাডভোকেন্সি করে থাকে যার অংশ হিসেবে জনস্বার্থে মামলা ও পরিচালনা করে।
  • পুরুষদেরকেও বিভিন্ন আইনি পরামর্শ, মধ্যস্থতা এবং মামলা দায়ের সংক্রান্ত আইনি সহায়তা দিয়ে থাকে।
  • ধর্ম-বর্ণ, লিঙ্গ, বৈবাহিক অবস্থা, প্রতিবন্ধকতা, যৌনতা ও পেশার ভিত্তিতে বিদ্যমান বৈষমামুলক চর্চা রোধে আইন সংস্কারের উদ্দেশ্যে নিয়মিত অ্যাডভোকেন্সি পরিচালনা করে।

জাতীয় আইন সহায়তা কেন্দ্র

বাংলাদেশের নাগরিক যারা আর্থিকভাবে অসুস্থ এক কথায় যারা দরিদ্র তাদের জন্য জাতীয় আইন সহায়তা কেন্দ্র কাজ করে থাকে তবে সকল শ্রেণী পেশার লোকই এখানে সহযোগিতা আশা করতে পারে বাংলাদেশের প্রত্যেকটি নাগরিকের উচিত জাতীয় আইন সহায়তা কেন্দ্রে যাওয়া এবং সহযোগিতা কামনা করা এই সংস্থাটি সম্পূর্ণ সরকারিভাবে অর্থাৎ সরকারি খরচের সকল জনগণের সহযোগিতা করে থাকে

অফিসের ঠিকানা

১৪৫ নিউ বেলিরোড,

 জাতীয় মহিলা সংস্থা ভবনের অষ্টম তলা

 ঢাকা ১০০০।

ব্র্যাক আইন সহায়তা কেন্দ্র

ব্র্যাক বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম বেসরকারি সংস্থা বা এনজিও (NGO) যা সকল শ্রেণী পেশার লোকদের সহযোগিতা করে থাকলেও বিশেষ করে নারী, শিশু এবং হতদরিদ্র লোকদের সবচেয়ে বেশি সুবিধা প্রদান করে থাকে। এই সংস্থার কার্যক্রম বাংলাদেশের সকল জেলা, প্রত্যন্ত অঞ্চল অর্থাৎ দেশের আনাচে-কানাচের লোকদেরও সহযোগিতা প্রদান করে থাকে। বর্তমানে বাংলাদেশের ৬৪ টি জেলার প্রায় ৪১ লক্ষ লোক ব্রাক আইন সহায়তা কর্মসূচির মাধ্যমে আইন সহতা লাভ করছে।

উক্ত সংস্থাটি নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য। বর্তমানে ব্র্যাকের আইন সহায়তা কর্মসূচি জমি সংক্রান্ত বিষয়গুলো সমাধানের চেষ্টা করে যাচ্ছে। এছাড়াও কেউ যদি মিথ্যা মামলা করে, এসিড নিক্ষেপ করে, বিবাহ বিচ্ছেদ, নারী নির্যাতন, শিশু নির্যাতন সহ সকল বিষয়ে সেবা প্রদানের জন্য ব্র্যাক আইন সহায়তা কর্মসূচি বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের সকল জেলাতে যেহেতু ব্র্যাক অফিস আছে তাই আপনি যে জেলার অধিবাসী সেই জেলার ব্র্যাক অফিস থেকে সহায়তা নিতে পারেন।

এছাড়াও প্রতিটি থানা পর্যায়েও এই ব্র্যাক অফিস আছে অর্থাৎ এইসব ব্র্যাক অফিসেও আইন সহায়তা কর্মসূচি রয়েছে যেখানে আপনি সহায়তা নিতে পারেন। তবে আমি ঢাকা হেড অফিসের ঠিকানা আপনাদের সুবিধার্থে তুলে ধরলাম -

ব্রাক সেন্টার (BRAC Center), ৭৫ মহাকালী, ঢাকা - ১২১২

মোবাইল নাম্বারঃ ০১৭৫৫৬৯২০২৩ - ৪

ফোন নাম্বারঃ ৮৮ ০২ ২২২২ ৮১২৬৫

ফ্যাক্সঃ ৮৮ ০২ ২২২২ ৬৩৫৪২

সরকারি আইন সহায়তা কেন্দ্র

বাংলাদেশের নাগরিকদের আইনি সেবা প্রদান করার জন্য বাংলাদেশ আইন সংস্থা বদ্ধপরিকর। কেউ যদি আইনি সেবা পাওয়ার জন্য কোন অফিসে যোগাযোগ করে তাহলে সে অবশ্যই সেবা পাবে। এছাড়াও কেউ যদি বাড়িতে থেকে কোন বিপদের সময় দ্রুত আইনি সেবা লাভ করতে চায় তাহলে সে যদি ৯৯৯ কল করে তাহলে মুহূর্তের মধ্যে জরুরি সেবা পাবে কারণ এই ৯৯৯ হলো দ্রুত আইনি সেবা পাওয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকার চালু করেছেন।

