নিউমোনিয়া কি - নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার
বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় ১৭ হাজার ৪০০ জন শিশু নিউমোনিয়ার কারণে মৃত্যুবরণ করে। তাই আমাদের নিউমোনিয়া কি - নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানা একান্ত প্রয়োজন। আমরা যদি নিউমোনিয়া কি - নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার না জানি তাহলে এর প্রতিকার করতে পারবো না। তাই নিউমোনিয়া কি - নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার আলোচনা করা হলো।
সারা বিশ্বে প্রায় ৬ মিলিয়ন শিশু নিউমোনিয়ায় মৃত্যুবরণ করে। পাঁচ মাস বয়সী শিশুর মৃত্যুর হার শতকরা ১৬। ভাগ। এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল জীবনে যাদের অন্তত একবার নিউমোনিয়া হয়নি তাই নিউমোনিয়া কি - নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে নিচে আলোচনা করা হলো-
নিউমোনিয়া কি
নিউমোনিয়া হল এক ধরনের ফুসফুসের প্রদাহ বা সংক্রমণ যার কারণে একটি ফুসফুস অথবা উভয় ফুসফুসে বায়ু থলি স্ফীত হয়ে যায় বা সংকুচিত হয়ে যায়। আর আমাদের ফুসফুসে অ্যালভিউলি বা ছোট ছোট বায়ুথলিতে জীবাণুর সংক্রমণের ফলে নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। ইংরেজিতে একে (Penumonia) বলা হয়। একে আবার ফুসফুসের প্যারেনকাইমার প্রদাহ বলা হয়ে থাকে। যখন বাতাসের থলি তরল বা পিউলিয়েন্ট উপাদান বা পুঁজ দিয়ে পূর্ণ হয়ে যায়
তখন কফ, পুজ সহ কাশি, জ্বর ঠান্ডা লাগা এবং শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে। সাধারণত ছত্রাক, ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। নিউমোনিয়া মৃদু বা হালকা হতে পারে আবার কখনো তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে। ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার কারণে যে নিউমোনিয়া হয় তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সংক্রামক হয়ে থাকে অর্থাৎ হাঁচি বা কাশি থেকে নির্গত বায়ু প্রবাহিত ফোটা শ্বাস নেওয়ার সময় এগুলি এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার - এর ডাক্তারেরগণের তালিকা দেখুন
আবার অনেক সময় নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী ভাইরাস বা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা দূষিত কোন স্থানে অথবা বস্তুর সংস্পর্শে আসলেও এই ধরনের নিউমোনিয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর ছত্রাক এর কারণে যে নিউমোনিয়া হয় তা সাধারণত পরিবেশের কারণে হয়ে থাকে। তবে ছত্রাক জনিত নিউমোনিয়া সংক্রামক নয়। নিউমোনিয়া সবচেয়ে বেশি হয় দক্ষিণ এশিয়া এবং সাহারা মরুভূমির দক্ষিণে অবস্থিত আফ্রিকা মহাদেশে।
নিউমোনিয়ার প্রকারভে
সাধারণত নিউমোনিয়া হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের কারণে। আর নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী কিছু ব্যাকটেরিয়া যেমন স্টেপ্টোকক্কাস, মোরাক্সেলা ক্যাটারহালিস, গ্রাম নেগেটিভ জীব,অ্যানেরোবস, হিমো ফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া, গ্রুপ এ স্টেপ্টোকক্কাস, স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস আর এগুলো নিউমোনিয়ার জন্য প্রধানত দায়ী। তবে নিউমোনিয়া সৃষ্টির আরও ৩০ টি অনুজীব রয়েছে যা নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে থাকে।
