দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
বর্তমান যুগ বিজ্ঞানের যুগ। আর এই বিজ্ঞানের যুগে আমাদের প্রায় প্রতিটি পরীক্ষাতেই দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা লিখতে হয়। তাই আমি দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা লেখার চেষ্টা করেছি। তোমরা যারা পরীক্ষায় ভালো নম্বর পেতে চাও আমার আজকের এই দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা তাদের জন্য।
আমি আমার এই রচনার মাধ্যমে বিজ্ঞানের সকল দিক তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। আশা করি এই রচনা তোমরা পরীক্ষায় লিখলে বেশ ভালো নম্বর পাবে। তাই দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত লেখা হলো-
পোস্ট সূচীপত্রঃ দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান রচনা
- ভূমিকা
- বিজ্ঞান কি
- বিজ্ঞানের অগ্র যাত্রা
- বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
- দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান
- বিজ্ঞানের কুফল
- উপসংহার
ভূমিকা
প্রাচীনকালের মানুষ জীবন যাপন করতো বর্বর প্রকৃতির। তারা ছিল অরণ্যচারী এবং
গুহাতে বসবাস করত। কাল ক্রমে মানুষ হিংস প্রশুর হাত থেকে বাঁচতে এবং বিভিন্ন
প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রতিরোধ করতে তাদের জ্ঞানের পরিধি বিস্তার করে এবং সভ্যতার
জন্ম দেয়। পরবর্তীতে উদ্ভাসিত হয় জ্ঞান বিজ্ঞান ও মানব চেতনার কল্যাণের।
বিভিন্ন কুসংস্কার থেকে মুক্তি দিয়েছে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা। আগের দিনের মানুষ
বসে থাকতো তাদের ভাগ্যের উপর নির্ভর করে।
বিজ্ঞান কি
বি শব্দের অর্থ হল বিশেষ এবং জ্ঞান শব্দের অর্থ হল সম্যক ধারণা। সুতরাং বিজ্ঞান
শব্দের অর্থ হল বিশেষ জ্ঞান বা বিশেষ ধারণা। কিন্তু বর্তমানে বিজ্ঞান কে আর বিশেষ
হিসাবে ধরা যায় না কারণ এখন বিজ্ঞান মানে সার্বিক জ্ঞান। আবার বলা যায় বিজ্ঞান
হলো বিমূর্ত জ্ঞান। বিভিন্ন প্রযুক্তির মাধ্যমে বিজ্ঞানের প্রসার ও প্রচার ঘটে
থাকে। বিজ্ঞান হলো বর্তমান সভ্যতার উন্নতির চাবিকাঠি।
বিজ্ঞানের অগ্র যাত্রা
বিজ্ঞানের জয়যাত্রা সেদিন থেকে শুরু হয়েছে যেদিন থেকে মানুষ গণনার কাজে শূন্য ০
আবিষ্কার করেছে, আগুনের ব্যবহার শিখেছে এবং চাকা আবিষ্কার করেছে। বিভিন্ন গণনার
কাজে ষাট ৬০ ভিত্তিক সংখ্যা পদ্ধতি আবিষ্কার করে সুমেরীয় ও ব্যাবিলনীয় সভ্যতা।
মিশরীয়দের সবচেয়ে আশ্চর্যজনক আবিষ্কার হল পিরামিড এবং হায়ারোগ্লোবিক্স সংখ্যা
পদ্ধতি। রোমানরা তাদের রোমান সংখ্যা আবিষ্কার করে গ্রিক সভ্যতার পতনের পরে।
আরো পড়ুনঃ কৃষি উদ্যোক্তা রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
মানুষ সময়ের প্রয়োজনে আবিষ্কার করে বাষ্প শক্তি। আর এর পরে আবিষ্কৃত হয়
বিদ্যুৎ শক্তি। আর এইসব আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে মানুষের বুদ্ধি তথা বিজ্ঞানের
অবদানের কারণে। বর্তমানে মানুষ আবিষ্কার করেছে পারমাণবিক শক্তি আর এ সকল কিছুই
