বিশ্ব মা দিবস (রচনা) - কবে এবং কেন পালিত হয় জেনে নিন

মা একটি মধুর শব্দ যে শব্দ উচ্চারণ করলে প্রত্যেকটা সন্তানের মন জুড়িয়ে যায়। মাকে সম্মান দানের উদ্দেশ্যে বিশ্ব মা দিবস পালন করা হয়। আধুনিককালে মা দিবস উদযাপনের সঙ্গে জড়িয়ে আছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই নারীর নাম তারা হলেন - জুলিয়া ওয়ার্ড হোয়ে ও অ্যানা জার্ভিস।

Image

বিশ্বে চল্লিশটিরও বেশি দিয়ে মা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে অ্যানা জার্ভিস .১৯০৮ সালে চার্চে একটি আয়োজনের ভূমিকা রাখেন এবং  এই আয়োজনে ৪০৭ জন শিশু এবং তাদের মায়েরা যুক্ত হন।বিশ্ব মা দিবস সম্পর্কে বিস্তারিত নিচে আলোচনা করা হলো -

বিশ্ব মা দিবস/ সূচনা 

এই পৃথিবীতে যতগুলো লোক সম্মানিত তাদের মধ্যে মা হচ্ছে শ্রেষ্ঠ সর্বশ্রেষ্ঠ। মা কথাটি শুনতে অনেক ছোট লিখতে গেলে ও মাত্র একটি ব্যঞ্জনবর্ণের অক্ষর "ম" ব্যবহার করা হয়। মা কথাটি শুনতে ছোট হলেও এর অবস্থান আকাশের চেয়েও সুবিশাল। মা দিবস হল মাকে সম্মান ও শ্রদ্ধা জানানোর দিন। জন্ম থেকে শুরু করে মৃত্যু পর্যন্ত প্রতিটি ক্ষেত্রেই মাকে অস্বীকার করার ক্ষমতা কারো নেই। সন্তানের জন্য এই পৃথিবীতে সবচেয়ে বেশি যে ত্যাগ স্বীকার করতে পারে সে হলো মা।একমাত্র মায়ের ভালোবাসা হলো নিঃস্বার্থ ভালোবাসা।

মা দিবস কি

মায়ের সম্মানে যে দিবস পালন করা হয় তাকে বলা হয় মা দিবস। মা দিবস হল একটি সম্মান প্রদর্শন জনক অনুষ্ঠান, যে অনুষ্ঠান শুধু মায়ের সম্মানে, মাতৃত্ব, মাতৃ ঋনপত্র এবং সমাজে মায়ের সম্মান প্রদর্শনের জন্য করা হয় তাকে মা দিবস বলে আখ্যায়িত করা হয়। মাকে সম্মান জানাতেই সাবিনা ইয়াসমিন ও খালিদ হাসান মিলু দ্বৈত কন্ঠে গেছেন - " মা ওগো মা তুমি শুধুই মা, পৃথিবীতে যার নেই তুলনা"।

আরো পড়ুনঃ নিরাপদ মাতৃত্ব দিবস ২০২৩

ইসলামে ও মাকে সর্বোচ্চ আসন দেয়া হয়েছে। উল্লেখ আছে এক সাহাবী এসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করলেন, আমি কাকে বেশি সম্মান করবো ! উত্তরের রাসুল সাঃ বললেন, তোমার মাকে, তারপর আবার জিজ্ঞাসা করা হলো আমি কাকে বেশি সম্মান দেব, উত্তরের , বললেন তোমার মাকে, ঠিক একইভাবে তৃতীয়বারও জিজ্ঞাসা করা হলে একই কথা বললেন তোমার মাকে। আর এ থেকে বোঝা যায় মায়ের সম্মান কত বেশি। 