৯৯৯ এর এই কল সেন্টার টি সম্পূর্ণভাবে বাংলাদেশ পুলিশ দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে তাই এই নাম্বারে কল করতে গ্রাহকের কোন প্রকার কল চার্জ কেটে নেওয়া হয়না। সম্পূর্ণ ফ্রি ভাবে অর্থাৎ সরকারি খরচে পরিচালিত হয়ে থাকে এই ৯৯৯। কল করে আপনি এম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, এমনকি যেকোন মাইক্রো গাড়ি সহ যেকোনো আইনি সেবা পেয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, এই সুবিধা আপনি ২৪ ঘন্টার জন্য পাবেন এবং আপনার কল করতে কোন খরচ হবে না।

সরকারি আইন সেবা ও ফোন নাম্বার

বাংলাদেশ সরকার ৯৯৯ নাম্বারে জরুরি সেবা প্রদান করার সাথে সাথে আরো বিভিন্ন অফিসের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন ফোন নাম্বারে কল করার মাধ্যমে জনগণকে সেবা প্রদান করে যাচ্ছেন। আপনি এই নাম্বারে ফোন করার পাশাপাশি নিম্ন বর্ণিত নাম্বারে ফোন করে বিভিন্ন অফিসের সাথে যোগাযোগ করে আইনি সেবা পেতে পারেন। তবে এ সকল নাম্বারে কল করতে হলে আপনাকে কোন কোন নাম্বারে চার্জ প্রদান করতে হবে এবং কোন কোন নাম্বারে আপনি ফ্রি কল করতে পারবেন। নিম্নে এগুলো পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো -


০১৬ - হল দুর্নীতি দমন কমিশন অফিসের ফোন নাম্বার। আপনার চোখে যদি কোন দুর্নীতি ধরা পড়ে তাহলে আপনি এই নাম্বারে কল করে দুর্নীতি দমন কমিশন কে অবহিত করতে পারেন। আপনার কল পাওয়া মাত্র দুর্নীতি দমন কমিশন সেখানে গিয়ে হাজির হবে।

১০০ - বিআরটিসি (BRTC) এর কল সেন্টার। আপনি বিআরটিসি বাসের টিকিট ক্রয় করার জন্য এই নাম্বারে কল করতে পারেন এবং এর ক্ষেত্রেও আপনাকে কল চার্জ প্রদান করতে হবে।

১০৫ - এটি হলো জাতীয় পরিচয় পত্রের কল সেন্টার। আপনি বিভিন্ন কাজের জন্য জাতীয় পরিচয় পত্রের বিভিন্ন তথ্য জানতে হলে এই নাম্বারে কল করতে পারেন। তবে এখানে কল করতে হলেও আপনাকে কল চার্জ প্রদান করতে হবে।

১০৯ - এই নম্বরটি নারী নির্যাতন ও বাল্যবিবাহ রোধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আপনি যদি কোথাও দেখেন নারী নির্যাতন এবং বাল্যবিবাহ হচ্ছে তাহলে অবশ্যই এই নাম্বারে কল করতে পারেন তাহলে সঙ্গে সঙ্গে আইনি সেবা পেয়ে যাবেন।

১৩১ - হলো বাংলাদেশ রেলওয়ের কল সেন্টার। আপনি টিকিট ক্রয়ের জন্য এই নাম্বারে কল করতে পারেন। তবে এই নাম্বারে কল করলে আপনাকে চার্জ প্রদান করতে হবে।

৩৩৩ - এই নাম্বারটি হল জাতীয় তথ্য বাতায়ন কল সেন্টার। আপনি বাংলাদেশের যেকোন তথ্য এই নাম্বারে কল করে পেয়ে যাবেন কারন এই কল সেন্টারটি বাংলাদেশ সরকারি কর্মকর্তা দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে। তবে এই নাম্বারে কল করতে হলে আপনাকে কল চার্জ প্রদান করতে হবে।

১৬৪৩০ - এই নম্বরটি সরকারি আইন সহায়তা কল সেন্টারের নাম্বার। আপনি যেকোনো আইন বিষয়ক পরামর্শ পেতে এই নাম্বারে কল করতে পারেন আপনি সব ধরনের আইনি সেবা পেয়ে যাবেন।

