সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে জানুন

সায়েন্স সিটি হল বিজ্ঞানের ভান্ডার। আর আপনি যদি এই বিজ্ঞান ভান্ডার দেখতে যেতে চান তাহলে অবশ্যই সায়েন্স সিটি - কলকাতা যান।সায়েন্স সিটি - কলকাতা না দেখলে বিজ্ঞানের আবিষ্কার সম্পর্কে ধারণা খুব কমই হবে। তাই আপনি সায়েন্স সিটি - কলকাতা যান।

Image

১৯৯৭ সালের ১লা জুলাই এই সাইন্স সিটি পার্কের উদ্বোধন করা হয়। এরপর থেকে এই সায়েন্স সিটি মানুষকে জ্ঞানের আলো দিয়ে যাচ্ছে। সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-

পোস্ট সূচীপত্রঃ সায়েন্স সিটি 

সায়েন্স সিটি

সায়েন্স সিটি হল কলকাতার একটি বিজ্ঞান পার্ক বা বিজ্ঞান সংগ্রহশালা। একে আবার বিজ্ঞান কেন্দ্রিক উদ্যান ও বলা হয়। এই পার্ক তৈরি করা হয়েছে মূলত বিজ্ঞানকে কলকাতার মানুষের কাছে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য। এই পার্কর্টি ভারত সরকারের সংস্কৃত মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত এবং এটি অধিভুক্ত হয়েছে জাতীয় বিজ্ঞান সংগ্রহশালা পরিষদের।

আরো পড়ুনঃ রানী ভিক্টোরিয়া - ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়াল স্মৃতিসৌধ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

১৯৯৭ সালের ১লা জুলাই উদ্বোধন করা হয় এ সায়েন্স সিটি নামক বিজ্ঞান পার্কের। কলকাতার এক অন্যতম স্থাপনা হলো সায়েন্স সিটি। ১৯৭১ সালে বিজ্ঞানের শিক্ষার উদ্দেশ্যে এটি স্থাপিত হয়েছিল। এখানে নানারকম প্রযুক্তির প্রদর্শন ও বিজ্ঞান প্রয়োগ করা হয়েছে। এখানে চিত্ত বিনোদনের পাশাপাশি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিদ্যার উপর জ্ঞান অর্জন করা যায়।

বিজ্ঞানের এক আবিষ্কার হলো সায়েন্স সিটি। আপনি যদি বিজ্ঞান ভালোবাসেন তাহলে আপনার অবশ্যই উচিত সায়েন্স সিটি গিয়ে ঘুরে আসা তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন বিজ্ঞানের অবদান। সকল বয়সের মানুষের কাছে উপভোগ্য বিষয় হলো এই সায়েন্স সিটি যাদের বিজ্ঞানের ব্যাপারে অধিক আগ্রহ আছে তাদের সায়েন্স সিটির প্রদর্শন করা উচিত।

সাইন্স সিটি কোথায় অবস্থিত

সাইনসিটি ভারতের পূর্ব কলকাতা শহরে ইস্টার্ন মেট্রোপলিটন বাইপাস ও জেবিএস হ্যালডেন এভিনিউ এর সংযোগস্থলে অবস্থিত। এই সাইন্স সিটি অবস্থিত হয়েছে পঞ্চাশ ৫০ একর জমির উপরে। বিজ্ঞান শিক্ষার উদ্দেশ্যে মূলত এই পা   পার্কর্টি স্থাপিত হয়েছে। সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে জানুন এবং সেখানে ঘুরে আসুন।

সাইন্স সিটিতে আপনি কি দেখতে পাবেন

আপনি সাইনসিটিতে প্রবেশ করলে প্রথমে আপনার মন ভরে যাবে মনোরম পরিবেশ দেখে। আপনি বিজ্ঞানের প্রথম থেকে দেখতে পাবেন গেটে প্রবেশ করেই। আপনি বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের একটি চিত্রকর্ম দেখতে পাবেন। রবীন্দ্রনাথের এই চিত্রকর্মে বিজ্ঞানের ছোঁয়া লেগে আছে। প্রথমে যদি আপনি এটা দেখেন তাহলে ভালোভাবে বুঝতে পারবেন না রবীন্দ্রনাথের অবয়ব।

আরো পড়ুনঃ ভিক্টোরিয়া - মেমোরিয়াল- স্মৃতিসৌধ ভ্রমণ সম্পর্কে জেনে নিন

আপনি গেট থেকে আরেক বিল্ডিং এ যেতে রোপ ওয়ে নামক একটি রাইডস পাবেন যাতে করে আপনি উপর থেকে সবকিছু দেখতে পাবেন। এরপর আপনি দেখতে পাবেন  পাখি ও ডাইনোসর। সাইনসিটি মূলত দুই ভাগে বিভক্ত। 