মা দিবসের ইতিহাস

প্রাচীন গ্রিসে এই মা দিবস পালন করা হয় বলে একটি গোষ্ঠী মনে করেন। তাদের মতে, প্রাচীন গ্রিসে মাতৃ আরাধনার প্রথা ছিল এবং সেখানে গ্রীক নেতাদের মধ্যে দেবী শীবোল নামক একটি বিশিষ্ট দেবী ছিল এবং এই দেবীর উদ্দেশ্যে এই দিবস পালন করা হতো। প্রাচীন রোমে আইডিস অফ মার্চ অথৎ ১৫ই মার্চ থেকে ১৮ মার্চের মধ্যে এবং এশিয়া মাইনরে মহাবিষুর সময়ে এই মা দিবসটি পালন করা হয়। 

প্রাচীন রোমে মায়েদের উৎসব কারী আরেকটি দুটি দিন হল - মাত্রানলিয়া নামে দেবী জুনের প্রতি উৎসর্গ করা হতো ।আর এর ইতিহাস বলছে অনেক পথ পেরিয়ে এই দিবসটি মা দিবস হিসেবে নতুন রূপ পেয়েছে। তাই মনে করা হয় যে প্রাচীন গ্রিসের মাতৃরূপী দেবী সিবলের এবং প্রাচীনে রোমান দেবী জুনোর আরাধনা থেকে এই মা দিবসের উৎপত্তি হয়েছে। 

যুক্তরাজ্যে এবং ইউরোপে মাদারিং সানডে মতে, মায়ের সম্মান জানানোর জন্য একটি রবিবার বেছে নেওয়া হয়েছে। খ্রিস্টানদের অ্যাংগ্লিকান সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের পঞ্জিকা অঙ্গ হিসাবে মাদারিং সানডে অনুষ্ঠান পালন করা হতো।ক্যাথলিক পঞ্জিকা অনুযায়ী এটি লেন্টের সময়ে চতুর্থ রবিবার পালন করা হতো বলে একে লেতারে সানডে বলা হয়। 

আরো পড়ুনঃ  বিশ্ব ছাত্র দিবস - ১৫ই অক্টোবর না ১৭ই নভেম্বর জানুন

এবং এটি ভার্জিন মেরি বা কুমারী মাতা ও প্রধান গির্জার সম্মানে পালন করা হয়। আর এই দিনটিকে উদযাপন করা হতো বাড়ির কাজ যেমন - রান্না করা, ধোঁয়া - মোছার মত কাজগুলো অন্য কেউ করে এবং প্রতৃকি উপহার দেয়ার মাধ্যমে।যুক্তরাষ্ট্রে অ্যান রিস জার্ভিস নামে একজন শান্তি কর্মী ছিলেন এবং তিনি তিন ৩ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন এবং তার মেয়ে আনা জার্ভিস তার মাকে সম্মানিত ও স্বীকৃতি দানের জন্য ছুটির দিন হিসেবে মা দিবস স্মরণ করতে চেয়েছিলেন।

১৯০৮ সালে প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে মা দিবস পালন করা হয়। মায়েদের সম্মানে ছুটি সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পালিত হয় এই মা দিবস। অ্যানা পশ্চিম ভার্জিনিয়ার তার মায়ের জন্য একটি সেন্ড এন্ড রুজ ম্যাথোডিস্ট চার্চে একটি স্মৃতিসৌধ রেখেছিলেন যা এখন আন্তর্জাতিক মা দিবসের মন্দির হিসাবে উল্লেখ করা হয়। আনা জার্ভিস তার মাকে সম্মান দিতে চেয়েছিলেন এই কারণে যে তিনি বিশ্বাস করতেন "একজন মা সেই ব্যক্তি, যিনি আপনার জন্য বিশ্বের যে কারো চেয়ে বেশি করেছেন"।

বাংলাদেশে মা দিবস পালন

আমরা বাংলাদেশে যারা মা দিবস পালন করি তারা অনেকেই গুগলে সার্চ করে থাকি মা দিবস কবে। তাই আমরা যারা জানতে চাই মা দিবস কবে ! আমি তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি লেখার চেষ্টা করেছি। তাহলে আসুন জেনে নেওয়া যাক বাংলাদেশ মা দিবস কবে পালন করা হয়। মা হচ্ছে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ভালবাসার সম্পদ, ভালবাসার ধন। মা ছাড়া যেন পৃথিবী অন্ধকার তাই মাকে ভালোবাসা জানাতে এবং তার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতেই বাংলাদেশে মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালন করা হয়। তবে শুধু বাংলাদেশেই নয়, বিশ্বের অনেকগুলো দেশ এই দিন অর্থাৎ মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালন করে মাকে সম্মান জানাতে এই দিন পালন করা হয়।

