ফ্রিজ ব্যবহার করার ৫০টি সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জেনে নিন

খাবার ভালো রাখার জন্য আমরা সাধারণত ফ্রিজে তা সংরক্ষণ করে থাকি। কিন্তু ফ্রিজ কিভাবে ভালো রেখে দীর্ঘদিন ব্যবহার করা যায় তা আমাদের জানা প্রয়োজন। তাই আমি ফ্রিজ ব্যবহার করার ৫০টি সঠিক নিয়ম সম্পর্কে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনারা যদি ফ্রিজ ব্যবহার করার ৫০টি সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানেন তাহলে খুব সহজেই খাবার ভালো রাখতে পারবেন এবং আপনার ফ্রিজ ও ভালো থাকবে।

Image

ফ্রিজ সঠিকভাবে ব্যবহার না করার কারণে আমাদের বিদ্যুৎ বিল অনেক বেশি আসে আবার খুব সহজেই ফ্রিজ নষ্ট হয়ে যায়। তাই ফ্রিজকে ভালো রাখার জন্য ফ্রিজ ব্যবহার করার ৫০টি সঠিক নিয়ম সম্পর্কে জানা একান্ত প্রয়োজন।

ফ্রিজ ব্যবহার করার ৫০টি সঠিক নিয়ম

ফ্রিজ আমাদের প্রত্যহিক জীবনে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। বর্তমানে সময়ে ঘরে ফ্রিজ নেই এমন কথা যেন ভাবা যায় না। ফ্রিজ আমাদের অনেক প্রয়োজনে আসে বিশেষ করে গরমে দিনে ফ্রিজ আরো বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়ে। একটি ঘরে যদি ফ্রিজ থাকে তাহলে গরম কে আর গরম বলেই মনে হয় না। যেখানে গরমের দিনে খাবার রান্না করার পর সকালবেলা রান্না করলেই সেই খাবার দুপুর হতে না হতে নষ্ট হয়ে যায় আর ফ্রিজ থাকলে সেই খাবার দুই থেকে তিন দিন সংরক্ষণ করা যায়।

কোন কোন ক্ষেত্রে সাত দিনও সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব হয়। আর কাঁচা তরি তরকারির কথা তো বলাই বাহুল্য কারণ এইসব সবজি ফ্রিজে অনেক দিন সংরক্ষণ করে রাখা যায় এবং তা বেশ ভালো থাকে। এছাড়াও গরমের দিনে ঠান্ডা পানি, আইসক্রিম, বরফ সবকিছুই ফ্রিজে রাখা যায় কারণ ফ্রিজের ধর্মই হল যে কোন বস্তুকে ঠান্ডা রাখা। ফ্রিজ আমাদের সবার ঘরে থাকলেও আমরা ফ্রিজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম জানি না।

আরো পড়ুনঃ ফ্রিজ - কেনার আগে পনেরোটি (১৫) টি বিষয় সম্পর্কে জেনে নিন

তাই আমি আজ আপনাদের সঠিকভাবে ফ্রিজ ব্যবহারের নিয়ম সম্পর্কে জানাবো। আর যদি আপনারা ফ্রিজ ব্যবহারের এই সঠিক নিয়ম গুলো জানেন তাহলে আপনাদের ফ্রিজে ইলেকট্রনিক বিল অনেক কম আসবে। তাই আসুন জেনে নেওয়া যাক ফ্রিজ ব্যবহারের সঠিক নিয়ম-