সায়েন্স সেন্টার বা বিজ্ঞান কেন্দ্র

 কনভেনশন সেন্টার বা সম্মেলন কেন্দ্র

বিজ্ঞান কেন্দ্রে মজার মজার শিক্ষামূলক প্রদর্শনী ও নিদর্শন রয়েছে যা দেখলে আপনি আনন্দে বিমোহিত হবেন। এখানে আরো রয়েছে মেরি টাইম সেন্টার ও সাইন্স পার্ক, আর্থ এক্সপ্লোরেশন, ডাইনামিশন স্পেস, এক্সিবিউশন এবং প্রত্যেকটি ভাগে আবার রয়েছে বিজ্ঞানচিত্র প্রদর্শন। চলচ্চিত্র অনুষ্ঠান এবং থ্রিডি প্রদর্শনী। তবে আপনাকে চলচ্চিত্র থ্রিডি প্রদর্শন করতে হলে আলাদা করে টিকিট নিতে হবে।

তবে আপনাকে চলচ্চিত্র ও থ্রিডি প্রদর্শন করতে হলে আলাদা করে টিকিট নিতে হবে। এখানে বিভিন্ন মূল্যের থ্রিডি আপনি দেখতে পাবেন ৩০ রুপি থেকে শুরু করে ১০০ রুপি পর্যন্ত আপনাকে টিকিট কিনতে হতে পারে। এছাড়া এখানে রয়েছে মনো সাইকেল, ব্যাটার পিলার, ক্যাবল কার, রোড ট্রেন ও গ্যাভিসিটি কস্টার।

আরো পড়ুনঃ সেন্টি লেন-নিষিদ্ধ দ্বীপ- সম্পর্কে জেনে নিন


রোড ট্রেনে করে ঘুরে আপনি খুব অল্প সময়ের মধ্যে সাইন্স সিটির ভেতরে ঘুরতে পারবেন। এখানে আছে পিকনিক স্পট। তবে আপনাকে বাইরে থেকে খাবার এনে খেতে হবে। আপনি এর মধ্যে কোন খাবার রান্না করার পরিবেশ পাবেন না। এই স্পটে আছে এক হাজারেরও বেশি গাড়ির পার্কিং এর ব্যবস্থা।

আপনি থ্রিডিতে দেখতে পাবেন বিজ্ঞানের সমগ্র আবিষ্কার। ভার্চুয়াল রিয়ালিটি তে আপনাকে এমন সানগ্লাস পরানো হবে যাতে করে আপনি আসল মজা উপভোগ করতে পারেন। আপনি দেখতে পাবেন টাইম মেশিন, কৃত্রিম গমনযাত্রা যা দর্শকদের গ্রহের মধ্যে দিয়ে চলার এক প্রতীকী ছাপ প্রদান করে থাকে। এটা এমন একটি আকর্ষণ যা আপনাকে মুগ্ধ করবে।

সাইনসিটির মূল যে বিল্ডিং এটি দেখতে মনে হয় এক বিশাল গম্বুজ বিশিষ্ট ঘর। আর এর মধ্যে আছে বিজ্ঞানের আশ্চর্য সব সমাহার। এই বিল্ডিং এ প্রবেশ করলে আপনাকে প্রথমে লিফটে করে উপরে তুলে দিবে। তারপর বিজ্ঞানের আবিষ্কার দেখতে দেখতে আপনি কখন নিচে পৌঁছে যাবেন বুঝতেই পারবেন না।

আরো পড়ুনঃ পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্য - জিনিস সম্পর্কে জেনে নিন

এই বিল্ডিং এর ওয়ালের সাথে রয়েছে মনোমুগ্ধকর সব অ্যাকোরিয়াম যার মধ্যে রয়েছে অনেক প্রকারের মাছ যা দেখলে আপনার মনে অনেক ভালো লাগবে। সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে জানুন এবং সেখানে ঘুরে আসুন।

সাইন্স সিটির সময়সূচি

সাইন্স সিটি সপ্তাহের প্রত্যেকদিন খোলা থাকে। শুধুমাত্র বন্ধ থাকে হোলির দিন। আপনি এই দিন বাদে প্রতিদিন সকাল ৯ টা থেকে ৭ টা পর্যন্ত খোলা পাবেন। সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে জানুন এবং সেখানে ঘুরে আসুন।

