রচনা - মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব
বাংলাদেশ সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। কিন্তু স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে মাদক একটি বড় সমস্যা। মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব রচনা নিয়ে আমাদের শিক্ষার্থীদের প্রতিযোগিতা করতে হয়। তাই আমি আমাদের শিক্ষার্থীদের জন্যমাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব রচনা লেখার চেষ্টা করেছি।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন। আমাদের যুব সমাজ আজ মাদকের কোড়াল গ্রাসে আসক্ত। আমাদের শিক্ষার্থীদের মাদকের এই কড়াল গ্রাস থেকে বের করতে তাদের জন্য প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। আর এবারের প্রতিযোগিতার বিষয় মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব রচনা ।
পোস্ট সূচিপত্রঃ মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব রচনা
- ভূমিকা
- মাদকদ্রব্য কি
- মাদকাসক্ত কি
- মাদকের উৎস
- মাদকদ্রব্যের প্রকারভেদ
- মাদকাসক্তির বৈশিষ্ট্য
- যেসব মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে
- কখন মাদকদ্রব্য বেশি সেবন করা হয়
- মাদকের ভয়াবহতা
- মাদকাসক্তির কারণ সমূহ
- মাদকদ্রব্য সেবনের ক্ষতিকর দিক সমূহ
- মাদকাসক্তি থেকে উত্তরণের উপায়
- মাদকাসক্ত নিরাময়ে পরিবারের ভূমিকা
- মাদকাসক্তি নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন
- মাদক ও স্মার্ট বাংলাদেশ
- উপসংহার
ভূমিকা
বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্ব আজ যে সব সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে মাদকাসক্তি তার মধ্যে অন্যতম মারাত্মক সমস্যা। বর্তমানে পৃথিবীতে মাদকদ্রব্য ও মাদকাসক্তি হল সবচেয়ে জটিল ও মারাত্মক সমস্যা গুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। যার কারণে বলা হয়ে থাকে মাদকাসক্তি হল যুদ্ধের চেয়েও ভয়ংকর। মাদকাসক্তি আমাদের ব্যক্তি ও সামাজিক জীবনের জন্য একটি ভয়াবহ অভিশাপ। মাদকাসক্তি হলো এক মরণ নেশা। মাদকের নাম শুনলেই আমাদের মনটা যেন চমকে ওঠে।
মানুষ জানে নেশা সর্বনাশা এরপরেও মানুষ এই সর্বনাশা নেশার ফাঁদে আটকে যায়। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার মতে মাদক হল এমন এক বস্তু যা গ্রহণ করলে মানুষের আচরণ ও কার্যকলাপের ভেতরে পরিবর্তন ঘটায়। মাদকের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নির্ভর করে তার বৈশিষ্ট্য ও গঠনের ওপর নির্ভর করে। মাদক সেবন করলে একজন ব্যক্তির রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং একপর্যায়ে তা পরিণত হয় বিষে। ফলে অন্য যেকোন রোগের জন্য ওষুধ সেবন করলেও তার শরীরের জন্য আর কার্যকর হয় না।
আরো পড়ুনঃ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি আসক্তি আজ তরুণ সমাজের প্রধান সমস্যা
বাংলাদেশ মাদকাসক্তের ভয়াল কবলে আচ্ছন্ন যার কারণে দেশের যুবসমাজ ধীরে ধীরে ধ্বংসের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। যত দিন যাচ্ছে মাদকাসক্তির ভয়াবহতা আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের সমাজের জন্য মাদকাসক্তি একটি মরণ ফাঁদ। আর এই মরণ ফাঁদে আটকে যায় আমাদের তরুণ তথা যুবসমাজ। একটি সুন্দর পৃথিবী গড়ার জন্য আমাদের তরুণ ও যুব সমাজকে রক্ষা করা একান্ত কর্তব্য। বাংলাদেশের তরুণ তথা যুবসমাজ আজ মাদক নামের ক্যান্সার দ্বারা আক্রান্ত যার শেষ পরিণতি হল মৃত্যু।
বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করতে না পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়া কখনোই সম্ভব নয়। বাংলাদেশ সরকারের ভীষণ এবং মিশন হল ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা। আর তাই আমাদের স্লোগান হওয়া উচিত মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।
মাদকদ্রব্য কি
যেসব দ্রব্য সেবন করলে বা গ্রহণ করলে মানুষের মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন হয় এবং মানুষের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব পড়ে সেগুলোকেই বলা হয় মাদকদ্রব্য। মাদকদ্রব্য বলতে বোঝায় সেসব দ্রব্য যা প্রয়োগ করলে মানবদেহে সংজ্ঞাবহ এবং মস্তিষ্ক হ্রাস পায় তাকে মাদকদ্রব্য বলা হয়। বর্তমানে বাংলাদেশ সহ বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য রয়েছে।
যেমন - প্রাচীন নেশা দ্রব্য হল মদ, গাঁজা, আফিম, ভাঙ ইত্যাদি। এছাড়াও বর্তমানে আধুনিক সমাজে যেসব মাদকদ্রব্য প্রচলিত রয়েছে তা হল- ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা, মরফিন, মারিজুয়ানা, কোকেন, প্যাথেডিন, এলএসডি, পপি, স্মাক, হাসিস, ক্যানবিস ইত্যাদি। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংখ্যা অনুযায়ী নিকোটিন যুক্ত তামাক দ্রব্য হল সিগারেট, জর্দা, চুরুট, নস্যি ইত্যাদি।
মাদকাসক্ত কি
মাদকাসক্তি হলো মাদক সেবনে আসক্ত হওয়া। মাদক সেবনে অতিরিক্ত আসক্ত হয়ে পড়লে তাকে মাদকাসক্তি বলা হয়। যেসব দ্রব্য সামগ্রী পান করলে বা ব্যবহার করলে নেশা সৃষ্টি হয় তাকে বলা হয় মাদকাসক্ত আর যে মাদক সেবন করে তাকে বলা হয় মাদকাসক্তি। তবে মাদকাসক্তির সংজ্ঞা বিভিন্নভাবে এসেছে যেমন - বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, মাদকাসক্তি বা নেশা এমন শারীরিক বা মানসিক প্রতিক্রিয়া যার মিথস্ক্রিয়া কেবলমাত্র জীবিত মানুষের মধ্যেই সৃষ্টি হয়।
মাদকাসক্তি একজন ব্যক্তির জন্য মারাত্মক শারীরিক ও মানসিক ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া। মাদকাসক্তি হল এমন এক নেশা যার কবল থেকে সহজে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নয়। আর মাদকাসক্তির ফল হল অকাল মৃত্যু। মাদকাসক্তির আকর্ষণ শক্তি এত তীব্র যে, সকল মানুষের পক্ষে সহজ জীবনে ফিরে আসা প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। মাদকাসক্তি হল মানুষের অভ্যাসগত চেতনার উদ্বেগকারী দ্রব্যের ব্যবহার যা ব্যবহারে মানুষের নৈতিক ও মানসিক অবক্ষয়ের দিকে ধাবিত করে এবং সমাজে ক্ষতিকর প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে থাকে।
বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য আইন ও প্রণয়ন হয়। আর এখানে বলা হয় মাদকাসক্তি হল একজন ব্যক্তিকে মানসিক ও শারীরিকভাবে মাদক দ্রব্যের উপর নির্ভরশীল করে তোলে এবং অভ্যাস বলতে মাদকদ্রব্য সেবনকারী ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে। মাদকদ্রব্যের অপব্যবহার থেকে মানুষ মাদকাসক্তি হয়ে পড়ে। যে দ্রব্য গ্রহণের ফলে মানুষের মনে নেতিবাচক প্রভাব আসে এবং সে দ্রব্যের প্রতি মানুষের নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পায় তাকে বলা হয় মাদকাসক্তি। মাদকের ব্যক্তির যখন আগ্রহ ক্রমশ বাড়তে থাকে তখন তাকে বলা হয় মাদকাসক্তি। তাই মাদকের প্রতি নেশাকেই মাদকাসক্তি বলা হয়।
মাদকের উৎস
