নারীর ক্ষমতায়ন - রচনা ২০ পয়েন্ট
বর্তমানে বিশ্বে পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও সকল কাজে এগিয়ে রয়েছে যার কারনে আমাদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় নারীর ক্ষমতায়ন রচনা লিখতে আসে। তাই আমি নারীর ক্ষমতায়ন রচনা যথাযথভাবে লিখার চেষ্টা করেছি। তোমরা যারা পরীক্ষায় নারীর ক্ষমতায়ন রচনা লিখতে চাও আমার পোস্ট তাদের জন্য।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, নিচে তোমাদের জন্য নারীর ক্ষমতায়ন রচনা যথাযথভাবে লিখা হলো তোমরা যে কোন পরীক্ষায় এই নারীর ক্ষমতায়ন রচনা লিখতে পারো।
নারীর ক্ষমতায়ন রচনা
ভূমিকা
বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর
অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।
বাংলাদেশ সকল আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রেই নারী পুরুষের সমতা প্রতিষ্ঠা করার পথে এগিয়ে রয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকোনমি ফোরামের জেন্ডার গ্যাপ ইন্ডেক্স অনুযায়ী বাংলাদেশ নারী পুরুষ ক্ষমতায় দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষস্থানে রয়েছে।আর গত তিন বছর ধরে এই অবস্থান ধরে রেখেছে। গত তিন বছর থেকে বিশ্বে নারী ক্ষমতায়নে বাংলাদেশ এখন দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আর মাত্র কয়েক দশকের ক্রমাগত প্রচেষ্টার ফলেই নারীর ক্ষমতায়নের এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে।
নারীর ক্ষমতায়ন কি / নারীর ক্ষমতায়ন বলতে কী বোঝায়
নারীর ক্ষমতায়ন ইংরেজিতে যাকে বলা হয় (Womens empowerment)। নারীর ক্ষমতায়ন বলতে বোঝানো হয়ে থাকে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা তা হতে পারে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, বিচারবিভাগ, সামাজিক প্রতিষ্ঠান এমনকি মন্ত্রী সভায় নারী সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা। ক্ষমতা হলো এমন একটি প্রক্রিয়া যেখানে একজন নারী তার নিজের সম্প্রদায়ের ক্ষমতা, সামাজিক প্রতিপত্তি, সবকিছু সৃষ্টি করতে পারে এবং সে তার শিক্ষা, পেশা,জীবনধারার নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা এমনকি যে কোন সীমাবদ্ধতা সে অতিক্রম করতে পারে।
আমি নারী আমিও পারি
খাঁচার দরজা খুলে দিলেই
আমিও স্বপ্নগুলো ছুঁতে পারি।
নারীর ক্ষমতায়ন বলতে বোঝানো হয়ে থাকে যে অবস্থায় নারীর তার প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে স্বাধীন এবং সে যে কোন কর্মকাণ্ডে অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, পারিবারিক প্রতিটি ক্ষেত্রে সে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা রাখে এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একটি উপার্জনের দক্ষতার ওপর জোর দেওয়া হয় যা অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও সক্ষমতা বজায় থাকে এবং একজন নারী যেকোনো বাধা বা সীমাবদ্ধতা ছাড়াই শিক্ষা, কর্মজীবন সর্বক্ষেত্রে সে পরিবর্তন আনতে পারবে।
অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন
নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বলতে বোঝানো হয়ে থাকে নারীর কর্মসংস্থান ও প্রতিষ্ঠানিক, সরকারী কার্যসূচিতে অংশগ্রহণ, ঘরের বাইরে কাজকর্মে গতিশীলতা এবং ক্রয় ক্ষমতায় স্বয়ংসম্পূর্ণ যেকোনো নীতি নির্ধারণে এবং কর্ম প্রশিক্ষণের জন্য স্বয়ংক্রিয় ভাবে অংশগ্রহণ করতে পারবে। এছাড়াও অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগগুলি সরবরাহ করা যা উঁচু দরদাম করতে সুযোগ বৃদ্ধি করে। নারীদের ঘরের বাইরে বেশি মজুরিতে কাজে আত্মনিয়োগ করা যার ফলস্বরূপ মহিলারা চাকরির পাওয়ার ক্ষেত্রেও নিজেদের সহজ করে নিতে পারে এবং সমস্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড নিজে পরিচালনা করতে পারে।
নারীর মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন
নারীর মৌলিক স্বাধীনতা ও মানবাধিকার যেমন - অর্থনৈতিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ইত্যাদি প্রতিটি ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের যে সম অধিকার রয়েছে তার স্বীকৃতি স্বরূপ নারীর প্রতি সকল বৈষম্য দূর করতে হবে। এক্ষেত্রে নারীর প্রতি সকল প্রকার বৈষম্য দূরীকরণ বাস্তবায়ন করা এবং নারীকে সকল কর্মসংস্থান, বাজার, ব্যবসা, সম্পদ ইত্যাদি ক্ষেত্রে সমান সুযোগ ও অংশীদারিত্ব দিতে হবে।
সম্পত্তির উত্তরাধিকার
নারীর ক্ষমতায়নকে শক্তিশালী করার জন্য সম্পত্তির উত্তরাধিকার এবং ভূমির উত্তরাধিকার গুলিতে অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নের জন্য ব্যবহৃত একটি পদ্ধতি অবলম্বন করতে হবে। এটি তাদের লিঙ্গ বৈষম্যের আগে প্রয়োজনীয় সম্পদ আরোহনসহ মূলধন এবং দরদাম করার শক্তি ও বেশি লাভ করার অনুমতি দিতে পারে যার কারণে উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশের মহিলারা আইনে তাদের ভূমিতে নিজের ক্ষমতায়নে থাকতে পারবে। এছাড়াও তারা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য অধিকাংশ সুযোগ অর্জন করতে সক্ষম হবে।
রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন
রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে নারীরা এখন সমভাবে অংশগ্রহণ করতে পারে। বাংলাদেশের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩৫০ টি আসনের মধ্যে ৭২ টি আসনে নারী সংসদ সদস্য রয়েছে যেখানে নির্বাচিত রয়েছে ২৩ জন এবং ৪৯ জন নারী রয়েছেন সংরক্ষিত আসনে। ইউনিয়ন পরিষদের বারোটি সদস্য পদের মধ্যে সরাসরি গ্রহণে রয়েছে। বারোটি পদের মধ্যে তিনটি রয়েছে সংরক্ষিত পদ। এছাড়াও প্রতিটি আসনে নারীগণ সমানভাবে নির্বাচন করার সুযোগ লাভ করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের উৎসব রচনা - সম্পর্কে জেনে নিন
২০১৬ সালের নবম ইউপি নির্বাচনে মেম্বার ও চেয়ারম্যান পদে সরাসরি অনেক নারী ভোটে অংশগ্রহণ করে নির্বাচিত হয়েছেন। একইভাবে জেলা এবং উপজেলাতেও মহিলারা নির্বাচিত হয়ে থাকেন। বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে নারীদের ক্ষমতায়নকে শক্তিশালী করা হয়েছে বলে নারীরা আজ অংশগ্রহণ করতে পারছে।
মৌলিক অধিকার সংরক্ষণে নারীর ক্ষমতায়ন
বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বজুড়ে আজ অনুকরণ ও অনুসরণীয়। বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভের পর অর্থাৎ ১৯৭২ সালে নারীর সমাধিকার ও মৌলিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করার বিধান বাংলাদেশ সংবিধানে সন্নিবেশিত করা হয়েছে। সংবিধানের ২৭ নং ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে সকল নাগরিক অর্থাৎ নারী-পুরুষ সবাই আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী। ২০১৬ সালের বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের রিপোর্টে নারীর ক্ষমতায়নে ১৪৪ টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ৭২ তম অথচ ২০১৫ সালে এই অবস্থান ছিল ৬৪ তম।
আরো পড়ুনঃ মাদক মুক্ত বাংলাদেশ সুস্থ জীবন সুস্থ দেশ - রচনা
বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবার শীর্ষে অবস্থান করছে। রাজনৈতিক দিক দিয়েও বাংলাদেশ নারীর ক্ষমতায়নে বিশ্বের সপ্তম ৭ম অবস্থানে রয়েছে। ১৯৭২ সালে নারীর প্রশাসনিক ক্ষমতার তথা রাজনৈতিক উন্নয়নের মূল স্রোতধারায় নারীকে সম্পৃক্ত করা হয়। আবার সরকারি চাকরিতে নারীর কোটা ১০ ভাগ সংরক্ষিত রয়েছে। ১৯৭৩ সালে মন্ত্রিসভায় দুইজন নারীকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় আবার ১৯৭৪ সালের সর্বপ্রথম বাংলা একাডেমীর মহাপ্রার্থী হিসেবে নারীকে নিয়োগ করা হয়।
নারীর কর্মসংস্থান
বিভিন্ন কর্মসংস্থানে ও নারীর ক্ষমতায়ন লক্ষ্য করা যায়। নারীর শ্রমশক্তির শিক্ষিত ও নিরক্ষর উভয় অংশে কর্মসংস্থানের জন্য সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়ে থাকে। এছাড়াও চাকরির ক্ষেত্রে নারীর জন্য বর্ধিত নিয়োগ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রবেশ পর্যায়সহ সকল ক্ষেত্রে কোটা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এছাড়াও সকল কর্মসংস্থানের নীতির আওতায় চাকরির ক্ষেত্রে নারীকে সকল প্রকার সুযোগ-সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।
শিক্ষা খাতে নারীর অবদান
শিক্ষা খাতে নারীর অবদান যথেষ্ট রয়েছে। ২০১৮ সাল নাগাদ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকদের প্রায় ৬০ শতাংশ নারী ছিলেন। নারী শিক্ষক নিয়োগকে অগ্রাধিকার প্রদান করে কোটা প্রথা প্রচলনের মাধ্যমে শিক্ষকদের মধ্যে নারী-পুরুষের অনুপাত বৃদ্ধির পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় আর এই পদক্ষেপ নারীর ক্ষমতায়নের কারণেই হয়ে থাকে। ৭০ দশকে উন্নয়নকর্মশক্তিতে নারীর অন্তর্ভুক্তি শুরু হয় এবং আস্তে আস্তে শুরু হয় নারীর ক্ষমতায়ন।
নারীর ক্ষমতায়নের জন্য ইন্টারনেটের ব্যবহার
বিংশ শতকের শেষ ভাগে নারীদের ইন্টারনেটের বিভিন্ন উপায় ব্যবহার করে নিজেদের ক্ষমতায়িত করার অনুমতি দিয়েছে ওয়েব ক্রমবর্ধমান এক্সেস। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ওয়েব এর প্রবর্তনের সাথে সাথে নারীগণ ফেসবুক এবং twitter সহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ সাইটগুলো ব্যবহার করে নিজেরা স্বাবলম্বী হচ্ছে এবং নিজেদের সমস্যাগুলো তুলে ধরতে পারছেন। তারা নিজেদের মতামতগুলো তুলে ধরার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারছেন। সম্প্রতি ব্লগিং নারীদের শিক্ষার ক্ষমতায়নের একটি শক্তিশালী হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে নারীদের ক্ষমতায়নে হ্যাশট্যাগ তৈরি করে ছড়িয়ে দেওয়ার প্রধান উৎস হিসেবে কার্যকরী হয়ে উঠেছে।
