গরমে শিশুর যত্নে ১৭ টি টিপস - জেনে নিন




একজন দম্পতির কাছে শিশু যেন  একটি অনুভূতির নাম। একটি শিশু যখন কোল আলো
করে  আসে তখন এই শিশুর যত্নের প্রয়োজন পড়ে। বিশেষ করে এই গরমে শিশুর
যত্নের আরো বেশি প্রয়োজন হয়। গরমে শিশুর যত্নে ১৭ টি টিপস  জানতে আমার আর্টিকেল পড়ুন।



Image


অতিরিক্ত গরমে বড়দের চেয়ে শিশুরা বেশি অস্বস্তিতে ভোগে তাই শিশুদের বাড়তি
যত্নের প্রয়োজন হয় গরমে শিশুর যত্নে ১৭ টি টিপস - বাচ্চার জন্য কখন ডাক্তারের
শরণাপন্ন হবেন এ সম্পর্কে নিজে আলোচনা করা হলো।-



 পোস্ট সূচিপত্রঃ গরমে শিশুর যত্নে ১৭ টি টিপস 






গরমে শিশুর যত্নে ১৭ টি টিপস



সংসারে একজন নতুন অতিথি আসলেই যেন আনন্দে মনটা ভরে যায়। যখন কোন সংসারে নতুন
অতিথি আসে তখন যেন আনন্দের বন্যা বয়ে যায়। শীত, গ্রীষ্ম বা বর্ষাকালে যে ঋতুতেই
হোক না কেন সব ঋতুতে শিশুদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয়। তবে বছরের অন্যান্য
সময়ে তুলনায় গরমকালে শিশুদের একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন পড়ে।



কারণ অতিরিক্ত তাপমাত্রার কারণে সবচেয়ে বেশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ে শিশুরা।
বড়দের মতো শিশুরা আবহাওয়ার পরিবর্তনে নিজেকে খাপ খাওয়াতে পারে না। তাই বছরের
অন্যান্য সময়ে তুলনায় গরমে শিশুদের একটু বেশি যত্ন নিতে হয়। আর অতিরিক্ত গরমের
কারণে শিশুদের সর্দি - কাশি জ্বর ও পেটব্যথা সহ অনেক সমস্যা হয়ে থাকে।এজন্যই
শিশুদের একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়।



আরো পড়ুনঃ হিট স্ট্রোক কাকে বলে  -  হিট স্ট্রোক কেন হয়  জেনে নিন



গরমে দিনের বেলা বাড়ার সাথে সাথেই বাড়তে থাকে রোদ, বাড়তে থাকে তাপমাত্রা এবং
বাড়তে থাকে অসস্তি। এই প্রচন্ড গরমে বড়দের চেয়ে শিশুরা বেশি সমস্যায় পড়ে।
বিশেষ করে শিশুরা নিউমোনিয়া, ভাইরাল জ্বর সহ বিভিন্ন সমস্যায় ভুগতে পারে।
এছাড়াও গরমের কারণে চিকেন পক্স বা জলবসন্ত সহ অনেক সংক্রামক রোগ হতে দেখা যায়।



তাই এই সময় শিশুদের অধিক যত্নের প্রয়োজন হয়। আর যত্ন এবং সচেতনতাই পারে একজন
শিশুকে সুস্থ রাখতে। নিচে একজন শিশুকে আমরা যেভাবে যত্ন নিতে পারি তা তুলে ধরা
হলো। -


শিশুর ত্বকের যত্ন



একটি শিশুর জন্মের সাথে সাথেই তার ত্বকের যত্নের প্রয়োজন পড়ে। একটি শিশু জন্মের
পর শিশুর ত্বক বেশ লাজুক থাকে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই একজন শিশুর
জন্মের পর পরই তাকে কোন ধরনের প্রসাধনী ব্যবহার করানো ঠিক নয়। কেমিক্যাল জাতীয়
কোন প্রসাধানী ব্যবহার করলে উপকারের চেয়ে ক্ষতি বেশি হতে পারে।



