টিউমার কি - টিউমার কি ভালো হয় জানুন
মানব দেহ কোটি কোটি কোষের সমন্বয়ে গঠিত। এই কোষগুলি যখন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় তখন মানবদেহে টিউমার হয়। মানুষের দেহের কোন অংশের মাংস যখন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় তখন আমরা তাকে টিউমার বলে থাকি। এক কথায় টিউমার হল মানব দেহের কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি।
টিউমার কেন হয় এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই। মানুষের দেহের কোষগুলো যখন অস্বাভাবিকভাবে রক্ত কিংবা লিম্ফ নামক কিছুর রাসানিক পদার্থের মাধ্যমে শরীরের অন্য কোন অংশে গিয়ে জমা হয় তখন সেই অংশের মাংস স্বাভাবিক কার্য ক্ষমতা হারায় যার কারণে দেহে তৈরি হয় টিউমার। টিউমার কি - টিউমার কেন হয় এ সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
টিউমার কি
আমাদের শরীরের যদি যখন কোন অংশের মাংস ফুলে ওঠে তখন আমরা স্বাভাবিকভাবে তাকে টিউমার হিসেবে গণ্য করি এবং প্রাথমিক পর্যায়ে কেউ এর গুরুত্ব দেয় না এবং সে বুঝতে পারে না টিউমার আসলে কোন স্বাভাবিক প্রক্রিয়া নয়। অনেকেই মনে করে থাকেন এটা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া কারণ টিউমার হলে প্রাথমিক পর্যায়ে কোন ব্যথা বা কোন যন্ত্রণা থাকে না যার কারণে মানুষ এর গুরুত্ব দিতে চায় না বা দেয় না।
কিন্তু আমাদের সবার ধারণা থাকা উচিত টিউমার কেন হয় এই বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান থাকা। টিউমার বলতে বোঝায় মানব দেহের কিছু অস্বাভাবিক টিস্যুর সমাবেশ। কোষগুলো যেখানে অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বৃদ্ধি পেতে থাকে। মানবদেহ কোটি কোটি কোষের সমন্বয়ে গঠিত। একই ধরনের কিছু কোষকে টিস্যু বলা হয় যখন এই টিস্যু এক হয়ে একই ধরনের কাজ করে থাকে। মানবদেহে বিলিয়ন নয় প্রায় ট্রিলিয়ন ট্রিলিয়ন কোষ থাকে। ধারণা করা হয় যে একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের শরীরে কোষ থাকে প্রায় ৩০ ট্রিলিয়ন।
টিউমার কত প্রকার
টিউমার হল মানবদেহের অস্বাভাবিক ইস্যু বা কোষ যা মানুষের দেহের স্বাভাবিক কর্মকান্ডে ব্যাঘাত ঘটায়। টিউমার দেখতে বিভিন্ন রকম হয়ে থাকলেও প্রধানত টিউমার দুই ধরনের হয়ে থাকে। যথা -
বিনাইন টিউমার ও
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার
বিনাইন টিউমার
যে টিউমার মানবদেহে এক জায়গাতে বৃদ্ধি পেয়ে এক জায়গাতে বসে থাকে তাকে বলা হয় বিনাইন টিউমার। অর্থাৎ এই টিউমার হলে আক্রান্ত অংশ দেহের বিভিন্ন অংশে তেমন একটা ছড়িয়ে পড়ে না। মানবদেহের সর্বত্র ছেড়ে ছড়িয়ে না পড়লেও যেহেতু টিউমার মানব দেহের অস্বাভাবিক কোষ তাই এটি অবশ্যই চিন্তার বিষয়।
ম্যালিগন্যান্ট টিউমার
মানব দেহের যে টিউমার তার ভেতরে থাকা অস্বাভাবিক কোষগুলো রক্ত কিংবা লিম্ফ নামক কিছুর রাসায়নিক পদার্থের মাধ্যমে শরীরে অন্য কোন অংশে গিয়ে জমা হয় এবং সেই অংশের স্বাভাবিক কাজে ব্যাঘাত ঘটায়। এবং সেখানে নতুন টিউমার তৈরি করে তাকে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার বলা হয়। একে আবার ক্যান্সারও বলা হয়।
মানবদেহে প্রায় ২00 ধরনের ক্যান্সার জাতীয় সমস্যা রয়েছে। মানবদেহের বিভিন্ন সমস্যার একটি সমস্যা হল ক্যান্সার আবার আনুমানিক ১৩০ ধরনের ব্রেন টিউমার রয়েছে যা মানব দেহের কোষের ধরন নির্দিষ্ট অবস্থান ও সংখ্যা বৃদ্ধি ঘটে। এবং কোষ গুলো কত দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি করতে পারে তার উপর ভিত্তি করে ব্রেন টিউমার সনাক্ত করা হয়।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার - এর ডাক্তারেরগণের তালিকা দেখুন
