প্রত্যেক ঈমানদার মুসলিম ব্যক্তিকে ঘুমানোর আগে আমল - রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয় তা জানা উচিত। কারণ একজন ঈমানদারের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য থাকে ঈমানের সহিত মৃত্যুবরণ করা। তাই ঘুমানোর আগে আমল - রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয় জানতে হবে। কারণ কখন কে মৃত্যুবরণ করবে মহান আল্লাহতালা ছাড়া কেউ জানেন না। তাই ঘুমানোর আগে আমল - রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয় যারা জানতে চান আমার পোস্ট তাদের জন্য।
আমি আমার আর্টিকালের মাধ্যমে ঘুমানোর আগে আমল - রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয় সহ রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয়, রাতে ঘুমানোর আগের দোয়া, ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়, ঘুমানোর আগে জিকির সবকিছু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। নিচে ঘুমানোর আগে আমল - রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয় আলোচনা করা হলো-
পোস্ট সূচিপত্রঃ ঘুমানোর আগে আমল - রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয়
- রাতে ঘুমানোর আগে করনীয়
- ঘুমানোর আগে আমল
- রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয়
- রাতে ঘুমানোর আগে দোয়া
- ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়
- ঘুমানোর আগে জিকির
- ঘুমানোর আগে ১00 আয়াত
- শেষ কথা
রাতে ঘুমানোর আগে করনীয়
মানুষের ক্লান্তি ও অবসাদ দূর হয় ঘুমের মাধ্যমে।মানুষের শরীর সুস্থ ও সঠিক রাতে ঘুমের কোন বিকল্প নেই। ঘুম আল্লাহর একটি বড় নেয়ামত। মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ঘুমের আগে কিছু আমল দিয়েছেন আর এই আমলগুলো প্রত্যেকটি মুমিন মুসলমানদের জন্য জরুরী।মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন মুমিনদের জীবন যাপন কেমন হবে তা তিনি নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ঘুম আবার মানুষের জন্য আল্লাহতালার পক্ষ থেকে প্রেরিত অনুগ্রহ এবং নিয়ামত এবং ঘুম একটি মহৎ ইবাদতও বটে।
মহান আল্লাহতালা পবিত্র কোরআনে বলেছেন, "তোমাদের নিদ্রা কে করেছি ক্লান্তি দূরকারী"। (সূরা নাবা, আয়াতঃ ০৯)। মানুষ যখন ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী ঘুমায় তখন সে ঘুমও ইবাদতে পরিণত হয়। আর এই কারণেই রাত্রি যাপনের কিছু শিষ্টাচার এবং রাতে ঘুমানোর আগে কিছু করণীয় রয়েছে নিচে সেগুলো আলোচনা করা হলো-
ঘুমানোর জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি
আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) ঘুমানোর আগে কিছু প্রয়োজনীয় কাজের নির্দেশনা দিয়েছেন। রাসূল (সাঃ) বলেছেন, "তোমরা রাতে পানাহারের পাত্র গুলো ঢেকে রাখো। ঘরের দরজা গুলো বন্ধ কর রেখো। আর সন্ধ্যা বেলায় তোমাদের বাচ্চাদের ঘর থেকে বের হতে দিও না, কারণ এ সময় জ্বীনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। ঘুমের আগে বাতিগুলো নিভিয়ে দেবে কেননা ঘরে অনেক সময় ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রজ্জ্বলিত শলিতা যুক্তবাতি টেনে নিয়ে যায় এবং ঘরের লোককে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়"। (বুখারী, হাদিস নংঃ ৩৩১৬)।
