জাতীয় শোক দিবস রচনা - ১৫ ই আগস্ট রচনা (৬ - ১২)
রচনা বাংলা দ্বিতীয় পত্রের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রায় প্রতিটি পরীক্ষাতেই রচনা লেখার প্রয়োজন হয়। তাই আমি পরীক্ষার্থীদের কথা মাথায় রেখে জাতীয় শোক দিবস রচনা যথাযথভাবে লিখার চেষ্টা করেছি।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমরা যারা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে চাও তারা আমার এই রচনাটি পড়তে পারো। তবে তোমরা যে কোন রচনা মুখস্থ না করে পড়ে নিয়ে নিজের থেকে লিখার চেষ্টা করবে এতে তোমরা সৃজনশীল হিসেবে গড়ে উঠবে।
জাতীয় শোক দিবস রচনা - ১৫ ই আগস্ট রচনা (৬ - ১২)
- ভূমিকা
- জাতীয় শোক দিবসের ইতিহাস
- বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শোক দিবস
- ১৫ ই আগস্ট পরবর্তী ঘটনা
- কবে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়
- জাতীয় শোক দিবসের প্রেক্ষাপট
- সেদিন যাদের হত্যা করে
- বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সাথে জড়িতদের নাম
- বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের খুনিদের বিচার
- উপসংহার
ভূমিকা
যতদিন রবে পদ্মা যমুনা,
গৌরী মেঘনা বহমান।
ততদিন রবে কীর্তি তোমার,
শেখ মুজিবুর রহমান।
দ্বিধাবিভক্ত পরাধীন জাতিকে স্বাধীনতার মন্ত্রে উজ্জীবিত করা এবং সুসংগঠিত করা মোটেও সহজ কাজ নয়। কিন্তু এই কঠিন কাজ এই বঙ্গবন্ধু খুব সহজেই করতে পেরেছিলেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে স্বাধিকার থেকে স্বাধীনতার সংগ্রাম সবই পরিচালনা করেছেন।তার ছিল অসাধারণ বজ্রকন্ঠ যা দিয়ে তিনি সহজেই মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে পারতেন। তিনি ছিলেন একজন খ্যাতিসম্পন্ন অনল ষড়সি নেতা অথচ এই প্রাণপ্রিয় নেতাকে ঘাতকেরা নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করেছে।
হত্যা করেছে ১৬ কোটি বাঙ্গালীর পিতা কে, হত্যা করেছে সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা রচনা করেছিল একটি কালো অধ্যায় । ১৫ ই আগস্ট বাঙালি জাতির জীবনে একটি কলঙ্কময় দিন তাই বাঙালি জাতি এই দিনকে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করে থাকে।
জাতীয় শোক দিবসের ইতিহাস
১৯৭৫ সালে ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যিনি ছিলেন স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি তাকে ধানমন্ডির ৩২ নং নিজ বাসায় কিছু দুষ্কৃতিকারী সেনা সদস্যদের হাতে সপরিবারে নিহত হতে হয়। সেদিন তিনি ছাড়া নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলত নেছা মুজিব। এছাড়াও তার পরিবারের আরো নিহত হন ১৯জন ব্যক্তি। ১৫ই আগস্ট যারা নিহত হন তারা হলেন-
আরো পড়ুনঃ কৃষি উদ্যোক্তা রচনা ২০ পয়েন্ট - কৃষি উদ্যোক্তা রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় শোক দিবস
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির জীবনে ইতিহাস সৃষ্টি করে রেখেছেন। আর তার আহবানে বাঙালি জাতি একদিন যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। ৩০ লক্ষ বাঙালির রক্তে রঞ্জিত আমাদের এই বাংলাদেশ। তিনি হয়ে উঠেছিলেন এক মুক্তির পথিক হয়ে। পৃথিবীর খুব কম রাজনৈতিক নেতাই তার মত স্থান দখল করতে পেরেছেন। বাঙালি জাতির স্বপ্ন পূরণে তিনি ছিলেন আসার প্রদীপ।