  • ফ্রিজের যন্ত্রাংশ ফ্রিজের পেছনদিকে ফিট করা থাকে। তাই কখনোই ফ্রিজকে দেয়াল ঘেঁষে রাখবেন না। কমপক্ষে ১৫ থেকে ২০ সেন্টিমিটার দূরে রাখবেন যাতে করে ফ্রিজের গরম বাতাস পেছন দিক থেকে বেরিয়ে যেতে পারে।
  • আপনি আপনার ফ্রিজের ভেতরটা সব সময় পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করবেন এক্ষেত্রে যদি সম্ভব হয় তাহলে অবশ্যই সাত দিনে একবার আপনার ফ্রিজের ভেতরটা শুকনা পাতলা কাপড় দিয়ে মুছে নিবেন। আর যদি তা না পারেন তাহলে অবশ্যই কমপক্ষে তিন থেকে চার মাসের মধ্যে হলেও একবার আপনার পুরো ফ্রিজ পরিষ্কার করবেন।
  • আপনি যখন ফ্রিজ কিনবেন তার আগেই আপনার নিজ বাড়ি হোক অথবা ভাড়া বাড়ি হোক যেখানেই থাকেন না কেন সেখানে বৈদ্যাতিক ওয়ারিং ঠিক আছে কিনা তা ভালোভাবে দেখে নিবেন। আর এই সতর্কতা অবলম্বন শুধু আপনার ফ্রিজের জন্য নয়, আপনার নিজের জীবনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
  • আপনার বাসাবাড়ির বৈদ্যুতিক ওয়ারিং যদি দুর্বল হয় তাহলে মাল্টিপ্লাগ, মাল্টিবোর্ড অথবা দুর্বল সার্কিট হোক অথবা লুজকানেকশন এক কথায় আপনার বাসার যদি ইলেকট্রিকের লাইনে সমস্যা থাকতে তাহলে সেই লাইনে কখনোই ফ্রি চালাবেন না।
  • আপনি আপনার ফ্রিজ রাখার সময় অবশ্যই খেয়াল রাখবেন যেন আপনার ফ্রিজ সামনে থেকে সঠিকভাবে খোলা যায় এবং কোন কিছুর সঙ্গে যেন ফ্রিজের দরজা বাধা প্রাপ্ত না হয়।
  • আপনি আপনার ফ্রিজ রাখার সময় কখনই শুধু আপনার ঘরের মেঝেতে ফ্রিজ রাখবেন না। এখন ফ্রিজ রাখার জন্য ফ্রিজের সঙ্গে স্ট্যান্ড পাওয়া যায় সেগুলোতে রাখবেন অথবা আপনি একটি কাঠের টুল বানিয়ে নিবেন যাতে আপনি ফ্রিজ ভালোভাবে রাখতে পারেন এবং আপনার ফ্রিজ নিরাপদ থাকে। মনে রাখবেন ফ্রিজ বিদ্যুতে চলে আর বিদ্যুৎ হল মাটিতে সুপরিবাহী তাই অবশ্যই ফ্রিজ উপরে রাখবেন।
  • আপনি যখন নতুন ফ্রিজ কিনে আনবেন অথবা আপনার ফ্রিজ এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবর্তন করবেন তখন কমপক্ষে তিন ৩ থেকে চার ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করে তারপর আপনার ফ্রিজ চালু করবেন। আপনি যদি এই নিয়ম মেনে ফ্রিজ চালু করেন তাহলে আপনার ফ্রিজ ভালো থাকবে অন্যথায় আপনার ফ্রিজের গ্যাসের লাইন বন্ধ হয়ে যেতে পারে অথবা বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দিতে পারে।
  • যেসব ফ্রিজে ইনার কন্ডিশন যুক্ত থাকে সেসব ফ্রিজের বডি গরম হতে পারে। এছাড়া ও ফ্রিজ যখন চার্জ নেয় তখন ফ্রিজের বাম পাশটা অনেকটা গরম অনুভূত হয় এক্ষেত্রে ভয় পাওয়ার কিছু নেই কারণ এতে ফ্রিজের কোন ক্ষতি হয় না এবং এর ফলে ফ্রিজের বডি ও ঘামবে না।
  • আপনি যখন আপনার ফ্রিজ ঘরে রাখবেন তখন অবশ্যই যথা সম্ভব খোলামেলা জায়গায় রাখার চেষ্টা করবেন। তবে ফ্রিজ রাখার আগে খেয়াল রাখবেন যেন ফ্রিজের গায়ে সরাসরি সূর্যের তাপ না লাগে।
  • ফ্রিজের ভেতরে একেবারে কোন জিনিস বা খাদ্যদ্রব্য গাদাগাদি করে রাখবেন না। অনেক সময় দেখা যায় ডিপ ফ্রিজে একসাথে অনেক খাদ্যদ্রব্য পরিপূর্ণ করে রাখা হয়। আপনারা এই কাজ না করে যথাসম্ভব জিনিসগুলো ধাপে ধাপে ছোট ছোট আকারে প্যাকেট করে রাখতে পারেন। তবে যদি অতিরিক্ত ভর্তি করে জিনিস রাখেন তাহলে অবশ্যই ফ্রিজ দীর্ঘক্ষণ বন্ধ রাখবেন তারপর খোলার চেষ্টা করবেন নইলে আপনার খাদ্য দ্রব্য দ্রুত ঠান্ডা হওয়া থেকে বিঘ্নিত হবে।
  • আপনি যদি আপনার ফ্রিজে কাঁচা তরকারি অর্থাৎ শাকসবজি রাখেন তাহলে সবকিছু অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে পানি ঝরিয়ে তারপর সঠিকভাবে প্যাকেটে রাখবেন। তাহলে ফ্রিজে সেই খাদ্যদ্রব্যের গন্ধ ঢুকে ফ্রিজ আর দুর্গন্ধ ছড়াবে না।
