বাঁচাতে দেশ বাঁচাতে জীবন রুখতে হবে মাদক আগ্রাসন - রচনা
বাঁচাতে দেশ বাঁচাতে জীবন রুখতে হবে মাদক আগ্রাসন - রচনা
ভূমিকা
তোমরা যদি সুস্থ থাকো সুস্থ থাকবে দেশ,
মাদকের নেশা দূরে থাকবে, লাগবে তখন বেশ।
বাংলাদেশসহ পুরো পৃথিবী আজ মাদক নামক ভয়াবহ সমস্যা সম্মুখীন হয়েছে। এই পৃথিবীতে যতগুলো জটিল সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে মাদকাসক্ত হলো তার মধ্যে অন্যতম একটি সমস্যা। আর এ কারণেই বলা হয়ে থাকে মাদকাসক্ত হলো যুদ্ধের চেয়েও ভয়ংকর। মাদকের নেশা দেশ ও জাতির জন্য ভয়ংকর। মানুষ জানে মাদকাসক্ত বা নেশা হলো সর্বনাশা কিন্তু মানুষ জেনে শুনেই এই সর্বনাশার ফাঁদে আটকে যায়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, যেসব বস্তু বা দ্রব্য গ্রহণ করলে মানুষের আচরণ এবং কার্যকলাপের ভেতরে পরিবর্তন ঘটায় তাকে বলা হয় মাদকদ্রব্য।
আমরা ছোটবেলায় বইয়ে পড়েছি "সুস্থ দেহ সুস্থ মন এর নামই স্বাস্থ্য" কিন্তু এখন বলতে হয় "সুস্থ জাতি সুস্থ দেশ এর নাম স্মার্ট বাংলাদেশ"। কিন্তু আমাদের বাঁচাতে দেশ বাঁচাতে জীবন রুখতে হবে মাদক নামক আগ্রাসন থেকে দেশকে রক্ষা করতে হবে আর এক্ষেত্রে জাতি, ধর্ম, বর্ণ, দলমত নির্বিশেষে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে হবে "বাঁচাতে দেশ বাঁচাতে জীবন রুখতে হবে মাদক আগ্রাসন"।
মাদকদ্রব্য কি বা কাকে বলে?
মাদকদ্রব্য বলতে আমরা এগুলোকেই বুঝি যেসব দ্রব্য গ্রহণ করলে বা সেবন করলে মানুষের শারীরিক মানসিক পরিবর্তন হয় এবং মানুষের ওপর বিভিন্ন ক্ষতিকর প্রভাব পরিলক্ষিত হয় তাকে বলা হয় মাদকদ্রব্য। অর্থাৎ যেসব দ্রব্য সেবন করলে বা গ্রহণ করলে বা মানুষের দেহে প্রয়োগ করলে মানব দেহ সজ্ঞাবহ হয় এবং মস্তিষ্কের স্মৃতি হ্রাস পায় তাকে বলা হয় মাদকদ্রব্য। বাংলাদেশসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য রয়েছে এগুলো হল -
আরো পড়ুনঃ রচনা - মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব
প্রাচীন বা প্রাকৃতিক নেশা দ্রব্য হল - গাঁজা, মদ, ভাঙ, আফিম ইত্যাদি। এছাড়াও বর্তমানে এই আধুনিক সমাজে যেসব মাদকদ্রব্য বহুল প্রচলিত রয়েছে তা হল - ইয়াবা, হেরোইন, ফেনসিডিল, মরফিন, মারিজুয়ানা, প্যাথেডিন, কোকেন, এলএসডি, স্মাক, হাসিস, পপি,ক্যানবিস ইত্যাদি। বিশ্ব সংস্থার মতে, নিকোটিন যুক্ত বিভিন্ন দ্রব্য যেমন - সিগারেট, জর্দা, চুরুট নস্যি ইত্যাদি এগুলো কেও মাদকদ্রব্য হিসেবে অভিহিত করা হয়।
মাদকাসক্তি কি
মাদকাসক্তি হল বিভিন্ন প্রকার মাদক দ্রব্যে আসক্ত হওয়া। বিভিন্ন প্রকার মাদকদ্রব্য অতিমাত্রায় সেবন করলে এবং নেশার সৃষ্টি হলে তাকে বলা হয় মাদকাসক্ত। মানুষ যখন কোন মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে তখন তাকে বলা হয় মাদকাসক্ত আর যখন এই মাদকদ্রব্য গ্রহণ অতি মাত্রায় করে এবং স্বাভাবিক জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তখন তাকে বলা হয় মাদকাসক্তি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, "মাদকাসক্তি হলো নেশা, যে নেশা মানুষের শারীরিক ও মানসিক প্রতিক্রিয়া করে এবং যার মিথস্ক্রিয়া কেবলমাত্র জীবিত মানুষের মধ্যেই সৃষ্টি হয়"।