আর এই জীবাণু গুলি ফুসফুসের এজেন্ট গুলিকে একটি প্রদাহ জনক প্রক্রিয়ার সূচনা করে থাকে এবং এর ফলে তরল বা পুঁজ দিয়ে অ্যালভিউলার থলি ভর্তি হয়ে যায় যার ফলে অক্সিজেনের বিনিময় সীমিত হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট হয়। নিউমোনিয়াকে সাধারণত কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়েছে। যথা -
- হাসপাতাল জনিত নিউমোনিয়া
- সম্প্রদায়জনিত নিউমোনিয়া
- ভেন্টিলেটর সম্পর্কিত নিউমোনিয়া
- অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া
- ওয়াকিং নিউমোনিয়া
- স্বাস্থ্য সেবা অর্জিত নিউমোনিয়া ইত্যাদি।
হাসপাতাল জনিত নিউমোনিয়া
হাসপাতালে থাকার সময় ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে যে নিউমোনিয়া হয় তাকে বলা হয় হাসপাতাল অর্জিত নিউমোনিয়া। সাধারণত কোন রোগী হাসপাতালে থাকার সময় কোন অসুস্থতার কারণে অথবা কোন আঘাত জনিত কারণে তাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীর দুর্বল হয়ে যায়। আর এই সময় যদি ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের ফলে নিউমোনিয়া হয় তাহলে তা অতি সংবেদশীল হয়।
কারণ এই সময় ব্যাকটেরিয়া অন্যতম জাতের তুলনায় ওষুধের প্রতি বেশি প্রতিরোধ হতে পারে।তাই এটি সবচেয়ে বেশি বিপদজনক হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হলে এগুলো প্রায় প্রথম সারির এন্টিবায়োটিক এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধী যা চিকিৎসা পদ্ধতিকে আরও জটিল করে তুলতে পারে। এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে, স্বাস্থ্য সেবা, স্বাস্থ্যকর্মীদের সাথে যোগাযোগের মাধ্যমে ঘটে থাকে।
আরো পড়ুনঃ এলার্জি কত ধরনের - এলার্জি হলে কি কি সমস্যা হয় জানুন
আর হাসপাতালে অর্জিত নিউমোনিয়া এতটা বেশি জটিল হয় যে শ্বাস প্রশ্বাসের সময় রোগীদের ভেন্টিলেটর প্রয়োজন হয়।ভেন্টিলেটর টিউব বা অন্যান্য টিউব যা রোগীর গলা খুলে ফুসফুসে প্রবেশ করার জন্য বায়ুবাহিত ব্যক্তি এবং ভাইরাসের সরাসরি প্রবেশের অধিকার প্রদান করে। আর এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া গুলো এজন্যই এত জটিল হয়ে থাকে।
সম্প্রদায়জনিত নিউমোনিয়া
সম্প্রদায়ের জনিত নিউমোনিয়া হলো নিউমোনিয়ার সবচেয়ে সাধারণ ধরন। তবে এটি সাধারন ধরন হলেও সব চেয়ে বেশি সংক্রমণ হিসেবে উপস্থাপিত হয়ে থাকে। এটি কয়েক ঘন্টা বা কয়েক দিনের মধ্যে লক্ষণ গুলি উপস্থাপিত হয়। একটি চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান ক্ষেত্রে বাইরে প্রাপ্ত নিউমোনিয়াকে এইভাবে উল্লেখ করা হয়ে থাকে।
ভেন্টিলেটর সম্পর্কিত নিউমোনিয়া
ভেন্টিলেটর সম্পর্কিত নিউমোনিয়া যাকে ভিপিএ VPAও বলা হয়। আর এই ধরনের নিউমোনিয়া সাধারণত ভেন্টি লিটারে থাকে এবং এর মাধ্যমে রোগীদের শরীরে প্রবেশ করে।
অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া
অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া সাধারণত খাবার, পানীয় এবং লালা থেকে ফুসফুসে অনুজীবের মাধ্যমে প্রবেশ করে এবং শ্বাস নেওয়ার সময় এটা সবচেয়ে বেশি প্রবেশ করে থাকে। আর এই অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া যদি হয় তাহলে গিলতে অসুবিধা হয়। আর এর প্রধান কারণ হলো বিভিন্ন ঔষধ, অ্যালকোহল বা অন্যান্য ওষুধ সেবনের কারণে অতিরিক্ত অবসাদগ্রস্ত হওয়ার কারণে এটা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি বেড়ে যায়।