কখন কোন দেশে মা দিবস পালন করা হয়

মায়ের জন্য সব সময় আমাদের ভালোবাসা থাকে এরপরও একটু বেশি মাকে সম্মান এবং ভালোবাসা জানাতে মা দিবস পালন করা হয়। প্রাচীনকাল থেকে মা দিবস পালন করা হলেও আধুনিককালে মা দিবসের প্রবর্তন করেন একজন মার্কিন নারী। ১৯০৫ সালে যুক্তরাষ্ট্রে অ্যানা জার্ভিস  নামে একজন নারী মারা যান এবং তিনি ছিলেন একজন শান্তিবাদী সমাজ কর্মী। নারীদের অধিকার নিয়ে তিনি কাজ করতেন এবং তিনি "মাদার্স ডে ওয়ার্ক ক্লাব" নামে একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি করেছিলেন।

তিনি সমাজে পিছিয়ে পড়া নারীদের সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব তৈরি করেছিলেন।অ্যানা জার্ভিস খুব খুবই ধর্মপ্রাণ ছিলেন এবং নারীদের স্বাবলম্বী হতে সহায়তা করতেন।তার একজন মেয়ে ছিল এবং তার নাম এনা মারিয়া রিভস তিনি তার মায়ের কাজকে স্মরণীয় করে রাখার জন্য মা দিবস পালন করে থাকেন। একদিন অ্যানা জার্ভিস  তার ছোট মেয়ের সামনে হাতজোড় করে বলেছিলেন যে

আরো পড়ুনঃ বিশ্ব শিশুশ্রম প্রতিরোধ দিবস - রচনা সম্পর্কে  বিস্তারিত জানুন

," আমি প্রার্থনা করি কোন একদিন কেউ না কেউ এসে কোন মায়ের জন্য একটা দিন উৎসর্গ করুক। কারণ তারা প্রতিদিন মনুষ্যত্বের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে চলেছেন। এটি তাদের অধিকারক"। মায়ের এই প্রার্থনা এনার হৃদয় কে নাড়া দেয় তাই এনা তার মায়ের মৃত্যুর এই দিনটি বিশ্বের সকল মায়ের উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করেন। ১৯০৫ সালে এনা তার সানডে স্কুলে প্রথম মাতৃ দিবস হিসেবে এই দিনটি পালন করেন।

১৯৬০সালে এনা মারিয়া এক রোববার মায়ের জন্য একটি দিবসের গুরুত্ব ব্যাখ্যা করেন। তারপর থেকেই মায়েদের সম্মানে এই দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। ১৯১৪ সালের ৮ মে মার্কিন কংগ্রেস বা যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উইড্র উইলসন মে মাসে দ্বিতীয় রবিবারকে "মা দিবস" হিসেবে ঘোষণা করেন। আর এইভাবে সারা বিশ্বে মা দিবসের যাত্রা শুরু হয়। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এখন বাংলাদেশসহ জার্মান, চীন, রাশিয়া, কানাডা ,ব্রাজিল

ও অস্ট্রেলিয়া সহ  বিশ্বের শতাধিক দেশে যথাযথ মর্যাদার সাথে মা দিবস পালন করা হয়।এছাড়াও ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনেক আগে থেকেই মায়েদের সম্মানের জন্য একটি নির্দিষ্ট রবিবার এই দিবসটি পালন করা হয়। এরপরে ষোড়শ শতকে এটি ইংল্যান্ডে পরিচিতি লাভ করে মাদারিং সানডে হিসাবে। ক্যাথলিক পঞ্জিকা অনুযায়ী অনেকেই একে লেতারে সানডে বলে অভিহিত করেন। এই লেতারে সানডে হল লেন্টের সময়ের চতুর্থ রবিবার থেকে পালন করা হয়েছিল।ইতিহাস