  • ফ্রিজের মধ্যে ফল এবং তরকারি রাখা উচিত নয় কারণ এতে এগুলোর স্বাদ নষ্ট হয়ে যায়। তবে যখন বেশি হয় তখন না রেখে উপায় থাকে না সে ক্ষেত্রে আপনি অবশ্যই তরকারি একটি ঢাকনাসযুক্ত বাটিতে রাখবেন এবং ফলগুলো এমন ভাবে রাখবেন যেন এতে ফ্রিজের বাতাস না ঢুকতে পারে তাহলে আপনার ফল সতেজ থাকবে।
  • আপনি যখন আপনার ফ্রিজে কোন রান্না করা খাবার রাখবেন তখন তা অবশ্যই একটি ঢাকনাযুক্ত বাটিতে রেখে সঠিকভাবে ঢেকে রাখবেন তাহলে আপনার ফ্রিজে আর দুর্গন্ধ ছড়াবে না।
  • বর্ষাকালে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি থাকে এক্ষেত্রে আপনার ফ্রিজ ঘামতে পারে অর্থাৎ ফ্রিজের বডিতে ফোঁটা ফোঁটা পানি জমতে পারে। এক্ষেত্রে আপনার ভয় পাওয়ার কিছু নেই একটি শুকনো কাপড় দিয়ে তা মুছে দিলেই হবে।
  • অনেক সময় ফ্রিজের বৈদ্যুতিক লাইন ঠিক না থাকলে সমস্যা হতে পারে এক্ষেত্রে আপনার ভয় পাওয়ার কিছু নেই। আপনি যে সকেটে ফ্রিজের প্লাগ দিয়েছেন চেক করে দেখুন সেই প্লাগে সঠিকভাবে বিদ্যুৎ আছে কিনা!
  • আপনি যদি ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার এ ফ্রিজ ব্যবহার করে থাকেন তাহলে ফ্রিজের প্লাগ ভোল্টেজ স্টেবলাইজার থেকে খুলে সরাসরি বোডের সঙ্গে লাগিয়ে দেখতে পারেন ফ্রিজের বৈদ্যুতিক লাইন ঠিক আছে কিনা। কারণ অনেক সময় বৈদ্যুতিক লাইনের সমস্যা থাকতে পারে আবার অনেক সময় ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজারেরও সমস্যা থাকতে পারে তাই সঠিকভাবে দেখে তারপর সিদ্ধান্ত নিবেন।
  • আমরা অনেকেই দুম করে ফ্রিজ খুলে ফেলি যা ঠিক নয় তাই আপনি আপনার ফ্রিজের দরজা খোলার আগে অবশ্যই যেখানে ফ্রিজ আছে সেখানে যদি ফ্যান চালু থাকে সেই ফ্যানের সুইচ বন্ধ করুন এবং ফ্যান পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তারপর ফ্রিজ খুলুন।
  • আমরা ফ্রিজের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করার জন্য ফ্রিজের ওপর বিভিন্ন প্রকার শো পিচ বা ফুলদানি রাখি যা উচিত নয়। তাই আপনি আপনার ফ্রিজের ওপরে অবশ্যই কোন কিছু রাখবেন না।
  • আপনি ফ্রিজ কিনে আনার পরে তাতে ইলেকট্রিকের লাইন দিয়ে সঙ্গে সঙ্গে কোন খাবার রাখবেন না। কারণ ফ্রিজে সঠিকভাবে চার্জ না থাকলে ফ্রিজ আপনার খাবার ভালো রাখতে পারবেনা। মনে রাখবেন ফ্রিজ কিনে আনার পরে আপনাকে একটানা কমপক্ষে ৮ থেকে ১২ ঘন্টা চার্জ করতে হবে।
  • আপনি আপনার ফ্রিজের মাছ-মাংস অথবা আইসক্রিম যদি ভালো রাখতে চান তাহলে অবশ্যই সেগুলো আপনি আপনার ফ্রিজারে রাখবেন। ফ্রিজারের নিচে যে চিল -ট্রে থাকে তার তাপাংক অনেক কম থাকে তাই আপনি আপনার খাবার ভালো রাখতে অবশ্যই ফ্রিজে সঠিকভাবে রাখবেন।
  • আপনি যদি আপনার ফ্রিজে কোন লিকুইড খাবার অর্থাৎ কোল্ড ড্রিংকস বা সরবত তাড়াতাড়ি ঠান্ডা করতে চান তাহলে অবশ্যই ডিপ ফ্রিজের চিল - ট্রেতে রাখবেন। কিন্তু মনে রাখবেন এখানে আপনি আধা ঘন্টার বেশি রাখবেন না তাহলে বোতলের এই তরল পদার্থ ঠান্ডা হয়ে বরফে পরিণত হয়ে যাবে যা পরবর্তীতে আপনার সমস্যার সৃষ্টি করবে।
  • আমরা অনেক সময় ফ্রিজ খোলার পর তাড়াহুড়ো করে ফ্রিজ বন্ধ করি কিন্তু সঠিকভাবে খেয়াল করি না যে ফ্রিজের ডালা সঠিকভাবে বন্ধ হয়েছে কিনা। এতে ফ্রিজের ভেতরের বাতাস বের হয়ে যায় যা ফ্রিজের জন্য ক্ষতিকর। তাই ফ্রিজ বন্ধ করার সময় অবশ্যই দেখে নিবেন সঠিকভাবে ফ্রিজ বন্ধ হয়েছে কিনা।
  • আপনার ফ্রিজের যদি কম্প্রেসারে শব্দ হয় তাহলে অবশ্যই শব্দ শোনার সঙ্গে সঙ্গে একজন ফ্রিজের মেকার কে দেখাবেন। তবে এমন অনেক ফ্রিজ রয়েছে যেগুলো চার্জ নেওয়ার সময় শব্দ হয় আর সেই শব্দ যদি আপনার ফ্রিজ কেনার শুরু থেকে থাকে তাহলে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিন্তু যদি আপনার কাছে সেই শব্দ অপরিচিত মনে হয় তাহলে অবশ্যই একজন ইলেকট্রিশিয়ান কে দেখাবেন।
