ক্যান্সার কি - ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সারের লক্ষণ জানুন
ক্যান্সার হল জেনেটিক সমস্যা। কিন্তু আমরা ক্যান্সার কি - ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সারের লক্ষণ সঠিকভাবে জানি না এবং সচেতন নয়। তাই আমি ক্যান্সার কি - ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সারের লক্ষণ সম্পর্কে বিস্তারিত আমার আর্টিকেলের মধ্যে আলোচনা করেছি। সঠিক ভাবে ক্যান্সার কি - ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সারের লক্ষণ জানুন এবং সুস্থ থাকুন।
পোস্ট সূচিপত্রঃ ক্যান্সার কি - ক্যান্সার কেন হয় - ক্যান্সারের লক্ষণ
- ক্যান্সার কি
- ক্যান্সার কত প্রকার
- ক্যান্সার কেন হয়
- ক্যান্সারের লক্ষণ
- ক্যান্সারের টেস্ট এর নাম
- ক্যান্সারের প্রতিরোধ
- ক্যান্সারের চিকিৎসা
- ক্যান্সার হলে কত দিন বাঁচে
- ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
- ক্যান্সার ছোঁয়াচে রোগ
- শেষ কথা
ক্যান্সার কি
মানবদেহে অসংখ্য সেল বা কোষ দ্বারা গঠিত। মানব দেহের কোষ গুলো ক্রমাগত বিভাজিত হতে থাকে। শরীরের কোষ বিভাজন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এবং এই বিভাজিত কোষের উপর মানুষের সম্পন্ন নিয়ন্ত্রণ আছে। মানব দেহে যে কোষের সমন্বয়ে গঠিত তেমনি একটি কোষ হল ক্যান্সার কিন্তু এই ক্যান্সার শরীরে অন্যান্য কোষের মতো স্বাভাবিক নয়।
আরো পড়ুনঃ
এই কোষের আকার অস্বাভাবিক ও কার্য ও করে অস্বাভাবিক। মানব দেহের কোন কোষ হঠাৎ করে অনিয়ন্ত্রিতভাবে বিভাজন হতে শুরু করলে এবং এই বিভাজন ও অনিয়ন্ত্রিতভাবে চলতেই থাকে। এর ফলে এই বিভাজিত কোষ এক সময় একটি টিউমার বা পিণ্ডতে পরিণত হয়। আর এই পিণ্ড বা টিউমারি হল ক্যান্সার।
ক্যান্সার কত প্রকার
ক্যান্সার প্রধানত দুই প্রকার
বিনাইন বা ভালাবোলা টিউমার বা ক্যান্সার
মেলিগন্যান্ট বা বিপজ্জন
মেলিগন্যান্ট বা বিপদজনক টিউমার বা ক্যান্সার। তবে মেলিগন্যান্ট বা বিপদজনক টিউমারকে ক্যান্সার বলা হয়ে থাকে। গবেষক ও চিকিৎস গনের মতে, দুইশ ২০০ টির ও বেশি ধরনের ক্যান্সার রয়েছে। তবে তাদের লক্ষণ গুলি আলাদা আলাদা। এছাড়াও কিছু সাধারণ ক্যান্সার রয়েছে। যেমন-
কার্সিনোম
কার্সিনোম এটি একটি ক্যান্সার যা ত্বকে বা টিস্যুতে শুরু হয় যা অন্যান্য অঙ্গ কে প্রভাবিত করে
লিউকেমিয়া
লিউকেমিয়া হাড়ের মজ্জার একটি ক্যান্সার। এই ক্যান্সারের প্রধান লক্ষণ রক্তে শ্বেত কণিকার অস্বাভাবিক বৃদ্ধি করা।
লিম্ফোমা
লিম্ফোমা এমন এক ধরনের ক্যান্সার যা কোষের মৃত্যু না হওয়া সত্ত্বেও লিম্ফোসাইটের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি করে থাকে। এর ফলে রক্তে অধিক সংখ্যায় লিম্ফো সাইট সঞ্চিত হয়ে থাকে।
সারকোমা
সারকমা এমন এক ধরনের ক্যান্সার যা হাড়, পেশী, কার্টিলেজ এবং রক্তনালীর মত সংযোগ কারী টিস্যু গুলোকে ধ্বংস করে।ক্যান্সার একটি মারাত্মক ব্যাধি এছাড়াও রয়েছে ব্লাড ক্যান্সার স্তন ক্যান্সার ফুসফুস ক্যান্সার কোলন ক্যান্সার লিভার ক্যান্সার ক্যান্সার মস্তিষ্ক ক্যান্সার প্রভৃতি নিচে এগুলো পর্যায়ক্রমে আলোচনা করা হলো
ব্লাড ক্যান্সার
যত প্রকারের ক্যান্সার আছে তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ভয়ংকর হলো ব্লাড ক্যান্সার। মানুষের শরীরে সবচেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পায় এ ব্লাড ক্যান্সার। আমাদের রক্তের মধ্যে রয়েছে শ্বেত কণিকা ও লোহিত কণিকা। অস্থি মজ্জায় যখন রক্তে থাকা এই শ্বেত কণিকা বৃদ্ধি পায় তখন তাকে ক্যান্সার বলা হয়। ব্লাড ক্যান্সারের কারণ এখনো সঠিকভাবে নিরূপণ করা সম্ভব হয়নি।
