যুবসমাজের অবক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার - রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
একটি দেশের মূল চালিকাশক্তি হলো সে দেশের যুবসমাজ কিন্তু বর্তমানে যুবসমাজ অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হচ্ছে। যার কারণে আমাদের শিক্ষার্থীদের অবগত করার জন্য যুবসমাজের অবক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার - রচনা প্রতিযোগিতা করা হয়। আর তোমরা যারা যুবসমাজের অবক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার - রচনা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে চাও আমার পোস্ট তাদের জন্য।
যুবসমাজের অবক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার রচনা পড়ে আর যেসব রচনা লিখতে পারবে তা হল -
- যুবসমাজের অবক্ষয়
- তরুণদের বিপথগামীতা
- বিক্ষুব্ধ তরুন সমাজ
- যুবসমাজের সমস্যা গুলি লেখ
- তরুণ সমাজের নৈতিক অবক্ষয়ের কারণ
- যুব সমাজের বিচ্যুতির কারণ ও প্রতিকার
যুবসমাজের অবক্ষয়ের কারণ ও প্রতিকার - রচনা
ভূমিকা
যুব সমাজ হলো যে কোন দেশ এবং জাতির প্রাণশক্তি এবং যুব সমাজই হচ্ছে একটি জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার মুর্ত প্রতীক। যেকোনো দেশ এবং জাতির সোনালী স্বপ্ন হল সে দেশের যুব সমাজ। যারা আজকে যুবক তারাই একদিন পরিচালনা করবে আগামীর সমাজ, রাষ্ট্র তথা দেশকে এবং তাদের জাতিকে। একমাত্র যুবকেরাই পারে শত বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে দেশকে স্বপ্নের দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে কিন্তু বর্তমান সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে যুবকেরা ছুটে চলেছে অনিশ্চয়তার ভয়ংকর অন্ধকারের দিকে।
তারা তাদের জীবনের সততা এবং আদর্শকে করছে পরিহার। দেশ ও জাতিকে গড়তে হলে যুব সমাজকে হতে হবে দায়িত্বশীল, কর্মনিষ্ঠ, সুশিক্ষিত, সৎ, মানবিক এবং সাহসী। তাইতো কবি রঞ্জন গিরি তার "যুব সমাজ জাগো" কবিতায় বলেছেন -
- ওহে......!
- যুবসমাজ জেগে পড়ো,
- বিশ্বলোকের হাতটি ধর।
- চায় তোমাদের হৃদয় মন,
- তোমরা যে তার আপনজন।
যুবসমাজ ও অবক্ষয়
যুবসমাজের অবক্ষয় সম্পর্কে জানতে হলে আগে আমাদের জানতে হবে যুবক কারা এবং অবক্ষয় বলতে কী বোঝায়! নিচে যুবসমাজ ও অবক্ষয় সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
যুবসমাজ
আমরা তাদেরকে যুব সমাজ বলি যাদের বয়স ১৮ বছর থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। বাংলাদেশের জনগোষ্ঠীর এক তৃতীয়াংশ জনগোষ্ঠী হলো যুবসমাজ। সমাজ তথা দেশের উন্নয়ন করতে হলে আগে যুব সমাজকে উন্নয়ন করতে হবে। যুব সমাজ হলো যেকোনো দেশেরই সর্বাপেক্ষা সৃজনশীল, উৎপাদন ক্ষম, বলিষ্ঠ এবং আত্মপ্রত্যয়ী চালিকা শক্তি। তাইতো কবি বলেছেন-
- এসো হে যুবসমাজ,
- এসো দলে দলে।
- গড়তে হবে সোনার বাংলা,
- সকল বাধা ফেলে।
অবক্ষয়
অবক্ষয় শব্দের অর্থ হলো ক্ষয়প্রাপ্ত, বিনাশ, ক্ষতিকর, হানিকর ইত্যাদি। এক কথায় যুব সমাজের ধ্বংস হলো যুবসমাজের অবক্ষয়। যুবসমাজ গড়ে তোলার জন্য মানব জীবনে যেসব গুণাবলী প্রয়োজন তা লোপ পায় বা কমে যায় বা একেবারে থাকে না তখন তাকে বলা হয় অবক্ষয়। আমাদের যুব সমাজ আজ বিপথগামী বিভিন্ন কর্মে, কর্তব্য, মননে, চেতনায়, সংস্কৃতিতে বিপদগামী হলো আমাদের যুব সমাজ। যুব সমাজের অবক্ষয়ের কারণে দেশ, জাতি এবং রাষ্ট্র তথা পুরো পৃথিবী আজ শঙ্কিত। বাংলাদেশ যদি ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গড়তে চায় তাহলে দেশের যুব সমাজকে উন্নয়ন করতে হবে।
যুবসমাজের অবক্ষয়ের কারণ
- বলছি শোনো যুবসমাজ!