স্টেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া
স্টেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া হলো সম্প্রদায় অর্জিত নিউমোনিয়ার প্রধান এবং অন্যতম কারণ আর এই নিউমোনিয়ার ক্ষেত্রে শতকরা ২০ থেকে ৬০ ভাগ এর জন্য দায়ী। মোরাক্সেলা ক্যাটারহালিস, গ্রাম নেগেটিভ জীব,অ্যানেরোবস, হিমো ফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া, গ্রুপ এ স্টেপ্টোকক্কাস, স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস আর এগুলো নিউমোনিয়ার জন্য প্রধানত দায়ী।
ওয়াকিং নিউমোনিয়া
সবচেয়ে কম গুরুতর নিউমোনিয়ার মধ্যে ওয়াকিং নিউমোনিয়া অন্যতম। যেসব রোগীর শরীরে ওয়াকিং নিউমোনিয়া রয়েছে তাদের অনেকেই এর লক্ষণ বুঝতেই পারে না কারণ এই নিউমোনিয়ার উপসর্গগুলো তুলনামূলক অতি অল্প এবং শ্বাসযন্ত্রের অসুস্থতার অনুরূপ। তবে ওয়াকিং নিউমোনিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির সুস্থ হতে দীর্ঘ সময় লাগতে পারে। ওয়াকিং নিউমোনিয়া হলে যেসব লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তা হল-
- অতি নিম্ন তাপমাত্রা জ্বর
- শুকনো কাশি থাকে এবং তা এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হয়
- শ্বাসকষ্ট
- বুকে অস্বস্তি
- ঠান্ডা লাগা
- ক্ষুধা কমে যাওয়া
আপনি যদি আপনার শরীরে যদি এই লক্ষণগুলো দেখতে পান তাহলে বুঝবেন আপনি ওয়াকিং নিউমোনিয়া দ্বারা আক্রান্ত। ভালো লাগেনা কি করব আর নিউমোনিয়া সবসময় ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়া জীবাণু যেমন স্টেপ প্রকাশ নিউমোনিয়া এবং হেমোফিলাস দ্বারা সৃষ্টি হয় ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সৃষ্টি হয়ে থাকে। স্টেপ্টোকক্কাস,হিমো ফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত হয়।
স্বাস্থ্য সেবা অর্জিত নিউমোনিয়া
স্বাস্থ্য সেবা অর্জিত নিউমোনিয়া সাধারণত যারা দীর্ঘদিন কিডনি রোগে আক্রান্ত তাদের বেশি হয়ে থাকে। এই ধরনের নিউমোনিয়া সাধারণত একটি বহিরাগত রোগীর ক্লিনিক, নার্সিংহোম বা দীর্ঘমেয়াদী যত্ন ও সুবিধা পরি দর্শনের সময় হয়ে থাকে। আর এর প্রধান কারণ হলো যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত সেই সব রোগীর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং তারা সহজেই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমনে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়।
আরো পড়ুনঃ টিউমার কি - টিউমার কেন হয় জেনে নিন
যার তাদের সাথে যোগাযোগের প্রয়োজন হয়। আর তাদের সাথে ঘনঘন যোগাযোগের কারনে তারা এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকে। তাই যারা কিডনি রোগে আক্রান্ত তারা যেন নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত না হয় সেদিকে ব্যতিক্রমধর্মী স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলন করতে হবে এবং সমস্ত চিকিৎসার সরঞ্জাম পুঙ্খানুপঙ্খ পরিষ্কার করতে হবে এবং তাদের জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। আর কিডনি রোগে আক্রান্ত রোগীরা