বিদদের  মতে মাদার্স ডে প্রক্লামেশন  বা মা দিবসের ঘোষণা পত্র নামক জুলির ওয়ার্ড হাই রচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মা দিবস পালনের প্রচেষ্টায় প্রচেষ্টাগুলোর মধ্যে অন্যতম।  ১৮৭০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের গৃহযুদ্ধের পশবিকতার মাত্রা বেড়ে গেলে শান্তির প্রত্যাশায় জুলিয়ান একটি ঘোষণা পত্র লিখেন। এরপর যুদ্ধ শেষে তিনি পরিবারহীন অনাথদের একত্রিত  করনের কাজে নিয়োজিত হন। ১৯০৫  সালে অ্যানা জার্ভিস  মারা গেলে তার মেয়ে  এনা জার্ভিস তার মায়ের মৃত্যুর শান্তি

আরো পড়ুনঃ জাতীয় শোক দিবস রচনা -  ১৫ ই আগস্ট রচনা (৬ - ১২)

কামনায় ও তার মায়ের সম্মানে এই দিনটিকে সরকারিভাবে পালনের জন্য জোর প্রচেষ্টা চালান।তারপর ১৯০৮ সালের ১০ মে পশ্চিম ভার্জিনিয়ার আন্দ্রেউজ  ম্যাথডিস্ট এপিস কোপাল চার্চে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম এই মা দিবস পালন করা হয়। এরপর ধীরে ধীরে এই দিবস ছড়িয়ে পড়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সহ চীন, জাপান, মেক্সিকো, দক্ষিণ আমেরিকা, কানাডা ও আফ্রিকাতে। এরপর ১৯১২ সালে মা দিবসকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়ার জন্য ব্যাপক প্রচারণা চালানো হয়।

আর এই প্রচারণার পরিপ্রেক্ষিতেই ১৯১৪ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট উইন্ডো উইলসন মে মাসের দ্বিতীয় রোববার এই দিনটিকে মা দিবস হিসেবে জাতীয় ছুটির দিন ঘোষণা করেন। এরপর থেকে প্রতিটি দেশে এই মা দিবস পালন করা হয়।

মা দিবসের তারিখ

যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়া তে মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালন করা হয়। যুক্তরাজে স্টার সানডের ঠিক তিন সপ্তাহ আগে এই দিবসটি উদযাপন করা হয়। আর এইসব দেশগুলোতে রবিবার সরকারি ছুটি থাকে। কোস্টারিকায় ১৫ ই আগস্ট মা দিবস পালন করা হয় এবং ওইদিন সরকারি ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয়। তিন ৩ মার্চ জর্জিয়ায়,  থাইল্যান্ডে বার ১২ই আগস্ট এবং সামোয়ায় মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে মা দিবস উদযাপন করা হয় এবং এই দিনে সরকারি ছুটির দিন।এসব দেশের রেস্তোরাঁ গুলোতে এই দিনে অনেক ভিড় থাকে।

মা দিবস কিভাবে উদযাপন করা হয়

দেশ এবং সংস্কৃতি ভেদে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন তারিখে এবং ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতিতে এই দিবসটি পালন করে থাকে। মায়ের প্রতি ভালোবাসা জানাতে পশ্চিমা দেশগুলোতে ফুল, কার্ড, কেক উপহার দিয়ে এ দিবসটি পালন করা হয়। অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশে ও মা দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন দেশের সংস্কৃতিতে এই দিনে মাকে দেখতে যাওয়ারও প্রচলন আছে। 

আরো পড়ুনঃ জেল হত্যা দিবস - জাতীয় চার নেতা কেন জেলে ছিলেন

এছাড়া মাকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে যাওয়া ঘরে কিংবা বাইরে খেতে যাওয়ারও প্রচলন আছে।যাদের মা দূরে থাকেন তারা তাদের মায়ের মায়েদের ফোনে কল করে খোঁজখবর নিয়ে থাকেন। মা দিবসকে ঘিরে রচিত হয় বিভিন্ন কবিতা ও খুদে বার্তা। এর বাইরেও মাকে বিভিন্ন স্বর্ণালংকার, চকলেট, জামা কাপড়, দরকারী সামগ্রী উপহার দেওয়া হয়।