মাদকদ্রব্য বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মাদক উৎপাদিত হয়। মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মুনাফা লোভী অসাধু ব্যবসায়ী চক্র। অনেক দেশে মাদকের চোরা চালান, বিপনণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ করা হয়। মাদক চোরা চালানোর প্রধান অঞ্চল হিসাবে যেগুলো পরিচিত সেগুলো হল-
গোল্ডেন ক্রিসেন্ট
গোল্ডেন ক্রিসেন্ট এর পরিধি হল ইরান, তুরস্ক, পাকিস্তান ও আফগানিস্তান। তবে পাকিস্তানে সিংহভাগ উৎপন্ন হয়।
গোল্ডেন ওয়েজ
গোল্ডেন ওয়েজ ভারত ও নেপাল সীমান্তে পাওয়া যায়। ভারত ও নেপাল সীমান্তে প্রচুর পরিমাণে হেরোইন,গাঁজা, আফিম, কোকেন ইত্যাদি উৎপন্ন হয়। মাদক উৎপাদনের বড় একটি নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে ব্রাজিল, কলম্বিয়া, ইকুয়েডর ও বলিভিয়ায়। বাংলাদেশের মত উন্নয়নশীল দেশে ও ছড়িয়ে পড়েছে এসব মাদকদ্রব্যের নেটওয়ার্ক।
গোল্ডেন ট্রাঙ্গেল
গোল্ডেন ট্রায়াঙ্গেলের পরিধি হল - বার্মা, মায়ানমার ও লাওস।
মাদকদ্রব্যের প্রকারভেদ
পৃথিবীতে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য রয়েছে তবে এসব মাদকদ্রব্যকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন
প্রাকৃতিক ও
রাসায়নিক
প্রাকৃতিক ও
যেসব মাদকদ্রব্য প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন হয় তাকে বলা হয় প্রাকৃতিক মাদকদ্রব্য। প্রাকৃতিক মাদকদ্রব্য সাধারণত গাছ থেকে উৎপাদন করা হয়। যেমন - গাঁজা, ভাঙ, আফিম, তাড়ি, চরস ইত্যাদি।
রাসায়নিক
রাসায়নিক ক্রিয়া বিক্রিয়ার মাধ্যমে পরীক্ষাগারে যেসব মাদকদ্রব্য উৎপাদন করা হয় তাকে বলা হয় রাসায়নিক মাদকদ্রব্য। প্রাকৃতিক মাদকদ্রব্য থেকে রাসায়নিক মাদকদ্রব্য বেশি ক্ষতিকারক হয় এবং নেশা সৃষ্টি করে থাকে। রাসায়নিক মাদকদ্রব্য গুলো হল হেরোইন, কোকেন, মরফিন, প্যাথেডিন, ইয়াবা, বিভিন্ন প্রকার এলকোহল, সূরা, সঞ্জীবনী, ইত্যাদি। এছাড়াও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংখ্যা অনুযায়ী নিকোটিন যুক্ত তামাক দ্রব্য হল সিগারেট, জর্দা, চুরুট, নস্যি ইত্যাদি।
মাদকাসক্তির বৈশিষ্ট্য
মাদকাসক্তির কিছু বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয় সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো
মাদকাসক্তি ব্যবহার শারীরিক, মানসিক ও নৈতিক অবক্ষয়ের কারণ।
অভ্যাসগত চেতনার উদ্যোগকারী দ্রব্যের ব্যবহার।
যেসব মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে
আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বে যেসব মাদকদ্রব্য প্রচলিত রয়েছে এবং যেগুলো মানুষ গ্রহণ করে থাকে তা হল - বিড়ি, সিগারেট, তামাকজাত দ্রব্য, তাড়ি, হুইস্কি, মদ, হেরোইন, ফেনসিডিল, আফিম, গাঁজা, প্যাথেডিন, ইয়াবা প্রভৃতি। অন্যান্য দ্রব্যের মধ্যে রয়েছে কোকেন, মরফিন, হাসিস, ক্যাফেইন প্রভৃতি।
কখন মাদকদ্রব্য বেশি সেবন করা হয়
পৃথিবীর সূচনা লগ্ন থেকেই মানুষ বিভিন্ন সময়ে মাদকদ্রব্য গ্রহণ করে আসছে কারণ পৃথিবীর শুরু থেকেই মাদকদ্রব্যের ব্যবহার ছিল। কখনো ক্লাব বা হোটেলে, কখনো আনন্দ ফুর্তিতে, কখনো বিয়ে-শাদীতে, আবার কখনো ধর্মীয় অনুষ্ঠানে এবং কখনো কখনো সামাজিক রীতি-নীতি অনুযায়ী মানুষ মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে। মানুষের নেশা শুরু হয় সিগারেট দিয়ে এবং বিভিন্ন বন্ধু-বান্ধবের পাল্লায় পড়ে।
বাংলাদেশের ডেপুটি স্পিকার বলেন, মাদকের প্রবেশ পথ হল ধূমপান। আর মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে আমাদের দেশের তরুণ সমাজ আজ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে। আবার কিছু কিছু লোক জঙ্গিবাদের সাথেও জড়িয়ে পড়েছে। আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাবনার সাথিয়ার এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাদকদ্রব্যের সম্পর্কে তিনি বলেছেন, "আমাদের এই স্মার্ট বাংলাদেশ সাম্প্রদায়িকতা, মাদকাসক্তি ও জঙ্গিবাদের কোন স্থান নাই"।