রাত্রে আগে আগে ঘুমানো
রাসূল (সাঃ) "এশার নামাজের পর গল্প গুজ ও গভীর রাত পর্যন্ত সময় নষ্ট না করে তাড়াতাড়ি ঘুমানোর তাগিদ দিতেন"। (মুসনাদে আদিইয়ালা, হাদিসঃ ৪৮-৭৯)। কারণ আমাদের প্রিয় নবী এশার নামাজের পর অনর্থ গল্প গুজব এবং দীর্ঘ রাত পর্যন্ত অহেতুক জেগে থাকা অপছন্দ করতেন। তবে তিনি কখনো কখনো দিন শিক্ষার জন্য রাত জাগরণ করতেন। মুসলমানদের সম্পর্কে কল্যাণকর পরামর্শের জন্য অনেক সময় রাতে তিনি আবু বকর (রঃ) এর বাসায় যেতেন। (তাহাবী শরীফ, হাদিস নংঃ ৭২০৩)।
আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রহমাতুল্লাহ বলেন, রাসূল (সাঃ) আমাদের রাতের গল্পগুজবে মত্ত হতে নিষেধ করতেন। (ইবনে মাজহা, হাদিস নংঃ ২৪-৩৫)।
উম্মুল মুমিনীন হযরত আয়েশা রাযিআল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন তিন ধরনের মানুষের জন্য রাত জাগার অনুমতি রয়েছে
- বিয়ের রাতে নব দম্পতি
- মুসাফির ও
- নফল নামাজ আদায়কারী (মুসনাদে আবি ইয়ালা, হাদিস নংঃ ৪৮৭৯)।
এছাড়া যারা দায়িতের প্রতি নিষ্ঠাবান অর্থাৎ যারা কর্মব্যস্ত কিংবা রাতের দায়িত্ব পালন করে তাদের রাত জাগতে ইসলামে কোন অসুবিধা নেই।
বিছানা পরিষ্কার করে নেওয়া বা ঝেড়ে নেওয়া
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে সুন্নাহ হল বিছানা ছেড়ে নেওয়া এ প্রসঙ্গে আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম বলেন যদি তোমাদের কেউ শয্যায় যায় তখন সে যেন তার লুঙ্গি দ্বারা বিছানা ছেড়ে দেয় কারণ সে জানে না যে বিছানার উপর তার অনুপস্থিতিতে পীড়া দায়ক কোন কিছু আছে কিনা তারপরের দোয়া পড়বে" বিসমিকা রাব্বি ওয়াদাতু ঝাম্বি ওয়া বিকা আরফাউহু"
অর্থঃ" হে আমার রব আপনার নামে আমার শরীরটা বিছানায় রাখলাম এবং আপনারই নামে আবার উঠাবো। বুখারী হাদিস, ৬৩২০"
পবিত্র হয়ে ঘুমানো
রাতে এশার নামাজের পরে অহেতুক দেরি না করে ঘুমানো উচিত। কারণ রাত্রে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও পবিত্র হয়ে ঘুমানো সুন্নাহ। পবিত্রতার ব্যাপারে রাসুল (সাঃ)বলেছেন, যদি কোন মুসলমান রাতে আল্লাহকে স্মরণ করে ওযু শেষে ঘুমায় এবং রাতে জাগ্রত হয়ে দুনিয়া ও আখেরাতের কোন কল্যাণ আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে আল্লাহ তা''আলা দান করেন। আবু দাউদ, ৫০-৪২।
রাতে পানির পাত্রসহ খাবার ঢেকে রাখা
রাত্রে পানির পাত্র ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে কারণ রাত্রে এমন এক ধরনের ভাইরাস বিচরণ করে যা পানির মধ্যে দিয়ে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। তাই রাত্রে পানির পাত্র ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে। আবার রাতের বেলা ঘুমাতে যাওয়ার আগে খাবার ঢেকে রাখতে হবে কারণ খাবার যদি ঢেকে রাখা না হয় তাহলে এতে ইদুর, তেলাপোকা বা অন্যান্য পোকা এসে খাবার গুলো নষ্ট করে ফেলতে পারে অথবা এই খাবারের মধ্যে কোন জীবাণু ছড়িয়ে দিতে পারে যা থেকে মানুষ মারাত্মক রোগের সম্মুখীন হতে পারে।
সর্তকতা সহিত ঘুমানোর স্থান নির্বাচন