আরো পড়ুনঃ হিমোফিলিয়া - রোগের কারণ - লক্ষণ - চিকিৎসা জেনে নিন
তবে চিকিৎসরা মনে করেন কিছু জিনগত কারণ এবং রেডিয়েশন, ভেজাল খাবার, ক্ষতিকর কেমিক্যাল, কেমোথেরাপি, ড্রাগস, বার্নিশ লুক্সিকেস ইত্যাদি কারণে এই ক্যান্সার হয়ে থাকে। অনেকেই মনে করেন ব্লাড ক্যান্সার হলে মৃত্যু অনিবার্য কিন্তু আসলে তা নয় সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা দিতে পারলে মানুষ এই রোগ থেকে মুক্তি পেতে পারে।কেমোথেরাপির মাধ্যমে মূলত এই রোগের চিকিৎসা করা হয়। তবে মনে রাখতে হবে এই ক্যান্সার রক্তে প্রবাহিত হয় বলে খুব দ্রুত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
জরায়ু ক্যান্সার
জরায়ু হলো মেয়েদের এমন একটি যোনি অঙ্গ যা ভ্রুনের বিকাশ ঘটায়। জরায়ুতে এন্ড্রমেট্রিয়াল নামে এক ধরনের ক্যান্সার হয়। এন্ড্রোমেটিরিয়াল কে জরায়ুর ক্যান্সার নামে অভিহিত করা হয়। এছাড়া জরায়ুতে সারা কোমা সহ আরো অনেক ধরনের ক্যান্সার হয়। তবে মেয়েদের জরায়ুতে এন্ডোমেট্রিয়াল নামক ক্যান্সার সবচেয়ে বেশি হয়।
ভারসাম্যহীনতার জন্য, অথবা জিনগত কারণেও হতে পারে। তবে এই ক্যান্সারের ব্যাপারে বিজ্ঞানীরা এখনো নিশ্চিত হতে পারেননি। তবে জরায়ু ক্যান্সার হলে জরায়ুর অনেক সমস্যা হয়।
ফুসফুসের ক্যান্সার
আরো পড়ুনঃ অটিজম কি - অটিজমের কারণ - অটিজমের চিকিৎসা জেনে নিন
সবচেয়ে ভয়াবহ ক্যান্সারের মধ্যে ফুসফুরের ক্যান্সার অন্যতম। রোগের শুরুতে যদি এই ক্যান্সার নির্ণয় করা না যায় তাহলে রোগের মৃত্যু অবধারিত। এই ক্যান্সার হলে সর্দি, কাশি, ঠান্ডা এসব সমস্যা লেগেই থাকবে। এছাড়াও মানসিক অবসাদ, ক্লান্তি, বুকে ব্যথা, স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা ইত্যাদি দেখা দিবে। যদি কারো এগুলোর মধ্যে কোন একটি লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ দিতে হবে । চিকিৎসক কে না দেখালে এ রোগে মৃত্যু অবধারিত।
মস্তিষ্কের ক্যানসার
মস্তিষ্কের ক্যানসার রোগীর মাথার অংশে বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। ব্রেন ক্যান্সারের অপর নাম হল ব্রেন টিউমার। কোন ব্যক্তি এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হলে মস্তিষ্কের অংশে একটি পিণ্ড বা টিউমার তৈরি হয় এবং এই পিণ্ডটি আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে এবং সময়ের সাথে সাথে তা পুরো মস্তিষ্কে ছড়িয়ে পড়ে।
স্তন ক্যান্সার
এই ক্যান্সার মহিলাদের হয়ে থাকে এবং এখন তা দিন দিন অনেক বৃদ্ধি পাচ্ছে। স্তন ক্যান্সার অন্যান্য ক্যান্সারের মতোই ভয়ংকর। স্তন এর আশেপাশে কিছু কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বেড়ে গেলে তা টিউমারে রূপান্তরিত হয় এবং এই টিউমার পরবর্তীতে রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন কোষের ছড়িয়ে পড়ে। আর এই টিউমার পরে ক্যান্সারের রূপান্তরিত হয়। এই রোগের নির্দিষ্ট কোন কারণ নেই।
অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন বা বংশগত কারণে এ রোগ হয়ে থাকে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন খাদ্যাভাস নিয়ন্ত্রণে রাখলে এই রোগে ঝুঁকি কমানো সম্ভব। এই রোগের ঝুঁকিতে তারাই পড়ে থাকেন যারা জন্ম নিয়ন্ত্রণের পিল খান, অতিরিক্ত ওষুধ খান অথবা হরমোনের সমস্যা রয়েছে। আপনি যদি এই রোগ প্রতিরোধ করতে চান তাহলে নিয়মিত আপনার স্তন পরীক্ষা করাতে থাকুন।
ত্বক ক্যান্সার
বর্তমানে ত্বকের ক্যান্সার ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। এই ক্যান্সার যেকোনো বয়সে হতে পারে। বিশেষজ্ঞদের মতে পরিশ্রম না করা, অতিরিক্ত গরম, সঠিক খাবার না খাওয়া, সর্বোপরি অতিরিক্ত প্রসাধনের ব্যবহার এই স্কিন বা ত্বকের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান কারণ।