যেমন শিশুর ত্বক শুষ্ক হয়ে যেতে পারে আবার ত্বকে  র‍্যাস উঠতে পারে। তাই
শিশুকে কোন কিছু ব্যবহার করানোর পূর্বে অবশ্যই ভেবেচিন্তে তারপরে ব্যবহার করাবেন।


শিশুকে বেশি পানি পান করাবেন



অতিরিক্ত গরমে শিশুরা বড়দের চেয়ে বেশি সমস্যায় ভুগে থাকে। অত্যাধিক গরমে ঘেমে
গিয়ে শিশুরা যেন পানি শূন্যতায় না ভোগে সেদিকে নজর দিতে হবে। কিছু সময় পর পর
শিশুকে পানি পান করাতে হবে। সম্ভব হলে ফলের রস খাওয়াতে পারেন।এছাড়াও যেসব ফলে
পানির উপস্থিতি বেশি আছে সেসব ফল খাওয়াতে পারেন ।



তবে শিশুদের গ্লোকোজ বা স্যালাইন খাওয়ানোর পূর্বে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞের
পরামর্শ নিবেন। আবার যেসব বাচ্চার বয়স  ৬ মাস বা এরচেয়ে কম তাদের অবশ্যই
শুধু মায়ের বুকের দুধ খাওয়াতে হবে।তবে এক্ষেত্রে আপনাকে ঘনঘন বুকের দুধ
খাওয়াতে হবে।


তেল মালিশ করা



শিশুদের ত্বকের যত্নে তেল মালিশ করার প্রয়োজন হয়। এক্ষেত্রে আপনি চাইলে অলিভ
অয়েল বা যে কোন বেবি অয়েল বা প্রয়োজন হলে সরিষার তেল হাতে নিয়ে আলতো হাতে
মেসেজ করতে পারেন।শিশুরা যেহেতু গরম কম সহ্য করতে পারে তাই আপনি অবশ্যই তেল মালিশ
করলে গোসলের আগে মালিশ  করাবেন।


ভারনিক্স



শিশুর জন্মের পর তার শরীরে ভারনিক্স নামক তেল জাতীয় পদার্থ থাকে। আপনাকে অবশ্যই
খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত গরমে ঘেমে যেন  বাচ্চার এই 
ভারনিক্স নষ্ট না হয়। কারণ ভারনিক্স শিশুদের শরীরের অ্যান্টিবডির কাজ করে
থাকে। আপনাকে আরো খেয়াল রাখতে হবে বাইরে থেকে যেন কোন ধুলাবালি পড়ে শিশুর ত্বকে
যেন কোন ক্ষতি না করতে পারে।


সহজ পাচ্য এবং নরম খাবার খাওয়ানো



আপনার বাচ্চার বয়স ৬ মাসের বেশি হলে তাকে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়তি
খাবার দিতে হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বাসার খাবার যেন নরম, পুষ্টিকর ও সহজ
পাচ্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই বাচ্চার খাবার
যেন নরম, পুষ্টিকরও সহজপাচ্য হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। যে খাবার সহজে হজম হবে
যেমন- শাক-সবজি বা খিচুড়ি, বাচ্চাকে খাওয়াতে পারেন। তবে আপনাকে অবশ্যই মাথায়
রাখতে হবে এগুলোতে যেন অতিরিক্ত তেল না থাকে।


নিয়মিত গোসল করানো



অতিরিক্ত গরমে বাচ্চাকে নিয়মিত গোসল করানো উচিত। কিন্তু এমন অনেকেই আছেন যারা
বাচ্চাকে নিয়মিত গোসল করাতে চান না। অতিরিক্ত গরমে প্রতিদিন ভালোভাবে গোসল করাতে
হবে এক্ষেত্রে পানি যদি ঠান্ডা মনে হয় তাহলে পানি একটু হালকা গরম করে তা সহনীয়
তাপমাত্রায় এনে গোসল করাতে পারেন।