  • আপনি যদি আপনার ফ্রিজে কাঁচা সবজি রাখেন তাহলে অবশ্যই পলিথিন মুড়িয়ে সঠিকভাবে রাখবেন। কারণ মনে রাখবেন ফ্রিজের ভেতরে প্রচুর বাতাস থাকে আর এই বাতাসগুলো আপনার সবজি নষ্ট করে দেবে।
  • আপনি আপনার ফ্রিজে রান্না করা খাবার কখনোই পলিথিন দিয়ে চাপা দিয়ে রাখবেন না। মনে রাখবেন, আপনার ফ্রিজের ভেতরে যত পরিমাণ পলিথিন জমা হবে আপনার ফ্রিজ তত বেশি ঘামবে এবং আপনার রেখে দেওয়া তরকারি গুলো ঠান্ডা হওয়া থেকে বঞ্চিত হবে যার কারণে সহজে খাবারগুলো নষ্ট হয়ে যাবে।
  • আপনি আপনার ফ্রিজের পেছনের দেয়াল ঘেঁষে কোন জিনিস রাখবেন না বিশেষ করে পলিথিন জাতীয় কোন কিছু রাখবেন না এতে করে আপনার ফ্রিজের ভেতরে বরফ জমে যাবে। কারণ ফ্রিজের পেছনের দেয়ালে ফোঁটা ফোটা পানি জমে যা ফ্রিজের নিজস্ব নিয়মেই তার একটি ছিদ্র থাকে যেখান থেকে নিষ্কাশন হয়। আর যদি পলিথিন জমা থাকে তাহলে সেই পানি নিষ্কাশন হতে পারে না তখন তা বরফে পরিণত হয়।
  • আপনি আপনার ফ্রিজে কোন কিছু রাখার পর অবশ্যই সেটা নিয়মিত চেক করবেন যেন কোন পঁচে যাওয়া ফল বা সবজি আপনার ফ্রিজে না থাকে কারণ কোন নষ্ট জিনিস ফ্রিজে রাখা একেবারেই উচিত নয়।
  • তীব্র গন্ধযুক্ত ফল, তরমুজ, ফুটি, কলা, পাকা তাল ইত্যাদি কখনোই ফ্রিজে রাখা ঠিক নয়। কারণ তীব্র গন্ধ ফ্রিজের মধ্যে পুরো খাবার গুলোর মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে।
  • আপনি যখন ফ্রিজের কোন খাবার রাখবেন মনে রাখবেন সেই খাবার কখনো গরম অবস্থায় রাখবেন না। কারণ যখন ফ্রিজে খাবার রাখা হয় তখন খাবারগুলো ঠান্ডা হওয়া শুরু করলে গরম অবস্থায় আর সেই তাপমাত্রা সঠিকভাবে নিতে পারে না যার কারণে খাবারগুলো নষ্ট হয়ে যায়।
  • ফ্রিজে কোন খাবার রাখলে সব খাবার ঢেকে রাখা উচিত বিশেষ করে তরল জাতীয় কোন খাবার কখনোই সঠিকভাবে ঢাকনা না আটকে রাখবেন না। কারণ আপনার খাবার গুলোর মধ্যে কোন বাষ্প কণা জমে যেতে পারে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
  • ফ্রিজ ভালো রাখতে আপনি কখনোই আপনার ফ্রিজে কোনো রকম পঁচা জিনিস বিশেষ করে ফল ভুলেও রাখবেন না।
  • আপনি যদি ফ্রিজের নরমালে কাঁচা মাছ মাংস রাখতে চান তাহলে অবশ্যই সেগুলি সঠিকভাবে ধুয়ে মুছে অল্প সময়ের জন্য সংরক্ষণ করবেন। যদি পারেন তাহলে সেগুলি অবশ্যই একটি শুকনা কাপড় দিয়ে পেচিয়ে তারপর রাখবেন।
  • আপনি আপনার ফ্রিজ পরিষ্কার করার পর ভালোভাবে ফ্রিজকে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলবেন। এরপর ফ্রিজের বৈদ্যুতিক লাইন চালানোর পর এক ঘন্টা চার্জ করে নিবেন তারপরে আপনি আপনার খাদ্যদ্রব্য ফ্রিজে রাখবেন।
  • আপনি যদি দেখেন আপনার বাসার বৈদ্যুতিক লাইনের ভোল্টেজ ওঠানামা করছে এছাড়াও অনেক সময় ভোল্টেজ ওঠানামা করে আর এমন যদি ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে আপনি অবশ্যই আপনার ফ্রিজকে ভালো রাখতে আপনার ফ্রিজের বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ রাখবেন।
  • আপনি ফ্রি কেনার সময় দেখে নিবেন ফ্রিজের ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার আছে কিনা। কারণ ফ্রিজ দীর্ঘদিন ভালো থাকতে এবং টিকসই রাখতে হলে অবশ্যই ভোল্টেজ স্ট্যাবিলাইজার ব্যবহার করতে হবে।
  • আপনি আপনার ফ্রিজের খাবারগুলো সঠিকভাবে ভালো এবং দুর্গন্ধ মুক্ত রাখতে হলে মাঝে মধ্যেই ফ্রিজের ভেতরে শুকনা কাপড় দিয়ে মুছে ফেলবেন অথবা আপনি ফ্রিজ বন্ধ করে ডিটারজেন্ট মিশ্রিত পানি এবং কাপড় দিয়ে ফ্রিজ মুছে তারপর আবার একটি শুকনা কাপড় দিয়ে ভালোভাবে ফ্রিজটি মুছে নিবেন। তাহলে আপনার ফ্রিজ দুর্গন্ধ মুক্ত থাকবে এবং খাবারও ভালো থাকবে।
  • যেসব খাবারে অতিরিক্ত গন্ধ রয়েছে সেসব খাবার ভালো হোক বা মন্দ হোক কখনোই ফ্রিজে রাখবেন না এতে করে আপনার ফ্রিজের মধ্যে দুর্গন্ধ ছড়াতে পারে।