শুধুমাত্র প্যাথা জেলের সরাসরি এক্সপোজারের সম্ভাবনার কারণেই নিউমোনিয়ার ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি রয়েছে। আর যেসব রোগীদের ডায়ালাইসিস করা হয় তাদের মৃত্যুর প্রধান কারণ হলো নিউমোনিয়া। তাই যারা দীর্ঘদিন কিডনি রোগে আক্রান্ত তাদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন এবং বার্ষিক ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত।
নিউমোনিয়া রোগের কারণ কি
ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস এবং ছত্রাক প্রধানত নিউমোনিয়া রোগের প্রধান কারণ এছাড়াও নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী কিছু ব্যাকটেরিয়া যেমন স্টেপ্টোকক্কাস, মোরাক্সেলা ক্যাটারহালিস, গ্রাম নেগেটিভ জীব,অ্যানেরোবস, হিমো ফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া, গ্রুপ এ স্টেপ্টোকক্কাস, স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস আর এগুলো নিউমোনিয়ার জন্য প্রধানত দায়ী। তবে নিউমোনিয়া সৃষ্টির আরও ৩০ টি অনুজীব রয়েছে যা নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে থাকে।
নিউমানিয়ার সৃষ্টিকারী প্রধান প্রধান জীবাণুগুলো হল-
শতকরা ৫০টি নিউমোনিয়ার জন্য স্টেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়া প্রধানত দায়ী। আর এই স্টেপ্টোকক্কাস নিউমোনিয়া ব্যাকটেরিয়া জীবাণু সংক্রমণ সরাসরি বেশি হয়ে থাকে আবার অনেক সময় সর্দি এবং ফ্লুর পর এই ধরনের ব্যাকটেরিয়া শরীরে সংক্রমণ করে।
আবার মাইক্রোপ্লাজম নিউমোনিয়ার সংক্রমণ ব্যাকটেরিয়ার মতো জীবাণুর কারণে হয়ে থাকে এবং তা ফুসফুসের সংক্রমণ করে থাকে।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহী মেডিকেল কলেজ - হাসপাতাল সম্পর্কে জেনে নিন
আমাদের শরীরে যে নিউমেনিয়ার সংক্রমণ হয় তার এক তৃতীয়াংশ সংক্রমণ ভাইরাসের কারণে হয়ে থাকে। সর্বাধিক নিউমোনিয়া কারক ভাইরাস হল- রাইনো ভাইরাস, করোনা ভাইরাস, ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস, স্পিরিটোটরি সিঙ্কসাইটাল ভাইরাস, আডোনা ভাইরাস ইত্যাদি। আর এই সকল ভাইরাস অঙ্গ প্রতিস্থাপন করার পর যখন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তখন বেশি সংক্রমণ করে থাকে।
ছত্রাকের কারনে ও নিউমোনিয়া হয়ে থাকে তবে ছত্রাক জনিত নিউমোনিয়ার হার তুলনামূলক অনেক কম আর নিউমোনিয়ার জন্য দায়ী ছত্রাক গুলোর নাম হল - ব্লাস্টোমাইসিস,ক্রিপ্টোকক্কাস,হিস্টোপ্লাজম কাম্পুলাটান, ব্লাস্টোমাইসিস, ক্রিপ্টোকক্কাস, নিউফর্মান্স ইত্যাদি।
অনেক সময় বিভিন্ন পরজীবীর আক্রমণে ও নিউমোনিয়া হতে পারে যেমন ট্যাক্সোপ্লাজম গণ্ডি, স্তেরকরালিস,আস্কারিস লামব্রিকইদেস, স্ত্রোঙ্গিলইদেস, স্তেরকরালিস,আস্কারিস লামব্রিকইদেস ইত্যাদি।
এছাড়াও অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে যে নিউমোনিয়া হয় সে ব্যাকটেরিয়া গুলো হলো -হিমো ফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা,লেজিওল্লা নিমফিলিয়া, মরাক্সেল্লা কাতারহালিশ, ক্লামিদোফিলিয়া, নিউমোনিই, ইত্যাদি। আর যারা অতিরিক্ত মদ পান করে এ তাদের এই ধরনের জীবানুর সংক্রমনে নিউমোনিয়া হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে।
আরো পড়ুনঃ কিডনি রোগের লক্ষণ - প্রতিকার জেনে নিন