মাদকের ভয়াবহতা
বাংলাদেশ সহ পুরো বিশ্বব্যাপী মাদকের ব্যবহার এক ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। পুরো বিশ্বব্যাপী মাদকের ব্যবহারের কথা বলে শেষ করা যাবে না। মাদকাসক্তির ফলে আজ পরিবার তথা সমাজ ভেঙ্গে পড়ছে। আর সেই সাথে ভেঙ্গে পড়ছে দেশ তথা পুরো বিশ্ব। ভারত, বার্মা সহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে আমাদের দেশে মাদক প্রবেশ করছে বিশেষ করে সীমান্ত এলাকাগুলোতে বেশি মাদকদ্রব্য উৎপাদন এবং পাচার করা হয়। বাংলাদেশে মাদকদ্রব্যের প্রভাবের ফলে ধ্বংস হচ্ছে দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
ইংল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী ব্লাড স্টোনের তিনি মাদকের ভয়াবহ প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে বলেন- যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ ও মহামারী একত্রে যোগ করলে যে ক্ষতি হয় মাদকদ্রব্য তার চেয়ে বেশি ভয়ংকর। বাংলাদেশের সরকার মাদক অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী মাদকাসক্তি প্রায় ৯০ শতাংশ কিশোর। এদের মধ্যে ৫৮ জন ধূমপান করে এবং ৪৪ ভাগ বিভিন্ন অপরাধ মূলক কর্মকান্ডের সঙ্গে জড়িত।
আরো পড়ুনঃ শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেটের দশটি ১০টি ব্যবহার বিস্তারিত
আর যারা মাদক সেবন করে তাদের বয়সের গড় এখন ১৩ বছরে এসে ঠেকেছে। আক্রান্তদের মধ্যে ৫০ শতাংশের বয়স ২৬ থেকে ৩৭ বছর। মাদকাসক্তের মধ্যে সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয় হলো যারা মাদকাসক্ত তারা প্রায় অর্ধেকের বেশি উচ্চশিক্ষিত। বিশ্বে বর্তমানে প্রায় ১০০ কোটি তামাক সেবির মধ্যে শতকরা ২0 ভাগ লোক নারী। আবার বাংলাদেশের তামাক সেবী হল ৪৩ ভাগ। মাদকের নেশায় যদি কেউ একবার জড়িয়ে পড়ে তাহলে এর কড়াল গ্রাস থেকে বেরিয়ে আসা অনেক কঠিন হয়ে পড়ে।
মাদক সেবীরা হয়ে ওঠে বেপরোয়া। আমাদের দেশে যে কিশোর অপরাধ হয় তার অধিকাংশ হয়ে থাকে মাদক সেবনের কারণে। কিশোরেরা মাদকাসক্ত হয়ে সর্বত্র স্কুল - কলেজ গামী ছাত্র-ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করে, কখনো গুলি বা ছুরি মারে কিংবা সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে থাকে মাদকের কারণে।
মাদকাসক্তির কারণ সমূহ
মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনে একজন মানুষের অনেক কারণ রয়েছে। বাংলাদেশ তথা পুরো বিশ্বে মাদকাসক্তের কারণ সমূহ নিচে আলোচনা করা হলো-
- ধর্মীয় মূল্যবোধের অভাব
- নৈতিক শিক্ষার অভাব
- পিতা-মাতার আদর না পেয়ে অযত্নে বেড়ে ওঠা
- পারিবারিক অশান্তি
- অসৎসঙ্গ
- বেকারত্ব
- আইন - শৃঙ্খলা ও প্রশাসনের অনিশ্চয়তা
- হতাশা ও বন্ধু-বান্ধবের প্ররোচনা
- মাদকের কুফল সম্পর্কে সচেতনতার অভাব
- মাদকদ্রব্য ব্যবসায়ীদের প্ররোচনা
- সামাজিক ও অসচেতনতা
- পাশ্চাত্য জীবনের অন্ধ অনুকরণ
- দেশের বিশেষ রাজনৈতিক ও সামাজিক অবস্থা
- রাজনৈতিক অস্থিরতা
- অনৈতিক কর্মকান্ড
- প্রেমে ব্যর্থতা
- আদর্শ বিচ্যুত হওয়া
- মাদকদ্রব্য পাচারে ট্রানজিস্ট হওয়া
- মাদকের সহজলভ্যতা
- সৌখিনতা ও কৌতুহলবশত প্রভৃতি।
এছাড়াও একজন ব্যক্তি যে সকল কারণে মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে তা হল-