  • খাবার সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে এবং ফ্রিজ দীর্ঘদিন ভালো রাখার জন্য আপনাকে অবশ্যই ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রার দিকে খেয়াল রাখতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে দেখতে হবে আপনার ফ্রিজের ভেতরের তাপমাত্রা যেন শূন্য ডিগ্রির চেয়ে কম থাকে।
  • আপনার ফ্রিজে অতিরিক্ত বরফ জমছে কিনা সেদিকে খেয়াল করবেন কারণ অতিরিক্ত বরফ জমলে খাবার ঠান্ডা হতে সমস্যা হয়। তাই এ ক্ষেত্রে আপনি আপনার ফ্রিজের থার্মো স্ট্যাট টি পরীক্ষা করে নিবেন।
  • আপনার বাসায় যদি লোডশেডিং এর সমস্যা হয় এর অথবা যদি বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে যত সম্ভব ফ্রিজ খোলা থেকে বিরত থাকবেন তাহলে আপনার ফ্রিজে খাবার অন্তত দুইদিন সুরক্ষিত থাকবে।
  • আপনার ফ্রিজ অবশ্যই আপনার ঘরে কাঠের কোন বস্তুর ওপর রাখার চেষ্টা করবেন তাহলে অনেক ক্ষেত্রে ফ্রিজ চার্জ নেওয়ার সময় শব্দ হয় এই শব্দ থেকে অনেকটা রক্ষা পাবেন। আবার অনেক সময় যদি ফ্রিজের তার লিক হয় তাহলে দুর্ঘটনা থেকেও রক্ষা পাবেন।
  • আপনি আপনার ফ্রিজ যত কম খুলবেন ফ্রিজের ভেতর খাবার তত বেশি ভালো থাকবে কারণ ফ্রিজ যত খুলবেন তার ভেতরের গ্যাস তত বের হয়ে যাবে যা আপনার খাদ্যবস্তু নষ্ট করে দেবে।
  • আপনি আপনার প্রয়োজনে ফ্রিজ খুললেও ৩০ সেকেন্ডের বেশি সময় খুলে রাখবেন না তাহলে বাইরের বাতাস ফ্রিজের ভেতরে প্রবেশ করবে এবং ঠান্ডা বাতাস বের হয়ে যাবে যা খাদ্য বস্তু নষ্ট করে ফেলবে।
  • আপনি যখন ফ্রিজ চালাবেন তখন আপনি অবশ্যই আপনার ফ্রিজের ভোল্টেজ চেক করে নেবেন। আপনাকে দেখতে হবে আপনার ফ্রিজের ভোল্ট সব সময় ২০০ এর মধ্যে আছে কিনা! মনে রাখবেন ২০০ এর বেশি ভোল্ট হলে আপনার ফ্রিজের যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাবে।
  • আপনি যখন আপনার ফ্রিজে বোতলে করে কোন তরল খাবার রাখবেন বিশেষ করে দুধ, শরবত বা পানি  জাতীয় খাবার রাখলে কখনোই বোতল ভর্তি করে রাখবেন না। কারণ যখন বোতলের মধ্যে বরফ জমে তখন এর প্রসারতা বেড়ে যায় এবং বোতলের ঢাকনা খুলে যাবে। তাই বোতল একটু ফাঁকা করে বোতলের ঢাকনাটা সঠিকভাবে আটকে তারপর ফ্রিজে রাখবেন।
  • আপনি যখন আপনার ফ্রিজ স্থানান্তর করবেন তখন কখনই ফ্রিজ কাত করবেন না। কারণ কাত করলে ফ্রিজে যে তার গুলো থাকে তার মধ্যে তেল চলাচল বিঘ্ন সৃষ্টি করবে যা ফ্রিজের কার্য শক্তি কমিয়ে দিতে পারে। মনে রাখবেন! ফ্রিজ হল স্পর্শ কাতর একটি জিনিস। তাই অবশ্যই ফ্রিজকে সবসময় একটু উঁচু করে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়ার চেষ্টা করবেন।
  • আপনার ফ্রিজে খাবার দীর্ঘদিন ভালো রাখতে হলে আপনি অবশ্যই ফ্রিজের নরমালে বেশি দিন খাবার ভালো রাখতে পারবেন না। তাই এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই ডিপ ফ্রিজে তা সংরক্ষণ করতে হবে।
  • আপনার বাসায় যদি ছোট বাচ্চা থাকে তাহলে অবশ্যই বাচ্চাকে ফ্রিজের আশেপাশে খুব একটা যেতে দেবেন না। কোন ইলেকট্রিক জিনিসের পাশেই বাচ্চাদের খুব একটা বেশি যেতে দেওয়া ঠিক নয়।
  • আপনি দীর্ঘদিন কোন খাবার ফ্রিজে রাখবেন না এতে করে খাবারের মধ্যে ব্যাকটেরিয়া জন্ম নিবে যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।
  • আপনার ফ্রিজে কোন খাবার রাখার পরে যদি তা গন্ধ বের হয় তাহলে সঙ্গে সঙ্গে তা বের করে ফেলবেন তা না হলে এক খাবারের গন্ধ অন্য খাবারের মধ্যে চলে যাবে এবং সব খাবারের স্বাদ নষ্ট করে ফেলবে।
  • আপনি যদি মনে করেন আপনি আপনার ফ্রিজ দীর্ঘদিন ভালো রাখবেন তাহলে অবশ্যই যখন-তখন ফ্রিজ খুলবেন না এবং ফ্রিজের মধ্যে কোন জিনিসটা নিবেন তা আগে থেকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর ফ্রিজ খুলবেন এবং তা নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ফ্রিজ আবার বন্ধ করে দেবেন। 