তবে দুই বছর থেকে ৫ বছর বয়সী শিশু এবং ৬০ বছরের উর্ধ্বে বয়স্করা সবচেয়ে বেশি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়ায় মৃত্যুর হার সবচেয়ে বেশি। নিউমোনিয়ায় প্রতিবছর প্রায় ৯ লাখ বিশ ২০ হাজার শিশু মৃত্যুবরণ করে।ইউনিসেফ এর মতে বাংলাদেশের যদি নিউমোনিয়া মোকাবেলায় আরো পদক্ষেপ নেওয়া না হয় তাহলে আগামী দশকে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজারেরও বেশি শিশুর মৃত্যু হতে পারে।
আর এর প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ও অপুষ্টি, বায়ু দূষণ এবং টিকা ও এন্টিবায়োটিক প্রাপ্তির অভাব। নিউমোনিয়ায় গত বছরে বাংলাদেশে প্রতি ঘন্টায় একটি শিশুর মৃত্যু ঘটেছে। আবার বিশ্বে প্রতি ৩৯ সেকেন্ডে নিউমোনিয়ায় একটি শিশুর মৃত্যু হয় ।আর অন্যান্য যেসব সংক্রমণ রয়েছে নিউমোনিয়া তার মধ্যে অপপ্রতিরোধ যোগ্য একটি রোগ।
কোন অনুজীব নিউমোনিয়া রোগের জন্য দায়ী
সাধারণত নিউমোনিয়া হয়ে থাকে ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাসের কারণে। আর নিউমোনিয়া সৃষ্টিকারী কিছু ব্যাকটেরিয়া যেমন স্টেপ্টোকক্কাস, মোরাক্সেলা ক্যাটারহালিস, গ্রাম নেগেটিভ জীব,অ্যানেরোবস, হিমো ফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা, ক্লেবসিয়েলা নিউমোনিয়া, গ্রুপ এ স্টেপ্টোকক্কাস, স্ট্যাফিলোকক্কাস অরিয়াস আর এগুলো নিউমোনিয়ার জন্য প্রধানত দায়ী। তবে নিউমোনিয়া সৃষ্টির আরও ৩০ টি অনুজীব রয়েছে যা নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে থাকে।
আর এই জীবাণু গুলি ফুসফুসের এজেন্ট গুলিকে একটি প্রদাহ জনক প্রক্রিয়ার সূচনা করে থাকে এবং এর ফলে তরল বা পুঁজ দিয়ে অ্যালভিউলার থলি ভর্তি হয়ে যায় যার ফলে অক্সিজেনের বিনিময় সীমিত হয়ে যায় এবং শ্বাসকষ্ট হয়।
নিউমোনিয়া রোগের লক্ষণ
ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক জনিত কারণে সাধারণত নিউমোনিয়া হয়ে থাকে। তবে নিউমোনিয়ার উপসর্গ বা লক্ষণগুলো নির্ভর করে কোন ধরনের জীবাণু দ্বারা ব্যক্তি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে তার ওপর ভিত্তি করে। তবে সর্বাধিক লক্ষণ যেগুলো প্রকাশ পায় তা হল -
- বুকে ব্যথা যার শ্বাস প্রশ্বাসের সাথে উঠানামা করে
- জ্বর
- শরীরে কাঁপুনি
- ঘাম হওয়া
- কাশি হওয়া
- মাথাব্যথা
- অনুভব করা
- মাংসপেশীতে ব্যথা
- খাবারের প্রতি অনীহা
- বমি বমি ভাব
- কাশি এবং কাশির সাথে হলুদ বা সবুজ রঙের শ্লেষ্মা বের হওয়া
- শ্বাস নেওয়ার সময় বা কাশি দেওয়ার সময় বুকে ব্যথা অনুভূত হওয়া
- সারা শরীরে ব্যথা অনুভূত হওয়া
- একটানা তিন সপ্তাহের বেশি কাশি হওয়া
- কাশির সঙ্গে মাঝেমাঝে রক্ত যাওয়া
- ফ্যাকাসে বা নীল শিরায় দাগ দেখা যাওয়া।
নিউমেনিয়া রোগের চারটি ধাপ বা পর্যায়ে রয়েছে যে পর্যায় গুলো আসলে শরীর অতিরিক্ত খারাপ হয়ে যায় সেগুলো হল -
- কনজেশন
- রেড হেপাটাইজেশন
- গ্রে হেপাটাইজেশন
- রেজোলিউশন।
আর যখন রোগীর শরীরের ইমিউন বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অতিরিক্ত কমে যায় তখন রোগীর এই ধরনের অবস্থা হয়ে থাকে এবং রোগীর খুব শরীরে খারাপ বোধ করে থাকেন।শরীরে যদি এই সকল লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তাহলে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