পারিবারিক কলহ
আমাদের দেশ সহ সারা বিশ্বে- কিশোরদের ভুল পথে পরিচালিত করে পারিবারিক কলহ ও পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ভালোবাসা ও সোহার্দের অভাব। একজন কিশোর সুস্থ স্বাভাবিক পরিবেশের অভাবে মাদকের সংস্পর্শে আসে এবং মাদকাসক্ত হয়ে যায়।
কৌতুহল বশত
কৌতূহলবশত অনেক কিশোর - কিশোরী মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে। কারণ মানুষের সবচেয়ে বেশি আগ্রহ হয় নিষিদ্ধ কোন বস্তুর প্রতি। তাই কৌতূহল বসত হয়ে একজন কিশোর মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে।
কুশংসর্গ
একজন মানুষের জীবনে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে তার পারিবারিক জীবন। একজন মানুষ অনেক সময় মাদকাসক্ত বন্ধুর সাথে মিশে নিজের অজান্তেই মাদকদ্রব্য সেবনে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে। আর এজন্যই বলা হয়ে থাকে সৎসঙ্গ সদবাস অসৎসঙ্গ সর্বনাশ।
হতাশা
আমাদের যুব সমাজের মাদকাসক্ত হওয়ার পেছনের অন্যতম প্রধান কারণ হলো হতাশা। আমাদের যুবসমাজ নিজেকে নিয়ে অনেক উচ্চ আশা পোষণ করে কিন্তু সে মোতাবেক কাজ করে না যার কারণে সে তার মনের আশা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়। যার কারণে সে মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে।
মাদকদ্রব্য সেবনের ক্ষতিকর দিক সমূহ
বর্তমান বিশ্বে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় যেমন- ভূমিকম্প, ক্ষরা, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি এবং যুদ্ধ-বিগ্রহের চেয়েও মাদকাসক্তি বেশি ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। যুদ্ধ হলে একটি দেশের যে ক্ষতি হয় তার চেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মাদকাসক্তির জন্য। মার্কে এস গোল্ড মাদকদ্রব্যের বিভিন্ন ক্ষতিকর দিক বর্ণনা করতে গিয়ে বলেন, মাদকদ্রব্য সেবনে যে ক্ষতিগুলো হয় তা হল-
শারীরিক ক্ষতি
মাদকদ্রব্য গ্রহণে মানুষের যে ক্ষতি হয় তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পরিলক্ষিত হয় মানুষের শারীরিক দিক থেকে। মাদক সেবনের ফলে মানুষ ধীরে ধীরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। মাদক সেবনের ফলে মানুষের যে ক্ষতিগুলো হয় তা হলো-
- মুখো মন্ডল ফুলে যাওয়া ও বিকৃত হওয়া।
- মুখমণ্ডল লাল হয়ে যাওয়া
- মুখমন্ডল সহ সারা শরীরে কালশিটে পড়া
- লিভার প্রসারিত হওয়া
- হৃদ যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হওয়া
- স্মৃতি শক্তির কোষ ধ্বংস হওয়া
- ফুসফুস ও মুখ গহব্বরে ক্যান্সার হওয়া
- অপুষ্টিতে আক্রান্ত হওয়া
- হঠাৎ শিউরে ওঠা
- দীর্ঘ সময় ধরে ঠান্ডা লেগে থাকা, ইনোফিলেঞ্জা আক্রান্ত হওয়া
- হজম শক্তি হ্রাস পায় ও খাবারের প্রতি অনীহা সৃষ্টি হয়
- সংক্রামক রোগ বৃদ্ধি পায়
- ব্রংকাইটিস রোগ বৃদ্ধিসহ বুকে নানা সমস্যা দেখা দেয়
- যৌন ও চর্মরোগ বৃদ্ধি পায়
- স্ত্রীর গর্ভ জাত সন্তান বিকলাঙ্গ বা নানা রোগে আক্রান্ত হয়
- নাকের ঝিল্লি ফুলে ওঠে
- হঠাৎ চোখে কম দেখা
- যৌবন শক্তি কমে যায়
- স্মরণ শক্তি কমে যায়
- বুক ও ফুসফুস নষ্ট হয়
- মাদক গ্রহণের ফলে অন্যান্যভাবে ২৫ প্রকারের রোগ সৃষ্টি করা
- ধুম পায়ের জন্য অধুম পায়ের ক্ষতি হওয়া
- ধূমপানের ফলে বিশ্বে প্রতি সেকেন্ডে একজন করে মানুষ মারা যায়
- ১৩ টি সিগারেটে মৃত্যুর ঝুঁকি সাত ৭ গুণ
- ২০টি সিগারেটে ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি ২০ গুণ