অথচ এই রাজনীতিক নেতাকেই কিছু বিপথগামী সেনা বাহিনীর অফিসার নির্মমভাবে হত্যা করেছিল। আর এজন্যই এই দিনটি অর্থাৎ ১৫ ই আগস্ট বাঙালি জাতির ইতিহাসে একটি কলঙ্কিত দিন। ঘাতকেরা এই দিন স্বাধীনতার সূর্য নেতাকে হত্যা করেছিল। কোন কিছুর মাধ্যমেই তার ক্ষতিপূরণ হবে না। বঙ্গবন্ধু ছিলেন বাঙালি জাতির আশা ও ভরসার প্রতিক।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত - রচনা (৬ - ১২ সকল শ্রণীর জন্য)
তিনি ছিলেন পাহাড়ের মত কঠিন এবং কুসুমের মতো কোমল। তিনি ছিলেন দুখী ও অভাবী মানুষের আসার প্রতীক। ঘাতকেরা জানতো এই মানুষ পারেনা এমন কোন কাজ নেই তাইতো স্বাধীনতার এই সূর্য সেনাকে ঘাতকেরা হত্যা করেছিল।ঘাতকের বুলেটের আঘাতে শেখ মুজিবুরের দেহ নিস্তেজ হয়ে গেলেও এই বাংলা থেকে কখনোই তাকে নিঃশেষ করা সম্ভব নয়। তিনি বাঙালি জাতির জীবনে আজীবন অমর হয়ে থাকবেন। তার কৃতজ্ঞতার মূল্য দিতে বাঙালি জাতি তাকে আজীবন স্মরণ করে যাবে। ১৫ ই আগস্ট বাঙালির দুঃখভরা মন নিয়ে বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে যাবে।
১৫ ই আগস্ট পরবর্তী ঘটনা
১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে হত্যা করার পর দেশে সামরিক শাসন জারি করা হয় এবং মানুষের গণতন্ত্রকে হত্যা করা হয় এবং কেড়ে নেওয়া হয় তাদের মৌলিক অধিকার। শুরু হয়ে যায় ষড়যন্ত্রের রাজনীতি এবং হত্যাযজ্ঞ। সদ্য স্বাধীনতা অর্জনকারী দেশের মানুষের ভোটের অধিকার এবং জনগণের মুখের ভাত কেড়ে নেওয়া হয়। আর বাংলাদেশে তখন সামরিক শাসন জারি করা হয় বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারের হাত থেকে রেহাই দেওয়ার জন্য। এক কথায় ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করার পর দেশের সার্বিক পরিস্থিতি হুমকির মুখে এসে পড়ে।
কবে জাতীয় শোক দিবস ঘোষণা করা হয়
এ পর্যন্ত বাংলাদেশের যতগুলো হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে তার মধ্যে সবচেয়ে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড হল বঙ্গবন্ধুকে তার স্বপরিবারে হত্যাকাণ্ড। ১৯৯৬ সালে সর্ব প্রথম শোক দিবস পালন করা হয়। আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার পর বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারকার্য শুরু করে ১৯৯৬ সালেই। সর্বপ্রথম ১৫ই আগষ্ট জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালন করা হয়।
জাতীয় শোক দিবসের প্রেক্ষাপট
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ ১৯৭২ সালের ১১ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্ট পর্যন্ত তিন ০৩ বছর ০৮ মাস ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী শেখ মুজিবকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশ থেকে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। নিচে এর কয়েকটি কারণ উল্লেখ করা হলো-
রাজনৈতিক কারণ
১৯৭৫ সালে আওয়ামীলীগের সরকার সংবিধানের চতুর্থ সংসদের সংগঠন করে এবং দেশের সমস্ত রাজনৈতিক তৎপরতা ও রাজনৈতিক দল স্বাধীন ঘোষণা করেয়ে এক দলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে এগিয়ে নিতে তৎপর হন।
আরো পড়ুনঃ ইন্টারনেট ও আজকের বিশ্ব - রচনা ( ২০-৩০ পয়েন্ট) সম্পর্কে জেনে নিন
সেনাবাহিনীর প্রতি উপেক্ষা
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url