মস্তিষ্কের কোষের সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পেলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের কোষগুলি ধ্বংস করতে শুরু করে আর এভাবেই বৃদ্ধি পেতে থাকলে ক্যান্সার সৃষ্টি হয় সুতরাং মানব দেহে তা ছড়িয়ে পড়ে। অনেক সময় টিউমারের মধ্যে থাকা শরীরের অস্বাভাবিক কোষ শরীরে বিভিন্ন অংশ ছড়িয়ে পড়ে এবং নতুন টিউমার হতে পারে।
কখনো আবার শুধু যেখানে টিউমার হয়েছে সেখানে অন্যকোষ গুলো সমস্যা সৃষ্টি করে থাকে। বিনাইন টিউমার মানব দেহে ছড়িয়ে পড়ে না কিন্তু ম্যালিন্যান্ট টিউমার গুলো মূলত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ক্যান্সার সৃষ্টি করে থাকে এক্ষেত্রে মানব দেহের যে অংশ বা অঙ্গ থেকে কোষের পরিবর্তন শুরু হয় তখন তাকে ওই পার্টের ক্যান্সার বলে।
টিউমার কেন হয়
বিভিন্ন কারণে টিউমার হতে পারে। খারাপ টিউমার শরীরের অন্যান্য অঙ্গ প্রত্যঙ্গ থেকে ক্যান্সার রূপ নিয়ে ব্রেনের মধ্যে চলে যায় আর এভাবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টিউমার বা ব্রেন টিউমার হয়ে থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন কারণে টিউমার হয়ে থাকে। যথা-
পারিবারিক ইতিহাস
টিউমার সম্পর্কে আমাদের ধারণা থাকলে ও টিউমার কেন হয় এই সম্পর্কে আমাদের ব্যাপক ধারণা নেই। টিউমার হওয়ার বিভিন্ন কারণ রয়েছে যেগুলো আমি আমার আর্টিকেলের মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তাহলে চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক টিউমার কেন হয় -বংশগতিঃ
শারীরিক ব্যাধি অনেক ক্ষেত্রেই ব্রেন টিউমারের মত রোগ জিন গতভাবে এক জন থেকে অন্য প্রজন্মে প্রবাহিত হয়ে থাকে। আর এ কারণেই পরিবারের কারো যদি ব্রেন টিউমারের ইতিহাস থাকে অর্থাৎ পূর্বে যদি পরিবারের কেউ ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে পরিবারের অন্য সদস্যদেরও ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। মানবদেহের কোষগুলি গঠিত হয় অসংখ্য ডিএনএ দ্বারা।
এই ডিএনএ থাকে তাই নিউক্লিক এসিড হলো এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ যা আমাদের শরীরের জিনের গঠনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে থাকে। এই জিন মানব দেহের নির্ধারিত হয় সকল কার্যকলাপ আর যদি মানব দেহের অভ্যন্তরে ডিএনএর যদি কোন উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায় তাহলে মানবদেহের কোষগুলি বিভাজিত হতে শুরু করে অস্বাভাবিকভাবে।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহীর সেরা নবজাতক - শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারগণের তালিকা ও ফোন নাম্বার
মানবদেহের জিন পাওয়া যায় সাধারণত দুইভাবে। যেমন- অস্কোজিন যা মানব দেহের কোষের স্বাভাবিক বৃদ্ধি বিভাজনে প্রধান ভূমিকা পালন করে থাকে। টিউমার নিয়ন্ত্রণকারী জিন বা টিউমার প্রসেসর জিন যা মানব দেহের উপস্থিতি কোষ গুলোর বিভাজন ও বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। মানবদেহের এই কোষগুলিকেই এই যে ধ্বংস করতে সাহায্য করে থাকে যার ফলে জন্মাতে পারে নতুন ও স্বাস্থ্য সবল কোষ।
এই টিউমার প্রসেসরে জিন বা অসকো জিনের মধ্যে কোন একটি যদি কাজ না করে থাকে তাহলে বিঘ্নিত হয় শরীরের ভারসাম্য আর এর ফলে অন্যান্য টিউমার বা ব্রেন টিউমার অথবাnক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে।
জৈবিক বা অভ্যন্তরীণ কারণ
জ্বীনগত কারণ