- জাতিসংঘের সংস্থা মতে, ধূমপানের ফলে সাড়ে ছয় সেকেন্ডে একজন মানুষ মারা যায়।
মানসিক ক্ষতি
মাদকাসক্তির ফলে একজন ব্যক্তির সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয় মানসিক দিক থেকে। মাদকাসক্তি ব্যক্তির মাদক গ্রহণের ফলে নিজের পরিবারের লোককে চিনতে পারেনা। মাদক সেবনকালে যেসব মানসিক ক্ষতি হয় তা হলো-
- মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায়
- অলসতা বৃদ্ধি পায়
- পরিবারের আপন জনের প্রতি ভালোবাসা কমে যায়
- খাবারের প্রতি অনীহা দেখা দেয়
- অনিদ্রা
- দৃষ্টি ভ্রম হওয়া
- চিত্তবৈকল্য
- অসংলগ্ন কথা বলা
- মাথা ঘোরানো
- অমনোযোগী হওয়া
- মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে এবং হতাশাগ্রস্থ ও উদ্বিগ্ন প্রকাশ করে প্রভৃতি।
অর্থনৈতিক ক্ষতি
মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে গিয়ে একজন মানুষ তার জীবনের সম্পদ ক্ষতি করছে। মানুষ প্রতিনিয়ত কোটি কোটি টাকা নষ্ট করছে এই মাদকের জন্য। এই মাদকের সাথে জড়িত আছে আমাদের সমাজের অনেক শ্রেণী পেশার মানুষ। উচ্চবিত্ত থেকে নিম্নবিত্ত প্রায় সবাই মাদকদ্রব্য সেবন করে। বিশ্ব ব্যাংকের হিসাব মতে, মানুষ তামাক ব্যবহারেই বিশ্বব্যাপী ২00 মিলিয়ন ডলার ক্ষতি করছে। আন্তর্জাতিক বা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মতে, বর্তমানে সিগারেট কিনতে মানুষ যা ব্যয় করে তা যদি স্বাস্থ্য খাতে ব্যয় করা হয় তাহলে মানুষের স্বাস্থ্যগত প্রয়োজনীয়তা পূরণ হয়ে যেত।
আরো পড়ুনঃ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব এই স্বপ্ন সার্থক করতে হলে মাদক থেকে দূরে থাকতে হবে। সুতরাং এটা আমরা সহজে অনুমান করতে পারি যে, আমাদের দেশে মাদকাসক্তির কারণে শুধু যুব সমাজ তাদের নিজেদের জীবন বিপন্ন করছে তা নয় ক্ষতিগত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পুরো পরিবার, সমাজ তথা দেশ তথা বিশ্ব। এখন মানুষ ইনজেকশন এর মাধ্যমে মাদক গ্রহণ করছে যার কারণে সকল রোগের সাথে এইডস ও বাড়ছে।
পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষতি
মাদকাসক্তের কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় পরিবার তথা সমাজ। যে পরিবারের কোন সদস্য মাদক সেবন করে সে পরিবারের লোকের মধ্যে কোন শান্তি থাকে না। পরিবারের লোকেরা মাদক গ্রহণের জন্য প্রয়োজনীয় টাকা-পয়সা দিতে পারেনা যার কারনে পরিবারের মধ্যে সর্বক্ষণ অশান্তি লেগেই থাকে। আর যে ব্যক্তি মাদক সেবন করে সে মাদকের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে চুরি, ডাকাতি সহ নানা অসামাজিক কাজে লিপ্ত হয়ে যায়। পরিবারের একজন সদস্য যদি নেশাগ্রস্ত হয় তাহলে পুরো পরিবারের সদস্যরা অশান্তি ভোগ করে।
মাদকাসক্তের কারণে নারীদের ক্ষতি
- নারীর প্রজনন ক্ষমতা হ্রাস পায়।
- জরায়ুতে বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃষ্টি হয়।
- অনিয়মিত মাসিক।
- যৌন রোগ দেখা দেয়।
- অপরিণত সন্তান জন্মগ্রহণ করে।
- মায়ের গর্ভ থেকে জন্ম নেওয়া সন্তান ও মাদকাসক্ত হয়ে পড়তে পারে।
মাদকাসক্তি থেকে উত্তরণের উপায়
১৯৯০ সালে বাংলাদেশে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন প্রতিষ্ঠিত হয়। আর এই আইন প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে প্রশাসন কাজ করে যাচ্ছে। মাদকাসক্তি থেকে আমাদের যুব সমাজকে তথা আমাদের দেশের মানুষকে মুক্ত করতে হলে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে তা হল-
- জনসচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে।