কোলন ক্যান্সার
মলাশয় বা বৃহদান্তের ক্যান্সারই কোলন ক্যান্সার নামে পরিচিত। পুরুষরা এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে অনেক সময় মহিলাদেরও এই রোগ হতে পারে। বয়স যত বাড়তে থাকে এই রোগের ঝুঁকিও ততই বাড়তে থাকে। জিনগত ও পরিবেশগত কারণে এই রোগ হয়ে থাকে। অধিক পরিমাণে গরু বা খাসির মাংস খাওয়া, ধূমপান করা, অধিক পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাবার খাওয়া এই কোলন ক্যান্সারের কারণ।
যারা বেশি মোটা বা স্থূল তাদের এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি। এই রোগ প্রতিরোধ করতে হলে নিয়মিত ব্যায়াম করে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। পারিবারিক ইতিহাস থেকেও এ রোগ হতে পারে, যাদের পরিবারে এই রোগ আছে তাদের বেশি ঝুঁকি থাকে এই ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার। তাই পারিবারিক ইতিহাস জেনে সতর্ক থাকুন।
লিভার ক্যান্সার
যকৃতের ক্যান্সার লিভার ক্যান্সার হিসেবে পরিচিত। নারী এবং পুরুষের মধ্যে পুরুষরা এই রোগে বেশি আক্রান্ত হয়। যে কোন বয়সে এ রোগ হয়ে থাকে। এ রোগের মূল লক্ষণ হল লিভার সিরোসিস দেখা দেওয়া তবে সব সময় তা নাও হতে পারে। এই রোগে আক্রান্ত হলে পেটের ডান পাশে বুক বরাবর ব্যাথা হয়।
আরো পড়ুনঃ বাত জ্বর কেন হয় - বাত জ্বর হলে করণীয় জেনে নিন
এই রোগে আক্রান্ত হলে জ্বর অনুভূত হওয়া, ওজন কমে যাওয়া, পেট ফাঁপা, সহজে ক্লান্তি ভাব চলে আসা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দেয়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন বিভিন্ন ধরনের টিকা দেওয়া থাকলে এবং টিকা দেওয়ার সময় নতুন শিরিঞ্জ ব্যবহার করলে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।
গলার ক্যান্সার
অন্ননালি, শ্বাসযন্ত্র বা শ্বাসনালীর টিউমার থেকে হয়ে থাকে। এই রোগ হলে গলা ব্যথা হয় তবে দেহের অন্যান্য অংশের টিউমার থেকেও এই রোগ হতে পারে। তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে এই রোগের ঝুকি অনেক বেড়ে যায়। এই ক্যান্সার হলে দীর্ঘদিন গলা ব্যাথার পাশাপাশি কাশি, শ্বাস নেওয়ার সময় গলার ভেতর ঘড়ঘড় আওয়াজ হওয়া, গিলতে গেলে গলায় ব্যথা লাগা, গলার স্বর ভেঙ্গে যাওয়া, কাশির সাথে রক্ত যাওয়া, রক্ত বমি হয় ইত্যাদি সমস্যা হতে পারে, তবে এসব সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
প্রোস্টেড ক্যান্সার
পোস্টেড ক্যান্সার বা মূত্রথলির ক্যান্সার হল অন্যতম মারাত্মক একটি ক্যান্সার। এই ক্যান্সারে অনেক মৃত্যু ঝুঁকি আছে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ শনাক্ত করতে পারলে রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারে। আমেরিকার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা মতে যেসব পুরুষের বয়স.৫0 বছর বা তার বেশি তাদের এই রোগ বেশি হয়ে থাকে।
পোস্টেড ক্যান্সার হলে মূত্রথলির বা প্রসাবের সমস্যা হতে পারে এবং এর সাথে তলপেটে ব্যথা, প্রসাবের সাথে রক্ত যাওয়া এবং মেরুদন্ড বা হাড়ের ব্যথা হতে পারে। এসব লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে প্রথমেই ভালো চিকিৎসা পেলে এই রোগ ভালো হয়ে যেতে পারে।
থাইরয়েড ক্যান্সার