- ভেবেচিন্তে করিও কাজ।
- তুমি ভুল পথে না দিও পা,
- দুঃখে কাঁদবে দেশ মা।
কবিরঞ্জন গিরির এই কবিতা যেন আজ শুধু কবিতা হয়েই থেকে গেছে কারন আমাদের যুবসমাজ আজ নানা সমস্যায় আক্রান্ত। যুব সমাজ আজ ছুটে চলেছে অবক্ষয়ের পথে। যে যুব সমাজের কাঁধে ভর দিয়ে দেশ, জাতি উন্নতির চরম শিখরে পৌছার কথা সেই যুবসমাজ আজ নীতির কাজে নৈতিকতা বিসর্জিত, পদদলিত। আমাদের যুব সমাজ আজ নানা সমস্যার কারণে ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে। আমাদের দেশের যুবসমাজকে বিভিন্ন দৈন্য দশা ঠেলে দিচ্ছে ধ্বংসের দিকে। মূলত যেসব কারণে আমাদের যুবসমাজ আজ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেগুলো হল -
নৈতিকতা ও মূল্যবোধের অভাব
মানুষের নীতিগত আদর্শ হলো নৈতিক মূল্যবোধ আর এই নৈতিক মূল্যবোধ মানুষের জীবন ব্যবস্থা সুন্দর ও নির্মল করে তোলে এবং মানুষকে করে তোলে মানসিকতা সম্পন্ন একজন মানুষ যা জাতির কল্যাণে কাজ করে। বর্তমানে আমাদের দেশের যুবসমাজের সামনে জীবন্ত আদর্শের একান্ত অভাব। আমাদের যুবসমাজ আজ খুব কম মানুষ খুঁজে পাচ্ছে যাদের কাছ থেকে তারা সৎপথের অনুপ্রেরণা পেতে পারে কারণ নৈতিক মূল্যবোধের সাথে জড়িয়ে আছে
আরো পড়ুনঃ মাদকাসক্তি ও যুবসমাজ রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
একজন মানুষের শিষ্টাচার, সৌজন্যবোধ, নিয়মানুবর্তিতা, ধৈর্য ধারণ, অধ্যাবসায়, সততা ইত্যাদি।আর এগুলো হল একজন মানুষের এমন গুন যা মানুষের নৈতিক মূল্যবোধকে জাগ্রত করে এবং মানুষের চরিত্র কে করে তুলে সুষমা মন্ডিত। আমাদের যুব সমাজকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে হলে তাদের আত্মিক এবং সামাজিক উৎকর্ষ সাধনে নৈতিক মূল্যবোধের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু বর্তমানে নৈতিক মূল্যবোধের অভাবে আমাদের যুব সমাজের মধ্যে নেমে এসেছে চরম অবক্ষয়।
আর এই দোষ শুধু আমাদের যুব সমাজের নয় তাদের নিয়ন্ত্রণ শক্তিরও বটে। যারা তাদের পরামর্শ দিছে তারাই নৈতিকতা বিবর্জিত যার কারণে আমাদের যুব সমাজ ডিগ্রি অর্জন করেও খুঁজে পাচ্ছে না নৈতিক এবং মানসিক মূল্যবোধের সুশিক্ষা।
মাদকাসক্তি
আমাদের দেশ তথা সারা বিশ্বের যুবসমাজের ধ্বংসের অন্যতম প্রধান কারণ হলো মাদকাসক্তি। একজন মাদকাসক্ত ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব এবং তাদের পথ প্রশস্ত করে দেয় অনিবার্য ধ্বংসের দিকে। প্রথমত তারা বিড়ি, সিগারেট দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে তারা গাঁজা, মদ, ভাং, আফিম, প্যাথেডিন, হেরোইন, হাসিস, মারিজুয়ানা, কোকেন, ইয়াবা ইত্যাদি ক্ষতিকর মাদকদ্রব্য গ্রহণ করছে যার কারণে আমাদের দেশের যুবসমাজ আজ ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
অপসংস্কৃতির প্রভাব
একটি দেশ ও জাতির পরিচয় বহন করে সেই দেশের সংস্কৃতি আর সেজন্য বলা হয়ে থাকে কোন দেশ সম্পর্কে জানতে হলে সেই দেশের সংস্কৃতি সম্পর্কে জানা প্রয়োজন। কিন্তু অপসংস্কৃতি আজ আমাদের দেশের যুবসমাজকে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বর্তমান সময়ে যুবসমাজের উপরে টিভি,বিভিন্ন রকম সিনেমা, সংবাদপত্র এসবের কুপ্রভাব এত বেশি যে তারা নিশ্চিত ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে।