আবার মাদকাসক্ত বলতে বোঝানো হয় যেসব দ্রব্য গ্রহণ করলে বা সেবন করলে মানুষের ভেতরে নেতিবাচক প্রভাব আসে এবং নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায় তাকে বলা হয় মাদকাসক্ত। মাদকাসক্তির আকর্ষণ এত বেশি তীব্র যে সকল মানুষ একবার মাদকে আসক্ত হয়ে যায় তা থেকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায় যার কারণে মানুষ ধীরে ধীরে নৈতিক ও মানসিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হয়। এবং এর ক্ষতিকর প্রভাব পরিবার, সমাজ, দেশ তথা পুরো বিশ্বের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে।
মাদকের প্রকারভেদ
বাংলাদেশ সহ সারা পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মাদক দ্রব্য রয়েছে। তবে এইসব মাদক দ্রব্যকে সাধারণত দুই ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যেমন -
প্রাকৃতিক ও
রাসায়নিক
প্রাকৃতিক
প্রকৃতি থেকে সংগ্রহ করে যেসব মাদকদ্রব্য তৈরি করা হয় তাকে বলা হয় প্রাকৃতিক মাদকদ্রব্য। আর এসব প্রাকৃতিক মাদকদ্রব্য সাধারণত বিভিন্ন প্রকার গাছ থেকে উৎপাদিত হয় এর মধ্যে রয়েছে - গাঁজা, তাড়ি, ভাঙ, আফিম, চরস ইত্যাদি।
রাসায়নিক
বিভিন্ন পরীক্ষাগারে রাসায়নিক ক্রিয়া বিক্রিয়ার মাধ্যমে যেসব মাদকদ্রব্য উৎপাদন করা হয়ে থাকে তাকে বলা হয় রাসায়নিক মাদকদ্রব্য। প্রকৃতি থেকে যে সব মাদকদ্রব্য উৎপাদিত হয় রাসায়নিক মাদকদ্রব্য তার থেকে অনেক বেশি মারাত্মক এবং নেশার সৃষ্টি করে। রাসায়নিক মাদকদ্রব্য গুলোর মধ্যে রয়েছে - ইয়াবা, হেরোইন, কোকেন, মরফিন, প্যাথেডিন, বিভিন্ন প্রকার আলকোহল, সুরা, সজ্জীবনী ইত্যাদি। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, নিকোটিন যুক্ত যেসব তামাক দ্রব্য রয়েছে যেমন- সিগারেট, জর্দা, চুরুট, গুল, নস্যি, ইত্যাদি এগুলোকেও মাদকদ্রব্য হিসেবে অভিহিত করা হয়।
মাদকের উৎস
মাদকদ্রব্য পুরো বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মাদক উৎপাদিত হয়। এই মাদক উৎপাদনের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে কিছু অসাধু মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী যারা মাদকের চোরাচালন করে বিপণ প্রক্রিয়াকরণ করেন আর এই চোরাচালনের প্রধান অঞ্চল গুলো হল -
গোল্ডেন ক্রিসেন্ট
গোল্ডেন ওয়েজ এবং
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল
গোল্ডেন ক্রিসেন্ট
চোরা কারবারিদের কাছে গোল্ডেন ক্রিসেন্ট এর পরিধি হল ইরান, পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং তুরস্ক। তবে যত মাদকদ্রব্য উৎপন্ন হয় পাকিস্তানে তার সিংহভাগ উৎপন্ন হয়ে থাকে।
গোল্ডেন ওয়েজ
গোল্ডেন ওয়েজ ভারত এবং নেপালের সীমান্ত এলাকাকে বলা হয় আর এই সীমান্ত এলাকায় পাওয়া যায় প্রচুর পরিমাণে গাঁজা, আফিম, হেরোইন, কোকেন ইত্যাদি। এছাড়াও মাদক উৎপাদনের একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে ব্রাজিল, ইকুয়েডর, কলম্বিয়া, বলিভিয়া ইত্যাদি। আর বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশে ছড়িয়ে পড়েছে এসব দেশের মাদক চোরাচালানের নেটওয়ার্ক।