হাড়ের ক্যান্সার হয় লি-ফ্রাউ মেনি সিনড্রোম থেকে, সফট টিস্যু সারকোমা,মস্তিষ্কের ক্যান্সার, বেস্ট বা স্তন ক্যান্সার ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। আবার জিনগত অসুখ যেমন- ডাউন সিনড্রোম অসুখ থেকেও নানা রকম ক্যান্সার, ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকোমিয়া ও হতে পারে। টেস্টিকুলার নামও ক্যান্সার।
লিঙ্গ
সাধারণত লিঙ্গে ভেদে ক্যান্সার দেখা দেয়। যেমন - মেয়েদের তুলনায় পুরুষদের ব্রেন টিউমার বেশি দেখা যায়।
বয়স
বয়স ভেদে ও ক্যান্সার বা টিউমারের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। যেমন ৫০ বছর বা তার ঊর্ধ্বে বয়স হলে শতকরা ৯৯ জনের টিউমার বা ক্যান্সার হয়ে থাকে।
পুরাতন রোগব্যাধির ইতিহাস
মানুষ যদি পূর্বে কখনো ক্যান্সার দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তীতে ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি দেখা যায়। চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের মতে ক্যান্সারের কোষ গুলি মানবদেহের দীর্ঘদিন সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে এবং এর প্রতিক্রিয়া দীর্ঘদিন পরেও হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ - কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
এই কারণে পূর্ব যদি কোন প্রকার ক্যান্সার হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তীতে কোন প্রকার টিউমার হলে তাকে পূর্বের কারণ হিসেবে গণ্য করা হয়ে থাকে। কেউ যদি ব্লাড ক্যান্সার বা লিউকিমিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তীকালে তার ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক গুণ বেড়ে যায়।
ইউভি রশ্মির বিকিরণ
সূর্য থেকে আসা অতি বেগুনি রশ্মি বা ইউভি রশ্মির সংস্পর্শে দীর্ঘদিন থাকলে বিভিন্ন ধরনের ত্বকের ক্যান্সার বা মেলানোমা ধরনের ক্যান্সার হতে পারে।
রেডিয়েশন থেরাপি
ক্যান্সারের চিকিৎসায় রেডিয়েশন থেরাপি ব্যবহার করা হয় আর এ রেডিয়েশন থেরাপীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে অন্য ধরনের ক্যান্সার হওয়া ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়।এছাড়াও অনেক সময় লিম্ফমা নামক ক্যান্সার হলে দীর্ঘদিন ধরে রেডিয়েশন থেরাপি দেওয়া হয় যা পরবর্তীতে বেস্ট ক্যান্সার রূপে প্রকাশ পেতে পারে বা বেস্ট ক্যান্সার হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ কিডনি রোগের লক্ষণ - প্রতিকার জেনে নিন
রেডিয়েশন হলো উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিকিরণ যার সংস্পর্শে আসলে ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এমআরআই, র্সিটি স্ক্যান বারবার করলেও রেডিয়েশন বৃদ্ধি পায় ও টিউমারের ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দেয়।
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যদি কমে যায় তাহলে মানব দেহেন নানারকম রোগ হতে পারে। এমনকি টিউমার বা ক্যান্সারও হতে পারে। সম্প্রতি একটি গবেষণায় দেখা যায় যে, যাদের কোন ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত রোগ রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে ব্রেন টিউমার হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়।
জীবন যাপনের তারতম্য
জীবন যাপনের তারতম্যের কারনে অনেক সময় ব্রেন টিউমার হতে পারে। যেমন - অতিরিক্ত ধূমপান থেকে মানবদেহের বিভিন্ন অঙ্গ যেমন ফুসফুস, ষরযন্ত্র, পাকস্থলী, ব্লাডার বা মূত্রথলী গলা ও ঘাড়, কিডনি, খাদ্যনালী, অগ্নাশয় এ অনেক ধরনের ক্যান্সার হতে পারে।
স্থূলতা বা মানব দেহের অতিরিক্ত মেদ
স্থুলতা বা মানব দেহের অতিরিক্ত মেদ ব্রেন টিউমারের একটি উল্লেখযোগ্য কারণ। প্রতিবছর প্রায় শতকরা দুই ২ জন ব্যক্তি স্থূলতার কারণে ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে থাকে।
