লঞ্চ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
ভ্রমণ মানুষের প্রিয় শখ গুলোর মধ্যে একটি অন্যতম শখ। অনেকেই নৌকায় ভ্রমণ করতে
পছন্দ করেন আবার অনেকের শখ হল ট্রেনে ভ্রমণ করা আবার অনেকেই লঞ্চের ভ্রমণ করে
থাকেন। লঞ্চ ভবনের অভিজ্ঞতা রচনা অনেক সময় আমাদের পরীক্ষার খাতায় লিখতে হয় তাই
আমি লঞ্চ ভবনের অভিজ্ঞতা রচনা নিয়ে বিস্তারিত লিখেছি। লঞ্চ ভবনের অভিজ্ঞতা রচনা
যদি তোমরা সঠিকভাবে জানতে চাও তাহলে আমার আজকের আর্টিকেল তোমাদের জন্য।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, তোমাদের যদি পরীক্ষায় লঞ্চ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা রচনা আসে তাহলে তোমরা আনা য়াসে আমার এ রচনাটি লিখতে পারো। কারন আমি মানসম্মতভাবে রচনা লেখার চেষ্টা করি। আমি আশা করি এই রচনা লিখলে তোমরা যথেষ্ট ভালো নাম্বার পাবে। লঞ্চ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রচনা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-
পোস্ট সূচীপত্রঃ লঞ্চ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রচনা
- ভূমিকা
- ভ্রমণের স্থান নির্বাচন
- ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি
- লঞ্চ ভ্রমণের গন্তব্য ও যাত্রাপথ
- পটুয়াখালীর পরিবেশ
- লঞ্চ ভ্রমণের তাৎপর্য
- উপসংহার
ভূমিকা
মানুষ সামাজিক জীব। সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে তাকে অনেক পরিশ্রম করতে হয়।
আর একঘেয়েমি পরিশ্রম করতে করতে মানুষ যেন এক সময় হাপিয়ে ওঠে তাই প্রয়োজন হয়
অবসরের একটু বিনোদনের। আর এই বিনোদন খুঁজতে মানুষ চলে যায় ভ্রমণে। কারণ ভ্রমণ
করতে সবাই পছন্দ করে। আর যদি হয় দূরের ভ্রমন তাহলে তো আর কোন কথাই নেই।
মানুষ চলে যায় ভ্রমণ করতে।
মানুষের ভ্রমণের প্রয়োজন হয় এক ঘেয়েমি দূর করতে এবং নিজের ক্লান্তি দূর করতে
এবং পরবর্তী জীবনের ব্যস্ততার জন্য প্রস্তুতি নিতেই মানুষের প্রয়োজন হয়
ভ্রমণের। মানুষ মনকে কিছুদিনের জন্য বিশ্রাম দিতে চাই। ভ্রমন করতে ইচ্ছে করে
কিন্তু অনেক সময় মানুষ নানা বাধা বিপত্তির কারণে ভ্রমণের যেতে পারে না। আমাদের
সমাজে এমন অনেক মানুষ আছেন যাদের অনেক সাধ আছে কিন্তু সাধ্য নেই।
মানুষ একটু অবসর পেলেই ঘুরতে যায় মামার বাড়ি, খালার বাড়ি, ফুফুর বাড়ি, নানার
বাড়ি। কিন্তু দূরে কোথাও ভ্রমণ আমাদের সকলেরই অনেক দিনের আশা-আকাঙ্ক্ষা। মানুষ
দূরে ভ্রমণ করতে চাই, প্রকৃতির পরিবেশকে উপভোগ করার জন্য, অজানা কে জানার জন্য,
অচেনাকে চেনার জন্য। তেমনি একটি ভ্রমণ হল লঞ্চ ভ্রমণ।
ভ্রমণের স্থান নির্বাচন
ভ্রমণের সুন্দর অভিজ্ঞতা লাভের জন্য মানুষের প্রয়োজন হয় একটি গুরুত্বপূর্ণ ও
যথাযথ স্থান নির্বাচন করা। তবে ভ্রমণের স্থান নির্বাচন করা নির্ভর করে ভ্রমণকারী