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেল এর পরিধি হলো - লাওস, মায়ানমার ও বার্মা।
মাদকাসক্তির কারণ সমূহ
মাদকাসক্তি হওয়ার পেছনে একজন ব্যক্তির অনেক কারণ রয়েছে। আর বাংলাদেশসহ পুরো বিশ্বে যে কারণ গুলো বিদ্যমান তা হল-
- পারিবারিক অশান্তি
- ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব
- নৈতিক শিক্ষার অভাব
- বেকারত্ব
- অসৎ সঙ্গ
- হতাশা ও বন্ধু-বান্ধবদের প্ররোচনা
- পাশ্চাত্য জীবনের অন্ধ অনুকরণ
- মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ীদের প্ররোচনা
- প্রেমে ব্যর্থতা
- সৌখিনতা ও কৌতলবশত
- মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা
- আইন ও শৃঙ্খলা এবং প্রশাসনের অনিশ্চয়তায়
- মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতনতার অভাব
- সামাজিক অসচেতনতা
- অনৈতিক কর্মকান্ড
- আদর্শ বিচ্যুত হওয়া
- মাদকদ্রব্য পাচারে ট্রানজিস্ট হওয়া
- দেশের বিশেষ রাজনৈতিক এবং সামাজিক অবস্থা ইত্যাদি।
আরো পড়ুনঃ মাদক নিয়ে কবিতা উক্তি ও স্ট্যাটাস জেনে নিন
তবে আমাদের দেশের তরুণ সমাজ সবচেয়ে বেশি মাদকাসক্ত হয় হতাশাগ্রস্ত হওয়ার কারণে। যেখানে তারা বিভিন্ন কুসঙ্গ লোকের সঙ্গে বসবাস করে, মেলামেশা করে। বিশেষ করে কিশোর সমাজ কৌতূহল বসত মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। আবার এমন অনেক লোক রয়েছে যারা পারিবারিক অশান্তি থেকে মাদকাসক্ত হয়ে পড়েন। আবার এমন অনেক মানুষ রয়েছেন যাদের অনেক উচ্চ আশা রয়েছে কিন্তু সেই আশা তারা পূরণ করতে পারে না তখন তারা মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে যার কারণে তারা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আর এজন্যই বলা হয় -
মেঘনা নদী ক্ষতি করে
কিছু জমির ফসল
মাদকের নেশা ক্ষতি করে
তরুণ প্রজন্মের সফল।
মাদকদ্রব্য সেবনের ক্ষতিকর দিক সমূহ
বন্যা, খরা, জলোচ্ছ্বাস, যুদ্ধবিগ্রহ ক্ষতি করে অর্থনীতি,
মাদকাসক্তি ক্ষতি করে জীবনের সকল নীতি।
বর্তমান বাংলাদেশে ভূমিকম্প খরা অতিবৃষ্টি অনা বৃষ্টি যে ক্ষতি করে তার চেয়ে বাদকাসক্ত ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে যেখানে যুদ্ধ হলে একটি দেশের যে ক্ষতি হয় তার চেয়ে অধিক ক্ষতি হয় সেই দেশের জনগণ মাদকাসক্ত হলে মার্কেএস গোল্ড মাদক দ্রব্যের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছেন মাদকদ্রব্য মানুষের যেসব ক্ষতি করে তা হল -
শারীরিক ক্ষতি
মাদকদ্রব্য গ্রহণ থেকে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে মাদকদ্রব্য অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণের ফলে মানুষ ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে মাদক গ্রহণের ফলে মানুষের যে শারীরিক ক্ষতি গুলো পরিলক্ষিত হয় তা হলো
- মুখমণ্ডল ফুলে যাওয়া ও বিকৃত হওয়া
- মুখমণ্ডল লাল হয়ে যাওয়া
- লিভার প্রসারিত হওয়া
- মুখমণ্ডল সহ সারা শরীরে কালশিটে পড়া