১৬১২৩ - এই নম্বরটি কৃষকদের সেবা প্রদান করার জন্য। বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ আর কৃষকদের যে কোন সমস্যা সমাধানের জন্য এই নাম্বারে আপনি কল করতে পারেন। এই নাম্বারে কল করলে আপনি কৃষি, মৎস্য বা প্রাণী সম্পদ বিষয়ক যেকোনো সমস্যার সমাধান পেয়ে যাবেন কারন এই নম্বরগুলো কৃষি বিশেষজ্ঞদের দ্বারা পরিচালিত হয়ে থাকে।

১০৯৮ - এই নম্বরটি নারী নির্যাতন ও শিশু পাচার বিষয়ক যেকোনো সহযোগিতা বিষয়ক কল সেন্টার। নারী নির্যাতন ও শিশু পাচার রোধে এই নাম্বারে কল করে সহযোগিতা পাবেন এবং এই নাম্বারে কল করতে আপনার কোন কল চার্জ কাটা যাবে না অর্থাৎ আপনি বিনামূল্যে এই নাম্বারে কল করতে পারবেন।

১৬২৬৩ - এই নম্বরটি বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য সেন্টার এর একটি কল সেন্টার। আপনি স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য এই নম্বরে কল করতে পারবেন। মনে রাখবেন, এই নাম্বারটির রাতদিন ২৪ ঘন্টার জন্য খোলা থাকে এবং ফ্রি ভাবে ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া যায় যাকে বলা হয় টেলি মেডিসিন। তবে এই নাম্বারে কল করতে হলে আপনাকে কল চার্জ প্রদান করতে হবে।

১৬১০৮ - মানবাধিকার সহায়তা কল সেন্টার। আপনি বাংলাদেশের আইন সহায়তা কেন্দ্রের ঠিকানা অনুযায়ী যদি জান তাহলে আইনের সেবা পাবেন। আবার যদি আপনি মনে করেন বাসা থেকে আইনি সেবা নিতে চান তাহলে এই নাম্বারে কল করে আইনি সেবা নিতে পারেন তবে এক্ষেত্রে আপনাকে কল চার্জ প্রদান করতে হবে।

১৬২৫৬ - হলো ইউনিয়ন পরিষদের একটি কল নাম্বার। আপনি যে ইউনিয়নে বসবাস করেন এই নাম্বারে কল করলে আপনি সেই ইউনিয়নের সব রকম সেবা পেয়ে যাবেন তবে এই নাম্বারে কল করতে হলেও আপনাকে কল চার্জ প্রদান করতে হবে।

১৬৪২০ বিটিসিএল (BTCL) কল সেন্টার বাংলাদেশ টেলি কমিউনিকেশন্স কোম্পানি লিমিটেড। এখানে  টেলিফোন এবং উচ্চগতির ইন্টারনেট সংযোগের কোন সমস্যা হলে আইনি সকল সুবিধা পেয়ে যাবেন।

লেখকের শেষ কথা

প্রিয় পাঠক, আমি আপনাদের আইনি সেবা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন অফিসের ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আপনারা যদি মনোযোগ সহকারে আমার আর্টিকেলটি পড়েন তাহলে এই নাম্বারে কল করলে আপনারা জীবনের সকল সমস্যার সমাধানের জন্য আইনি সেবা পেয়ে যাবেন। মনে রাখবেন, আপনি এই নাম্বারে যদি কল করেন তাহলে অবশ্যই বিপদের সময় যেকোনো আইনি সহায়তা পেয়ে যাবেন এবং আপনি আপনার হাতে থাকা মুঠোফোনের মাধ্যমেই এই সকল নাম্বারে কল করতে পারবেন।

মনে রাখবেন, এইসব কল সেন্টারে কল করার জন্য আপনার কোন স্মার্টফোনের প্রয়োজন হবে না, আপনি আপনার হাতে থাকা যে কোন বাটন ফোন দিয়ে ও আইনি সেবা পেতে পারেন। আমি আমার আর্টিকেল এর মাধ্যমে যে সকল অফিসের ঠিকানা এবং ফোন নাম্বার তুলে ধরার চেষ্টা করেছি তা আমি উইকিপিডিয়া এবং বিভিন্ন জনপ্রিয় ওয়েবসাইট থেকে সংগ্রহ করেছি।

প্রিয় পাঠক বৃন্দ, আমি আশা করি আপনারা আমার এই আর্টিকেলটি পড়ে অনেক উপকৃত হবেন। আর যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন এবং একটি কমেন্টস করে জানাবেন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url