বাচ্চাদের নিউমোনিয়ার লক্ষন
নিউমোনিয়ার লক্ষণ সাধারণত বাচ্ছা এবং বড় সবার ক্ষেত্রেই প্রায় একই রকম হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় কোন ধরনের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে ভিন্নতা দেখা যায়। তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাধারণত যে সকল উপসর্গ বা লক্ষণ গুলো প্রকাশ পায় তা হল -
- জ্বর মাজারি বা তীব্র
- শ্বাসকষ্ট
- কাশি
- শ্বাসকষ্ট বেশি হলে শিশু খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে দেয়।
- বাচ্চা খুব বিরক্ত হয়ে থাকে।
- শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়।
- নাকের ছিদ্র অনেক বড় করে বা ফুলিয়ে নিশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করে।
- শরীরে অক্সিজেন খুব বেশি কমে গেলে মাথা ঝাকাতে থাকে।
- যখন নিউমোনিয়ার অবস্থা অনেক তীব্র হয়ে যায় তখন ঘরঘর আওয়াজ করতে থাকে।
- অক্সিজেনের অভাবে শরীর নীল বর্ণ হয়ে যায়।
- বাচ্চা ঘনঘন শ্বাস নেয় এবং বুকের দুই পাশ ভেতরে ঢুকে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়।
- শূন্য ০ থেকে দুই ২ মাস বয়সী শিশুর মিনিটে ৬০ বারের বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়।
- দুই ২ থেকে মা ১২ মাস বয়সী শিশুরা ৫০ বারের বেশি শ্বাস - প্রশ্বাস নেয়।
- ১ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুরা চল্লিশ ৪০ বারের বেশি শ্বাস-প্রশ্বাস নেয়।
- বুকের ভেতর ২পাশ থেকে চেপে আসে।
- হৃদপিন্ডের গতি বেড়ে যায়।
আর আপনার শিশুর যদি এইসব লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় তাহলে দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গে একজন শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। কারণ নিউমোনিয়া হলে শিশুকে অবহেলা করার কোন সুযোগ নেই। আর মনে রাখবেন, নিউমোনিয়া ভালো হয়ে গেলেও পরবর্তীতে শিশুর শরীরে মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে। তাই অবশ্যই ভালোভাবে শিশুর চিকিৎসা করাবেন।
শিশুকে নিউমোনিয়া থেকে বাঁচাতে করণীয়
নিউমোনিয়ায় সবচেয়ে বেশি দুই ২ থেকে পাঁচ ৫ বছর বয়সের শিশুরা আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে অনেক শিশু রয়েছে যারা জন্মের পরেও নিউমোনিয়া আক্রান্ত হয়ে থাকে। তবে শিশুদের নিউমেনিয়া থেকে বাঁচাতে হলে কিছু করণীয় বা কাজ রয়েছে যেগুলো অবশ্যই করতে হবে। আর তা হলো -
- শিশুকে প্রথমত নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুর কাছ থেকে দূরে রাখতে হবে।
- শিশুদের সময় মত নিউমোক্কাস, হাম এবং হুপিং কাশির টিকা দিতে হবে।
- যাদের হাঁচি, কাশির সমস্যা রয়েছে সে সকল লোকের সামনে থেকে শিশুকে দূরে রাখতে হবে।
- শিশুকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে।
- শিশুকে সবসময় শুকনো এবং পরিষ্কার রাখতে হবে।
- বাইরে থেকে এসে সাবান দিয়ে হাত মুখ পরিষ্কার করে তারপরে শিশুকে স্পর্শ করতে হবে।
- শিশুকে খাবার খাওয়ানোর আগে অবশ্যই দুই হাত ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে।
- শিশুকে মায়ের বুকের দুধ পান করাতে হবে কারণ যেসব শিশু মায়ের বুকের দুধ পান করে তারা নিউমোনিয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি রাখে।
