পহেলা বৈশাখ কি - পহেলা বৈশাখ ও বাঙালির সংস্কৃতি সম্পর্কে জেনে নিন
পহেলা বৈশাখ ও বাঙালির সংস্কৃতি
নববর্ষ বাঙালি জাতির একটি অনন্য বৈশিষ্ট্যময় উৎসব। পহেলা বৈশাখ হচ্ছে বাঙ্গালীদের জীবনের একটি সেতুবন্ধন। শহর হোক বা গ্রাম নববর্ষই বাঙালিদের একত্রিত করে থাকে। নববর্ষ হল বাঙ্গালীদের শিকড়ের মিলন মেলা। ধর্ম বর্ণ সবকিছু ভুলে গিয়ে বাঙালিরা নববর্ষকে সাদরে আমন্ত্রণ জানাই কেননা পৃথিবীতে যতগুলো বর্ষপঞ্জি রয়েছে তার সবগুলো তৈরি হয়েছে কোন না কোন ধর্মকে কেন্দ্র করে।
শুধু বাংলা নববর্ষের সঙ্গে ধর্মের কোন অনুশাসন নেই। বিশ্বের প্রতিটি দেশেই বছরের প্রথম দিন বরণ করতে আয়োজন করা হয় নানা উৎসবের। প্রত্যেকটা জাতির নিজের রুচি বোধ, সংস্কৃতি ও বৈচিত্র মিলে তাদের নববর্ষকে বরণের আয়োজন করা হয়।
পহেলা বৈশাখের ইতিহাস
আমাদের সংস্কৃতিতে বাংলা নববর্ষ কিভাবে এলো তা জানতে হলে পহেলা বৈশাখ বা নববর্ষের ইতিহাস সম্পর্কে জানতে হবে। পহেলা বৈশাখ পালন করা হয় বাংলা বৈশাখ মাসের প্রথম দিন। তবে বাঙালির নববর্ষ সব বাঙালির কাছে এক ভাবে আসেনি। কারো কাছে এসেছে খাজনা দেওয়ার সময় হিসেবে, কারো কাছে এসেছে মহাজনের সুদ রূপে, আবার কারো কাছে এসেছে বকেয়া আদায়ের হালখাতা হিসাবে।
অনেক প্রাচীনকাল থেকেই বাংলা মাস পালিত হতো সৌরপঞ্জি অনুসারে অর্থাৎ ৯৬৩ সালকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়েই নতুন ফসল ঘরে তোলার সময়কে সৌর বর্ষের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা লক্ষ্যে সূর্যকে মানদণ্ড হিসেবে ধরে ফসলি বর্ষ হিসেবে বা সৌর বর্ষ হিসেবে পহেলা নববর্ষকে চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্রাট আকবরের শাসনামলে চন্দ্র বর্ষ কে হিজরী আর সৌর বর্ষকে বঙ্গাব্দ হিসাবে একক মাত্রায় নির্ধারণ করা হতো।
খাজনা আদায়ের সঠিক হিসাব রাখার জন্য মুঘল সম্রাট আকবর বাংলা সনের প্রবর্তন করেন। তার মূল উদ্দেশ্য ছিল প্রাচীন বর্ষ পুঞ্জিতে পরিবর্তন আনা। সম্রাট আকবরের সময় বিখ্যাত জ্যোতিবিজ্ঞানী ও চিন্তাবিদ ফতেউল্লা সিরাজী আরবি হিজরী সন ও সৌর শনের ওপর ভিত্তি করে নতুন বাংলা সনের নিয়ম প্রবর্তন করেন। ভারত তত্তবিদ আল বিরুনী ১৩৩০ খ্রিস্টাব্দে কিতাবুল হীন্দ রচনা করেন ।
ভারতবর্ষে যেসব অব্দের উল্লেখ আছে তাদের মধ্যে বঙ্গাব্দ নেই। ১৫৫৬ খ্রিস্টাব্দে সম্রাট আকবরের রাজত্বকালে বঙ্গাব্দ চালু হয়। সম্রাট আকবরের বিখ্যাত জ্যোতি বিজ্ঞানী আমির ফতেউল্লা সিরাজের প্রচেষ্টায় প্রচলন হয় নতুন অব্দো বা বঙ্গাব্দের। প্রথমে এই শনের নাম ছিল ফসলী শন পরে এর নামকরণ করা হয় বঙ্গাব্দ।
বুধবার ২৮ রবিউস সানি ইংরেজি ১১ই মার্চ সম্রাট আকবর সিংহাসনে আরোহণের ২৫ দিন পর পৃথিবী আলোকিত করার মতো নতুন বর্ষের সূচনা হয়েছিল। আর বাংলা নববর্ষ ছিল পারসিক বছরের নও রোজ আরব সৌর বর্ষের চেয়ে চন্দ্র বর্ষ ১0 থেকে ১২ দিন কম হয়। যার কারণে কৃষকদের কৃষিকাজ সংক্রান্ত দিনক্ষণের হিসাব রাখা কঠিন হয়ে পড়ে।
মুঘল সম্রাট আকবরের সমস্যার সমাধানের জন্য ১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দে আবুল ফজলকে ফসলি সনের প্রবর্তনের নির্দেশ দেন আর এই নির্দেশ মোতাবেক আবুল ফজল বাংলা সন প্রবর্তন করেন।
পহেলা বৈশাখ অনুচ্ছেদ
পহেলা বৈশাখ কত তারিখ বাংলাদেশ
পহেলা বৈশাখ সম্পর্কে ১০টি বাক্য
পহেলা বৈশাখ ও বাঙালির সংস্কৃতি
পহেলা বৈশাখ কবে ২০২৩
পহেলা বৈশাখ রচনা
পহেলা বৈশাখ 2023
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url