মানুষের ঘাড়ের নিচে একটি গ্রন্থি থাকে যাকে হরমোন গ্রন্থি বলা হয়। এই গ্রন্থি দেহের হরমোন তৈরি করে এবং দেহের পরিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। এছাড়াও এটি হার্টের কার্যকলাপ, রক্তচাপ, তাপ উৎপাদন, শক্তির ব্যবহার, ওজন নিয়ন্ত্রণ ও অক্সিজেন গ্রহণ সহ নানা ধরনের কাজ করে থাকে। থাইরয়েড কোষ যখন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায় তখন তা থেকে টিউমার হয়।
এবং এই টিউমার হল ক্যান্সার। এই রোগ হলে গলা ফুলে যায়, শ্বাস নিতে সমস্যা হয়, গিলতে সমস্যা হয়, ঘাড়ের সামনের অংশ ব্যথা হয় ও সংক্রমণ ইত্যাদি দেখা দেয়। এই সমস্যা দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। তবে প্রাথমিক অবস্থায় চিকিৎসা নিতে পারলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
ক্যান্সার কেন হয়
মানবদেহে ক্যান্সার কেন হয় তার সুনির্দিষ্ট কারণ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে ক্যান্সার হয় মানবদেহে কোষের জ্বীন পরিবর্তনের ফলে। তবে কোষের পরিবর্তন নিজে নিজে বা অন্য কোন কারণেও হতে পারে ধারণা করা হয় ধূমপান করলে বা বংশগত কারণে ক্যান্সার হয়। ক্যান্সার কোন সংক্রামক রোগ নয় ডিএনএ রূপান্তর বা মিউটেশন ক্যান্সার সৃষ্টির প্রধান কারণ।
মানবদেহে কোষ বিভাজন যখন অস্বাভাবিক ভাবে বাড়তে থাকে তখন ক্যান্সার হয়।তবে ধারণা করা হয় হরমোন, ক্ষতিকর রাসায়নিক উপাদান, পেশা, অভ্যাস যেমন- তামাক সেবন, ধূমপান, মদ পান ইত্যাদি, আঘাত, বিকৃত যৌনাচার ও প্রজনন, বায়ু, পানি, দূষণ খাদ্য যেমন-অধিক চর্বিযুক্ত খাদ্য, জীবন যাপন, পদ্ধতিগত বা বর্ণগত,
পরিবেশগত ও ভৌগোলিক প্রভাব ভাইরাস ও প্যারাসাইট ইত্যাদি সাধারণত ক্যান্সার সৃষ্টির মূল কারণ।এছাড়াও ক্রনিক ইনফেকশন, পিত্তথলির পাথ, কিডনিতে পাথর, বিভিন্ন রেডিয়েশন প্রভৃতি কারণে ক্যান্সার হতে পারে। এছাড়াও গুটকা-তামাক, সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি এবং বিকিরণ ইত্যাদি নেশা জাতীয় দ্রব্য খেলেও ক্যান্সার হতে পারে।
আরো পড়ুনঃ হিট স্ট্রোক কাকে বলে - হিট স্ট্রোক কেন হয় জেনে নিন
গবেষণায় দেখা গেছে যে, ক্যান্সার ভালো শরীরের কোষগুলিকে ধ্বংস করে থাকে। কোন কোন সময় ক্যান্সার কোষ গুলি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সহ্য করতে সক্ষম হয় না যার কারণে মানবদেহে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়। গবেষকেরা মনে করেনএসব কারণ থেকে দূরে থাকতে পারলে শতকরা ৯০ ভাগ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব।ক্যান্সারের আরো কিছু কারণ রয়েছে যেমন -
জেনেটিক বা বংশগত
দীর্ঘ মেয়াদী তামাক এবং সিগারেট খাওয়া মুখ এবং ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ
পারিবারিক ইতিহাস
ক্যান্সারের সাথে জিনগত সম্পর্ক রয়েছে। তাই পরিবারের কেউ যদি পূর্বে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের ও ক্যান্সার হবার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
বয়স
জরিপে দেখা যায় আজ পর্যন্ত যত মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে তাদের মধ্যে শতকরা ৭০ ভাগ লোকের বয়স ৬০ বছরের উপরে। তাই বয়স যত বাড়তে থাকে ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকিও তত বাড়তে থাকে। কারণ বয়স হলে মানুষ তার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে।
খাবার এবং জীবন যাপনের ধারা
গবেষকেরা খাবার এবং জীবন যাপনের ধারা সাথে ক্যান্সারের গভীর সম্পর্ক খুঁজে পেয়েছেন। যেমন-
- ধূমপান ও মধ্যপানের সাথে কন্ঠনালী, ফুসফুস, যকৃত এবং লিভার ক্যান্সারের সম্পর্ক
রয়েছে।
- পান, সুপারি, জর্দা ইত্যাদির সাথে জিহবার ক্যান্সারের সম্পর্ক রয়েছে।
- মা, বাবা, খালা এদের মধ্যে কারো ক্যান্সার থাকলে সন্তানদের ক্যান্সার হতে