কবে কোন দেশে মা দিবস পালন করা হয়

মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার বিশ্ব মা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হলেও সারা বিশ্বের সবগুলো দেশ একই দিনে মা দিবস পালন করে না। পৃথিবীর অনেকগুলো দেশ রয়েছে যারা বিভিন্ন দিনে মা দিবস পালন করে থাকে। তাই বিশ্বের কোন দেশ কোন দিন মা দিবস পালন করে নিচে তা পর্যায়ক্রমে তুলে ধরা হলো 

বাংলাদেশ - মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার

গ্রিস  -  ফেব্রুয়ারি মাসের ২ তারিখ

নরওয়ে - ফেব্রুয়ারি মাসের দ্বিতীয় রবিবার

জর্জিয়া - ৩ মার্চ

আফগানিস্তান, আজারবাইজান, আর্মেনিয়া, আলবেনিয়া, রোমানিয়া, বুলগেরিয়া, সার্বিয়া, ম্যাকডোনিয়া, মালডোবা, বোসনিয়া এন্ড হার্জেগভিনা - ৮ মার্চ 

সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইয়েমেন, লিবিয়া, সোমালিয়া, সিরিয়া, সুদান, মিশর, ইরাক, বাহারাইন, কুয়েত, ওমান, লেবানন, ফিলিস্টিরন - ২১ মার্চ

স্টেনেভানিয়া - ২৫ মার্চ

যুক্তরাজ্য, নাইজেরিয়া, আয়ারল্যান্ড - মার্চ মাসের চতুর্থ রোববার

আর্মেনিয়া - ৭ এপ্রিল

দক্ষিণ কোরিয়া, আলবেনিয়া - ৮ মে

মেক্সিকো, গুয়েতমালা, এল সালভাদর - ১০ মে

প্যারাগুয়ে - ১৫ মে

পোল্যান্ড - ২৬ মে

 বলিভিয়া - ২৭ মে

কিনারাগুয়া - ৩০ মে

পর্তুগাল, হাঙ্গেরি, স্পেন, লিথুনিয়া - মে মাসের প্রথম রোববার

বাংলাদেশ, ভারত, জাপান, বেলজিয়াম, চীন, পাকিস্তান, জিম্বাবুয়ে, ভেনেজুয়েলা, উরুগুয়ে, ইউক্রেন, তুরস্ক, যুক্তরাষ্ট্র,  ত্রিনিদাদ এন্ড টোবাগো, সিন্ট মার্টিন, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, সুরিনাম, সেইন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড দা গ্রেনাডাইন্স, সেন্ট লুসিয়া, ফ্রেন্ড কিডস এন্ড নেভিস, দক্ষিণ কোরিয়া, শ্রীলংকা, তাইওয়ান, পুয়ের্তো রিকো, ফিলিপাইন, পেরু, পাপুয়া নিউগিনি, নেদারল্যান্ড, ইসোনিয়া, ইকুয়েডোর, ডোমিনিকা, ডেনমার্ক, চেক রিপাবলিক, সাইপ্রাস, কিউবা, ক্রোয়েশিয়া, কম্বোডিয়া, কলম্বিয়া, কানাডা, বুলগেরিয়া, চিলি, ব্রুনেই, ব্রাজিল, বা সালামুআলাইকুমরমুডা, বেলজি, বেলজিয়াম, বাহামাস, অস্ট্রিয়া, অস্ট্রেলিয়া, অরোবা, অ্যাঙ্গোলা, চেক রিপাবলিক ডেনমার্ক, ডোমেনিকা, ইকুয়েডর, ইসোনিয়া, জামাইকা, আইসল্যান্ড, ইতালি, হংকং, হন্ডুরাস,গ্রীস, লাটভিয়া, মালয়েশিয়া, মিয়ানমার, ইতালি - মে মাসের দ্বিতীয় রোববার।

সুইডেন, তিউনিসিয়া, মরক্কো, মরিশাস, ফ্রান্স, হাইতি, আলজেরিয়া, ডোমিনিকান - মে মাসের শেষ রবিবার

