একটি পাহাড় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা - রচনা সম্পর্কে জেনে নিন

আমাদের শিক্ষার্থীদের বিভিন্ন পরীক্ষায় ভ্রমণ সম্পর্কিত একটি রচনা লিখতে হয়। তাই আমি একটি পাহাড় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা - রচনা যথাযথভাবে লিখার চেষ্টা করেছি তোমরা যারা পরীক্ষায় একটি পাহাড় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা - রচনা লিখতে চাও আমার পোস্ট তাদের জন্য।

Image

প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমাদের জন্য নিচে একটি পাহাড় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা - রচনা বিস্তারিত ভাবে লিখা হলো। আমি আশা করি তোমরা এই রচনা পরীক্ষায় লিখলে বেশ ভালো নম্বর পাবে।

একটি পাহাড় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা - রচনা

ভূমিকা

আমরা বাঙালি জাতি আর বাঙালি জাতিরা চিরকালই ভ্রমণ পিপাসে আর বাঙালি হিসেবে আমিও এর ব্যতিক্রম নয়।রোজকার একঘেয়েমি জীবন থেকে মানুষ বিরোতি লাভের জন্য ভ্রমণের উদ্দেশ্যে বের হয়। প্রতিনিয়ত কাজের মাঝে বা পড়াশোনার মাঝে যদি একটু ঘুরে আসা যায় তাহলে মন ফ্রেশ থাকে এবং কাজের প্রতি মনোনিবেশ করা যায়। আর ভ্রমণ হলো প্রাচীন কাল থেকেই মানুষের চিত্ত বিনোদনের একটি অন্যতম মাধ্যম। আর ভ্রমণের জন্য আমার সবচেয়ে পছন্দের জায়গা হল পাহাড়। ছোটবেলা থেকেই পাহাড় ভ্রমণ আমাকে বিশেষ ভাবে আকর্ষণ করে।

স্থান নির্বাচন

পাহাড় ভ্রমণের প্রতি আমি ছোটবেলা থেকেই বেশ আকৃষ্ট। পাহাড়ের সবুজ গাছপালা, উঁচু নিচু ঢাল, ঝর্ণার পানির শব্দ সবকিছুই আমাকে মুগ্ধ করে তাই যখনই সুযোগ পাই আমার মনে হয় পাহাড় ঘুরে আসি। তবে যথাযথ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা লাভের জন্য নির্দিষ্ট একটি স্থান বা পাহাড় নির্বাচন করা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যদিও নদী, পাহাড়, সমুদ্র সবই আমার পছন্দ তবে পাহাড় ভ্রমণ আমার সবচেয়ে পছন্দের স্থান তাই আমি ভ্রমণের জন্য পাহাড় নির্বাচন করে নিলাম।

ভ্রমণের জন্য যাত্রা

পাহাড় ভ্রমণের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময় হলো শীতের সময় তাই ডিসেম্বর মাসে যখন বার্ষিক পরীক্ষা আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম। পাহাড় ভ্রমণে যাব মা বাবার সাথে। বের হলাম গারো পাহাড় দেখব বলে কারণ গারো পাহাড় হল বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উঁচু পাহাড়। এই পাহাড়ের উচ্চতা ২0৫0 ফুট। বাংলাদেশের এই গারো পাহাড় ভারতের আসাম রাজ্য এবং বাংলাদেশের ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, জামালপুর ও শেরপুর জেলা জুড়ে বিস্তৃত। আর বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উঁচু পাহাড় বলে এই পাহাড় দেখার আবার খুব বেশি আগ্রহ।

পাহাড় ভ্রমণের অভিজ্ঞতা

ভ্রমণ মানুষের অভিজ্ঞতাকে আরো বাড়িয়ে দেয় তেমনি পাহাড় ভ্রমণ ও আমার অভিজ্ঞতাকে অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। যেমন গারো পাহাড় পার্বত্য জেলাকে দুটি অংশে বিভক্ত করেছে যেমন পশ্চিম গারো পার্বত্য জেলা এবং দক্ষিণ পশ্চিম গারো পার্বত্য জেলা। ১৯৭৬ সালের অক্টোবরের পূর্বে গারো পশ্চিম পার্বত্য জেলা প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৯২ সালের জুন মাসে পশ্চিম ও দক্ষিণ গারো পাহাড় দুটি প্রশাসনিক জেলায় বিভক্ত হয়।