- স্মৃতিশক্তির কোষ ধ্বংস হওয়া
- হৃদ গ্রন্থের পিয়া বন্ধ হওয়া
- ফুসফুসের ও মুখ গহব্বরে ক্যান্সার হওয়া
- হঠাৎ শরীর শিউরে ওঠা
- দীর্ঘ সময় ধরে ঠান্ডা লেগে থাকা ইনফ্লুয়েঞ্জা আক্রান্ত হওয়া
- অপুষ্টিতে ভোগা
- অপুষ্টিতে ভোগা
- ব্রংকাইটিস রোগবৃদ্ধি সহ বুকে নানা সমস্যা দেখা দেওয়া
- যৌন ও চর্ম রোগ বৃদ্ধি পায়
- স্ত্রীদের গর্ভের সন্তানের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়
- খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়
- হজম শক্তি হ্রাস পায়
- স্মরণশক্তি কমে যায়
- বুক ও ফুসফুস নষ্ট হয়
- এছাড়াও মাদক গ্রহণের ফলে অন্যান্য ২৫ ধরনের রোগে আক্রান্ত হয়
- যে ধূমপান করে তার জন্য অধম পায়ের ক্ষতি হয়
- ধূমপানের প্রতি সেকেন্ডে একজন করে মানুষ মারা যায়
- জাতিসংঘের সংস্থা মতে ধূমপানের ফলে সাড়ে ছয় সেকেন্ডে একজন মানুষ মারা যায়
- ১৩ টি সিগারেট এ মৃত্যুর ঝুঁকি সাত গুণ
- ২০ টি সিগারেট এ ফুসফুসে ক্যান্সারের ঝুঁকি ২০ গুন। এজন্যই বলা হয় -
অর্থনৈতিক ক্ষতি
মাদক গ্রহণের ফলে মানুষ তার জীবনে শুধু শারীরিক ক্ষতি করে তা নয় সে অর্থনৈতিক দিক থেকেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোটি কোটি টাকা একজন মানুষ মাদকের জন্য খরচ করে। উচ্চবিত্ত, নিম্নবিত্ত সকল শ্রেণী পেশার মানুষ এই মাদক সেবনের সঙ্গে জড়িত। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব মতে, ব্যবহারে মানুষ ২০০ মিলিয়ন ডলার ক্ষতি করছে। আবার আন্তর্জাতিক বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বর্তমানে একজন মানুষ সিগারেটে কিনতে যে অর্থ ব্যয় করে তা যদি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ব্যয় করত তাহলে মানুষের স্বাস্থ্যগত সকল প্রয়োজন পূরণ হয়ে যেত।
আরো পড়ুনঃ মাদক মুক্ত বাংলাদেশ সুস্থ জীবন সুস্থ দেশ - রচনা
মানুষ প্রতিনিয়ত মাদক গ্রহণ করছে আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এজন্যই সরকার উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন "বাঁচাতে দেশ বাঁচাতে জীবন রুখতে হবে মাদক আগ্রাসন"। নেশার টাকা জোগাড় করতে ব্যস্ত কেন ভাই! এর চেয়ে ক্ষতি কর জিনিস এই পৃথিবীতে আর নাই।
পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষতি
যারা মাদক গ্রহণ করে তাদের জন্য সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তাদের পরিবার সর্বোপরি তাদের সমাজ। যে পরিবারের সদস্য মাদক গ্রহণ করে সেই পরিবারের লোক জানে নেশা কত ভয়ংকর কারণ সেই পরিবারে কোন শান্তি থাকে না। মাদকের বা নেশার টাকা যখন সে পায় না তখন পরিবারের লোকের সাথে অসভ্য আচরণ করে যার কারনে পরিবারের সারাক্ষণ অশান্তি বিরাজ করে। আর যে মাদক সেবন করে সে মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে চুরি, ডাকাতি, খুন, রাহাজানি সহ নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়।
মেঘনা নদী সর্বনাশা,
কে বলেছে ভাই।
মাদকের চেয়ে সর্বনাশা,
এই পৃথিবীতে আর নাই।