- সীমান্ত এলাকায় মাদক পাচারে জড়িত অতি দরিদ্রদের বিকল্প কাজের সুযোগ সৃষ্টি করে দিতে হবে।
- মাদকাসক্তদের সেফটি নেটওয়ার্কের আওতায় নিয়ে আসতে হবে।
- মাদক পাচার রোধে আন্তর্জাতিক যোগাযোগ বৃদ্ধি করতে হবে।
- সরকারি - বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও সহ সকল কমিউনিটি নেতাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।
- কেন্দ্রীয় রাসায়নিক পরীক্ষাগার আধুনিকীকরণ করতে হবে।
- সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মাদকবিরোধী সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে।
- মাদক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য পৃথক আদালত গঠন করতে হবে।
- অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য রেশম ও ঝুঁকি ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে।
- শিশু এবং কিশোরদের জন্য খেলাধুলার সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
- স্কুল - কলেজে বিভিন্ন প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে হবে।
- অধিদপ্তরে এন ফোর্স মেন্ট শক্তিশালী করার জন্য বিভাগীয় শহর এবং সিটি কর্পোরেশন সমূহের ন্যায় স্টাইকিং কোর্স তৈরি করতে হবে।
- মাদকাসক্তদের চিকিৎসা প্রদানের জন্য প্রতিটি সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।
মাদকাসক্ত থেকে উত্তরণের জন্য যদি উপরোক্ত উপায়গুলো গ্রহন করা যায় তাহলে আশা করা যায় বাংলাদেশের তরুণ এবং যুব সমাজ সহ সকল বয়সের লোকদের মাদক থেকে দূরে রাখা সম্ভব হবে। তবে মাদক থেকে দূরে রাখতে পরিবারের ভূমিকায় সবচেয়ে বেশি। সবার আগে পরিবারের সদস্যদের সচেতন হতে হবে। আর সবাই যদি সচেতন হয় তাহলে আমরা বলতে পারব মাদককে রুখবো,স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।
মাদকাসক্তি নিরাময়ে পরিবারের ভূমিকা
মাদকাসক্তি নিরময়ে পরিবারের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ কারণ মাদকাসক্ত হওয়ার জন্য বহু পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। কিশোর বয়সে সন্তানেরা কোথায় যাচ্ছে, কাদের সাথে মিশছে,স্বাভাবিক জীবনযাত্রায় ব্যাঘাত ঘটছে কিনা তা নজরদারি করতে হবে পরিবারের সদস্যদেরকেই। সন্তানেরা কোন কারণে হতাশা হচ্ছে কিনা তা খেয়াল করতে হবে।
সন্তানেরা নিয়মিত লেখাপড়া করছে কিনা, মাঠে গিয়ে খেলাধুলা করছে কিনা সবকিছু খেয়াল রাখতে হবে। সন্তানদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করে দিতে হবে তবেই মাদককে রুখতে পারা যাবে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন সার্থক হবে।
মাদকাসক্তি নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদন
বাংলাদেশের মাদকাসক্তি নিয়ে জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে, মাদক নারীদের চেয়ে পুরুষরাই বেশি গ্রহণ করে থাকে। পুরুষদের মধ্যে শতকরা ৮৪ ভাগ পুরুষ মাদক সেবন করে এবং শতকরা ১৬ ভাগ নারী মাদক গ্রহণ করে। মাদকের ব্যবসা সকল শ্রেণী পেশার লোকেরা প্রায় করে থাকে। যেমন- মাদক ব্যবসা শুধু সমাজের বিত্তশালী নয় এখন নারী-পুরুষ এমনকি শিশু কিশোরেরা ও মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত।
জাতিসংঘের এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশের প্রায় সাড়ে তিন লাখ মানুষ মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত রয়েছে। এদের মধ্যে উচ্চশিক্ষিতের হার শতকরা প্রায় ১৫ভাগ। দেশের আরও বেশ কয়েকটি সংস্থার মতে, বাংলাদেশ অবৈধ মাদকদ্রব্য আমদানিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করে হয়ে যাচ্ছে। অন্য এক জরিপে বলা হয়েছে বাংলাদেশে বর্তমানে ৫০ লাখ মানুষ মাদকের সাথে জড়িত।
আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের পর্যটন শিল্প রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
আবার কোন সংস্থার মতে, এর সংখ্যা প্রায় ৬0 লাখ। তবে ৯০ দশকে দশ ১০ লাখেরও কম রেকর্ড করা হয়েছিল। তবে যারা মাদক গ্রহণ করে থাকে তাদের মধ্যে শতকরা ৮০ শতাংশই হলো যুবক এবং এই যুবকের মধ্যে ৪৩ শতাংশ যুবক বেকার। তরুণেরা এখন মদের সাথে গাঁজা, ফেনসিডিল সহ বিভিন্ন প্রকার মাদক সেবন করে থাকে এবং এই মাদকদ্রব্যের পাশাপাশি তরুণেরা এখন ইয়াবার সাথে ও ধীরে ধীরে জড়িয়ে পড়েছে।
মাদক ও স্মার্ট বাংলাদেশ
বর্তমানে মাদক হল সবচেয়ে ভয়ংকর একটি দ্রব্যের নাম। এই মাদকের কড়াল গ্রাস থেকে আমাদের দেশের লোকদের বের করতে না পারলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন হয়তো স্বপ্নই থেকে যাবে। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, একটি সুস্থ ও সমৃদ্ধি জাতি গঠন করতে মাদকাসক্তদের সুচিকিৎসার প্রয়োজন। এজন্য সরকার বিভিন্ন কর্মসূচি ও গ্রহণ করেছেন।
মাদকাসক্তদের চিকিৎসার জন্য সরকার এর মধ্যেই বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি পরামর্শ কেন্দ্রগুলো থেকে প্রশিক্ষণ প্রদান করছে এবং বিভিন্ন সরকারি অনুদান ও প্রদান করা হচ্ছে। সরকারি পর্যায়ে চিকিৎসা সেবা বাড়ানো হয়েছে। ঢাকা কেন্দ্রীয় মাদকাসক্ত নিরাময় কেন্দ্রগুলোতে ২৫০ শয্যা করা হয়েছে। এছাড়াও ঢাকার বাইরে সাত ৭টি বিভাগে ২০০ শয্যা বিশিষ্ট মাদক নিরাময় কেন্দ্র গঠন করার পরিকল্পনা ও সরকার হাতে নিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৮ সালে ইস্তেহারে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি ঘোষণা করেছেন। মাদক অপরাধ দমনে শূন্য সহিংসতা অনুযায়ী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে দেশের সকল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী তথা পুলিশ, বিজিবি, কোস্ট গার্ড সহ দেশের প্রশাসন কাজ করতে বদ্ধপরিকর।
উপসংহার
মাদকাসক্তি শুধু পারিবারিক সমস্যা নয় এটি এখন সামাজিক এবং রাষ্ট্রীয় সমস্যা। এটা এখন ক্যান্সারের মতো সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। আর এর কড়াল গ্রাস থেকে বের হতে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলা একান্ত প্রয়োজন। মাদকাসক্তির হাত থেকে আমাদের সমাজকে বাঁচাতে হলে সকল শ্রেণী পেশার লোকদের এগিয়ে আসতে হবে এবং সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
মাদকের এই ভয়াবহ ক্ষতির হাত থেকে দেশ তথা জাতিকে রক্ষা করতে হলে সকলকে একসাথে কাজ করতে হবে। তবে সম্ভব হবে মাদককে না বলা এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। আমরা সবাই প্রত্যাশা করব আমরা সবাই যেন একসাথে কন্ঠে কন্ঠ মিলিয়ে বলতে পারি- মাদককে রুখবো, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বো।
nice
Very nice
Thank you for better experience ☺️
Are you raha
How many words this composition in bengali
1643
It's so helpful for me 😚👊🏿 because I am joining in a compilation 🤞🏿🤫 I love it
It’s so helpful for me. Thank you
Thanks for this.
That's really helpful for me 😇😇😇😇
Sm
THANK YOU
Hi how are you 😊 ki 😁 to ki Dua ☺️😁☺️ Bye 😄😄 you have a good 😊
Thank
আমার লেখা আপনাদের ভালো লাগলে আমি নিজেকে ধন্য মনে করবো।