হয়েছে বিজ্ঞানের জয়যাত্রার কারণে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
দৈনন্দিন জীবনে আমরা যদি আমাদের কাজকর্ম গুলোকে কয়েকটি ভাগে ভাগ করি তাহলে আমরা
দেখতে পাব প্রতিটা কাজে কিভাবে বিজ্ঞানকে গ্রহণ করেছি। আমরা প্রতিটা মুহূর্তে,
প্রতিদিন বিজ্ঞান কে গ্রহণ করেছি সেটা জেনে হোক বা না জেনে হোক। প্রতিদিনের
গৃহকর্ম থেকে শুরু করে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প,
স্বাস্থ্য, বিনোদন, সাহিত্য জীবন ও জীবিকা নির্বাহ করতে আমরা বিজ্ঞান ব্যবহার
করে থাকি। নিচে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-
বর্তমান যুগ আর পুথি পড়ার যুগ নয় কারণ এখন পুথি পড়ার দিন শেষ হয়েছে।
বিজ্ঞানের অবদানে এসেছে ছাপাখানা। আর ছাপাখানার অবদান হলো আমাদের আজকের এই বই।
আমরা অনেক দুষ্পাপ্য বইয়ের পৃষ্ঠা এখন জেরেক্স এর মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারছি।
মানুষ গণনার কাজে ব্যবহার করছে কম্পিউটার, ক্যালকুলেটর, ইন্টারনেট দ্বারা খবর
পাচ্ছে পৃথিবীর কোন লাইব্রেরীর।
আর ইন্টারনেটকে ব্যবহার করে বিশ্বের যে কোন লাইব্রেরী থেকে বই পড়াকে বলা হয়
ই-বুক। এখন আর শিক্ষার্থীদের হারিকেনের আলোয় কার্বন ডাই-অক্সাইড গ্রহণ করে
লেখাপড়া করতে হয় না তারা এখন বৈদ্যুতিক আলোতে লেখাপড়া করে। বই, খাতা, কলম
সবকিছুই হলো বিজ্ঞানের অনন্য অবদান।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রেও ব্যাপক উন্নতি সাধিত করেছে।
বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে মানুষ এখন ঘরে বসে অভিজ্ঞ ডাক্তারের সেবা নিতে পারছে যাকে
বলা হয় টেলিমেডিসিন। বিভিন্ন দুরারোগ্য ও প্রতিষেধক টিকা ও আবিষ্কার হয়েছে
বিজ্ঞানের কল্যাণে যার ফলে মৃত্যু হার অনেক অংশ কমানো সম্ভব হয়েছে। বৈজ্ঞানিকদের
গবেষণার সাহায্যে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক যেমন অ্যারিস্টোমাইসিন,
এসিট্রোমাইসিন, অরিওমাইসিন, ক্লোরোমাইসিন, স্টেপট্রোমাইসিন, পেনিসিলিন প্রভৃতি
প্রস্তুত করা হচ্ছে।
এছাড়াও বিভিন্ন প্রাণীদের কামড়ে বিশেষ করে পাগলা কুকুরের কামড়ে যে রোগ হয়
তাকে বলা হয় জলাতঙ্ক। আর এই জলাতঙ্ক রোগের প্রতিশেধক হল হাইড্রো ফোবিনাম, সাপের
বিষ থেকে অ্যান্টি ভেনোম সিরাম, লেক্সিস ইত্যাদি। এছাড়াও বিভিন্ন ভাইরাস ও
ব্যাকটেরিয়া জনিত রোগের প্রতিষেধক আবিষ্কার করা সম্ভব হচ্ছে। বিশেষ করে
দুরারোগ্য ব্যাধি যেমন-
আরো পড়ুনঃ লঞ্চ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
টাইফয়েড, কলেরা, পোলিও, টিটেনাস, ডিপথেরিয়া, হেপাটাইটিস বি ওসি প্রভৃতি
ভ্যাকসিন আবিষ্কারের ফলে মানুষের জীবন হয়ে উঠেছে অনেকটাই রোগ প্রতিরোধক।
ক্যান্সার রোগের চিকিৎসায় ক্রায়ো সার্জারি করা হচ্ছে যা বিজ্ঞানের এক অনন্য
অবদান। ক্রায়ো সার্জারি হল অতি শীতল তাপমাত্রার একটি চিকিৎসা পদ্ধতি যা সম্পূর্ণ
রক্তপাতহীন একটি অপারেশন।
শিল্প ক্ষেত্র ও বিজ্ঞান নিয়ে এসেছে ব্যাপক পরিবর্তন। মানুষ বিজ্ঞান চালিত