অথবা আপনি বাচ্চাকে গোসল করানোর  এক ঘন্টা পূর্বে একটি পাত্রে পরিমাণ মতো
পানি নিয়ে তা রৌদ্রে রাখতে পারেন। এতেও পানির ঠান্ডা ভাব চলে যাবে এবং এই পানি
বাচ্চার গোসলের উপযোগী হবে। গোসলের সাথে সাথে বাচ্চার শরীর ভালোভাবে
মুছে দিতে হবে যেন পানি শরীরে না থাকে।



শিশুর জন্য গোসল উপকারী হলেও শিশু জন্মের সাথে সাথে গোসল করানো ঠিক নয়। এমন অনেক
মানুষ আছেন যারা শিশু জন্মের সাথে সাথে শিশুকে গোসল করিয়ে থাকেন যা একটি শিশুর
জন্য ক্ষতিকর।শিশু জন্মের পর তার শরীরে ভার্নিক্স নামক এক প্রকার তোলাক্ত পদার্থ
থাকে যা শিশু শরীরে অ্যান্টিবডির কাজ করে।



আরো পড়ুনঃ নাক ডাকার কারণ কি এবং এর সমাধান জেনে নিন



তাই শিশুকে গোসল করালে এই  ভার্নিক্স শরীর থেকে চলে যায় । এক্ষেত্রে
আপনি বাচ্চাকে গোসল না করিয়ে নরম সুতি কাপড় ভিজিয়ে বাচ্চার শরীর মুছে দিতে
পারেন। এতে ও গরমে বাচ্চা গরমে আরাম পাবে।


নরম সুতি কাপড় পরানো



বাচ্চাকে অতিরিক্ত গরমে নরম সুতি কাপড়ের পোশাক পরাতে হবে। অনেক মা - বাবা আছেন
যারা বাচ্চার আরামের  চেয়ে ফ্যাশনটাকে বেশি প্রাধান্য দিয়ে থাকেন। কিন্তু
মনে রাখবেন, অতিরিক্ত গরমে বাচ্চাকে স্বস্তি দিতে নরম সুতি কাপড় পরাতে হবে। কোন
অবস্থাতে বাচ্চাকে কোন সিনথেটিক কাপড় পরাবেন না।



সুতি কাপড়ের পানি ধারণ ক্ষমতা বেশি যা আপনার শিশু শরীরের ঘাম শুষে নিয়ে
বাচ্চাকে ঘামে ঠান্ডা লাগার হাত থেকে রক্ষা করবে। তবে ঘামে যদি জামা ভিজে যায়
তাহলে অবশ্যই জামা পরিবর্তন করে দিতে হবে। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে
বাচ্চার শরীরের ঘাম যেন শরীরে না শুকিয়ে যায় তাহলে আপনারবাচ্চার ঠান্ডা
লেগে যেতে পারে।


শিশুর পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা



শিশুর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে কিন্তু  শিশু আছে
যাদের লালা পড়ে। এক্ষেত্রে লালা পড়া শিশুর লালার কারণে যেন ঠান্ডা না লাগে
সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।বারে বারে লালা মুছে দিতে হবে। প্রয়োজনে শিশুর গলাতে
একটি নরম সুতি কাপড় বেঁধে রাখা যেতে পারে।



বাচ্চাকে যদি ডায়াপার পরান তাহলে অবশ্যই একটু পরপর খেয়াল করবেন যেন ডায়াপার
নোংরা না থাকে। কারণ যত্নই পারে একজন বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে।


ঘরে শিশুকে খেলার ব্যবস্থা করা



অতিরিক্ত রোদ গরমে শিশুকে বাইরে বের না করে ঘরে বসেই খেলার ব্যবস্থা করে দেওয়া
উচিত।  খেলাধুলা না করলে একজন শিশুর মানসিক বিকাশ হয় না। তাই বাচ্চাকে
অবশ্যই খেলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। ঘরে খেলার ব্যবস্থা না করলে বাচ্চা
রোদে গরমে বাইরে খেলতে যাবে এতে করে আপনার বাচ্চা ঘেমে অসুখ হতে পারে।