ফ্রিজের তাপমাত্রা কত রাখা ভালো

আমাদের প্রায় সবার ঘরে ফ্রিজ আছে এবং আমরা আমাদের এই প্রয়োজনীয় বস্তুটি সবাই ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু ফ্রিজ ব্যবহার কিভাবে সঠিকভাবে করতে হবে এবং এর তাপমাত্রা বা কত রাখতে হবে এটা আমরা অধিকাংশ মানুষই জানিনা। আমরা যখন ফ্রিজ কিনে আনি তখন শোরুম থেকে যে রেগুলেটর বা পাওয়ার ঠিক করে দেওয়া হয় আমরা এভাবেই ফ্রিজ চালায়। আমরা অধিকাংশ মানুষই জানিনা যে ফ্রিজে রেগুলেটর আবার নিজের ইচ্ছে মত পরিবর্তন করা যায়।

তবে আধুনিক এই যুগে আমাদের অনেকের মনে প্রশ্ন জাগে ফ্রিজের তাপমাত্রা কত রাখা ভালো! তাই আমাদের যাদের মনে প্রশ্ন জাগে ফ্রিজের তাপমাত্রা সম্পর্কে আমি তাদের জন্য বলছি, আপনার ফ্রিজের তাপমাত্রা কত রাখতে হবে তা নির্ভর করে আপনি কিভাবে ফ্রিজে জিনিস রেখেছেন তার ওপরে। আপনার ফ্রিজে যদি অনেক বেশি জিনিস রাখেন তাহলে আপনাকে অবশ্যই পাওয়ার বাড়িয়ে দিতে হবে বিশেষ করে গরমের দিনে পাওয়ার বাড়িয়ে দিতে হয়।

আরো পড়ুনঃ  শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের ২০টি ( ৫,১০,১৫,২০) ব্যবহার জেনে নিন

আবার যদি ফ্রিজে কম জিনিস থাকে তাহলে পাওয়ার কমিয়ে রাখলেও সমস্যা হয় না। এক্ষেত্রে আপনি মনে করুন, আপনার ফ্রিজ আপনি পরিপূর্ণ করে রেখেছেন বা ফ্রিজের তিন ভাগের দুই ভাগে জিনিস রেখেছেন আর একভাগ ফাঁকা রয়েছে সে ক্ষেত্রে আপনাকে আপনার রেগুলেটর অনুযায়ী তিন থেকে চার ৩-৪ অথবা ছয় থেকে আট ৬-৮ এর মাঝামাঝি রাখতে হবে। আর আপনার ফ্রিজে যদি খুব বেশি জিনিস না থাকে তাহলে ফ্রিজের পাওয়ার বা রেগুলেটর দুই থেকে তিন অথবা 

তিন থেকে পাঁচ এর মধ্যে রাখতে হবে। এর বেশি যদি পাওয়ার দিয়ে রাখেন তাহলে আপনাকে এমনি এমনি অনেক বিদ্যুৎ খরচ গুনতে হবে। আবার শীতকালে আপনি ফ্রিজের পাওয়ার দুই থেকে তিন  অথবা তিন থেকে পাঁচের মধ্যে রাখতে পারেন। তাহলে নিশ্চয়ই এবার বুঝতে পেরেছেন আপনি আপনার শখের জিনিস টিকে কিভাবে ব্যবহার করবেন। মনে রাখবেন, আপনার ব্যবহারের ওপরে নির্ভর করবে আপনার জিনিস কতদিন টিকবে এবং আপনার বিদ্যুৎ খরচ কেমন হবে।

ফ্রিজে দরজা খোলা থাকলে কি হয়

আমরা যারা ফ্রিজ ব্যবহার করি তারা অনেকেই জানিনা ফ্রিজের দরজা যখন তখন খোলা ঠিক নয় এবং দরজা খুলে বেশিক্ষণ রাখা ও ঠিক নয়। তাই আমরা ফ্রিজ খুলে অনেকক্ষণ সময় রাখি যা একেবারে ঠিক নয় কারণ আপনাকে জানতে হবে আপনার শখের জিনিসটি আপনি ব্যবহার করছেন তা যেন সবসময় ভালো থাকে। আপনি যখন ফ্রিজ খুলবেন দেখবেন ফ্রিজের মধ্য থেকে একপ্রকার ঠান্ডা বাতাস বের হয় আর এই ঠান্ডা বাতাস কিন্তু গ্যাস দ্বারা পরিচালিত হয়।

ফ্রিজে যে গ্যাস ব্যবহার করা হয় তা হলো R134a এবং R600a নামক গ্যাস। আপনার ফ্রিজ যদি আগের হয়ে থাকে অর্থাৎ পুরাতন হয়ে থাকে তাহলে পুরাতন ফ্রিজ গুলোর সবগুলো ফ্রিজেই R134a গ্যাস ব্যবহার করা হতো যার কারণে বিদ্যুৎ বিল অনেক বেশি আসতো। কিন্তু বর্তমানে R600a নামক গ্যাস ব্যবহার করা হয় যা বিদ্যুৎ শাস্ত্রয়ী এবং এই গ্যাস পরিবেশ বান্ধবও বটে। তাই আপনি যদি আপনার ফ্রিজ বেশিক্ষণ খুলে রাখেন তাহলে ফ্রিজের ঠান্ডা বাতাস গুলো বের হয়ে আসবে