পারে।যেমন - বেস্ট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার ইত্যাদি।
- দীর্ঘ মেয়াদি সিগারেট ও তামাক খাওয়া মুখ এবং ফুসফুসের ক্যান্সার সৃষ্টি হতে
পারে।
- দীর্ঘ সময় ধরে মদ পান করলে যকৃতের ক্যান্সার সহ অন্যান্য ক্যান্সার হতে পারে।
- বিনাইন টিউমার বা ভালা বোলা টিউমার শরীরে বেশিদিন থাকলে যে কোন সময় ক্যান্সার
হতে পারে এবং অধিকাংশ ক্যান্সার এভাবেই হয়ে থাকে।।
- অধিক পরিমাণে ঔষধ ও রাসায়নিক পদার্থ গ্রহণের ফলে পেট ও লিভারের ক্যান্সার হতে
পারে।
- অল্প বয়সে যৌন মিলন করা এবং বেশি পুরুষের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করা জরায়ুর
ক্যান্সারের অন্যতম কারণ
- রেডিয়েশন যেমন কোন জায়গায় রেডিয়েশন দিলে বা সূর্য রশ্নি ত্বকের
ক্যান্সার করে থাকে যেমন চেরনবিল এবং জাপানের নাগা সাকির পারমাণবিক বিস্ফোরণে
অনেক বছর পর এখনো সেখানে অনেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে।
- খাদ্যে ব্যবহৃত ফরমালিন, এসিড, পচন রোধ পদার্থ পাকস্থলীর ক্যান্সার এবং
চুলের কলপ স্কিন বা ত্বকের ক্যান্সার তৈরি করে।
- রাসায়নিক ও কেমিক্যাল এজেন্ট যেমন এলই এনি নীল ড্রাই মূত্রথলির ক্যান্সার
সৃষ্টি করে।
- পাথর বা স্টোন কিডনি পিত্তথলির পাথর ক্যান্সার সৃষ্টি করে।
ক্যান্সারের লক্ষণ
ক্যান্সার হলে মানব শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা যায় এ সকল লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে প্রয়োজন সতর্কতা অবলম্বন করা এবং এর পাশাপাশি চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করা। ক্যান্সার হলে যে সকল লক্ষণ গুলো শরীরে প্রকাশ পায় তা হল
-
দ্রুত ওজন কমতে শুরু করা এটা ক্যান্সারের অন্যতম একটি প্রধান লক্ষণ
- অনেকদিন ধরে শরীরের কোন অংশের চুপচাপ উপদ্রবহীন ভাবে ছোট একটি টিউমারের হঠাৎ
পরিবর্তন।
- দীর্ঘ সময় ধরে মানসিক অবসাদ কাজ করে ও ক্লান্তি লাগে
- চাকা হঠাৎ বড় হচ্ছে ব্যথা হচ্ছে আপনাকে সতর্ক হতে হবে এবং ক্যান্সার কেনা
নিশ্চিত হতে হবে
- শরীরের কোন স্থানে দীর্ঘদিন যাবত ব্যথা করলে এবং কোন ঔষধ দিয়েও যদি তা না কমে
তাহলে ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে এটা আপনাকে বুঝতে হবে
- শরীরের কোন স্থানে অস্বাভাবিক মাংসপিণ্ড দেখা দিতে পারে
- শরীরের ছোট একটি তিল হঠাৎ বড় হচ্ছে গারো কালো রং হচ্ছে চুলকাচ্ছে কিংবা
ব্লিডিং হচ্ছে আপনাকে সতর্ক হতে হবে
- ক্রনিক কাশি ভালো হচ্ছে না চায় সপ্তাহের বেশি ধরে কাশি হচ্ছে সতর্ক হোন
ফুসফুসের ক্যান্সার হতে পারে
- শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যেতে থাকে ঘন ঘন জ্বর উঠে এবং জ্বর জ্বর ভাব
অনুভূত হয়
- দীর্ঘদিন একটানা কাশি থাকে এবং কাশির সাথে বুক ব্যথা গলা ব্যথা এসব দেখা দেয়
- ঘন ঘন মলমূত্রত্যাগের অভ্যাস হয় এবং ঘন ঘন ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য হয়
পাশাপাশি মুদ্রা থেকে সময় অন্ত্রে ব্যথা হয়
- কাশির সাথে অনেক সময় অকারণে রক্ত যায়
- হঠাৎ করে খাবারের অরুচি হওয়া
- অল্প খাবার খেলে পেট ভরে যাওয়া
- বয়স ৪০ বছর ও পার হলে পাকস্থলীর ক্যান্সার হতে পারে
- মলদ্বার দিয়ে রক্ত যাওয়া
- শরীরে ব্যথা এবং শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া
- মলত্যাগের অভ্যাসে পরিবর্তন আসলে কোলন ক্যান্সার হতে পারে
- হঠাৎ গলার শব্দ পরিবর্তন হওয়া
- গলায় বা বগলের চাকা দাগ অনুভূত হওয়া
- মহিলাদের বয়সের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া বা মেনু পোজ হওয়ার পর নতুন করে
ব্লিডিং হওয়া জরায়ুর ক্যান্সারের লক্ষণ