বিভিন্ন যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে শিল্প ক্ষেত্রে নিয়ে এসেছে উন্নতি, শিল্প,
সংস্থা, ফ্যাক্টরি, কলকারখানা সহ সকল ক্ষেত্রে বিজ্ঞান তার অবদান রেখেছে।
আবিষ্কার করেছে কম্পিউটার, রোবট এবং এর মাধ্যমে হয়েছে শিল্প ক্ষেত্রে অতি দ্রুত
কাজ করার ক্ষমতা। যার কারণে শিল্প ক্ষেত্রে হয়েছে অনেক উন্নতি।
গৃহ কাজে বিজ্ঞান
বিজ্ঞান গৃহ কাজের ক্ষেত্রেও এখন ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রাচীনকাল থেকে শুরু
করে প্রায় বিংশ শতাব্দি পর্যন্ত মেয়েদের ঘর ঝাড়ু দিতে হতো, পাটায় মশলা বাটতে
হতো, কাপড় কাচতে হতো, উনুনে খড়ি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রান্না করতে হতো। কিন্তু
এখন বিজ্ঞানের অবদানে এসব কাজ হয়ে উঠেছে সহজ। কাপড় ধুতে আর পুকুরে যেতে হয় না,
ওয়াশিং মেশিন দ্বারা কাপড় পরিষ্কার করা হয়, গ্যাসের চুলায় রান্না করা হয়।
যার কারণে আর ধোয়ার কার্বন-ডাই-অক্সাইড তৈরি হয় না। আর এই সবকিছুই সম্ভব হয়েছে
বিজ্ঞানের অবদানের কারণে।
কৃষি ক্ষেত্রে বিজ্ঞান
বাংলাদেশ কৃষি প্রধান দেশ। আর এ দেশের শতকরা ৮০ভাগ লোক কৃষিকাজ করে তাদের জীবিকা
নির্বাহ করে। তাই কৃষি ক্ষেত্র বিজ্ঞানের যথেষ্ট অবদান রয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানের
অবদানে কৃষি ক্ষেত্রে সবুজের বিপ্লব ঘটেছে। কৃষিবিজ্ঞানকে ব্যবহার করে আজ উচ্চ
ফলনশীল বীজ উৎপাদন করা সম্ভব হচ্ছে যার ফলে কৃষকেরা ফলাতে পারছে অধিক পরিমাণে
ফসল। আমাদের দেশে ১৬ কোটি মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দিতে প্রয়োজন ছিল কৃষিতে সবুজ
বিপ্লবের।
আমাদের দেশে আগে খাদ্যের অনেক অভাব ছিল কিন্তু বর্তমানে তা অনেকাংশে কমে গেছে।
আগে যখন এক বিঘা জমিতে ধান ফলতো তিন থেকে পাঁচ মন আর এখন বিজ্ঞানের অবদানের কারণে
সেই একই জমিতে এক বিঘা জমিতে ধান ফলে প্রায় ২০ মন বা তার বেশি। বিজ্ঞানের অবদানে
জমিতে বিভিন্ন ক্ষতিকারক কীটপতঙ্গ, রোগ জীবাণু সবকিছুই দমন করা সম্ভব হচ্ছে।
আরো পড়ুনঃ মাদকাসক্তি ও এর প্রতিকার রচনা সম্পর্কে জেনে নিন
জমি চাষ, বীজ বপন, পানি সেচ, ফসল কাটা এবং মাড়াই করা সর্বক্ষেত্রে বিজ্ঞানের
অবদান রয়েছে। বিজ্ঞানের অবদানে বেশি ফসল উৎপাদিত হচ্ছে বলে মানুষের ক্ষুধা মিটছে
এবং মানুষের জীবন যাপন হয়ে উঠেছে সুন্দর ও সাবলীল।
খাদ্য
আমাদের পুষ্টিকর খাদ্য সম্পর্কে একটি ধারণা সৃষ্টি হয়েছে পুষ্টিবিজ্ঞানের
প্রভাবে। প্রেসার কুকারে মানুষ খাদ্য কিভাবে সিদ্ধ করছে তাও জানতে পারে বিজ্ঞানের
অবদানের কারণে। প্রেসার কুকারে খাদ্য তাড়াতাড়ি সিদ্ধ হয় কারণ খাদ্য
সেদ্ধ করতে শুধু তাপ নয় চাপ ও কাজে লাগে আমরা তা জানতে পারি বিজ্ঞানের কল্যাণে।
বিজ্ঞানে কল্যাণে আমরা জানতে পারি কিভাবে খাদ্যের পুষ্টিগুণ সঠিক রেখে রান্না করা
যায়, কিভাবে পানি বিশুদ্ধ করা যায়, কিভাবে ফ্রিজে খাদ্য সংরক্ষণ করা যায়
বিজ্ঞানের অবদানে আমরা সবকিছু জানতে পারি।
প্রযুক্তিবিদ্যায় বিজ্ঞান
আমাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি সাধিত হয়েছে প্রযুক্তিগত উন্নতির কারণে।
ফেসবুক, ই-মেইল, ম্যাসেঞ্জার, হোয়াট অ্যাপস, ইন্সটাগ্রাম সহ প্রভৃতি প্রযুক্তি
ব্যবহার করে মানুষ যে কোন সংবাদ মুহূর্তের মধ্যে অন্যের কাছে পৌঁছে দিতে পারছে।
মোবাইল ফোনের অবদানের কারণে পুরো বিশ্ব চলে এসেছে আজ হাতের মুঠোয়। আগের দিনের
মানুষ কোন খবর দিতে দিনের পর দিন এবং মাসের পর মাস সময় লেগে যেতো কিন্তু এখন
মানুষ কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে সকল খবর দিতে পারছে শুধুমাত্র বিজ্ঞানের অবদানের
জন্য।
সংবাদ মাধ্যম
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অবদানের কারণে মানুষ ঘরে বসে ইন্টারনেটের সাহায্যে পৃথিবীর
সকল সংবাদ পেয়ে যাচ্ছে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে। কম্পিউটার, টিভি ও মোবাইল ছাড়া
এখনকার মানুষের জীবন যেন অচল হয়ে উঠেছে। মানুষ প্রযুক্তি ছাড়া আর কোন কিছুই
পরিকল্পনা করতে পারে না।
অবসর বিনোদনে বিজ্ঞান
অবসর বিনোদনে এবং মানুষের কর্মজীবনের ক্লান্তি দূর করতে বিজ্ঞান অশেষ ভূমিকা পালন
করে থাকে। মানুষ বিনোদনের মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে কম্পিউটার, টিভি, মোবাইল,
সিনেমা, বিভিন্ন গেমস খেলে মানুষ অবসর সময় সহজেই অতিবাহিত করতে সক্ষম হচ্ছে।
যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিজ্ঞান
বিজ্ঞানের অগ্রগতির ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়েছে। যার কারণে
এখন দূর হয়েছে অনেক কাছে। আগে যখন মানুষের কোথাও যেতে সময় লাগতো কয়েক ঘণ্টা
এখন সেই জায়গাতে যেতে সময় লাগে মাত্র কয়েক মিনিট। বিভিন্ন প্রকার গাড়ি,
মোটরসাইকেল, সাইকেল, নৌকা, বিমান আমাদের কর্মক্ষেত্রে পৌঁছে দেয় খুব সহজে এবং
আমাদের জীবনকে করে তুলেছে কর্মমুখর। বিজ্ঞানের অবদানের কারণে আজ মানুষ পৃথিবীর
সীমা ছাড়িয়ে অসীম আকাশে পাড়ি দিতে ও সক্ষম হয়েছে।
দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞানের অবদান
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে বিজ্ঞান ওতপ্রোতভাবে জড়িত। আমাদের প্রত্যহিক জীবনে
এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হলো এই বিজ্ঞান। সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে শুরু করে আবার
ঘুমাতে যাওয়ার পূর্ব পর্যন্ত আমরা সকল কাজেই ব্যবহার করে থাকি এই বিজ্ঞান।
আমাদের প্রতিদিনের জীবন থেকে বিজ্ঞানের অস্তিত্বকে এড়িয়ে যাওয়ার কোন অবকাশ
নেই। আমাদের প্রতিদিন ভরে ঘুম ভাঙ্গে ঘড়ি এলার্ম শুনে আর এই ঘড়ির এলার্ম ও
বিজ্ঞানের অবদানের কারণেই হয়েছে।
আমরা বিজ্ঞানের অবদানের কারণেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের যে কোন খবর মুহূর্তের মধ্যেই পেয়ে যায়। প্রত্যহিক জীবন চর্চা, অফিস, আদালত, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, কৃষি সকল ক্ষেতে রয়েছে বিজ্ঞানের অবদান। আমরা প্রতিদিনের ব্যবহার্য কাজে বিজ্ঞানের সাহায্য ব্যবহার করি। যেমন - টিভি, ফ্রিজ, রান্নার জিনিস পত্র, বাসন, ঔষধ এবং যাতায়াতের কাজে যেসব গাড়ি ব্যবহার করি তার সবই বিজ্ঞানের অবদান।