তাই পরিবারের একজন লোক যদি নেশাগ্রস্ত হয় তাহলে তার প্রভাব পুরো পরিবারকে সহ্য করতে হয়। আর এজন্যই বলা হয় -"দেশ তোমাকে আলো, বাতাস, খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য সবকিছু দিয়ে বাঁচিয়ে রেখেছে তাই তুমি দেশের যার কারনেকাছে ঋণী। মাদকের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে তুমি দেশের ঋণ কিঞ্চিৎ পরিশোধ করো"।
মাদকের গ্রহণের কারণে নারীদের ক্ষতি
বাংলাদেশের নারীরাও এখন মাদক নামক নেশার সঙ্গে যুক্ত পুরুষের পাশাপাশি নারীরা ও মাদক সেবন করে থাকে কিন্তু মাদক সেবনের ফলে নারীদের যে ক্ষতি হয় তা হল-
জরায়ুতে বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃষ্টি হয়।
অনিয়মিত মাসিক।
নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
যৌন রোগ দেখা দেয়।
অপরিণত সন্তান জন্মগ্রহণ করে।
অনেক সময় মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেয়া সন্তান মাদকাসক্ত হয়ে পড়তে পারে। আর এজন্যই বলা হয়ে থাকে-
আবাল, বৃদ্ধ, বনিতা সবাই মাদক চাই,
মাদকাসক্ত হতে নারীরাও আর পিছিয়ে যে নাই।
নারীরা হলো ঘরের সম্পদ ভুলে যায় তারা
নেশা দ্রব্য হাতে নিয়ে করে যে মহড়া।
মাদকাসক্তি থেকে উত্তরণের উপায়
- জনসচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
- সীমান্ত এলাকায় মাদক পাচারে জড়িত অতি দরিদ্রদের বিকল্প কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
- মাদকাসক্তের সেফটি নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
- মাদক পাচার রোধে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
- কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগার আধুনিকরণ করতে হবে।
- সরকারি, বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও সহ সকল কমিউনিটি নেতাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
- মাদক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পৃথক আদালত গঠন করতে হবে।
- অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য রেশন ও ঝুঁকি ভাতা ব্যবস্থা করতে হবে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
- মাদকাসক্তদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
- স্কুল - কলেজ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।
- শিশু কিশোরদের জন্য খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
মাদকের নেশা কে যদি রুখতে নাহি পারো
দেশ বাঁচাবে কেমন করে জবাব দিতে পারো!
মাদকাসক্তি প্রতিরোধ চিন্তা
বিশ্বজুড়ে মাদকবিরোধী আন্দোলন ও বাংলাদেশ
বাঁচাতে দেশ বাঁচাতে জীবন রুখতে হবে মাদক আগ্রাসন
দুঃস্বপ্ন দেখলে গা ঘেমে যায় মন অস্থির থাকে
আর মাদকের নেশা পুরো পৃথিবীর কাঁপিয়ে দেয়।
উপসংহার
স্মার্ট বাংলাদেশে স্মার্ট মানুষ হতে যদি চাও
মাদকের নেশা ছেড়ে খাতা কলম হাতে নাও।
বই পড়লে পাবে তুমি জীবন গড়ার আলো
সিগারেটের ধোয়াই উড়ে যাবে জীবনের সব ভালো।
হিরোইন তুমি খেয়েও নাকো জীবন গড় ভাই
দেশের জন্য কিছু করে দেশের হিরো হও।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url