গারো পাহাড় ভারতের মেঘালয় রাজ্যের গারো খাসিয়া পর্বত শ্রেণীর একটি অংশ। এবং এই পাহাড়ের কিছু অংশ রয়েছে ভারতের আসাম রাজ্যে এবং বাংলাদেশের শেরপুর জেলার নলিতা বাড়ি উপজেলায়। এছাড়াও এ পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ময়মনসিংহ, গারো পাহাড় বিস্তৃত।

গারো পাহাড়ের জীববৈচিত্র

জীববৈচিত্র সমৃদ্ধ একটি পাহাড় হল এই গারো পাহাড়। এই পাহাড় ঘন সবুজ বন, বিরল প্রজাতির উদ্ভিদ ও প্রাণী, বিল, হাওর সবকিছু পাহাড় কে করেছে অনন্য বৈশিষ্ট্যমন্ডিত। গারো পাহাড়ে প্রায় ২00 কিলোমিটার আয়তনের এক বিস্তীর্ণ বনভূমি রয়েছে যা সংরক্ষিত। আর এই বনভূমিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে মূল্যবান সাল গাছ। বাকি অংশে রয়েছে সাল, সেগুন, বেত সহ অনেক গাছপালা আর বনভূমিতে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির পাখি, বন্য হাতি, হরিণ, বাঘ, বন্য শুকুর, ময়না, ধনেশ পাখি প্রচুর পরিমাণে দেখা যায়।

গারো পাহাড়ের পরিবেশ

গারো পাহাড়ের আবহাওয়া অনেক সুন্দর মনোরম এবং পরিবেশ শান্ত। এখানের পরিবেশ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর যার কারণে এখানের পরিবেশ সবাইকে মুগ্ধ করে। আবার গারো পাহাড় বিশ্বের বৃষ্টি প্রধান অঞ্চল গুলোর মধ্যে অন্যতম।

বিনোদন স্থান

 এছাড়াও এই গারো পাহাড় বাংলাদেশ অংশের শেরপুর জেলায় রয়েছে দুটি মনোমুগ্ধকর পিকনিক স্পট যা মধুটিলা ইকোপার্ক এবং গজনী অবকাশ কেন্দ্র নামে পরিচিত। একে আবার পর্যটন বা পিকনিক স্পট বলে। গারো পাহাড়ে সর্বোচ্চ শৃঙ্গের নাম নকরেক। অবশ্য এই অংশটি ভারতে অবস্থিত তবে গারো পাহাড়ে দীর্ঘতম নদী সিম সং নকরেক থেকে উৎপত্তি হয়েছে এবং তা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

আবার গারো পাহাড়ের প্রধান শহর হল তুরা যা এই শহরটির পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত। গারো পাহাড় বা তুরার জনসংখ্যা প্রায় ৭0 হাজার এবং এখানের অধিবাসীরা খুব বেশি অতিথি পরায়ন এবং আন্তরিক। তাদের রয়েছে ভালবাসা এবং মমত্ববোধ। তারা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সম্পদ সংরক্ষণে খুব বেশি যত্নবান যার কারণে তাদের জীবনে সাহিত্য সংস্কৃতির প্রতি ভালবাসা প্রতিফলিত হয়।

উপসংহার

ভ্রমণ বাঙালি জাতির জন্য একটি অবিচ্ছেদ্দ অংশ আর সেই ভ্রমণ যদি হয় পছন্দের পাহাড় তাহলে তো কোন কথাই নেই। আমি ইতিপূর্বে কোনদিন পাহাড় ভ্রমণ করিনি। এবং কোন প্রকৃতি কেউ অনুভব করেনি যার কারণে এই ভ্রমণ আমার কাছে চির স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url