মানসিক অবস্থা, আর্থিক স্বচ্ছলতা, শারীরিক সক্ষমতা ও পারিবারিক অবস্থার ওপর।
মানুষ কর্মব্যস্ত জীবন থেকে ছুটি নিয়ে ঘুরতে ভালোবাসে প্রাকৃতিক পরিবেশে। জানতে
চাই সে প্রাকৃতিক পরিবেশের অনেক কিছু।
প্রাকৃতিক পরিবেশ যেমন - পাহাড়, সমুদ্র, নদী এগুলো মানুষের অনেক পছন্দের জায়গা।
তবে পরিবার সাথে নিয়ে ঘুরতে হলে বিশেষ চিন্তা ভাবনা করে তারপর স্থান নির্বাচন
করতে হয়। এইবার ঘুরতে যাওয়ার জন্য আমরা লঞ্চ ভ্রমণ বেছে নিয়েছি। আমার কাছে মনে
হয় সমুদ্রে লঞ্চ ভ্রমণের থেকে আনন্দের আর কিছুই হতে পারে না।
ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি
আমাদের প্রত্যেকেরই কোথাও ভ্রমণের পূর্বে ভ্রমণের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হয়।
গত গ্রীষ্মকালের ভ্রমণ আমার জীবনে অম্লান হয়ে আছে। তবে গ্রীষ্মকালে ভ্রমণের
চাইতে শীতের শেষে ভ্রমণে যাওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। তখন পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়
কিন্তু রেজাল্টের অপেক্ষা যেন শেষ হয় না।
আর অবসর সময় যদি একটু ঘুরতে যাওয়া হয় তাহলে অনেক আনন্দের বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
যেদিন ঘুরতে যাওয়ার কথা থাকে তার আগের দিন যেন শেষ হয় না কিছুতেই। সবকিছু
গুছিয়ে নিয়ে দিন শেষ হওয়ার অপেক্ষা করতে হয়।
লঞ্চ ভ্রমণের গন্তব্য ও যাত্রাপথ
ভ্রমণের কথা মনে আসলেই মন আনন্দ ভরে ওঠে তারপরেও যদি সেটা হয় লঞ্চ ভ্রমণ। এবার
আমাদের লঞ্চ ভ্রমণ পটুয়াখালী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত। আপনি যদি পটুয়াখালী থেকে
সদরঘাট আসতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই পটুয়াখালী এসে লঞ্চের ক্রিকেট সংগ্রহ করতে
হবে। আর আপনি যখন লঞ্চের মধ্যে থাকবেন আর বিশেষ করে ভ্রমণের উদ্দেশ্যে তখন
আনন্দের আপনার মন ভরে উঠবে।
তবে লঞ্চঘাটে আপনি অনেক ছোট বড় লঞ্চ দেখতে পাবেন। আপনার সাধ্য মত লঞ্চ আপনাকে
নির্বাচন করতে হবে। লঞ্চ থেকে আপনি দেখতে পাবেন নদীর পানির ঢেউ। চারিদিকে কেমন থৈ
থৈ করছে। পানির মনমুগ্ধকর ছোট বড় অনেক ঢেউ আপনাকে মুগ্ধ করে তুলবে। পানির কলল
ধনি আর ঢেউ পেরিয়ে এক সময় আপনি গন্তব্যে পৌঁছে যাবেন।
পটুয়াখালীর পরিবেশ
পটুয়াখালী হল সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল। পটুয়াখালী সমুদ্র উপকূলীয় হাওয়াই
এখানে রয়েছে অনেক ছোট বড় নদী। পটুয়াখালীর চারপাশে অনেক ছোট বড় নদীর
কারণে সেখানকার পরিবেশ যেন অন্য সব জেলার থেকে অনেকটাই আলাদা। আর এর আসল কারণ হলো
পটুয়াখালী সমুদ্র উপকূলয় অঞ্চল। সেখানে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে নারকেল গাছ এবং
এখানে অধিক পরিমাণে নারকেল গাছ থাকার কারণে এখান থেকে প্রচুর পরিমাণে নারকেল
পাওয়া যায়।