- শিশুর ৬ মাস বয়স হয়ে গেলে বুকের দুধের পাশাপাশি তাদের স্বাস্থ্যকর বাড়তি খাবার দিতে হবে।
- শিশুকে সবসময় কুসুম গরম পানি ব্যবহার করাতে হবে।
- লবণ এবং পানি গরম করে গরম পানির ভাপ নেওয়া যেতে পারে।
- শীতকালে সবচেয়ে বেশি শিশুরা নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়। তাই যদি তাদের ডাইপার ব্যবহার করানো হয় তাহলে তা ঘনঘন পরিবর্তন করতে হবে।
- নিউমোনিয়ার কিছু ভ্যাকসিন রয়েছে এই ভ্যাকসিন গুলো নিয়মিত দিতে হবে।
- তবে শিশুর যে কোন চিকিৎসা ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক করতে হবে।
নিউমোনিয়া রোগীর খাবার
নিউমোনিয়া সাধারণত ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাক জনিত কারণে হয়ে থাকে। এবং নিউমোনিয়ার প্রধান কারণ হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া। তাই এই সময় শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এমন খাবার খাওয়ানো উচিত। তাই নিউমোনিয়া হলে যেসব খাবার খাওয়ানো উচিত তা হলো -
- সহজ পাচ্য কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন এবং চর্বি
- গরম দুধ
- গরম স্যুপ
- নারকেলের পানি তাজা রস এবং বাটার মিল্ক বা ঘোল
- সবুজ শাক
- টক দই জাতীয় খাবার
তবে মনে রাখবেন খাবারগুলো অবশ্যই টাটকা দিতে হবে। কোন বাসি পচা খাবার দেয়া যাবে না এবং খাবার গুলো যেন সুষম হয় সেদিকে সবসময় খেয়াল রাখতে হবে।
নিউমোনিয়ার পরীক্ষা বা রোগ সনাক্তকরণ পদ্ধতি
যদিও নিউমোনিয়া হলে কিছু প্রাথমিক লক্ষণ দেখে বোঝা যায় যে নিউমোনিয়া হয়েছে এরপরেও ডাক্তার এরা কিছু ল্যাব টেস্ট দিয়ে থাকেন সেগুলো হলো -
- শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা
- বুকের এক্সরে
- রক্ত এবং কফ বা শ্লেষ্মা পরীক্ষা
- চেস্ট স্ক্যান
- চেস্ট এক্স-রে
- স্পুটম কালচার
- ব্লাড কাউন্ট
নিউমোনিয়ার চিকিৎসা
নিউমোনিয়ার সাধারণত ফুসফুসের তীব্র প্রদাহের সৃষ্টি করে থাকে। অনেক সময় নিউমোনিয়া বাড়িতেই নিরাময় করা সম্ভব তবে যদি রোগের ভয়াবহতা বৃদ্ধি পায় তাহলে রোগীকে অবশ্যই সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক চিকিৎসা করাতে হবে। তবে যে কোন সমস্যা হলেই নিজে চেষ্টা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত। তবে এক্ষেত্রে ডাক্তারেরা যেসব চিকিৎসা প্রদান করে থাকেন তা হল -
- এন্টিবায়োটিক এর প্রয়োগ
- শ্বাস-প্রশ্বাসের হার অব্যাহত রাখা এবং অধিকাংশ সময় অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন হয়
- জ্বরের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ
- কফ এর মেডিসিন ব্যবহার
- জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় সিরাপ
তবে নিউমোনিয়া হলে যদি রোগী সঙ্গে সঙ্গে সঠিকভাবে চিকিৎসা পাওয়া যায় তাহলে রোগী পাঁচ থেকে সাত দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তবে শিশুদের ক্ষেত্রে যেসব শিশুরা বুকের দুধ পান করেনি এবং এক ঘরে একই সঙ্গে অনেক লোকের সংস্পর্শে থাকে এবং ঘর গুলো খোলামেলা, আলো ও বাতাস পরিপূর্ণ নয় সেই সব ঘরে বসবাসকারী শিশুরা নিউমোনিয়ার ঝুঁকিতে সবচেয়ে বেশি থাকে। এবং নিউমোনিয়ায় একবার আক্রান্ত হলে সেরে উঠতেও অনেক বেশি সময় লেগে যেতে পারে।
নিউমোনিয়ার টিকা কখন দিতে হয়
