বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মধ্যে পার্থক্য জেনে নিন




বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মধ্যে পার্থক্য  সম্পর্কে আমাদের
প্রত্যেকেরই জ্ঞান থাকা উচিত । আমরা যদি সঠিকভাবে না জানি স্বাধীনতা দিবস ও বিজয়
দিবসের মধ্যে পার্থক্য  তাহলে আমরা আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে এই
দিবসগুলোর তাৎপর্য সঠিকভাবে তুলে ধরতে পারবো না । তাই স্বাধীনতা দিবস ও বিজয়
দিবস সম্পর্কে জানতে আমার পোস্ট টি মনোযোগ সহকারে পড়ুন ।







স্বাধীনতাযুদ্ধের ৫0 বছর পরেও এই দিবস গুলো বিশেষ আয়োজন এর মধ্য দিয়ে পালন করা
হয় । বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুটি দিবস পালন করা হয়
। এর একটি ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস । প্রত্যেক
দেশের ই একটি জাতীয় দিবস থাকে । উপনিবেশবাদী শাসন থেকে মুক্ত হওয়ায় এই দিবসটিকে
জাতীয় দিবস হিসেবে গণ্য করা হয় ।

পোস্ট সূচিপত্র: বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মধ্যে পার্থক্য







বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবস



২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস । অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ 
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে । আর  ১৬ই 
ডিসেম্বর  আমাদের বিজয় দিবস । এর অর্থ হচ্ছে ১৯৭১ সালের১৬ই 
ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় লাভ করে । ১৯৭১  সালের ২৬ শে মার্চ
বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসেবে নিজেদের ঘোষণা করে কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ
হিসেবে নিজেদের ঘোষণা দিলেও নিজেদের কোন  সার্বভৌমত্ব ছিল না । 



আরো পড়ুনঃ  
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস কেন পালন করা হয়   জেনে নিন



আর সার্বভৌমত্ব হলো স্বাধীনতার মূল অনুষঙ্গ । বাংলাদেশ তখনো পশ্চিম
পাকিস্তানের কবলে । বহিঃশত্রুর আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করতে না পারলে দেশ কখন ও
স্বাধীন হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে না । আর সেই সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে
প্রয়োজন হয়েছিল এক রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের । আর এই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়েই
বাংলাদেশ অর্জন করে তাদের সার্বভৌমত্ব তথা স্বাধীনতা । এজন্যই ১৯৭১ সালের ১৬
ই  ডিসেম্বর বিজয় দিবস ।



স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মধ্যে পার্থক্য



১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস । অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ
থেকে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র ।    পক্ষান্তরে



১৯৭১ সালের ১৬ই  ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস । অর্থাৎ ১৯৭১ সালের ১৬ই 
ডিসেম্বর বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে লাভ করে ।



স্বাধীনতা দিবস বলি আমরা সেই দিনকে যেদিন বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করা হয় ।
বাংলাদেশকে বহিঃশাসন দেশ হিসেবে ঘোষণা করা হয় ।     
 পক্ষান্তরে



বিজয় দিবস হচ্ছে সেই দিন যেদিন বাংলাদেশ বিশাল এক রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ শেষে
জয়ী হয়ে বাংলাদেশকে শত্রু মুক্ত ঘোষণা করা হয় ।



১৯৭১ সালের ২৬ শে মার্চ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের
তথা বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । আর যখন থেকে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ঘোষণা
করেছে তখন থেকে পাকিস্তানি বাহিনী হল দখলদার  বাহিনী ।   
   পক্ষান্তরে



১৯৭১ সালের  ১৬ই ডিসেম্বর দখলদার পাকিস্তানি বাহিনীর যৌথ বাহিনীর কাছে
আত্মসমর্পণ করে । এবং এর মাধ্যমে বাংলাদেশ মুক্তি যুদ্ধে জয়লাভ করে । তাই
১৬ই  ডিসেম্বর বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয় ।



আরো পড়ুনঃ  ডিজিটাল মার্কেটিং কি - ডিজিটাল মার্কেটিং কত প্রকার ও কি কি



বাংলাদেশের স্বাধীনতা  দিবসে  অর্থাৎ২৬ শে মার্চ ৩১  বার 
বন্ধুকে শব্দ করা হয় বা তোপধ্বনি করা হয় । আর এর পেছনে একটি ঐতিহাসিক কারণ
রয়েছে । এই তোপধ্বনি সূত্রপাত হয়  চতুর্দশ শতাব্দীতে । এই সময়ে
আন্তর্জাতিকভাবে  সারাদেশে এই তোপধ্বনি প্রথা চালু ছিল । তবে তখন ২১ বার
তোপধ্বনি করা হতো । ওই সময় পানি পথে যারা বেশি বলিয়ান ছিল তারাই বেশি
শক্তিশালী ছিল । 



আর এর অন্যতম কারণ ছিল অধিকাংশ সামরিক শক্তি প্রদর্শিত হত পানি  পথে । পানি
পথে যাওয়ার সময় যদি গোলাবারুদ শেষ হয়ে যেত  তবে স্থলের কাছে
তোপধ্বনি  এর মাধ্যমে তা জানিয়ে দেওয়া হতো । তারপর আবার স্থলে এসে
গোলাবারুদ ভরে নিয়ে যাওয়া হতো । এবং যাওয়ার আগে ৭ বার তোপধ্বনি করা হতো । আর
এর উত্তরে স্থল থেকে  ২১ বার তোপধ্বনি করা হতো । 