বর্তমান সময়ে বিভিন্ন সিনেমার নাচ, গান, পোশাক পরিচ্ছদ, কাহিনী ইত্যাদি এমন ভাবে সন্নিবেশিত হয়েছে যে তারা ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া তারা বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ দেশি-বিদেশি সিনেমা, নাটক, নোংরা কাহিনী, উচ্ছৃঙ্খল পোশাক পরিচ্ছদ, অশ্লীল চরিত্র, পর্নোগ্রাফি ছবি ইত্যাদির সাথে জড়িয়ে পড়েছে। আর এ সকল কারণে যুব সমাজ আজ খুন, ছিনতাই, রাহাজানি, ধর্ষণ এসব অসামাজিক কার্যকলাপের সাথে জড়িয়ে পড়েছে আর এর মূল কারণ হলো অপসংস্কৃতির প্রভাব।
বেকারত্ব
আমাদের যুব সমাজের অবক্ষয়ের অন্যতম প্রধান কারণ হলো বেকারত্বের অভিশাপ। একটি দেশ ও জাতির উন্নতির পথে মারাত্মক অভিশাপ হলো বেকারত্ব। লেখাপড়া শেষ করে যারা কোন কর্ম পায় না এবং কর্মের অভাবে বসে থাকে তারাই বেকার আর বেকার জীবন নানারকম হতাশা আর যন্ত্রণায় ভরা। বাংলাদেশে প্রায় বেকার শিক্ষিত যুবক রয়েছে দুই কোটিরও বেশি এবং এদের বয়সও ২৫ থেকে ৩৫ বছরের মধ্যে। আর দীর্ঘদিন বেকার থাকার ফলে তারা বিভিন্ন অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে।
ছাত্র রাজনীতি
ছাত্র সমাজ হল বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতির সবচেয়ে বড় চালিকাশক্তি বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্ররা রাজনীতির সবচেয়ে বড় ধারালো অস্ত্র। আর আমাদের এই ছাত্রসমাজকে কিছু স্বার্থপর রাজনীতিবিদ তাদের নিজেদের স্বার্থ হাসিলের জন্য ব্যবহার করছে যার কারণে তারা বই খাতার আড়ালে তুলে নিচ্ছে অস্ত্র। তারা নিজেদের হিতাহিত জ্ঞান ভুলে হত্যা, রাহাজানি, মারামারি সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে। লেখাপড়া ছেড়ে তারা বিভিন্ন অনাচার, দুর্নীতি, মিটিং, মিছিলে যোগ দিচ্ছে। রাজনীতির এই কালো থাবা যুব সমাজকে অবক্ষয়ের পথে ধাবিত করছে এবং তারা হয়ে পড়ছে নীতি ভ্রষ্ট স্বার্থপর।
অর্থনৈতিক বিপর্যয়
নৈতিক মূল্যবোধ হল মানুষের সবচেয়ে বড় গুণ। আর বর্তমানে এই নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়ের কারণে মানুষের মধ্যে জন্ম নিচ্ছে বিভিন্ন হিংসা-বিদ্বেষ, লোভ-লালসা। মানুষ হয়ে পড়ছে আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থপর আর এই স্বার্থপরতা সামগ্রিকভাবে অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের সৃষ্টি করছে। আর এই অর্থনৈতিক বিপর্যয়ের অন্যতম প্রধান কারণ হলো অস্থিতিশীল পরিস্থিতি।
শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস
বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে আমাদের যুব সমাজ আজ বিপথগামী হয়ে গেছে যার কারণে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মত একটি পবিত্র স্থানে ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম করতে পিছুপা হয় না। বিভিন্ন কারণে তারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করে মধ্যে অন্যতম হলো - বই-পুস্তক সমস্যা, ভর্তি সমস্যা, খাদ্য সমস্যা, আবাসিক সমস্যা, ফল প্রকাশে অহেতুক বিলম্ব, যখন তখন ধর্মঘট, বিভিন্ন দলবাজি ইত্যাদি। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে
আরো পড়ুনঃ রচনা - মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব
এগুলো এখন নিত্য নৈমিত্তিক ব্যাপার যার কারণে আমাদের যুবকদের মানসিকতা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি সন্ত্রাসী আমাদের ছাত্রসমাজকে জিম্মি করে রেখেছে আর এরই স্বীকার হচ্ছে আমাদের গোটা যুবসমাজ।
চাকরির অনিশ্চয়তা
আমাদের দেশে যুব সমাজের অবক্ষয়ের আর একটি অন্যতম কারণ হলো চাকরির ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা। একজন ছাত্র মাস্টার্স ডিগ্রি কমপ্লিট করেও সে তার যোগ্যতা মোতাবেক চাকরি থেকে বঞ্চিত হয় যার কারণে তার মধ্যে হতাশা কাজ করে আর এ থেকে সে অবক্ষয়ের দিকে অগ্রসর হয়।
অভিভাবকদের দায়িত্বহীনতা
বাংলাদেশের অধিকাংশ পরিবারের অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের সঠিকভাবে খবর রাখেন না। এমন অনেক অভিভাবক রয়েছেন যারা তার সন্তানের স্কুলের কি পড়াশোনা হয় সেটাও জানেন না আর এই কারণে একজন ছাত্র স্কুলে না গিয়ে সে বাইরে কোন বখাটে ছেলের সঙ্গে মিশার সুযোগ পায় যার কারণে সে অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হয়।
ব্যক্তি স্বতন্ত্রবাদের উন্মেষ
এখন পশ্চিমা বিশ্বের মতো বাংলাদেশে ও যৌথ পরিবার নেই বললেই চলে। এখন সব পরিবার একক পরিবার যার কারণে একক পরিবারে বাবা-মা কর্মজীবী হলে তাদের সন্তানদের খোঁজ খবর রাখার মতো মানুষ থাকে না যার কারণে সন্তানেরা অবক্ষয়ের দিকে চলে যায়।
সামাজিক পরিবেশ
একজন মানুষের জীবনাদর্শ গড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় অবদান রাখে তার পরিবার এবং সর্বোপরি তার চারপাশের পরিবেশ তথা সমাজ ব্যবস্থা। একটি শিশু তার চারপাশের পরিবেশে যা দেখে তাই শেখে এজন্যই বলা হয় শিশুরা অনুকরণ প্রিয়। আর আমাদের সমাজ ব্যবস্থা আজকে নানান সমস্যায় জর্জরিত।মানুষে মানুষে ভেদাভেদ, অশ্লীল কথাবাত্রা, স্বেচ্ছাচারিতা, মিথ্যাবাদতা, অন্যায়, অনিয়ম যা দেখে একজন শিশুর মন মানসিকতা গড়ার আগেই নষ্ট হয়ে যায় যার কারণে আজকের যুবসমাজ অবক্ষয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
খেলাধুলা ও শরীর চর্চার অভাব
আমাদের যুব সমাজের অবক্ষয়ের আরেকটি অন্যতম কারণ হলো তাদের খেলাধুলার এবং শরীরচর্চার অভাব। কারণ সুস্থ দেহ সুস্থ মন এরই নামই স্বাস্থ্য আর খেলাধুলা এবং শরীর চর্চা মানুষের মনকে সতেজ এবং প্রফুল্ল রাখে। আর আমাদের যুবসমাজের মানসিক বিকাশের মাধ্যম হয়ে উঠেছে এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেখানে রয়েছে শুধুই ধ্বংসের লীলাভূমি যার কারণে আমাদের যুবসমাজ আজ অবক্ষয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
সহশিক্ষা
আমাদের দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা হল এমন যেখানে ছেলে মেয়ে উভয়ে একসঙ্গে পড়াশোনা করে এবং তারা শিশু থেকে কিশোর এবং যুবক পাশাপাশি বেড়ে ওঠে। যার কারণে একজনের সাথে আরেকজনের আকর্ষণ থেকে যায় আর এই আকর্ষণ থেকেই যুবকেরা অধিকাংশ সময় ধ্বংস হয়ে যায়।
যুবসমাজের অবক্ষয়ের প্রতিকার