সায়েন্স সিটি তে টিকিটের মূল্য

সাইন্স সিটি তে প্রবেশ করতে হলে আপনাকে টিকিট নিতে হবে আর প্রবেশের টিকেট মূল্য জন প্রতি ৪০ রুপি। আর আপনি যদি গ্রুপ করে যান এবং আপনার সাথে যদি ২০ জন বা তার বেশি সংখ্যক লোক থাকে তাহলে আপনি জন প্রতি ৩০ টাকা করে টিকিট পাবেন। এখানে সকল মানুষের জন্য টিকিটের মূল্য সমান। 

আরো পড়ুনঃ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় - সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

এর ভেতরে যা আছে প্রত্যেকটার জন্য আপনাকে আলাদা করে টিকিট নিতে হবে। আপনি যদি থ্রিডি দেখতে চান তাহলে আপনাকে টিকেট নিতে হবে ৩০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ও গ্যাভিটি পোস্টটা ৩০ টাকা, স্পেস থিয়েটার ৬০ টাকা, মনো সাইকেল ১৫ টাকার, রোড ট্রেন ১৫ টাকা, টাইম মেশিন ২০ টাকা, রোপওয়ে ৪০ টাকার বেশি।

সাইন্স অন স্পিকার ২0 টাকা, ইভো লেসন ৬০ টাকা, এভুলেশন অফ লাইভ ডার্ক ৪০ টাকা। তবে আপনি সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার মধ্যে সাইন্স সিটি সকল কিছু উপভোগ করতে পারবেন। সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে জানুন এবং সেখানে ঘুরে আসুন।

সায়েন্স সিটিতে যাওয়ার উপায়

সাইন্স সিটিতে আপনি কিভাবে যাবেন তা নির্ভর করবে আপনি কলকাতা শহরের কোন দিকে অবস্থান করছেন তার ওপর নির্ভর করে। তবে কলকাতা শহরের রেল যোগাযোগ অনেক উন্নত। আপনি কলকাতা শহর থেকে রেল, বাস অথবা বিমান যে কোন পথেই সাইন্স সিটিতে খুব সহজেই যেতে পারবেন।

বাসঃ আপনি যদি সায়েন্স সিটি দেখতে চান তাহলে আপনাকে আগে কলকাতা শহরে আসতে হবে। কলকাতা শহর থেকে আপনি বাস বা ট্যাক্সি করে যেতে পারবেন সাইনসিটিতে। এখানে যেতে আপনি এসি বাসও পেয়ে যাবেন তবে এসি বাসে আপনাকে তিনগুণ ভাড়া গুনতে হবে।

রেল মাধ্যম

আপনি রেল মাধ্যমে ও সাইন্স সিটিতে আসতে পারেন তবে আপনাকে ১১৭ নং জাতীয় সড়ক হয়ে সায়েন্সসিটি পৌঁছাতে হবে। আপনি যদি হাওড়া থেকে আসেন তাহলে আপনার ২৫ থেকে ৩০ মিনিট সময় লাগবে। সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে জানুন এবং সেখানে ঘুরে আসুন।

আরো পড়ুনঃ হার্ডিঞ্জ ব্রিজ - হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ভ্রমণ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন

বিমান মাধ্যম

আপনি বিমানে করেও খুব সহজে সায়েন্স সিটিতে যেতে পারেন। সায়েন্স সিটি থেকে সবচেয়ে কম দূরত্বের বিমানবন্দর হল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দর থেকে আপনাকে ট্যাক্সি বা ক্যাবে ভায়া ভিআইপি রোড ও ই এম বাইপাস হয়েছে সায়েন্স সিটিতে আসতে হবে। বিমানবন্দর থেকে সায়েন্স সিটিতে আসতে আপনার সময় লাগবে ৩০ মিনিটের মত।

শেষ কথা

আপনি যদি পরিবার সহ কোথাও ঘুরতে যেতে চান তাহলে শিক্ষার জন্য তাহলে অবশ্যই আপনাকে সাইন্স সিটি তে যাওয়া উচিত। সায়েন্স সিটিতে আপনি দেখতে পাবেন বিজ্ঞানের অসম্ভব আবিষ্কার যা আপনার সন্তানকে শিক্ষার দিকে আরো উৎসাহিত করবে। বিজ্ঞানের যে কি অপূর্ব আবিষ্কার সাইন্স সিটিতে না গেলে তা বোঝা যাবে না।

প্রিয় বন্ধুরা আপনারা ও আমার মত ঘুরে আসুন সাইন্স সিটিতে এবং উপভোগ করে আসুন বিজ্ঞানের মেলা। বন্ধুরা আপনাদের যদি আমার লিখা ভালো লাগে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্টস করে জানাবেন। সায়েন্স সিটি - কলকাতা সম্পর্কে জানুন এবং সেখানে ঘুরে আসুন।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url