জাদুঘর অনুচ্ছেদ - মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন




জাদুঘর অনুচ্ছেদ লিখতে আসে আবার অনেক সময় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ ও
লিখতে আসে তাই আমি তোমাদের জন্য  জাদুঘর অনুচ্ছেদ  এবং
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ লেখার চেষ্টা করেছি।তোমরা যারা
পরীক্ষায়  জাদুঘর অনুচ্ছেদ - মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ লিখবে আমার
পোস্টটি তাদের জন্য।



Image


জাদুঘর অনুচ্ছেদ - মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ সম্পর্কে আমি বিস্তারিত লিখেছি
আমি আশা করি আমার এই অনুচ্ছেদ তোমরা পড়লে পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাবে।
নিচে জাদুঘর অনুচ্ছেদ - মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ সম্পর্কে বিস্তারিত
লেখা হলো-



পোস্ট সূচিপত্রঃ জাদুঘর অনুচ্ছেদ - মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ






 জাদুঘর অনুচ্ছেদ



যেখানে ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতি কোন আশ্চর্যনিত বস্তু সংগ্রহ করে রাখা হয় তাকে
জাদুঘর বলা হয়। জাদুঘরকে আবার সংগ্রহশালা বলা হয়ে থাকে। জাদুঘর একটি দেশের
ঐতিহ্যের ধারক ও বাহক হিসাবে কাজ করে থাকে। জাদুঘর হল বস্তুগত নিদর্শন। জাদুঘরে
সব সংগৃহীত হয় বিভিন্ন শিল্পজাত, পুরা তত্ত্ব ইত্যাদি দ্রব্য সামগ্রী সংগ্রহ করে
রাখা হয়। পৃথিবীর সব দেশেই তার নিজস্ব সংস্কৃতি ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে। জাদুঘরে
সেইসব জিনিস সংগৃহীত হয় যেসব জিনিস মানুষের সংস্কৃতি ঐতিহ্য ও জীবন সংগ্রামকে
মনে করিয়ে দেয়।



এই সকল বস্ত্র ডিসপ্লে কর কেসের মধ্যে রাখা হয় এবং এগুলো স্থায়ী বা
অস্থায়ীভাবে জনসাধারণের সামনে প্রদর্শন করা হয়। যদিও বিভিন্ন গ্রাম, মফস্বল ও
ছোট শহরে কিছু জাদুঘর দেখা যায় তবুও বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত
হয় দেশের প্রধান শহর গুলিতে। এই বিশ্বে রয়েছে বিভিন্ন প্রকৃতির জাদুঘর এর মধ্যে
জাতিতাত্বিক,তাত্ত্বিক বিজ্ঞান ও শিল্প জাদুঘর। ১৯৯৬ খ্রিস্টাব্দে এশিয়াটিক
সোসাইটির অভ্যন্তরে ভারত উপমহাদেশের জাদুঘরে সূচনা হয়।



আরো পড়ুনঃ মাদককে রুখবো, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব রচনা জেনে নিন



দেশ বিভাগের আগে অর্থাৎ ১৮১৪ সালে এই উপমহাদেশের প্রথম জাদুঘর স্থাপিত হয় ভারতের
কলকাতায়। ১৯১০ সালে বাংলাদেশের প্রথম জাদুঘর বরেন্দ্র জাদুঘর রাজশাহীতে
প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১৩ সালে ঢাকায় জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর
প্রতিষ্ঠিত হয় ১৯৮৩ সালে। এই পৃথিবীতে এমন অনেক জাদুঘর রয়েছে যে জাদুঘর গুলো
তাদের ঐতিহ্যের কারণে প্রসিদ্ধ হয়ে আছে।



উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় ফ্রান্সের লুভর মিউজিয়াম। এই লুভর মিউজিয়াম নির্মিত হয়
১২00 খ্রিস্টাব্দে এখানে রয়েছে প্রাচ্য দেশীয়, মিশরীয়,  গ্রিক ও রোমান
সভ্যতার নিদর্শন। ফ্রান্সের লুভর  মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে লিওনান্দো দা
ভিঞ্চির বিখ্যাত "মোনালিসা"।



বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় জাদুঘর ঢাকার শাহবাগে অবস্থিত। এই জাদুঘর বাংলাদেশ জাতীয়
জাদুঘর নামে পরিচিত। বাংলাদেশের সব ধরনের পুরাকীর্তি বিশেষ করে অতিত থেকে এখন
পর্যন্ত যত ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় রয়েছে সব কিছুই এই জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
জাদুঘর হল এমন একটি স্থাপনা যেখান থেকে আমরা অতীতের সহ বর্তমানের সকল জ্ঞান লাভ
করতে পারি।



আরো পড়ুনঃ
জাতীয় শোক দিবস রচনা সম্পর্কে জেনে নিন



বর্তমানের সঙ্গে অতীতের যোগসূত্র স্থাপনে জাদুঘর অন্যতম। আমরা বিশ্বকোষ বাএন
সাইক্লোপিডিয়া থেকে  যেমন বিশ্বের খবর পেয়ে থাকি ঠিক তেমনি জাদুঘর
পরিদর্শন করলেও আমরা অতীতের সকল জ্ঞান লাভ করতে পারি। সকল জাদুঘর সমূহ পরিদর্শনের
ব্যবস্থা রয়েছে। প্রত্যেকটি দেশের জাদুঘরের সমৃদ্ধি নির্ভর করে সেই দেশের
সমৃদ্ধির উপর। কোন জাতি যদি তার শিকড় অনুসন্ধান করতে চায় তাহলে তাকে যেতে হবে
জাদুঘরে।



বাংলাদেশের বিখ্যাত জাদুঘর গুলো হল - বাংলাদেশের প্রথম রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের
বরেন্দ্র জাদুঘর, ঢাকার জাদুঘর, নারায়ণগঞ্জ বাংলাদেশ লোক শিল্প জাদুঘর,
বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি জড়িত বাসভবনে বঙ্গবন্ধু জাদুঘর এবং চট্টগ্রামের জাতি
তাত্ত্বিক জাদুঘর।





মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ



বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর অনুচ্ছেদ



মুক্তিযুদ্ধ বাংলাদেশ তথা বাঙালি জাতির ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। বাংলাদেশের
মুক্তিযুদ্ধ ও বাঙালি জাতির কাছে এক গৌরব উজ্জ্বল অধ্যায়। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে
জানানোর জন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজন। ১৯৯৬ সালের ২২শে
মার্চ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্থাপিত হয় রাজধানী ঢাকার সেগুনবাগিচার ছোট একটি দোতলা
বাড়িতে।



বাংলাদেশের এই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সংরক্ষিত রয়েছে প্রমাণ, বস্তুগত নিদর্শন,
মুক্তিযুদ্ধ সংক্রান্ত তথ্য, স্মারক, চিহ্নসমূহ সংগ্রহ এবং রেকর্ড পত্র।এগুলো
শুধু সংরক্ষিত রয়েছে তা নয় এগুলো জনসাধারণের জন্য প্রদর্শনেরও ব্যবস্থা রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রবেশ পথের মুখে স্থাপিত হয়েছে "শিখা চির অম্লান"। এই
অনির্বাণ শিখা জ্বলছে তারকা আবৃত্তির একটি বেদির উপর।



আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত রচনা সম্পর্কে জেনে নিন



দোতলা বিশিষ্ট যাদুঘরে রয়েছে ছয়টি গ্যালারি। এই ছয়টি গ্যালারির মধ্যে তিনটি
রয়েছে নিচতলা এবং তিনটি রয়েছে দোতালায়। নিচ তলার প্রথম তিনটি গ্যালারিতে
সজ্জিত করণ করা হয়েছে বাংলার সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য এবং বিভিন্ন নিদর্শন রয়েছে।
বিভিন্ন নিদর্শন যা ব্রিটিশ উপনিবেশিক কালের দ্বিতীয় গ্যালারিতে। পাকিস্তান
আমলের ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে ৩ নং গ্যালারিতে। ১৯৭১ সালের নিদর্শন, শহীদ
মুক্তিযোদ্ধার তৎপরতা ও পাক হানাদার বাহিনীর নিষ্ঠুরতার ছবি গ্যালারি ৬ এ
সংরক্ষিত রয়েছে।