ব্রেন টিউমার কি
ব্রেন টিউমার নামটি শুনলেই আমরা ভয়ে আতকে ওঠি। কিন্তু আমাদের অনেকেরই ধারণা নেই ব্রেন টিউমার আসলে কি জিনিস এবং কেন হয়। আমরা অনেকেই ব্রেন টিউমার কি জানার জন্য গুগলে সার্চ করে থাকি। আমরা যারা জানতে চাই ব্রেন টিউমার আসলে কি আমি আশা করি আমার এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনারা পুরো ধারণা পাবেন। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক ব্রেন টিউমার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য। ব্রেন টিউমার হল মস্তিষ্কের কোষের একটি অবস্থা
আরো পড়ুনঃ বাত জ্বর কাকে বলে - বাত জ্বরের কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন
ব্রেন টিউমারের লক্ষণ
টিউমারের লক্ষণ প্রকাশ পায় ব্যক্তির কোথায় টিউমার দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে। তবে সাধারণত যে লক্ষণ গুলো দেখা যায় তা হল -
- দীর্ঘ মেয়াদে মাথাব্যথা
- সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর তীব্র মাথাব্যথা অনুভব করা
- সাধারণ ব্যথার ওষুধ খাওয়ার পরেও মাথাব্যথা না কমা
- ব্যায়াম করার সময় বা বেশি নড়াচড়া করলে এমনকি কাশি দিলেও মাথা ব্যথা অনুভব করা
- সারাদিন ধরে মাথাব্যথা থাকা
- আবার দিনের অনেক সময় তীব্রতার পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়।
- খিচুনি হওয়া
- খিচুনি হওয়া বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া ব্রেন টিউমার খিচুনি হওয়া একটি অন্যতম কারণ। এই উপসর্গ শতকরা ৫০ ভাগ রোগীর ক্ষেত্রে এই টিউমারের লক্ষণ প্রকাশ পায়।
- ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন
- ব্রেন টিউমার হলে ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন দেখা যায় যেমন -
- ছোটখাটো সাধারণ বিষয়ে বিভ্রান্ত দেখা দেওয়া
- কোন কাজ পূর্বে যা প্রিয় ছিল বর্তমানে তার প্রতি কোন আগ্রহ না থাকা
- ক্লান্তি বা গড়ি মসি ভাব অথবা যে কোন কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করা
- কোন কথা বলতে অসুবিধা বা কথা জড়িয়ে যাওয়া
- স্মৃতি ভ্রষ্ট সহজেই স্মৃতি ভ্রষ্ট হতে পারে
- মনো সংযোগ অসুবিধা হয়
- একই সাথে একাধিক কাজ করার ক্ষমতা হ্রাস পায়
- ব্রেন টিউমারের ফলে তীব্র স্মৃতিভ্রম বা স্মৃতি লোপ পেতে পারে
- দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যাওয়া
- অকারনে মেজাজ বিগড়ে যাওয়া
- অনিদ্রা
- নিজের প্রিয় বিষয় গুলির প্রতি অনীহা দেখা দেওয়া
- নিজেকে মূল্য হীন মনে করা বা নগণ্য মনে করা
- কথা বলা ও হাতের লেখা ধরন পরিবর্তন হওয়া
- উপরে তাকাতে অসুবিধা হওয়া
- ভারসাম্য নষ্ট হওয়া
- মুখের অসারত
টিউমার সনাক্তকরণ
এই টিউমারের রোগ নির্ণয় করতে আমাদের দেশে কিছু পরীক্ষা করা হয়। যেমন- এক্স-রে,সিটিস্ক্যান ও সবচেয়ে ভালো হলো এমআরআই। এর মাধ্যমে টিউমার রোগ নির্ণয় করা হয়ে থাকে।
টিউমারের চিকিৎসা পদ্ধতি
টিউমারের চিকিৎসায় অনেক সময় সার্জারি করা হয়ে থাকে আবার অনেক সময় সার্জারি ছাড়াও বিভিন্ন থেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে।টিউমারের অনেক চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে সেগুলো হল কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি ও ইমিউন থেরাপি ইত্যাদি।
কেমোথেরাপি
কেমোথেরাপি হল শক্তিশালী রাসায়নিকের ব্যবহার যা শরীরের দ্রুত বর্ধনশীল কোষ কে মেরে ফেলে। এটা একটি উচ্চ ক্ষমতার সম্পূর্ণ ঔষধি চিকিৎসা। মানবদেহে ক্যান্সারের কোষগুলি দ্রুত বৃদ্ধি পায় তাই কেমোথেরাপির চিকিৎসা সাধারণ ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের কেমোথেরাপির ঔষধ গুলো এক বা একত্রে চিকিৎসা করা হয় বিস্তৃত।