আরো পড়ুনঃ  কৃষি উদ্যোক্তা - রচনা (২০ পয়েন্ট) সম্পর্কে জেনে নিন

এবং ফ্রিজ যখন আবার নতুন ভাবে চার্জ নিবে তখন কম্প্রেসারের ওপরে অনেকটা চাপ পড়বে আর ঘরের ভেতরের বাতাসটা নিমিষেই ফ্রিজের মধ্যে ঢুকে যাবে যার কারণে ফ্রিজ আর সহজে ঠান্ডা হতে চাইবে না। তাই আপনাকে ফ্রিজ খোলার আগেই চিন্তা করে নিতে হবে আপনি ফ্রিজ থেকে কতটুকু জিনিস বের করবেন এবং আপনার যে ঘরে ফ্রিজ আছে সেই ঘরে যদি ফ্যান চালানো থাকে তাহলে ফ্যান বন্ধ করে দিয়ে তারপর ফ্রিজ খুলবেন।

এবং খুব বেশি হলে ৩০ সেকেন্ডের মধ্যে আপনার ফ্রিজটি আবার বন্ধ করার চেষ্টা করবেন। তাহলে আপনি আপনার শখের যে জিনিসটি দীর্ঘ দিন ভালোভাবে ব্যবহার করতে পারবেন।

ফ্রিজে কোন স্টার ভালো

বর্তমানে বাজারে অনেক ধরনের এবং অনেক কোম্পানির ফ্রিজ রয়েছে। তবে আপনাকে ফ্রিজ কেনার সময় চিন্তা করতে হবে কোন ফ্রিজের বিদ্যুৎ বিল কেমন আসে। তাই ফ্রিজ কেনার সময় অবশ্যই দেখে নেবেন আপনি যে ফ্রিজটা কিনবেন তাতে স্টার মার্ক দেওয়া আছে কিনা! যেসব ফ্রিজ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী তাতে মার্ক স্টার মার্ক দেওয়া থাকে তাই আপনি ফ্রিজ কেনার সময় অবশ্যই স্টার মার্ক দেওয়া ফ্রিজ দেখে কিনবেন।মনে রাখবেন যে ফ্রিজে যত স্টার মার্ক রয়েছে সেই ফ্রিজ ততো ভালো।

 তবে ৩ স্টার বা ৪ স্টার বা ৫ স্টার এবং বর্তমানে আপনি ৭ স্টার পর্যন্ত ফ্রিজ বাজারে পাবেন। মনে রাখবেন ৩ স্টার ফ্রিজে যে বিদ্যুৎ বিল আসবে ৫ স্টার বিশিষ্ট ফ্রিজে বিদ্যুৎ বিল তার চেয়ে অনেকটাই কম আসবে। একটি পাঁচ ৫ স্টার রেটিং যুক্ত ফ্রিজে সাধারণত ২৩০ ওয়াট থেকে ২৫০ ওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ খরচ হতে পারে। তাই আপনাকে ফ্রিজ কেনার সময় অবশ্যই দেখে নিতে হবে কোন ফ্রিজে কত ষ্টার মার্ক দেওয়া রয়েছে।

ফ্রিজে কতদিন খাবার রাখা যায়

আমরা সবাই প্রয়োজনে ফ্রিজ ব্যবহার করি কারণ ফ্রিজে খাবারগুলো সংরক্ষণ করে রাখা যায় আর এতে খাবারের অপচয় কম হয়। তবে মনে রাখবেন কোন জিনিসই ফ্রিজে বেশিদিন রাখা ঠিক নয়। আপনি যদি রান্না করা খাবার নরমাল চেম্বারে রাখেন তাহলে অবশ্যই সেই খাবারে ১ থেকে দুই ২ দিনের মধ্যে খেয়ে ফেলবেন। তবে সবচেয়ে ভালো হয় আপনি যদি ফ্রিজে না রেখে টাটকা খাবার খেতে পারেন। তবে এক থেকে দুই দিনের বেশি নরমাল চেম্বারে কোন খাবার রাখবেন না।

আরো পড়ুনঃ মোবাইলে ভালো ছবি তোলার ৩০ টি উপায় সম্পর্কে জেনে নিন

আমরা ডিপ ফ্রিজকে খাবার সংরক্ষণের জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য স্থান মনে করি তবে আপনি ডিপ ফ্রিজে কাঁচা মাছ-মাংস অনায়াসে দুই থেকে তিন মাসের জন্য রাখতে পারেন। তবে অনেকেই ৬ মাস কিংবা তার চেয়ে অধিক সময় সংরক্ষণ করেন যা মোটেও ঠিক নয়। মনে রাখবেন, ফ্রিজে খাবার দুই থেকে তিন মাসের বেশি সংরক্ষণ করে রাখা ঠিক নয় এতে খাবারের পুষ্টিগুণ নষ্ট হয়ে যায়। তাই আপনি ফ্রিজে বেশিদিন খাবার সংরক্ষণ করে রাখবেন না।

গরম খাবার ফ্রিজে রাখা যায় না কেন

আমরা ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণ করি কিন্তু গরম খাবার কখনো ফ্রিজের সংরক্ষণ করা যায় না আর এই প্রশ্নটি আমাদের অনেকের মনে আসে যে আমরা কেন গরম খাবার ফ্রিজে রাখতে পারি না! তাই আপনাদের মনে যাদের প্রশ্ন আছে যে গরম খাবার কেন ফ্রিজে রাখা যায় না আমি তাদের জন্য বলছি,  ফ্রিজের ধর্মই হল কোন বস্তুকে ঠান্ডা করা। কিন্তু যখন আপনি গরম খাবার ফ্রিজের মধ্যে রাখবেন সেই গরম খাবার ঠান্ডা হতে গেলে ফ্রিজের কম্প্রেসারের ওপর চাপ পড়ে