হযরত ইবনে উমর রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু থেকে বর্ণিত তিনি বলেছে, "নবী করীম (সাঃ) কোন ঘরে একাকি রাত যাপন বা একাকী সফর করতে নিষেধ করেছেন" আহমেদ হাদিস নং ৫৬৫০। সুতরাং একাকী কোন ঘরে রাত যাপনের ব্যাপারে হাদিসে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আবার খোলা জায়গায় ঘুমানো উচিত নয় যেমন বাসা বাড়ির ছাদ বা বাড়িতে খোলা উঠানে। রাসুল (সাঃ) এরশাদ করেন, "যে ব্যক্তি বেষ্টনীহীন ছাদে রাতে ঘুমায় কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার সম্পর্কে আল্লাহর কোন জিম্মাদারী নেই"।আবু দাউদ, হাদিস নংঃ ৫০৪১।
নিরাপদে ঘুমানোর ব্যবস্থা
রাতে নিরাপদে ঘুমানোর জন্য আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন, যেগুলোর ওপর আমল করে ঘুমালে সুন্নাহ আদায় হবে এবং পাশাপাশি বিপদ থেকেও মুক্তি পাওয়া যাবে। হযরত জাবের রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বর্ণনা করেছেন, রাসুল (সাঃ) বলেছেন, তোমরা রাতে পানাহারের পাত্র গুলো ঢেকে রাখো, ঘরের দরজা গুলো বন্ধ রেখো, আর সাঁঝের বেলা তোমাদের বাচ্চাদের ঘরে আটকে রেখো।
কারণ এ সময় জিনেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং কোন কিছুকে দ্রুত পাকড়াও করে। ঘুমানোর সময় বাতি গুলো নিভিয়ে দিবে কেননা অনেক সময় ছোট ক্ষতিকারক ইঁদুর প্রচলিত সলতে যুক্ত বাতি টেনে নিয়ে যায় এবং ঘরবাসীকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে দেয়। বুখারি, ৩৩ ১৬।
ডান পাশ্ব ফিরে ঘুমানো
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার সময় অবশ্যই ডান কাত হয়ে ঘুমাতে হবে। কারণ ইসলামে সব ভালো কাজ যেহেতু ডান দিকে প্রাধান্য দেয় তাই ঘুমের সময় ও ডানদিকে শুয়ে ঘুমানো উচিত। আবার ডান দিকে শুয়ে ঘুমানো উচিত তার মানে এই নয় যে,আপনি সারারাত আর বাঁদিকে ঘুরতে পারবেন না। আপনি ডান কাতে ঘুমানোর পরে যে তাতে ইচ্ছে ঘুমাতে পারবেন।
ঘুমানোর আগে আমল
একজন ঈমানদার মুসলিমের প্রতিটি কাজই আল্লাহর ইবাদত। তেমনি ঘুমও আল্লাহর ইবাদত। তবে আপনি যদি আল্লাহর দেখানো পথে চলতে পারেন এবং ঘুমাতে পারেন তাহলে আপনার ঘুমও আল্লাহর ইবাদতে পরিণত হবে। চলুন যে আমলগুলো করলে ঘুম ইবাদতে পরিণত হবে তা জেনে নেই।
আয়াতুল কুরসি তেলাওয়াত
রাতে ঘুমানোর আগে আয়াতুল কুরসি পড়ার ব্যাপারে নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। রাসূল (সাঃ) বলেন, তুমি যখন শয্যা গ্রহণ করবে তখন আয়তুল কুরসি পড়বে। তাহলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বদা তোমার জন্য একজন রক্ষক থাকবে এবং সকাল পর্যন্ত শয়তান তোমার কাছে আসতে পারবেনা। বুখারি, হাদিস নংঃ ২৩১১।
সুরা বাকারার শেষ ২ আয়াত পাঠ করা
নবী করীম (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রাত্রে ঘুমানোর আগে সূরা বাকারার শেষের দুই আয়াত তিলাওয়াত করবে এটা তার জন্য যথেষ্ট হবে। বুখারী, হাদিসঃ ৪০০৮।
সূরা কাফিরুন পাঠ করা
রাসূল সাঃ বলেছেন কেউ যদি রাতে সূরা কাফিরুন অর্থাৎ কুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরুন পাঠ করে তবে সে শিরক থেকে মুক্ত থাকবে। তিরমিজি ও আবু দাউদ, সহীহ তারগিব, হাদিসঃ ৬ কবে দিবি ৬০২।
তিন কুল পড়া অর্থাৎ সূরা এখলাস, সূরা ফালাক ও সূরা নাস পড়া