- বেস্ট এর চাকা অনুভূত হওয়া বেস্ট ক্যান্সারের লক্ষণ
- ত্বকের পরিবর্তন দেখা যাওয়া
- অস্বাভাবিক রক্তপাত হওয়া
- কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া
- জ্বর রাতে ঠান্ডা লাগা বা ঘেমে যাওয়া
এইসব লক্ষণ আপনার শরীরে দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন এবং চিকিৎসা নিবেন সঠিক চিকিৎসা পেলে আপনি সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবেন
ক্যান্সারের টেস্ট এর নাম
ক্যান্সারের কোন লক্ষণ দেখা দিলে অথবা লক্ষণ গুলোর যেকোনো একটি থাকলে যদি তা ভালো না হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। ক্যান্সার এনার জন্য অনেক পরীক্ষা রয়েছে তবে এর মধ্যে সবচেয়ে সঠিক ইনভেস্টিগেশন হলো বায়োপসি নিচে এগুলো আলোচনা করা হলো-
বায়োপসি
এটি ক্যান্সারের সঠিক শনাক্তকরণের জন্য নেওয়া প্রভাবিত সাইড ও টিউমার গুলির একটি নমুনা এবং ক্যান্সার রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখার একটি পরীক্ষা পদ্ধতি
ইমেজিং টেস্ট
ইমেজিং পরীক্ষার মধ্যে সিটি স্ক্যান এমআরআই স্ক্যান পিইটিই সেন ইউ এস জি স্ক্যান, হাড়ের ঘনত্ব স্ক্যান ইত্যাদি রয়েছে।
ল্যাব পরীক্ষা
কিডনি ফাংশন পরীক্ষা, লিভার ফাংশন টেস্ট সিরি অ্যাক্টিভ প্রোটিন সি বি সি ই এস আর ইত্যাদি সহ রোগীর রক্ত লসিকার নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়।
ক্যান্সারের প্রতিরোধ
চিকিৎসকেরা এখনো ক্যান্সার কেন হয় এ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু নির্ণয় করতে পারেননি তবে কিছু কিছু নিয়ম মেনে চললে এই ভয়াবহ ক্যান্সার থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব বলে তারা মনে করেন ক্যান্সার কিভাবে প্রতিরোধ করা যায় এ নিয়ে নিচে আলোচনা করা হলো
- ক্যান্সারের চিকিৎসাধূমপান থেকে বিরত থাকতে হবে কারণ ক্যান্সার প্রতিরোধে
প্রধান শর্ত হলো ধূমপান থেকে বিরত থাকা
- সকল ধরনের মাদকদ্রব্য পরিহার করা
- স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা
- বংশগতভাবে অতীতে কারো ক্যান্সার হয়ে থাকলে নিয়মিতভাবে শরীর চেকআপ করা
- বিভিন্ন ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে ক্যান্সার হতে পারে তাই এ ক্ষেত্রে ভাইরাস
প্রতিরোধের টিকা গ্রহণ করা
- প্রতিদিন নিয়মমাফিক ব্যায়াম করা কমপক্ষে আধাঘন্টা হাটাও ব্যায়াম করা
- জতাগুলে জাতীয় খাদ্য পরিহার করা
- ক্যান্সার প্রতিরোধের প্রধান শর্তই হচ্ছে ধূমপান থেকে বিরত থাকা
- অল্প বয়সে বিয়ে না করা
- একাধিক লোকের সাথে যৌন সম্পর্কে না জড়ানো এবং বিকৃত যৌনাচার না করা
- ৪০ বছর পার হলে মহিলাদের বেশ পরীক্ষা করা
- একাধারে বহুদিন জন্মনিরোধক বড়ি না খাওয়া
- অল্প বয়সে সন্তান ধারণ এবং অধিক সন্তান ধারণা করা
- শরীরের কোথাও টিউমার আছে কিনা তা দেখা এবং থাকলে তার সাথে সাথে অপারেশন করা
ক্যান্সার প্রতিরোধক খাবার
ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে নিয়মমাফিক জীবন যাপন এবং প্রতিরোধক খাবার গ্রহণ করা একান্ত প্রয়োজন। ক্যান্সার প্রতিরোধে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া এবং খাদ্য তালিকায় প্রতিদিন শাকসবজি, ফলমূল এবং পুষ্টিকর খাবার রাখা জরুরি। ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় পুষ্টিকর খাবার রাখতে হবে এবং এর পাশাপাশি কাঁচা হলুদ খাওয়া যেতে পারে।
আরো পড়ুনঃ নাক ডাকার কারণ কি - এর সমাধান জেনে নিন