যার কারণে খাবার গুলি ঠান্ডা হওয়ার পরিবর্তে বরং নষ্ট হয়ে যায় এর অন্যতম প্রধান কারণ হলো রেফ্রিজারেটর চেম্বারে উপস্থিত থাকে ঘণীভবন এবং তুষার কোট যার কারণে রেফ্রিজারেশন সরঞ্জাম গুলির অভ্যন্তরে গরম খাবারের উপস্থিতির কারণে বাষ্পীয় ভবন বিকশিত হতে শুরু করে আর ফ্রিজ চার পাশে বন্ধ হওয়ার কারণে সেই ঘনীভূত বাস্পগুলো বাইরে যেতে পারেনা। যার কারনে সেই বাষ্পগুলো ফ্রিজের চার দেয়ালে ঘনীভূত হয়

এবং সময়ের সাথে সাথে এটি থেকে বরফের কাস্ট বা তুষার কাস্ট নামক একপ্রকার পদার্থ তৈরি হয় যা আবার নিজে থেকে এগুলো সঞ্চিত পণ্যগুলোকে নেতিবাচক ভাবে প্রভাবিত করে যার কারণে ফ্রিজের মধ্যে গরম খাবার রাখা কখনোই ঠিক নয়।

ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর কে আবিষ্কার করেন

১৮০৫ সালে অলিভার ইভান্স নামক আমেরিকার একজন উদ্ভাবক ফ্রিজ বা রেফ্রিজারেটর আবিষ্কার করেন। তিনি প্রথম রেফ্রিজারেশনের আবিষ্কারের জন্য একটি মেশিনে বুলু প্রিন্ট ডিজাইন করেছিলেন পরবর্তীতে ১৮৩৪ সাল পর্যন্ত প্রথম ব্যবহারিক রেফ্রিজারেটর মেশিনটি তৈরি করেছিলেন জ্যাকবনি পার্কিংস অলিভার্স ইভান্স এবং তার ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে বাষ্প সংকচন ব্যবহার করে তাপমাত্রাকে ঠান্ডা করার জন্য রেফ্রিজারেটর তৈরি করা হয় এজন্যই অলিভার ইভান্স কে রেফ্রিজারেটর এর উদ্ভাবক বলা হয়।

আরো পড়ুনঃ কম দামে ভালো মানের মোবাইল কিনুন 

১৮৫৬ সালে জেমস হ্যারিসন প্রথম ব্যবহারের জন্য কম্প্রেশন হিমায়ন সিস্টেম ফ্রিজ তৈরি করেন এবং ১৮১৩ সালে ফ্রেন্ড ডব্লিউ ওল্ড প্রথম সকলের ব্যবহারের উপযোগী রেফ্রিজারেটর তৈরি করেন আর এটি ব্যবহারের জন্য প্রথম ফ্রিজ। 

ফ্রিজের অপকারিতা 

বর্তমানে সময়ে ফ্রিজ নেই এ কথা যেন ভাবাই যায় না। আমরা সবাই ফ্রিজ ব্যবহার করি এবং তাতে খাদ্য সংরক্ষণ করি। তবে খাদ্য সংরক্ষণ করতে গিয়ে আমাদের এমন অবস্থা হয়েছে যে আমরা যে কোন জিনিস দিয়ে ফ্রিজ পরিপূর্ণ করে রাখি। যাদের ফ্রিজ রয়েছে তারা ফ্রিজের ডিপ অংশে মাছ, মাংস দিয়ে পরিপূর্ণ করে রাখেন। আবার আমরা অনেক সময় রান্না করা খাবার ফ্রিজে রাখি এবং পরবর্তীতে তা গরম করে খায় যা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর।

ডিপ ফ্রিজে যে মাছ, মাংস রাখা হয় যদি বিদ্যুৎ না থাকে তাহলে তা পচে নষ্ট হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে। এক্ষেত্রে আপনি অনেক অর্থ হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারেন। ফ্রিজের মধ্যে থাকে ক্লোরোফ্লোরো কার্বন যা ওজোন স্তরের ক্ষতি করে এবং এই গ্যাস গ্রীন হাউস এর জন্য দায়ী। তবে বর্তমান সময়ে ফ্রিজের  অপকারিতার চেয়ে উপকারিতাই বেশি।

শেষ কথা

ফ্রিজ আমাদের একটি অতি প্রয়োজনীয় উপাদান। আমরা ফ্রিজে খাবার সংরক্ষণ করে রাখি এতে খাবারের অপচয় অনেক কম হয়। তবে যার উপকারিতা রয়েছে তার অপকারিতাও রয়েছে। তবে ফ্রিজে অপকারিতার চেয়ে উপকারিতাই বেশি তাই আমি ফ্রিজ সম্পর্কে যাবতীয় বিষয় তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আমি আশা করি আমার এই আর্টিকেল আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আর যদি উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই একটি লাইক দিবেন এবং যদি কোন ভুল হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন এবং উপকৃত হলে বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করবেন।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url