শিশু জন্মের সাধারণত ৬,১০ ও ১৮ সপ্তাহে নিউমোনিয়ার টিকা প্রদান করা হয়। যাদের বয়স ৬৫ বছরের বেশি তাদের জন্য একটি মাত্র ডোজের প্রয়োজন হয়।আর এই টিকার নাম হল পিসিভি (PCV) ইঞ্জেকশন। নিউমোনিয়া টিকা সাধারণত দুইবার নেওয়া হয় তবে যাদের নিউমোনিয়া টিকার প্রয়োজন তাদেরকে প্রথম শর্ট নেওয়া উচিত পিভিসি (PCV) ১৩। এবং এরপর যদি প্রয়োজন হয় তাহলে পিপিএসপি (PPSP) ২৩ নিতে হয়।
আরো পড়ুনঃ ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ - কারণ ও প্রতিকার জেনে নিন
এবং এটি প্রথম টিকা নেওয়ার এক বছর পর নিতে হয়। তবে বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে প্রতিটি শর্ট এর জন্য তাদের সারা জীবনের জন্য এটা হয়ে যায় আবার কখনো কখনো বুস্টার শট নিতে হতে পারে। বাজারে নিউমোনিয়ার টিকা বলে সাধারণত তিন ধরনের টিকা কিনতে পাওয়া যায় যেগুলো বেসরকারিভাবে দেওয়া হয়।এবং এই টিকা দিতে প্রায় আড়াই হাজার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে।
আবার যে সব শিশু নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় তাদের অভিভাবকদের গড়ে পাঁচ থেকে সাত দিন হাসপাতালে থাকতে হয় এবং শুধু এন্টিবায়োটিক এর জন্য রোগীর খরচ হয় ১ হাজার ৯০০ টাকা।আর এই টিকা দেওয়ার ক্ষমতা আর্থিকভাবে সকল পরিবারের হয়তো থাকে না তাই শিশু জন্মের ৬,১0 এবং ১৮ সপ্তাহের মধ্যে টিকা দেওয়াই উচিত।
নিউমোনিয়া ভ্যাকসিন
নিউমোনিয়া হলে শিশুদের সাধারণত যে ভ্যাকসিন দেওয়া হয় তার নাম হলো "নিউমোভ্যাক্স - ২৩"। আর এই "নিউমোভ্যাক্স - ২৩" নামক ভ্যাকসিনটি বাজারে কিনতে পাওয়া যায়। এছাড়াও (Prevnar - 20) নামক ভ্যাকসিন নিউমোনিয়ার জন্য দেওয়া হয়ে থাকে তবে এই (Prevnar - 20) ভ্যাকসিন টি ফ্রিজ থেকে সরানোর পরপরই শরীরে পুশ করা উচিত। আবার মনে রাখবেন এই (Prevnar - 20) ভ্যাকসিন টি হিমায়নের সময় ৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এবং ২৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড এর মধ্যে তাপমাত্রায় ৯৬ ঘণ্টার বেশি রাখা যাবে না।
শেষ কথা
নিউমোনিয়ার প্রকোপ থেকে বাচ্চাদের বাঁচাতে সাধারণত শিশু জন্মের প্রথম ৬ মাস মায়ের বুকের দুধ খাওয়ানোর কথা বলা হয়ে থাকে এবং মায়ের বুকের দুধ খাওয়ালে ১৫ থেকে ২৩ শতাংশ পর্যন্ত নিউমোনিয়ার প্রকোপ রোধ করা সম্ভব। কিন্তু এত প্রচার প্রচারণা সত্ত্বেও বাংলাদেশের মাত্র ৪৩ শতাংশ শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো হয় এবং উপযুক্ত সময় যদি অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয় তাহলে নিউমোনিয়ার প্রকোপ কমানো সম্ভব।
আরো পড়ুনঃ বাত জ্বর কাকে বলে - বাত জ্বরের কারণ ও লক্ষণ সম্পর্কে জেনে নিন
যদিও ১৪ টি দেশে পরিচালিত এক প্রতিবেদনে দেখা যায় নিউমোনিয়া আক্রান্ত শিশুদের মাত্র ২৭ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক পেয়ে থাকে। আর এর মূল কারণ হিসেবে সচেতনতার অভাবকে চিহ্নিত করা হয়। উন্নয়নশীল দেশে কেবলমাত্র নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত শিশুদের মধ্যে ৫৪ শতাংশ শিশুকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে আসা হয়। আর বাংলাদেশে এর সংখ্যা মাত্র ৩৭ শতাংশ। আবার ধোয়া মুক্ত চুলার ব্যবহারে পঞ্চাশ ৫০ শতাংশ শিশু নিউমোনিয়ার আক্রান্ত কমতে পারে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url