তাই বাচ্চাকে অবশ্যই ইনডোর গেমস বা ঘরে খেলার ব্যবস্থা করতে হবে। বাচ্চাকে এমন
সরঞ্জাম কিনে দিতে হবে যেন সে আর বাইরে রোদে যেতে না চায়। তবে মনে রাখবেন বিকেলে
রোদ না থাকলে অবশ্যই বাচ্চাকে বাইরে খোলা হাওয়াতে নিয়ে ঘুরতে হবে তাছাড়া ওরা
একঘেয়েমি হয়ে উঠবে।


বেবি প্রোডাক্ট ব্যবহার



শিশুর জন্মের পর অনেকেই আছেন যারা বিভিন্ন প্রকার দেশি-বিদেশে প্রোডাক্ট ব্যবহার
করে থাকেন। কিন্তু তারা জানেন না এইসব প্রোডাক্ট ব্যবহারের অজান্তেই বাচ্চার
উপকারের চেয়ে বেশি ক্ষতি করছেন। তাই বেবি প্রোডাক্ট ব্যবহারে অবশ্য সচেতন থাকতে
হবে। বেবি জন্মের পথ তাদের শরীর থাকে স্পর্শকাতর।



তাই তাদের শরীরে ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা ঠিক নয়।
কারণ  ট্যালকম পাউডার তৈরি হয়  সোপিস্টিক নামক এক 
প্রকার পাথর থেকে। তাই যখন  ট্যালকম পাউডার শরীরের ব্যবহার করা
হয় তখন মনে হয় শরীরে ঠান্ডা অনুভূত হয়। আবার নিঃশ্বাসের
সাথে  ট্যালকম পাউডার ফুসফুসে প্রবেশ করলে শ্বাসকষ্ট সহ ক্যান্সার
পর্যন্ত হতে পারে।


শিশুর বিছানা পরিষ্কার করা



শিশুর বিছানা পত্র নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে হবে। এক্ষেত্রে গরম পানি ও
ডিটারজেন্ট দিয়ে ভালোভাবে কাপড় পরিষ্কার করতে। হবে যদি সম্ভব হয় তাহলে বাচ্চার
কাপড় অবশ্যই রোদে শুকানোর ব্যবস্থা করতে হবে। আর পরিবারের অন্যান্য
সদস্যদের  পোশাকের সাথে শিশুর পোশাক না মিশানোই ভালো।


 বাচ্চার চুল কেটে ছোট করে রাখা



গরমে বাচ্চার শরীরের চেয়ে মাথা বেশি ঘামে তাই আপনাকে অবশ্যই  বাচ্চার চুলের
দিকে নজর দিতে হবে। বাচ্চার চুল যদি বড় হয় তাহলে চুল কেটে ছোট করে দিবেন।
আপনি একটু খেয়াল করলে দেখতে পাবেন গরমে বাচ্চারা প্রায় মাথা চুলকায় সে
ক্ষেত্রে আপনাকে বাচ্চার চুল কেটে ছোট করে রাখা সহ নিয়মিত মাথায় সাবান ও
শ্যাম্পু দিয়ে মাথা পরিষ্কার করে দিতে হবে।



মাথার ত্বক পরিষ্কার না থাকলে ময়লা থেকে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ হতে পারে যার
কারণে আপনার  বাচ্চার মাথায় খুশকি পর্যন্ত হতে পারে।


শিশুর ডায়াপার



শিশুর ডায়াপার আপনাকে নিয়মিত চেক করতে হবে। ডায়াপার যদি অনেক সময় ধরে ভেজা
থাকে তাহলে বাচ্চার ত্বকে র‍্যাশ  উঠতে পারে তাই আপনাকে অবশ্যই নিয়মিত
বাচ্চার ডায়াপার চেক করে পরিবর্তন করতে হবে।


ঘরের ভেতরে আলো বাতাসের ব্যবস্থা করা



আপনি আপনার বাচ্চাকে যে ঘরে রাখবেন সেই ঘর যেন খোলামেলা এবং আলো বাতাসে পরিপূর্ণ
থাকে সেদিকে আপনাকে নজর দিতে হবে। ঘরের দরজা - জানালা যতটা সম্ভব খুলে রাখতে হবে।
মনে রাখবেন এসি বা ফ্যানের বাতাস আরামদায়ক মনে হলেও একজন শিশুর জন্য প্রকৃতির
বাতাসের চেয়ে উপকারী কোন কিছুই নেই। 