আবার জাহাজ ছাড়ার সময় ৩ বার তোপধ্বনি করা হয় । আর এই শেষ ৩ 
বার তোপধ্বনি করা হয় ব্রিটিশ রাজা বা  রানীর সম্মানে । এভাবে ব্রিটিশ কলোনি
গুলোতেও  ৩১ বার তোপধ্বনি দেওয়া শুরু হয় । বিশিষ্ট  আন্তর্জাতিক
কোন ব্যক্তির আগমনে ২১  বার তোপধ্বনির মাধ্যমে তাকে সম্মান প্রদর্শন করা
হয়  । 


বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস কবে


২৬ শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয়
। ১৯৭১সালের ২৫ শে মার্চ ভয়ংকর সেই কাল রাতে  তৎকালীন পূর্ব
পাকিস্তানের জনগণ আনুষ্ঠানিকভাবে তারা নিজেদের  স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে
। তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
২৫  মার্চ রাতে গ্রেফতার হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে তার এক বার্তায় বাংলাদেশের
স্বাধীনতা ঘোষণা করেন । 



আরো পড়ুনঃ আমলকি খাওয়ার উপকারিতা  -  আমলকির ব্যবহার  জেনে নিন



এরপরে বঙ্গবন্ধুর পক্ষ থেকে এমএ হান্নান ২৬ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট
বেতারকেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের উদ্দেশে অনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতা
যুদ্ধে অংশগ্রহণের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন । পরে ২৭ শে মার্চ একই কেন্দ্র থেকে
বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে  জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন ।
১৯৭২ সালের ২২ জানুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ২৬ শে মার্স এই দিনটিকে
বাংলাদেশের জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় । এবং সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করা
হয়  



বাংলাদেশের বিজয় দিবস কবে



১৬ ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস । এ দিনটিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে দেশের সর্বত্র
পালন করা হয় ।  ১৯৭২ সালের ২২শে  জানুয়ারি প্রকাশিত এক প্রজ্ঞাপনের
মাধ্যমে এই দিনটিকে জাতীয় বিজয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় । এবং  এই দিনে
সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয় ।১৯৭১ সালের ১৬ই  ডিসেম্বর বিজয় দিবস প্রতিটি বাঙালির জন্য একটি বিশেষ
দিন । 



তাইতো স্বাধীনতাযুদ্ধের ৫0 বছর পরেও এই দিবসটি বিশেষ আয়োজন এর মধ্য দিয়ে পালন
করা হয় । বাংলাদেশে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক দুটি দিবস পালন করা
হয় । এর একটি ২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস এবং ১৬ ডিসেম্বর বিজয় দিবস । প্রত্যেক
দেশের ই একটি জাতীয় দিবস থাকে । উপনিবেশবাদী শাসন থেকে মুক্ত হওয়ায় এই দিবসটিকে
জাতীয় দিবস হিসেবে গণ্য করা হয় ।

স্বাধীনতা দিবস কেন পালন করা হয়


আমরা সবাই জানি২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস । কিন্তু অনেকের মনে হয়তো এই
প্রশ্নটিই বিরাজ করে যে ২৬শে মার্চকে স্বাধীনতা দিবস হিসেবে পালন করা হয় কেন !
২৬ শে মার্চ স্বাধীনতা দিবস পালন করার উল্লেখযোগ্য কয়েকটি কারণ রয়েছে । আর .২৬
মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস হওয়ার অন্যতম কারণ হলো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর
রহমান  এই দিনে স্বাধীনতার ঘোষণা দেন ।



 আরো পড়ুনঃ  নিয়মিত কলা  খাওয়ার  উপকারিতা এবং কলা খাওয়ার  নিয়ম 
    বিস্তারিত জেনে নিন



১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ তাৎপর্যপূর্ণ একটি দিন । আর তাৎপর্যপূর্ণ এই দিনটিকে স্মরণ
করে রাখার জন্য প্রতিবছর গভীর শ্রদ্ধার মাধ্যমে পালন করা হয় ২৬ মার্চের এই
দিনটিকে । বঙ্গবন্ধুর ঘোষণার ফলে আজকের এই ২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস ।
এই দিনটি প্রতিটি বাঙালির যেমন আনন্দের  তেমনি বেদনার । দীর্ঘ .৯
মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরে আসে আমাদের এই স্বাধীনতা দিবস । 



৩০ লক্ষ বাঙালি তাদের নিজের জীবনের  বিনিময়ে  উপহার দিয়েছেন এই দেশ ।
বিভিন্ন উৎসবের মাধ্যমে আমরা এই দিবস পালন করে থাকি । যারা আমাদের জন্য এই
মহান আত্মত্যাগ করেছেন   তাদের স্মরণে আমরা এই দিন পালন করে থাকি



শেষ বক্তব্য



২৬ শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস এবং১৬ ই ডিসেম্বর আমাদের বিজয় দিবস । আমি
স্বাধীনতা দিবস এবং বিজয় দিবস নিয়ে আলোচনা করেছি । স্বাধীনতা দিবস বিজয় দিবস
সম্পর্কে আপনারা জানতে পেরেছেন । স্বাধীনতা দিবস এবং বিজয় দিবসের মধ্যে
পার্থক্য কি আমি সেটা নিয়েও আলোচনা করেছি ।  আশা করি আমার এই পোস্টটি
আপনাদের অনেক উপকারে আসবে । 








এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url