বিজ্ঞানের এই অবদানের কারণে আজ আমরা কাজ করি রোবট দিয়ে। ঘরে বসে অফিস করি, দেশে
বিদেশে মানুষের সাথে ঘরে বসে কথা বলি, তাদের ছবি দেখি, ঘরে বসে ডাক্তারে সেবা
গ্রহণ করি টেলি মেডিসিনের মাধ্যমে, এসি, ওভেন প্রভৃতির উপস্থিতিতে আমাদের
প্রত্যেকটা ঘর যেন এক একটি ছোটখাটো বিজ্ঞান গবেষণাগার। কম্পিউটার, ইন্টারনেট,
ইমেইল প্রভৃতি বিজ্ঞানের অবদান। আর এই বিজ্ঞানের অবদানের কারণেই আমাদের জীবন হয়ে
উঠেছে সাবলীল ও সুন্দর।
বিজ্ঞানের কুফল
আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি কাজেই আমরা বিজ্ঞানের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছি।
মানুষের জীবন এখন বিজ্ঞান ছাড়া যেন অর্থহীন হয়ে পড়েছে। জীবনে বিজ্ঞানকে কাজে
লাগিয়ে মানুষ যতটা উপকৃত হয়েছে ঠিক ততটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। মানুষ বিনোদনের
মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করেছে কম্পিউটার, মোবাইল, বিভিন্ন গেমস ইত্যাদি। যার ফলে
আমাদের প্রাচীন সংস্কৃতি হয়ে যাচ্ছে বিলুপ্ত আর শিশুরা হয়ে যাচ্ছে ঘরমুখো।
আগের দিনের শিশুদের মত এখনকার শিশুরা আর বাইরে খেলতে যায় না যার কারণে তাদের সম্মুখীন হতে হয় অনেক সমস্যার। তাদের চোখের ক্ষতি হচ্ছে, মোবাইলের ফলে মানুষের নৈতিক অবক্ষয় হয়েছে, মিথ্যাচার বেড়ে গেছে। মানুষ আগে সামাজিক সম্প্রীতির মাধ্যমে জীবন যাপন করতো কিন্তু এখন আর মানুষ এগুলো করে না, মানুষ সময় কাটায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
মানুষকে বিজ্ঞান দিয়েছে বেগ আর কেড়ে নিয়েছে তাদের আবেগ। বিজ্ঞানের অগ্রগতির
ফলে মানুষ তৈরি করেছে বিভিন্ন মরন অস্ত্র। কেড়ে নিয়েছে হাজার হাজার তাজা প্রাণ।
এর পরেও বিজ্ঞানের অবদান কে আমরা অস্বীকার করতে পারি না।
উপসংহার
পরিশেষে আমরা একথা বলতে পারি যে, আমাদের জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের
অবদানকে আমরা অস্বীকার করতে পারি না। বিজ্ঞানের উন্নতির পাশাপাশি কুসংস্কার
আমাদের প্রত্যহিক জীবনকে করে তুলেছে বিষন্ন। তাই আমাদের উচিত বিজ্ঞানের পাশাপাশি
মানুষের মূল্যবোধকে জাগ্রত করা। অতিরিক্ত যন্ত্রের ব্যবহার মানুষকে করে দিচ্ছে
যান্ত্রিক। মানুষের বিবেক বুদ্ধিমত্তা যেন আজ হারিয়ে গেছে। বিজ্ঞানের অগ্রগতির
ফলে আমরা পুরো পৃথিবী গড়তে পারব একটি সুন্দর ও স্বপ্নের পৃথিবী হিসেবে।
প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আমি আশা করি আমার এই রচনা তোমাদের অনেক উপকারে আসবে।
আর যদি এই রচনা তোমাদের এতটুকু ও উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই বন্ধুদের মাঝে শেয়ার
করতে ভুলবেন না। আর এই রচনা মুখস্থ করলে তোমরা আর যে রচনা লিখতে পারবে তা হল-
বিজ্ঞানের জয়যাত্রা
প্রতিদিনের জীবনে বিজ্ঞান
আধুনিক জীবনে বিজ্ঞান
বিজ্ঞান ও আমাদের দৈনন্দিন জীবন
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url