আরো পড়ুনঃ শীতে ত্বকের ঘরোয়া পরিরচর্চার  ১৫ টি  টিপস জেনে  নিন



তাছাড়া বাচ্চার অতিরিক্ত ঘরে থাকলে ভিটামিন ডি এর অভাব হতে পারে। আবার ঘর
খোলামেলা না  হলে ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ হতে পারে যার ফলে আপনার শিশু
পরবর্তীতে বাত জ্বরে আক্রান্ত হতে পারে।


বেবি ওয়াইপ



শিশুর ত্বক পরিষ্কার করার জন্য বেবি ওয়াইপ না ব্যবহার করাই ভালো। কারণ বাজার
থেকে কেনা বেবি ওয়াইপ এ  কেমিক্যাল থাকে আর এই কেমিক্যাল আপনার
বাচ্চার ত্বকের ক্ষতি করতে পারে ।তাই আপনি নরম সুতি কাপড় দিয়ে আপনার শিশুর ত্বক
পরিষ্কার করতে পারেন।


পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার



এমন অনেক শিশু আছে যাদের স্বাস্থ্য বেশ ভালো থাকে আর এসব শিশুর হাতে এবং পায়ের
মাংসপেশিতে ভাঁজ পড়ে থাকে। এক্ষেত্রে আপনি যদি ভাঁজ  পড়া স্থানে কোন কিছু
ব্যবহার না করেন তাহলে সেখানে সংক্রমণ হতে পারে এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
তাই এসব ভাঁজ পড়া জায়গাতে আপনি পেট্রোলিয়াম জেলি ব্যবহার করতে পারেন।


শিশুর শরীর ম্যাসেজ



শিশুর ত্বককে সুস্থ ও সতেজ করে রাখতে আপনাকে শিশুর ত্বক-আলতো হাতে মেসেজ করতে
হবে। এক্ষেত্রে আপনাকে যা করতে হবে তা হল - 




  • বাচ্চাকে একটি নরম বিছানায় উপর করে শোয়ান। 

  • হাতে বেবি অয়েল বা লোশন নিয়ে আলতো ভাবে শরীরে ম্যাসেজ করুন।


  • তবে এক্ষেত্রে মনে রাখবেন নিয়মিত পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ম্যাসেজ করতে
    পারেন এতে আপনার বাচ্চার ত্বক স্বাস্থ্যকর এবং নরম হবে।




বাচ্চাকে সুস্থ রাখতে আরো কিছু টিপস



বাঁচাকে সুস্থ ও সুন্দর রাখতে আপনাকে যে বিষয়গুলো অবশ্যই জানতে হবে তা হল -




  • গরমে শিশুকে অবশ্যই নিয়মিত ও পরিমিত বিশুদ্ধ পানি পান করাতে হবে।


  • প্রয়োজনের অতিরিক্ত পানি পান করাবেন না, এতে উপকারে এসে ক্ষতি বেশি হতে পারে।

  • গরমে যতটা সম্ভব শিশুকে নরম খাবার দিতে হবে।

  • শিশুর ত্বক পরিষ্কার রাখতে হবে যেন শিশুর ত্বকে র‍্যাশ না ওঠে।


  • শিশু ঘেমে গেলে বারে বারে ঘাম মুছে দিতে হবে। ঘাম শরীরে শুকিয়ে গেলে শিশুর
    ঠান্ডা লাগতে পারে।

  • ঘর থেকে বাইরে গেলে শিশুর জন্য অবশ্যই খাবার পানির সঙ্গে নিতে হবে।

  • গরমে শিশুকে অবশ্যই নিয়মিত গোসল করাতে হবে।

  • যতটা সম্ভব  তাকে ধুলাবালি থেকে দূরে রাখতে হবে।


  • সদ্য জাত শিশুর জন্মের পর তাদের শরীর উষ্ণ রাখার জন্য সব সময় ঢেকে রাখতে হবে।
    এক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেন গরমে বাচ্চা ঘেমে না যায়।