কাঁচা হলুদ ক্যান্সার প্রতিরোধে খুব বেশি কার্যকর।এছাড়াও যে সব পশু -পাখি অর্গানিক বা প্রাকৃতিক খাবার খেয়ে বড় হয়েছে যেমন - গরু, খাসি, ভেড়া, মুরগির মাংস ইত্যাদি খাওয়া, প্রচুর পরিমাণে পানি খাওয়া পাশাপাশি টক দই খাওয়া। এছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ভিটামিনযুক্ত ফল খেতে হবে এসব খাবার খাদ্য তালিকায় নিয়মিত রাখলে ক্যান্সারের প্রতিরোধ সম্ভব।
ক্যান্সারের চিকিৎসা
বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের চিকিৎসা ও ভিন্ন হয়ে থাকে নিচে ক্যান্সারের চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি সম্পর্কে আলোচনা করা হলো
কেমোথেরাপি
কেমো থেরাপি এই পদ্ধতিতে ক্যান্সার পোস্ট কে ধ্বংস করতে এন্টি ক্যান্সার বা ওষুধ ব্যবহার করা হয় এই থেরাপির ওষুধ রয়েছে প্রায় ৫০ টিরও বেশি এগুলো কোন একটা ট্যাবলেট বা ক্যাপশন হিসেবে খেতে হয়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এই ওষুধগুলোকে স্যালাইনের সাথে বা অন্য কোন ভাবে সরাসরি রক্ত দেওয়া হয়। রক্তের সাথে মিশেই ওষুধগুলো শরীরের যেখানে সেখানে ক্যান্সার কোষ রয়েছে সেখানে গিয়ে ক্যান্সার পোস্টগুলোকে ধ্বংস করতে চেষ্টা করে।
হরমোন থেরাপি
শরীরে হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন করতে এই হরমোন থেরাপি চিকিৎসা করা হয়। শরীরের বৃদ্ধির সাথে হরমোনের একটা আবশ্যকীয় সম্পর্ক রয়েছে। আর কিছু কিছু ক্যান্সার এই হরমোনের মাধ্যমে প্রভাবিত হয় এজন্য ক্যান্সার কোষের বৃদ্ধি কমিয়ে ক্যান্সারকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হরমোন থেরাপি ব্যবহার করা হয়ে থাকে।
রেডিও থেরাপি
নিয়ন্ত্রিতভাবে শরীরের অংশবিশেষ তেজস্ক্রিয় রশ্মি প্রয়োগের মাধ্যমে শরীরের যে জায়গায় ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়েছে সেই জায়গায় কোষগুলোকে ধ্বংস করে ফেলা হয় একে রেডিওথেরাপি বলা হয়।
অস্ত্র প্রচার
শরীরের যে জায়গাতে ক্যান্সার আক্রান্ত হয়েছে সেই জায়গায় আক্রান্ত কোষগুলো সহ তার আশেপাশের কোষ গুলোকে অস্ত্র পাচারের মাধ্যমে কেটে ফেলা হয়। ক্যান্সার যদি অল্প জায়গা জুড়ে থাকে এবং প্রাথমিক পর্যায়ে থাকে তাহলে এ ধরনের চিকিৎসা দেয়া হয়। ক্যান্সারের অপারেশনগুলো সাধারণত ক্রায়ো সার্জারির মাধ্যমে করা হয় আর ক্রায়ো সার্জারি হল অতি শীতল তাপমাত্রার একটি চিকিৎসা পদ্ধতি। ক্রায়ো সার্জারি করলে রক্তপাতহীন অপারেশন সম্ভব।
ক্যান্সার হলে কত দিন বাঁচে
ক্যান্সার একটি মারাত্মক ব্যাধি। কারো ক্যান্সার হয়েছে শুনলেই সবাই হতাশ হয়ে পড়ে। সাইড প্যাথলজি ওহিস্ট প্যাথলজির মাধ্যমে ক্যান্সার নির্ণয় করা হয়ে থাকে। তবে ক্যানসার আক্রান্ত রোগী কত দিন বেঁচে থাকবে তা একমাত্র মহান আল্লাহ তায়ালাই ভালো জানেন। তবে অনেক সময় সঠিক চিকিৎসার ওপর নির্ভর করে যে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগী কত দিন সুস্থ জীবন যাপন করতে পারবে।
ক্যান্সার মানব শরীরের পরগাছা হিসেবে বাস করে। পর গাছাকে যেমন শুরুতেই উপড়ে ফেলে দিলে তা আর বাড়তে পারে না ঠিক ক্যান্সারও তাই আপনি যদি সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা করাতে পারেন তাহলে রোগী সুস্থ হয়ে যেতে পারে। ক্যান্সার হলো মানব শরীরে অস্বাভাবিক কোষের বৃদ্ধি। শরীরের অস্বাভাবিক কোষ যখন বাড়তে থাকে তখন পুষ্টির ওপর ভাগ বসায়।
যার কারণে কোষ থেকে ছাই টোকাইয়ের নিঃসৃত হয়ে কোষের অস্বাভাবিক হতে হয় এবং ক্ষুধা বন্ধ তৈরি করা হয় আর এরপর সঠিক চিকিৎসা নেয়া পেলে রোগী খুব দ্রুত মারা যেতে পারে। সু চিকিৎসা এবং সচেতনতায় পারে ক্যান্সার থেকে রক্ষা করতে।
ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায়