বহি বিশ্বে নারীদের ক্ষমতায়ন
১৯২০ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয়ভাবে নারীদের ভোট দেয়ার অনুমতি প্রদান করে। ১৯৬৪ সালে নিষিদ্ধ করা হয় লিঙ্গ ভিত্তিতে বৈষম্য নীতি। ১৯৭৮ সালে গর্ভবতী মহিলাদের প্রতি বৈষম্য নিষিদ্ধকরণের জন্য আইন প্রণয়ন করা হয় যা নারীর ক্ষমতায়নের জন্য করা হয়েছে। আবার লিঙ্গসমতার জন্য রাজনীতিতে নারীদের অন্তর্ভুক্তি ও করা হয়। নারী স্পিকার, রাষ্ট্রপতির পদপ্রাপ্ত প্রথম মহিলা এবং সুপ্রিম কোর্টের উচ্চতম কার্যালয়ে মহিলারা দায়িত্ব পালন করা একটি স্মরণীয় ঘটনা যা নারীদের ক্ষমতায়নের প্রমাণ বহন করে।
বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নে প্রতিবন্ধকতা
নারীর ক্ষমতায়ন বলতে একটি দেশের জনসংখ্যার শতকরা ৫০ ভাগ নারী সঠিকভাবে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হলে সেই দেশের নারীর ক্ষমতায়ন বোঝানো হয়। শুধু দুই একজন নারী সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা মুক্ত হয়ে প্রতিষ্ঠিত হলে তাকে নারীর ক্ষমতায়ন বলা যাবে না। বাংলাদেশে নারীর ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে অনেক প্রতিবন্ধকতা রয়েছে এগুলো হলো -
প্রাচীনকাল থেকেই সমাজের প্রচলিত মূল্যবোধ নারীকে পুরুষের অধীনস্থ করে রাখে। একজন নারী শিশু কাল থেকেই সমাজে পুরুষের প্রভাব দেখে বড় হয়। ছোটবেলা থেকেই সে তার আচার-আচরণ, পোশাক, চলাফেরা ও কথাবার্তার ধরন প্রভৃতি ক্ষেত্রে ভিন্নধর্মী নিয়মে বড় হয়ে থাকে। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে এমন সব মূল্যবোধ তৈরি হয় যা নারীকে অন্ধকার আবর্তে ছুড়ে ফেলে দেয়। নারী শিক্ষার সঠিকভাবে সুযোগ পায় না যার কারণে সে আর্থিক এবং মানসিকভাবে স্বাবলম্বী হতে পারেনা এবং পুরুষের উপরই তাকে নির্ভর হয়ে থাকতে হয়।
বাংলাদেশের সংবিধানে নারী পুরুষের সম অধিকারের কথা বলা হলেও বাস্তবে এর প্রয়োগ হয় না কারণ প্রচলিত আইন নারীর বিপক্ষে অবস্থান নেয়। যৌতুক, মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন, ধর্ষণ, এসিড নিক্ষেপ প্রভৃতি অপরাধে শাস্তির বিধান থাকলেও আইনের বেড়াজাল দিয়ে অপরাধীরা অনায়াসে বেরিয়ে যায়। এছাড়াও বিবাহ বিচ্ছেদ, সম্পত্তির উত্তরাধিকার, সন্তানের অভিভাবকত্ব সব ক্ষেত্রেই আইনের কাঠামোগত দুর্বলতায় নারী বঞ্চিত হয়।
আরো পড়ুনঃ গ্রাম্য বাজার - রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন
যে নারী তার সন্তানকে দশ মাস দশ দিন গর্ভে ধারণ করে জন্ম দেয়, বড় করে সে সন্তানের অভিভাবকত্ব পায় না। তবে সম্প্রতি বাবার নামের পাশাপাশি মায়ের নামের বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে। তবে মুসলিম সমাজে নারীরা সম্পত্তির অধিকার পেলেও হিন্দু সমাজের নারীরা আজও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত।