গ্যালারি ৫ এ সশস্ত্র যুদ্ধের নিদর্শন ও প্রতিরোধের লড়াই সংরক্ষণ করা হয়েছে।
সর্বশেষ গ্যালারি হল গ্যালারি ৬। এই গ্যালারিতে সংরক্ষণ করা হয়েছে ২৫শে মার্চ
রাতের সংগঠিত গণহত্যা, শরণার্থীদের জীবন চিত্র, স্বাধীনতার ঘোষনা এবং প্রাথমিক
প্রতিরোধ। এবং বিভিন্ন বিবরণ ও প্রতিরোধ সংরক্ষনযোগ্য নির্দেশনার সংখ্যা কাল
ক্রমে বাড়তে থাকে। যার কারণে স্বল্প পরিসরের এই দোতলা ঘরে দূরহ হয়ে উঠেছে স্থান
সংকলন।



আরো পড়ুনঃ  ভাষা আন্দোলন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত  জেনে নিন



এছাড়া প্রত্যেকটি গ্যালারিতে একজন চৌকস গাইড রয়েছে। জাদুঘর বিভিন্ন কর্মকান্ড
পরিচালনা করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও ঐতিহ্য সম্পর্কে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে প্রায়
এগারো হাজারস্মারক সংখ্যা সংরক্ষিত রয়েছে। এর ফলে প্রয়োজন পড়ে একটি নিজস্ব
ভবনের। ২০১৩ সালে জাদুঘর নিজের জমি সংগ্রহ করে ঢাকার  আগারগাঁও 
এলাকায়।



পরবর্তীতে নিজস্ব এই জমির ওপর নয় তলা ভবন নির্মিত হয়। সরকারের দেওয়া তহবিল
বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও জনসাধারণের অর্থায়নে এই নয়তলা ভবন নির্মিত হয়েছে প্রায়
দুই বিঘা জমির উপর। এই ভবনের প্রায় এক ১ লাখ ৮৬ হাজার বর্গফুট ব্যবহার করা হয়।
২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর স্থানান্তরিত হয় এই নয় তলা নতুন
ভবনে।



আরো পড়ুনঃ কৃষি উদ্যোক্তা রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন



এই জাদুঘরটির স্থাপত্য শৈলীগুলো ব্যতিক্রমধর্মী। ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালের উল্টোদিকে
এই ভবনটি নির্মিত হয়েছে। চারটি গ্যালারি রয়েছে নতুন এই ভবনটিতে। গ্যালারি গুলো
প্রতিষ্ঠিত হয়েছে এই ভবনের চতুর্থ ও পঞ্চম তলায়। গ্যালারি সমূহে নিদর্শন
উপস্থাপনের দায়িত্ব পালন করে জাদুঘর বিষয়ে বিশেষজ্ঞ যুক্তরাষ্ট্রের একটি
প্রতিষ্ঠান।



প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে শুরু করে ১৯৭০ সাল পর্যন্ত সময়কার প্রতিনিধিত্বমূলক পত্ন
নিদর্শন প্রথম গ্যালারিতে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের এই মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর বিশ্বের
আরো আটটি জাদুঘরের সাথে সমন্বয় করে সাজানো হয়েছে। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম যেন
বাঙালির মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ভুলে না যায় সেজন্যই মুক্তিযুদ্ধ
জাদুঘর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।



শেষ কথা



প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা আমি তোমাদের জন্য জাদুঘর অনুচ্ছেদ লেখার চেষ্টা করেছি।
যদি তোমাদের পরীক্ষায় যাদুঘর অনুচ্ছেদ লিখতে আসে তাহলে ওপরের অনুচ্ছেদ তোমরা
লিখতে পারবে। আর যদি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আসে তাহলে অনায়াসে নিচের
অনুচ্ছেদটা তোমরা লিখতে পারবে। তবে মনে রেখো যদি বাংলাদেশ জাদুঘর উল্লেখ করে আসে
তাহলে অবশ্যই বিভিন্ন দেশের যে বর্ণনা রয়েছে তা বাদ দিয়ে লিখার চেষ্টা করবে।
আমি আশা করি আমার এই লেখা তোমাদের অনেক উপকারে আসবে।


এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url