মঙ্গোলিয়া - ১ জুন

লুক্সেমার্গ - জুন মাসের দ্বিতীয় রবিবার

কেনিয়া - জুন মাসের শেষ রবিবার

থাইল্যান্ড - ১২ আগস্ট

কোস্টারিকা - ১৫ আগস্ট

মালাই - অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সোমবার

আর্জেন্টিনা - অক্টোবর মাসের তৃতীয় রবিবার

পানামা - ৮ ডিসেম্বর

ইন্দোনেশিয়া - ২২ ডিসেম্বর

পৃথিবীর কিছু দেশ অন্যান্য দিনে মা দিবস পালন করলেও অধিকাংশ দেশ মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালন করে থাকে আর এই জন্যই মে মাসের ২য় রবিবার বিশ্ব মা দিবস হিসেবে স্বীকৃত। তবে যে দেশ যে দিন মা দিবস পালন করুক না কেন আসল মর্ম কথা হল মাকে সম্মান জানানো এবং মাকে ভালোবাসা।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ভিন্ন ভিন্ন দিনে মা দিবস পালনের কারণ

বাংলাদেশ সহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশ মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার বিশ্ব মা দিবস হিসেবে পালন করে থাকে। ১৯১২ সালে আন্তর্জাতিক মা দিবস আনা জার্ভিস সমিতি গঠন করেন মাদার্স ডে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাসোসিয়েশন এবং তিনি মে মাসের দ্বিতীয় রোববার মা দিবস পালনের প্রচারণা চালাতে সক্ষম হন। বিশ্বের অধিকাংশ দেশে রবিবার ছুটির দিন হওয়ার কারণে এই দিনে মা দিবস পালনে খুব সহজে সবাই ব এটি গ্রহণ করে নেয়।

যার কারণে গ্রীসের মন্দিরে এবং যুক্তরাজ্যে পালিত মাদারিং সানডে যীশু প্রাচীনপন্থী পূজা অর্চনার মত মাকে সম্মানিত করতে রবিবারকে ছুটির দিনে তারিখ ঘোষণা হওয়ার জন্য সবাই এই তারিখ নির্ধারণ করে নেন। ইসলামের শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মেয়ের জন্মদিন এবং ক্যাথলিক দেশগুলোতে ভার্জিন ম্যারিডে এর জন্মদিনের মতোই বিশ্বের কিছু দেশ তাদের ধর্মানুযায়ী পরিবর্তন করে নিয়েছে তাদের দেশের মা দিবসের তারিখ।

মা দিবসের ইতিহাস থেকে আরও জানা যায় যে মা দিবস পালন প্রাচীন কিছু উৎসবের সাক্ষ্য স্বরূপ। এর মধ্যে রয়েছে গ্রীক এর সিবেল ধর্মীয় রীতি থেকে আশা হিলারিয়ার রোমান উৎসব। সিবল গ্রিক ধর্মানুষ্ঠান এছাড়াও এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে হিলারিয়া এবং শিবেল থেকে আশা খ্রিস্টানদের মাদারিং সানডে উদযাপন।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশে  মা দিবসের সূচনা

বিশ্বের সব দেশেই মাকে সম্মান জানাতে মা দিবস পালন করা হয়। বিভিন্ন সংস্কৃতির মাধ্যমেই মা দিবসের অনুষ্ঠান পালন করা হয়। ব্রিটিশ প্রথা অনুযায়ী আফ্রিকার বিভিন্ন দেশগুলো মা দিবস পালন করে থাকে তেমনি ২৭ মে প্রতি বছর বলিভিয়ায় মা দিবস পালন করা হয়ে থাকে। ১৮১২ সালের ২৭  মে কোচা বাম্বা শহরে দেশের স্বাধীনতার জন্য করর্নিলার যুদ্ধে যুদ্ধরত বহু নারীকে স্পেনের সৈন্যবাহিনী নৃশংস ভাবে হত্যা করে।