  • গরমে মশা মাছি বেশি থাকে তাই এদিকে আপনাকে সতর্ক থাকতে হবে যেন বাচ্চার শরীরে
    মশা মাছি বসতে না পারে।




বাচ্চার জন্য কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন



অনেক সতর্ক থাকার পরেও বাচ্চা অসুস্থ হতে পারে এ ক্ষেত্রে যে লক্ষণ গুলো
দেখলে বাচ্চাকে ডাক্তারের কাছে নিতে হবে তা হল -





  • বাচ্চার শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে এক্ষেত্রে আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে
    বাচ্চার তাপমাত্রা কেন বেড়ে গেল তা নির্ণয় করার চেষ্টা করতে হবে। আপনার ঘরের
    দরজা জানালা বন্ধ থাকলে ৩0 মিনিট বাচ্চাকে স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখতে হবে।
    এরপর থার্মোমিটার দিয়ে তাপমাত্রা মাপতে হবে এরপরও যদি তাপমাত্রা বেশি থাকে
    তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।

  • যদি শিশুর স্বাভাবিক চেহারা পরিবর্তন হয়ে অসুস্থ দেখা যায়।

  • বাচ্চার বমি বা পাতলা পায়খানা হলে।

  • অতিরিক্ত পানির পিপাসা দেখা যায়।


  • প্রসাবের পরিমাণ কমে যায় । অর্থাৎ একজন শিশু অন্তত ২৪ ঘন্টায় ৬ বার প্রসাব
    করে আর বাচ্চা যদি ৬ বারের কম প্রসাব করে তাহলে বাচ্চাকে নিয়ে ডাক্তারের
    শরণাপন্ন হতে হবে।

  • বাচ্চার যদি চোখ বসে যায় এবং জিব্বা শুকনো দেখা যায়।


  • শিশু যদি কোন কারণ ছাড়াই খেলাধুলা বন্ধ করে দেয় এবং নিস্তেজ হয়ে পড়ে।




আপনার শিশুর এইসব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই একজন শিশু বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেখাবেন।
যত্ন এবং সচেতনতাই পারে একজন শিশুকে সঠিকভাবে বড় করতে। শিশুরা ভালো লাগা - মন্দ
লাগা সঠিকভাবে বলতে পারেনা। এক্ষেত্রে আপনাকে অবশ্যই সচেতন থাকতে হবে।



শেষ কথা



বাবা-মায়ের কাছে একজন শিশুর উপস্থিতির যেমন আনন্দদায়ক তেমনি তাদের বিভিন্ন
অসুখ-বিসুখ তার চেয়ে বেশি কষ্টদায়ক। তাই অতিরিক্ত গরমে হোক বা শীতে হোক
বাচ্চাদের যত্নের প্রয়োজন পড়ে। তবে শীতের চেয়ে গরমে একটু বেশি যত্ন নিতে হয়।
আপনার যত্ন এবং সচেতনতাই পারবে আপনার বাচ্চাকে রোগ মুক্ত  রাখতে।



আমি এই গরমে একজন বাচ্চাকে কিভাবে যত্ন নিতে হবে এবং তাদের জন্য প্রয়োজনীয় কিছু
জরুরি টিপস এবং কখন ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে এ নিয়ে আলোচনা করেছি। আমি আশা
করি একটি দাম্পত্য জীবনে এই টিপস গুলো অনেক কাজে লাগবে।



আমার আর্টিকেলটি যদি আপনাদের ভালো লাগে এবং উপকারে আসে তাহলে অবশ্যই একটি কমেন্টস
করে আমাকে জানাবেন।








এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
1 জন কমেন্ট করেছেন ইতোমধ্যে
  • Alinoorhossen
    Alinoorhossen March 10, 2023 at 5:14 PM

    বর্তমান সময় ভালো যাচ্ছে না ঠান্ডা গরমের মিশ্রন।

মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url