আরো পড়ুনঃ এলার্জি কত ধরনের - এলার্জি হলে কি কি সমস্যা হয় জানুন
এই চিকিৎসা যদিও অনেক ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা তবে এই চিকিৎসা আবার ঝুঁকি ও নিয়ে আসে। অনেক বিরূপ প্রভাবের কিছু কেমোথেরাপি আছে যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ন্ত্রণযোগ্য ও বটে। আবার কিছু আছে যেগুলো জীবনের হুমকি স্বরূপ।
কেমো থেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
কেমো থেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া গুলো হল-
- চুল পড়া
- বমি বমি ভাব
- বমি হওয়া
- রক্তপাত
- কাল শিরা
- কোষ্ঠকাঠিন্য
- মুখের ঘা
- ব্যথা
- জ্বর
- অবসাদ
- ক্ষুধামন্দা ইত্যাদি।
রেডিয়েশন থেরাপি
রেডিয়েশন থেরাপি হল ক্যান্সারের এমন একটি চিকিৎসা যাতে টিউমারকে আপাতত ছোট করে দেয় এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষ গুলোকে মেরেও ফেলা হয়ে থাকে। ডিএনএ তে ব্যবহৃত হয় এবং তাদের মেরে ফেলে এবং ডিএনএ মেরামতের বাইরে যে কোষগুলো থাকে সেগুলোকে প্রসারিত হতে বাধা প্রদান করে। ক্ষতিগ্রস্ত কোষ গুলো সারিয়ে দেয়।
আরো পড়ুনঃ ঢাকা মেডিকেল কলেজ - ঢাকা মেডিকেল কলেজে ভর্তি পরীক্ষার যোগ্যতা ২০২৩
এই রেডিয়েশন থেরাপি কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে। এই রেডিয়েশন থেরাপি দেওয়া শেষ হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ক্যান্সারে আক্রান্ত কোষগুলি মারা যেতে থাকে।
রেডিয়েশন থেরাপীর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
এই রেডিয়েশন থেরাপির সময় যে পার্শ্বপ্রতিকরা গুলো মানব শরীরে দেখা যায় তা হল-
- ঝাপসা দৃষ্টি
- মাথাব্যথা
- ত্বকের পরিবর্তন হওয়া
- বমি বমি ভাব
- স্মৃতিশক্তির সমস্যা
- চুল পড়া
- অবসাদ ইত্যাদি।
ইমিউনো থেরাপি
ইমিউনো থেরাপি হলো এমন একটি থেরাপি যা ক্যান্সারের বিরুদ্ধে শরীরে শক্তি যোগায়।শরীরের অন্যান্য রগের বিরুদ্ধে ও শরীরকে শক্তি যোগায়। এটা হলো একটি জৈবিক থেরাপি যা ক্যান্সারের চিকিৎসার জীবন্ত জীব থেকে প্রাপ্ত যৌগ ব্যবহার করে।
আরো পড়ুনঃ জলাতঙ্ক রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার জেনে নিন
এই থেরাপি নিয়মিত শরীরকে শক্তি যোগায় এবং আক্রান্ত কোষগুলিকে ধ্বংস করে দেয়।এই থেরাপি টিউমারের বিরুদ্ধে কার্যকরী ভূমিকা পালন করে থাকে।
ইমিউনো থেরাপির পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া
ইমিউনো থেরাপির ফলে মানবদেহে যে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো হয় তা হলো-
- মাথাব্যথা
- ক্লান্তি
- জয়েন্টে বা পেশীতে ব্যথা
- বমি বমি ভাব
- মাথা ঘোরা
- দুর্বলতা
- শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া
- জ্বর ইত্যাদি
টিউমার কি ব্যথা হয়
পেটে টিউমার কেন হয়
পেটে টিউমারের লক্ষণ
টিউমার হলে অপারেশনের খরচ
টিউমার কি শক্ত
টিউমার কি ভালো হয়
শেষ বক্তব্য
বাংলাদেশেও ব্রেন টিউমারসহ সকল টিউমারের চিকিৎসা হচ্ছে। বিগত ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের নিউরো সার্জারি বা ব্রেন টিউমার সার্জারি অনেকটাই এগিয়ে গেছে। তবে এখনো অনেক আধুনিক সরঞ্জাম বাংলাদেশে নেই। তবে লোকজন এখনো সঠিকভাবে জানে না বাংলাদেশে এই টিউমারে চিকিৎসায় সফলতা এসেছে। আমাদের দেশের লোক কে জানাতে হবে যে সকল ধরনের চিকিৎসা বাংলাদেশে করা সম্ভব।
বাংলাদেশের অনেক লোকজন মনে করে এই টিউমারের চিকিৎসা বাংলাদেশে খরচ বেশি হয় কিন্তু আসলে তা নয়। বাংলাদেশে নতুন নতুন অনেক গবেষণা রয়েছে যাত ভালো চিকিৎসা পাওয়া যাবে এটাই আমাদের কামনা।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url