১৯২৭ সালের ৮ নভেম্বর যুদ্ধের নির্মম স্মৃতি স্মারক হিসেবে সরকারিভাবে এই দিনটিকে আইনি স্বীকৃতি দেওয়া হয় মা দিবস হিসেবে। তবে চীন দেশে মা দিবস আগে ততটা জনপ্রিয় না হলেও ১৯৯৭ সাল থেকে মা দিবস পালন করা হয়। চীন দেশেও মা দিবস ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা অর্জন করে এবং বর্তমানে চীনে খুব জাঁকজমক ভাবে মা দিবস পালন করা হয়। মা দিবসকে কেন্দ্র করে চীনে সবচেয়ে বেশি ফুল বিক্রি হয়।

ইস্টার্ন অর্থ ডক্স ফিস্ট যীশুকে জেরুজালেমের মন্দিরে নিয়ে আসেন এবং তার সাথে মা দিবস পালন করা হয়। আর ইস্টার্ন অর্থ ডক্স ফিস্ট যীশুকে মন্দিরে এনেছিলেন বলে গ্রীসে এই দিন মা দিবস পালন করা হয়ে থাকে। ইরানে মা দিবস পালন করা হয় আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রাণ প্রিয় মেয়ে হযরত ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু এর জন্ম বার্ষিকীর দিন। জাপানে মা দিবস পালন করা হয় রানী কজুনের জন্মদিনে।

আজ রানী কজুন ছিলেন রাজা আকিহতোর মা। জাপানেও এই মা দিবস চীনের মতোই গোলাপ ফুল উপহার দিয়ে পালন করা হয়ে থাকে এবং এই মা দিবসে গোলাপ ফুল উপহার দিয়ে এই জনপ্রিয় দিনটি পালন করা হয়। ১৯২২ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অনুকরণে মা দিবসের প্রচলন শুরু করেন আলভারও  ওব্রেগণ সরকার। আর ১৯১২ সালে মা দিবসকে সমর্থনে ব্যাপক প্রচার চালায় এক্সেল শিওর নামক একটি সংবাদ মাধ্যম।

১৯৩০ সালের মাঝামাঝি সময়ে মা দিবসকে একটি দেশাত্মবোধক উৎসব হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন লাজারো কর্দেনাস। এই মা দিবসকে লাজারো কর্দেনাস বিভিন্নভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেন, যেমন - মেক্সিকানদের মায়ের প্রতি আনুগত্য কে আরও দৃঢ় করা এবং জাতীয় উন্নয়নে পরিবারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কথা সবাইকে মনে করিয়ে দেওয়া। এছাড়াও তিনি ম্যাক্সিন মহিলাদের ওপর থেকে ক্যাথলিক ও চার্চ এর প্রভাব কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এই দিবসের প্রচলন শুরু করেন।

১৯৪০ সালে মা দিবসের প্রচলন শুরু করেন রাষ্ট্রপতি ম্যানুয়েল আভিলা কামাচোর স্ত্রী শালেদাদ গার্সিয়া এবং পরবর্তীতে এই মা দিবস একটি সরকারি উৎসবে পরিণত হয়। ১৯৪২ সাল থেকে মা দিবস সপ্তাহব্যাপী উৎসবে পরিণতি লাভ করে এবং এই মা দিবস উপলক্ষে ঘোষণা করা হয় যে, মন্ট দা পিয়ে দাদ থেকে যেসব মহিলা তাদের সেলাই মেশিন বন্ধক রেখেছে তারা তা বিনামূল্যে ফেরত পাবে এবং ১৯৪২ সালে ই পাদ্রীরা ভার্জিনমেরির ২১0 তম উৎসব পালন করেন মা দিবসের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে।

শেষ কথা

মা দিবস পালনের যথার্থতা তখনই হবে যখন প্রতিটি সন্তান তার মাকে সম্মান করবে। আমরা আশা করব বিশ্বের প্রতিটি মায়ের সন্তানেরা তাদের মায়েদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করবেন আর এভাবেই পালন করা হোক সারা বিশ্বে বিশ্ব মা দিবস হিসেবে। বেঁচে থাক সারা বিশ্বের মায়েরা এবং সম্মানিত হোক তাদের সন্তানদের কাছ থেকে এটাই আমাদের সবার কামনা।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url