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, রাসূল (সাঃ) প্রতি রাত্রে যখন বিছানায় যেতেন তখন দুই হাত একত্রিত করে তাতে সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুক দিতেন। অতঃপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যতদূর সম্ভব দেহ তিনবার দুই হাত বুলাতেন। বুখারী, হাদিস নংঃ ৫০১৭।
দোয়া পড়ে ঘুমানো
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি শয়নের পর আল্লাহর নাম নেয় না তার জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে বঞ্চনা নেমে আসবে। আবু দাউদ, হাদিসঃ ৪৮৫৬।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তারা ডান হাত তার দান গালের নিচে রাখতেন এবং এই দোয়াটি বলতেন, "আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমু-তু ওয়া আহইয়া"।
অর্থঃ হে আল্লাহ আপনার নাম নিয়েই আমি ঘুমোচ্ছি এবং আপনার দয়াতেই আমি পূর্ণ জাগ্রত হবো। বুখারী, হাদিসঃ ৬৩ ২৪।
এছাড়াও ঘুমানোর পূর্বে যেসব দোয়াগুলো পড়া যায় তা হল - "আল্লাহুম্মা আসলামতু নাফসি ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাতু ওয়াজহী ইলাইকা উয়া ফাও ওয়াজতু আমরি এলাইকা ওয়াল জাতু যাহারী ইলাইকা রাগ্বাতা ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা মালজা ''আ মেনকা ওয়ালা মানজা আমিন কা ইল্লাহ এলাকা আমান্তু বিকাতা বিকা । আল্লাজি আনঝালনা ওয়াবি নাবিয়্যি কাল্লাযী আরসালাত।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি নিজেকে তোমাতে সমর্পণ করলাম। তোমার দিকে মুখ ফিরালাম আর কাজ তোমার প্রতি নাস্ত করলাম এবং তোমার প্রতি ভয় ও আগ্রহ নিয়ে তোমার আশ্রয় গ্রহণ করলাম। তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও নাজাতের স্থান নেই। তোমার প্রেরিত কোরআনের প্রতি ঈমান আনলাম এবং তোমার প্রেরিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনলাম। সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
সুরা মুলক পাঠ করা
নবী করিম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাত্রে সূরা মুলক অর্থাৎ তাবারাকাল্লাজি বিইয়াদি হিল মুলক এই সূরা পাঠ করবে এর মাধ্যমে মহান আল্লাহতায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন। তিরমিজি, হাদিসঃ ২৮-৯০।
রাতে ঘুমানোর আগে কোন সূরা পড়তে হয়
ঘুমানোর আগে সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত সূরা কাফিরুন সূরা ইখলাস নাস ও ফালাক পড়ে দুই হাতের তালুতে ফুক দিয়ে সমস্ত শরীর মাসাহা করে তারপর ঘুমানো উচিত। রাসূল সাঃ বলেছেন কেউ যদি রাতে সূরা কাফিরুন অর্থাৎ কুল ইয়া আইয়ুহাল কাফিরুন পাঠ করে তবে সে শিরক থেকে মুক্ত থাকবে। তিরমিজি ও আবু দাউদ, সহীহ তারগিব, হাদিসঃ ৬ কবে দিবি ৬০২।
হযরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু বলেন, রাসূল (সাঃ) প্রতি রাত্রে যখন বিছানায় যেতেন তখন দুই হাত একত্রিত করে তাতে সূরা ইখলাস, ফালাক ও নাস পড়ে ফুক দিতেন। অতঃপর মাথা ও চেহারা থেকে শুরু করে যতদূর সম্ভব দেহ তিনবার দুই হাত বুলাতেন। বুখারী, হাদিস নংঃ ৫০১৭।
নবী করিম হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক রাত্রে সূরা মুলক অর্থাৎ তাবারাকাল্লাজি বিইয়াদি হিল মুলক এই সূরা পাঠ করবে এর মাধ্যমে মহান আল্লাহতায়ালা তাকে কবরের আজাব থেকে রক্ষা করবেন। তিরমিজি, হাদিসঃ ২৮-৯০। ঘুমানোর পূর্বে জিকির করা উচিত