যুব সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচানো আমাদের একান্ত কর্তব্য কারণ যারা অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত হয়েছে তারা আমাদেরই সন্তান। আর এর দায়িত্ব নিতে হবে দেশের জ্ঞানীগুণী এবং সচেতন ব্যক্তিদের। যুবসমাজের মনকে করতে হবে সচেতন এবং তাদের মনের মধ্যে গেঁথে দিতে হবে ভালো, মন্দ এবং ন্যায় বিচারের মানসিকতা। নিম্নে যুব সমাজের অবক্ষয়ের প্রতিকার পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো-
- আমাদের যুব সমাজকে অবক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচাতে হলে সুস্থ বিনোদনের ব্যবস্থা করতে হবে।
- পড়াশোনার পাশাপাশি খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকতে হবে।
- শিক্ষার্থীদের ধর্মীয় তথা নৈতিক শিক্ষায় শিক্ষিত করতে হবে।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের রাজনীতি বন্ধ করতে হবে।
- শিক্ষানীতি প্রণয়নের মাধ্যমে প্রতিটি সেশনে শিক্ষা বর্ষ সমাপ্ত করতে হবে।
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে হবে।
- পরিবার তথা সমাজকে যুবসমাজের দেখভালের দায়িত্ব নিতে হবে।
- যুবকদের রাজনীতির প্রভাব থেকে মুক্ত রাখতে হবে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন - রেডিও, টেলিভিশন ও বিভিন্ন পত্র - পত্রিকায় সচেতন মূলক বিজ্ঞাপন প্রচার করতে হবে।
- তরুণেরা যেন বিভিন্ন অপরাধ মূলক কাজে জড়িয়ে না পড়ে সেদিকে সচেতন থাকতে হবে।
- সন্তানদের বিভিন্ন শিক্ষামূলক প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ করে দিতে হবে।
- যুবকদের বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্তি দিতে হবে এক কথায় তাদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে।
আরো পড়ুনঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি আসক্তি আজ তরুণ সমাজের প্রধান সমস্যা
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ আর যুবকেরাই হলো যেকোনো দেশ বা জাতির মেরুদন্ড। তাই আমাদের যুবকদের ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে। নানা বাধা বিপত্তি অতিক্রম করে তাদেরকে জয় করতে হবে বিভিন্ন অজানাকে আর পুরাতন কে ভেঙ্গে সৃষ্টি করতে হবে নতুন বিশ্বকে। আর এজন্যই হয়তো কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন -
- ঊষার দুয়ারে হানি আঘাত
- আমরা আনিব রাঙা প্রভাত
- আমরা টুটাব তীমির রাত
- বাধার বিন্ধ্যাচল।
উপসংহার
যুবকেরাই পারে অন্ধকারকে দূর করে আলোর প্রভাত আনতে। তারাই পারে পাহাড়ে সমান বাধা অতিক্রম করে অজানা কে ছিনিয়ে আনতে। তবে আমাদের তরুণ সমাজ তথা যুবকদের বিভিন্ন পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করতে হবে কারণ যুবকেরা যদি অবক্ষয়ের দিকে চলে যায় তাহলে ক্ষতি হবে কারণ তারাই হলো দেশের মেরুদন্ড। এই পৃথিবীকে সুস্থ ও সুন্দরভাবে বাঁচিয়ে রাখতে তাদেরকে দায়িত্বশীল ভাবে গড়ে তুলতে হবে। তাই তো কবি সুকান্ত বলেছেন -
এ বিশ্বকে শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি-
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url