নদী শাসন - অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

অনুচ্ছেদ লিখন বাংলা দ্বিতীয় পত্রের একটি অভিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের পরীক্ষার্থীদের প্রায় সকল পরীক্ষাতেই অনুচ্ছেদ লেখতে আসে। তাই আমি  নদী শাসন অনুচ্ছেদ লেখার চেষ্টা করেছি। তোমরা পরীক্ষায় এই  নদী শাসন অনুচ্ছেদ লিখতে পারো।আর তোমরা যারা  নদী শাসন অনুচ্ছেদ লিখতে চাও আমার পোস্ট তাদের জন্য।

Image

বাংলাদেশ নদী মাতৃক দেশ। বাংলাদেশের রয়েছে ৩১0 টি ছোট বড় নদী। আর এই নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে দেশকে রক্ষা করতে হলে নদী শাসন একান্ত প্রয়োজন। নিচে  নদী শাসন অনুচ্ছেদ বিস্তারিত লিখা হলো-

 নদী শাসন - অনুচ্ছেদ 

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। নদী ভাঙ্গন রোধ করার জন্য এবং নদীর পানির স্রোতের গতিপথ পরিবর্তনের মাধ্যমে ভূমিক্ষয় রোধ করার জন্য এবং পাড়ের মাঝে বাঁধের মতো বানিয়ে পাড়ের ক্ষয় রোধ করার জন্য নদীপৃষ্ঠ থেকে পাড়ের উচ্চতায় বড় বড় পাথর ফেলে অথবা কংক্রিটের তৈরি বিশাল আকার নানা রূপ ব্লক তৈরি করা হয়। আর একেই বলা হয় নদী শাসন। এক কথায় নদী শাসন বলতে বোঝায় নদীকে তার নিজ গতিতে চলতে না দিয়ে আমাদের সুবিধামতো নদীর গতিকে নিয়ন্ত্রণ করাকে নদী শাসন বলা হয়।

আরো পড়ুনঃ  বাংলা অনুচ্ছেদ  - পানি দূষণ সম্পর্কে জেনে নিন

জমিতে সেচ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য সাধারণত এই কাজটি করা হয়ে থাকে। তবে নদী শাসনের সুফল এবং কুফল এর দুটি দিকই রয়েছে। বাংলাদেশে ছোট বড় প্রায় ৩১০ টি নদী রয়েছে। সেই সুপ্রাচীন কাল থেকেই বাংলাদেশের সংস্কৃতি, অর্থনীতি, রাজনীতি এবং ভৌগোলিক গঠনের দিক থেকে বাংলাদেশের নদীর গুরুত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ বাংলাদেশের মানুষের সাথে বাংলার মাটি ও নদী ওতপ্রোতভাবে জড়িত।

বাংলাদেশে বেশ কিছু নদী রয়েছে যেগুলো প্রশস্ত কিন্তু সে তুলনায় গভীরতা কম যার কারনে বাংলাদেশের পদ্মা, মেঘনা, যমুনার মতো অনেক বড় নদীতে ও নাব্য সংকট দেখা যায়। আর এসব নদীর প্রশস্ততা কোথাও ১০ থেকে ১২ কিলোমিটার হলেও গভীরতা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ৮ থেকে ৯ ফুট। নাব্য সংকট সবচেয়ে বেশি ভয়াবহ আকার ধারণ করে শুষ্ক মৌসুমে। নৌ পরিবহনের সুযোগ বাংলাদেশে ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে যদিও নৌপথে পণ্য পরিবহন খরচ অনেক কম।

আরো পড়ুনঃ  বাণিজ্য মেলা - একটি বাণিজ্য মেলা - অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

আর এসব সমস্যার সমাধানে বড় বড় নদী গুলোর তীর ভরাট করে নগরায়ন ও শিল্প উন্নয়নের উদ্যোগ নেয়ার পাশাপাশি নদীগুলোর গভীরতা বৃদ্ধির কথা ও ভাবা হচ্ছে। নদীর গভীরতা যদি বৃদ্ধি করা যায় তাহলে নাব্য ধরে রাখা সম্ভব হবে। তেমনি শিল্পায়ন ও নগরায়নের প্রয়োজনীয় জমি ও পাওয়া সহজলভ্য হবে। কিন্তু বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ হওয়া সত্ত্বেও সুজলা - সুফলা কৃষি নির্ভর আমাদের এই দেশের শতশত নদী কেবল অবহেলা, উদাসীনতা এবং অপরিচর্যায়  ক্রমশয় শুকিয়ে যাচ্ছে

আরো পড়ুনঃ  আমার প্রিয় খেলা - অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

এবং খাল ও মরুভূমিতে পরিণত হচ্ছে। যার কারণে বর্ষাকালে ভয়াবহ নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা পরিলক্ষিত হচ্ছে। আর এর ফলস্বরূপ আবাদি জমি এবং বসতভিটা বিলীন হচ্ছে নদীগর্ভে। আর এর শিকার হচ্ছে শত শত জনগণ। তারা প্রাকৃতিক দুর্যোগ হিসেবে এদেশে ঘনঘন বন্যা, জলোচ্ছ্বাস, সাইক্লোন এর হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে পারছে না। তাই নদীর পাড়ে টেকসই ভাবে বাঁধ এবং নদীকে দূষণমুক্ত রাখা সম্ভব হলে এ মহাপরিকল্পনা দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে।

এবং নদী শাসন সম্ভব হলে বন্যা এবং নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে এ দেশকে রক্ষা করা অনেকটাই সম্ভব হবে। নদী শাসনের ফলে নগরায়নের পাশাপাশি বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তোলা সম্ভব হবে। আর এতে বাংলাদেশের বিদ্যুৎ ঘাটতিও দূর হবে।

শেষ কথা

বাংলাদেশের অধিকাংশ নদী গুলো খরস্রোতা যার কারণে নদীগুলোর দুই পাড়ে প্রচুর পরিমাণে ভূমিক্ষয় হয় এবং পাড় গুলো  ধ্বংস হয়ে যায়। আর এই সব কিছুর ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে হলে নদী শাসন একান্ত প্রয়োজন। সাম্প্রতিক সময়ে পদ্মা নদীকে ঘিরে পদ্মা নদীর দুই পাড়ে প্রায় ১২ কিলোমিটার জায়গা জুড়ে নদী শাসন করা হয়েছে। 

আরো পড়ুনঃ  বয়স্ক ভাতা - অনুচ্ছেদ সম্পর্কে জেনে নিন

এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা করার জন্য আরো চৌদ্দ ১৪ কিলোমিটার নদী শাসন করতে যাচ্ছে। আর এর মধ্যে রয়েছে মাওয়া এলাকায় ১.৬ কিলোমিটার এবং জাজিরা এলাকায় ১২.৪0 কিলোমিটার। আর এই কাজগুলো করছে প্রধানত চীনের সিনেহাইড্রো কোম্পানি লিমিটেড। আর এর ব্যয় ধরা হয়েছে ৭০৭ কোটি ৮১ লক্ষ টাকা।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url