নারীর ক্ষমতায়ন রক্ষায় করণীয়
নারীর ক্ষমতায়নের কথা শুধু বললেই হবে না, নারীর ক্ষমতায়ন রক্ষা করার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আর এক্ষেত্রে যা করতে হবে তা হল-
নারীর স্বার্থ রক্ষাকারী আইন প্রবর্তন
নারীর স্বাধীনতা, সম্পত্তিতে সম অধিকার, বিয়ে, বিবাহ বিচ্ছেদ, সন্তান ধারণের পূর্ণ স্বাধীনতা, সন্তানের অভিভাবকত ও প্রভৃতি বিষয়ে সনাতন আইন পাল্টে পুরুষের সাথে নারীর সম অধিকার প্রবর্তন করতে হবে। একজন পুরুষ যেমন সকল দায়িত্ব নিতে পারে তেমনি একজন নারীকেও দায়িত্ব নেওয়ার সমান অধিকার দিতে হবে।
রক্ষণশীল মানসিকতার পরিবর্তন
এমন অনেক মানুষ আছেন যারা ধর্মকে পুঁজি করে মেয়েদের বন্ধ করে রাখার একটি ফতোয়া জারি করেন। এক্ষেত্রে সবাইকে সচেতন হতে হবে বিশেষ করে প্রয়োজন সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা।
নারীদের কাজের স্বীকৃতি
নারীদের ক্ষমতায়নকে রক্ষা করতে হলে নারীদের কাজের যথাযথ স্বীকৃতি দিতে হবে। গৃহস্থালির কাজকর্ম, সন্তান লালন পালন কোন কাজকে ছোট করে দেখলে চলবে না বরং পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ও সমভাবে সকল কাজে এগিয়ে আসতে পারে এবং ঘরে বাইরে সমানভাবে কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে এইসব কাজে তাকে স্বীকৃতি প্রদান করতে হবে।
প্রচার মাধ্যম গুলোতে নারীকে সম্মানজনকভাবে উপস্থাপন করতে হবে
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে নারীকে নেতিবাচক ভাবে উপস্থাপন করা হয় যা নারীর কাজের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। তাই নারীকে যথাযথ সম্মানের সাথে দেখতে হলে গণমাধ্যমগুলোতে নারীকে সম্মানজনকভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
শিক্ষার ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি
আমাদের সমাজে আজও নারীরা পুরুষের তুলনায় শিক্ষার দিক থেকে পিছিয়ে রয়েছে যা নারীর ক্ষমতায়নের প্রধান বাধা হিসেবে কাজ করে। প্রাথমিক পর্যায়ে নারীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকলেও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের সংখ্যা অনেক কম তাই নারীদের ক্ষমতায়ন সৃষ্টি করতে হলে তাদের ব্যাপক শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।
আইন প্রবর্তন
নারীর ক্ষমতায়ন রক্ষার প্রধান হাতিয়ার হল আইন প্রবর্তন করা। আইন প্রবর্তনের মাধ্যমে একজন নারীকে সম্পত্তিতে সম অধিকার, সন্তানের অভিভাবকত্ব দান, বিবাহ বিচ্ছেদ, সন্তান ধরনের পূর্ণ স্বাধীনতা সকল ধরনের স্বাধীনতা নারীকে দিতে হবে।
উপসংহার
নারীর ক্ষমতায়ন তখনই হবে যখন একজন নারী সমাজের প্রতিটি কর্মকান্ডের সমভাবে গুরুত্ব নিয়ে অংশগ্রহণের সুযোগ পাবে। নারীকে মুক্তি দেওয়ার জন্য নয়, নারীর উন্নয়নের জন্য নারীকে ক্ষমতায়ন করা প্রয়োজন। সব ধরনের প্রতিবন্ধকতার অবসান শেষ করে শিক্ষার প্রসার ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করে নারীর ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url