রাতে ঘুমানোর আগে দোয়া
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সালাম যখন ঘুমানোর ইচ্ছা করতেন তখন তারা ডান হাত তার দান গালের নিচে রাখতেন এবং এই দোয়াটি বলতেন, "আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমু-তু ওয়া আহইয়া"।
অর্থঃ হে আল্লাহ আপনার নাম নিয়েই আমি ঘুমোচ্ছি এবং আপনার দয়াতেই আমি পূর্ণ জাগ্রত হবো। বুখারী, হাদিসঃ ৬৩ ২৪।
এছাড়াও ঘুমানোর পূর্বে যেসব দোয়াগুলো পড়া যায় তা হল - "আল্লাহুম্মা আসলামতু নাফসি ইলাইকা ওয়া ওয়াজ্জাতু ওয়াজহী ইলাইকা উয়া ফাও ওয়াজতু আমরি এলাইকা ওয়াল জাতু যাহারী ইলাইকা রাগ্বাতা ওয়া রাহবাতান ইলাইকা লা মালজা ''আ মেনকা ওয়ালা মানজা আমিন কা ইল্লাহ এলাকা আমান্তু বিকাতা বিকা । আল্লাজি আনঝালনা ওয়াবি নাবিয়্যি কাল্লাযী আরসালাত।
অর্থঃ হে আল্লাহ, আমি নিজেকে তোমাতে সমর্পণ করলাম। তোমার দিকে মুখ ফিরালাম আর কাজ তোমার প্রতি নাস্ত করলাম এবং তোমার প্রতি ভয় ও আগ্রহ নিয়ে তোমার আশ্রয় গ্রহণ করলাম। তুমি ছাড়া কোন আশ্রয়স্থল ও নাজাতের স্থান নেই। তোমার প্রেরিত কোরআনের প্রতি ঈমান আনলাম এবং তোমার প্রেরিত রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি ঈমান আনলাম। সহীহ বুখারী ও মুসলিম।
ঘুমানোর আগে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়লে কি হয়
ঘুমানোর পূর্বে ২১ বার বিসমিল্লাহ পড়তে হবে এর কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। আপনি যতবার বিসমিল্লাহ পাঠ করবেন আল্লাহতালা ফেরেশতাদেরকে তার প্রতিটি নিঃশ্বাসের জন্য একটি করে নেক আমল লিখতে বলেন। কারণ ইবাদত একমাত্র মহান আল্লাহতালার জন্য। আপনি যতক্ষণ না ঘুমাবেন ততক্ষণ আল্লাহতালার নাম যতোবার খুশি জিকির করতে পারেন এতে আপনার সওবের পরিমাণ বাড়বে। বিসমিল্লাহ পড়া সতের সাথে আপনি আল্লাহর ৯৯ টি নাম করতে পারেন কারো নিহা অনেক ফজিলত পূর্ণ।
ঘুমানোর আগে জিকির
ঘুমানোর পূর্বে জিকির করা উচিত। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার মেয়ে ও জামাতা ফাতেমা রাদিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু ও হযরত আলী রাযিয়াল্লাহু তা'আলা আনহু কে বলেন, আমি কি তোমাদের এমন কিছু বলে দেব যা তোমাদের জন্য খাদেম অপেক্ষা উত্তম হবে। যখন তোমরা তোমাদের বিছানায় যাবে তখন তোমরা
সুবহানাল্লাহ ৩৩ বার
আলহামদুলিল্লাহ ৩৩ বার
আল্লাহু আকবার ৩৪ বার বলবে তা খাদেম অপেক্ষা ও তোমাদের জন্য উত্তম হবে। বুখারি, হাদিসঃ৩৭০৫।
ঘুমানোর আগে ১00 আয়াত
শেষ কথা
প্রত্যেক ঈমানদার মুসলিম ব্যক্তিকে ঘুমানোর পূর্বে কিছু নির্দিষ্ট কাজ এবং দোয়া পড়ে ঘুমানো উচিত। দোয়া পড়ে ঘুমালে সুন্নাহ আদায় হবে এবং আল্লাহর ইবাদত করা হবে। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক ব্যক্তিকে বললেন, হে অমুক, যখন তুমি বিছানায় ঘুমাতে যাবে তখন নামাজের ন্যায় অজু করবে। তারপর তোমার ডান পাশের ওপরে শুবে এবং উক্ত দোয়া "আল্লাহুম্মা বিসমিকা আমু-তু ওয়া আহইয়া" পড়বে।
তারপর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বললেন, তুমি যদি সেই রাতে মৃত্যুবরণ করো তবে তুমি ইসলামের উপর মৃত্যুবরণ করবে আর যদি তুমি ভোরে উঠো তবে তুমি কল্যাণের সঙ্গে উঠবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url