বাংলাদেশে প্রতিবছর দুই লাখের বেশি লোক সংখ্যা ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় এবং প্রায় এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার লোক ক্যান্সারে মারা যায় ক্যান্সার সম্পর্কে সঠিক রোগ নির্ণয় সঠিক প্রতিরোধ ও সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি পাড়ে এই ভয়াবহ রোগ থেকে রক্ষা করতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে সারাবিশ্বে ২০২০ সালে প্রায় ২২ লক্ষ্য ৬০ হাজার মহিলা বেস্ট ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়।
আরো পড়ুনঃ রাজশাহীর সেরা নবজাতক ও- শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ- ডাক্তারগণের তালিকা
এর মধ্যে প্রায় ৬ লক্ষ ৮৫ হাজার নারী প্রাণ হারিয়েছে তাই ক্যান্সার সম্পর্কে সচেতন হতে হবে ক্যান্সার থেকে মুক্তি পেতে হলে যা করতে হবে তা হল
- ক্যান্সার সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে
- ক্যান্সারের চিকিৎসা পদ্ধতি আরও উন্নত করতে হবে
- খুব সহজে যেন ক্যান্সার রোগ নির্ণয় করা যায় তার ব্যবস্থা করতে হবে
- ক্যান্সার সম্পর্কে মানুষের মাঝে সঠিক তথ্য দিতে হবে
- মানুষের মাঝে ক্যান্সার নামক ভীতি দূর করতে হবে
- ধূমপান পরিহার করতে হবে
- মদ পান করা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং মদপানের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে সচেতন করতে
হবে
- নিয়মিত তিরিশ মিনিট হাঁটার অভ্যাস করতে হবে
- পরিশ্রম করতে হবে
- খাদ্যাভাসে পরিবর্তন আনতে হবে
- আশ জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে
- প্রতিদিন ৮ থেকে ১০ গ্লাস বিশুদ্ধ পানি পান করতে হবে
- অধিক চর্বি জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে
- প্রচুর পরিমাণে ফল খেতে হবে
- সূর্যের রশ্মি থেকে নিজেকে দূরে রাখতে হবে
- প্রয়োজনের ছাতা সানগ্লাস ও সানস্ক্রিন ব্যবহার করতে হবে
- ওজন কমাতে হবে বা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে
- যাদের ক্যান্সারের পারিবারিক ইতিহাস আছে তাদের নিয়মিত ক্যান্সার স্ক্রিনিং
করতে হবে
- বয়স ৫০ এর বেশি হলে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে
- মোবাইলে রেডিয়েশন আছে তাই মোবাইল ফোন ব্যবহারে সচেতন হতে হবে
- প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারে সচেতন হতে হবে
মনে রাখবেন সচেতনতা এবং প্রতিরোধই পারে ক্যান্সার থেকে ভালো রাখতে।
ক্যান্সার ছোঁয়াচে রোগ
ক্যান্সার ইনো flanger মত ছোঁয়াচে রোগ নয় তাই যার ক্যান্সার রোগ হয়েছে তাকে আপনাদের মধ্য থেকে দূরে রাখার কোন প্রয়োজন নেই বরং তাকে সময় দিতে হবে এবং তার পাশাপাশি থাকতে হবে তাকে সুস্থ রাখতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন তাকে মেন্টালি সাপোর্ট দেওয়া তাই তাকে দূরে না রেখে সব সময় তার পাশাপাশি থাকুন এবং তাকে ভালো রাখার চেষ্টা করুন
ক্যান্সার আক্রান্ত রোগের সাথে থাকলে আপনি ক্যান্সারে আক্রান্ত হবেন না কারণ এটা একান্তই জিনগত সমস্যা তাই ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীকে অবহেলা না করে তার পাশে থাকুন
শেষ কথা
ক্যান্সার একটি জিনগত সমস্যা।, মানুষের শরীর অসংখ্য কোষের সমন্বয়ে গঠিত আর এই কোষ যখন অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি পায় তখন মানুষ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়। আমি ক্যান্সার সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য তুলে ধরার চেষ্টা করেছি আমি আশা করি আমার এই পোস্টটি পড়লে আপনারা অনেক সচেতন থাকতে পারবেন এবং উপকার পাবেন।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url