আপনি যদি পটুয়াখালীতে যান তাহলে সেখানে নারকেলের সাথে সাথে প্রচুর সামুদ্রিক মাছ পাবেন। কারণ মাছের একটি বড় চালান আসে সমুদ্র থেকেই। আপনি পটুয়াখালী থেকে সামুদ্রিক মাছ কিনতে পারবেন। এখানে মাছের অনেক আমদানি থাকার কারণে আপনি অতি অল্প দামে বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ সহ ইলিশ মাছ কিনতে পারবেন। তবে মাছ কেনার আগে আপনাকে অবশ্যই সংরক্ষণের পদ্ধতিটা অনুসরণ করতে হবে।
লঞ্চ ভ্রমণের তাৎপর্য
লঞ্চ ভ্রমণের তাৎপর্য অনেক গভীর। এই ভ্রমণের গল্প এবং তাৎপর্য যেন শেষ হওয়ার মত
নয়। রবীন্দ্রনাথের সেই ছোট গল্পের মতই-" শেষ হইয়াও যেন হইল না শেষ"। আপনি যখন
ভ্রমণের উদ্দেশ্যে লঞ্চে উঠবেন তখন চার পাশের প্রাকৃতিক মনোরম পরিবেশে আপনাকে
আনন্দে বিভোর করে তুলবে। আপনি যখন লঞ্চ ভ্রমণে থাকবেন তখন আপনাকে সমুদ্রের
নির্মল পরিবেশ আপনার সকল দুঃখ ভুলিয়ে দেবে। সমুদ্রের পানির কুলুকুল ধনি আর ছলাৎ
ছলাৎ ঢেউ আপনাকে আনন্দে বিভোর করে তুলবে।
এই লঞ্চ ভ্রমণের ফলে একদিকে যেমন আপনার জীবনের সকল ক্লান্তি দূর হবে তেমনি
মন হয়ে উঠবে সতেজ ও সুন্দর। অন্যদিকে আপনার শরীর ও সকল ক্লান্তি কাটিয়ে সতেজতাই
পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। প্রাচীন যুগ থেকে এখন পর্যন্ত চিকিৎসা শাস্ত্রে বিভিন্ন
ধরনের রোগীদের জন্য ভ্রমণের কথা বলা হয়েছে। বিশেষ করে মনোরোগীদের হলে তো কোন
কথাই নেই।
মানুষ যখন প্রাকৃতিক পরিবেশে ভ্রমণ করতে যায় তখন সে খুঁজে পায় তার বাস্তবতাকে।
দেখতে পায় তার চরম বাস্তব অবস্থা কে। এছাড়াও ভ্রমণ মানুষকে চিন্তাশীল করতে
শেখায়। সেই সাথে তার মনকে পরিপূর্ণ করে তুলতে সাহায্য করে। ভ্রমণ মানুষকে
প্রতিকূল পরিবেশের সাথে নিজেকে খাপ খাওয়াতে শেখায়।
আমরা যদি প্রাচীনকালের কোন রাজার উদাহরণ দিতে চাই তাহলে দেখতে পাব প্রাচীনকালে
কোন রাজা যদি রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রতিকূল পরিবেশের সম্মুখীন হতেন তাহলে
তারা মৃগয়াই শিকারের উদ্দেশ্যে ভ্রমণে চলে যেতেন। কারন এই মৃগয়াই স্বীকার
অপেক্ষা ভ্রমণ বেশি হত।
উপসংহার
পরিশেষে আমরা এ কথা বলতে পারি যে ভ্রমণ তথা লঞ্চ ভ্রমনের অভিজ্ঞতা বলে শেষ করার
মত নয়। আমরা পটুয়াখালীতে বেশ কয়েকদিন ছিলাম। প্রতিটা দিন যেন এক একটি নতুন
অভিজ্ঞতা অর্জন করেছি। ছোট বড় লঞ্চে ওঠা থেকে শুরু করে দূরে বা কাছে কোন ঘাটে
গিয়ে নামা এ যেন অফুরন্ত আনন্দ উপভোগ করা। পটুয়াখালীতে আপনি সামুদ্রিক মাছের
রেসিপি পাবেন যা আপনার ভ্রমণের আনন্দকে আরও অনেক গুণ বাড়িয়ে দিবে।
প্রত্যেকটি মানুষের উচিত একটু সুযোগ পেলেই ভ্রমণে বের হওয়া। তবে তাকে অবশ্যই তার
সাধ্যমত স্থান নির্বাচন করতে হবে। কারন আমরা জানি অনেক মানুষের সাধ থাকে কিন্তু
সে পরিমাণ সাধ্য থাকে না।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url